নাঃ, এই মেয়ে এক্কেবারে পাশের বাড়ির আদুরে, ২০-২৫ বছরের মেয়েটির মতোই। কোনও সেলেব্রিটিসুলভ বায়নাক্কা নেই, টাকা ওড়ানোর সমস্যা নেই। কেমন বন্ধুদের বিয়েতে গিয়ে চুপটি করে বসে থাকে, বয়ফ্রেন্ডের মায়ের সঙ্গে হাত ধরে ডিনার খেতে চায়, তার অসুস্থ বাবাকে দেখতে বছর শেষের পার্টি ছেড়ে হাসপাতালে খাটান দেয়, বয়ফ্রেন্ডের নেতিয়ে পড়া কেরিয়ারটি চাঙ্গা করতে কত বচ্ছর ধরে সেই একই সিনেমায় অভিনয় করেই চলেছে, দুর্গাপুজোয় অঞ্জলি দিয়েই চলেছে, কিন্তু মুখে টোল পড়া হাসিটি ঠিক লেগে আছে। আর আজ যখন আলিয়া ভট্ট (Alia Bhatt) একটি সাক্ষাৎকারে তাঁর টাকা জমানোর প্ল্যান, তাঁর দৈনন্দিন শপিং (shopping) লিস্ট, কী-কী কেনা তাঁর স্বপ্ন ইত্যাদি শেয়ার করেছেন, তখন আরও একবার বোঝা গিয়েছে যে, মহেশ ভট্টের ছোট কন্যেটি মোটেও সেলেব্রিটিসুলভ উল্টোপাল্টা খরচে বিশ্বাস করেন না। বরং তিনি কষ্ট করে রোজগার করা টাকা বিশেষজ্ঞদের বলে দেওয়া খাতে মাথা ঠান্ডা করে জমাতে পছন্দ করেন।
তা টাকাপয়সা ঠিক কীভাবে খরচ করেন তিনি? বুলেট পয়েন্টে লিখছি, কারণ, অ্যাত্ত মিষ্টি করে আর খুঁটিযে-খুঁটিয়ে তিনি একথা জানিয়েছেন একটি পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যে, যিনি ইন্টারভিউ নিচ্ছিলেন, তিনি পর্যন্ত নাকি নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না! আরও খারাপ অবস্থা আলিয়ার চার্টার্ড অ্যাকাউন্টট্যান্টের। ভদ্রলোক নাকি বুঝতেই পারছেন না যে, এই ফিনানশিয়াল ইয়ারে তিনি কোন ফাঁকফোঁকর দিয়ে আলিয়ার ট্যাক্স বাঁচাবেন! কারণ, তাঁর মক্কেলটি যে ভরা হাটে গদাম করে হাঁড়ি ভেঙে দিয়েছেন! যাক গে, চলুন দেখে নিই, আলিয়া শপিং-স্পেন্ডিং অ্যান্ড সেভিংস লিস্টটি (savings plan) কীরকম দেখতে…
- আলিয়া টাকা জমান সাবধানে, মা সোনি রাজদান আর তাঁর চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের কথা মেনে। সোনার প্রতি একেবারেই ঝোঁক নেই তাঁর। বরং ফিক্স় ডিপোজিট আর নানা রকমের সেভিংস বন্ডে টাকা ইনভেস্ট করেন আলিয়া। লগ্নি করেছেন মিউচুয়াল ফান্ডেও।
- তাঁর প্রথম বড় ইনভেস্টমেন্ট ২০১৭ সালে। একটি ফ্যাশন স্টার্ট আপে টাকা লাগিয়েছিলেন আলিয়া। সেটি অবশ্য নিজের ইচ্ছেতে।
- এর পর তিনি জুহুতে নিজের অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন। পুরোপুরি নিজের টাকায়। পাক্কা দু’ বছর ধরে বাড়ি সাজিয়েছিলেন তিনি।
- এখন আলিয়া একা থাকেন। গোড়ার দিকে হাউজ ম্যানেজারের কাছ থেকে মাসের খরচের হিসেবও নাকি বুঝে নিতেন তিনি। এখন আর পেরে ওঠেন না। তবে নজর রাখার চেষ্টা করেন।
- সম্প্রতি একটি গ্লোবাল হেলথ ইনশিওরেন্স পলিসি করিয়েছেন তিনি। কারণ, কাজের সূত্রে তাঁকে বিভিন্ন দেশে ঘুরতে হয়। যদি কোথাও চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, তাই এই সাবধানতা।
- তাঁর প্রথম কেনা দামি জিনিস হল, একটি লুই ভিতোঁ হ্যান্ডব্যাগ। দোকান দেখলেই হামলে পড়ে জিনিস কিনে ফেলতে একেবারেই পছন্দ করেন না আলিয়া। ছোটবেলায় মা আর দিদি শাহীনের সঙ্গে লন্ডনের প্রাইমার্ক বলে একটি বাজেট শপ থেকে পায়জামা কিনতেন আলিয়া, মাত্র পাঁচ-ছ’ পাউন্ডে (ভারতীয় টাকায় দাম মাত্র ৬০০ টাকার মতো)। এখনও সেখান থেকেই পায়জামা কেনেন তিনি। সেলেব্রিটি হয়েছেন বলে পাল্টে যাননি।
- আলিয়ার হয়ে টাকাপয়সার দিকটা সামলে দেন তাঁর মা সোনি রাজদান। মেয়েকে নাকি অনেকবার হাতে ধরে সবকিছু শেখানোর চেষ্টা করেছেন তিনি। কিন্তু মেয়ে বড় একগুঁয়ে, কিছুতেই শিখতে চায় না। অবশ্য আলিয়া বলেছেন, মোটের উপর তিনি নাকি জানেন যে, টাকাপয়সা কোথায়-কোথায় জমানো আছে। কিন্তু খুঁটিনাটি হিসেব রাখাটা তাঁর জাস্ট পোষায় না।
- প্রতি ফিনানশিয়াল ইয়ারের শুরুতে তাঁরা একসঙ্গে বসে ঠিক করে নেন যে, এবছর কোথায় টাকা জমানো হবে, কোন চ্যারিটিতে কত টাকা দেওয়া হবে, ব্যস, তারপর আলিয়ার আর কোনও মাথাব্যথা নেই।
- বছরে একবার বিদেশভ্রমণে যান তিনি। কিন্তু ওই একবারই। তার চেয়ে বেশি খরচ বেড়ানোর পিছনে করেন না।
- আরও একটু টাকা জমাতে পারলে একটি লাক্সারি জেট প্লেন কেনার ইচ্ছে আছে আলিয়ার।
কী, বলেছিলাম না, এই মেয়ে এক্কেবারে পাশের বাড়ির টেঁপি-পুঁটির মতো? কীরকম গড়গড়িয়ে সব পেটের কথা বলে দিয়েছেন শুনলেন তো? অবশ্য এই সাক্ষাৎকার পড়ার পর সোনি রাজদান নাকি মুচ্ছো গিয়েছেন, মহেশ ভট্টের টাক আরও চকচক করছে, পূজা ভট্ট গালে হাত দিয়ে ভাবতে বসেছেন ইস, আমিও যদি এরকম…আর শাহীন ভট্ট গম্ভীর মুখে আরও একটি বই লিখতে বসেছেন, শীর্ষক, আমার বোনের সেভিংস প্ল্যান…অবিশ্যি এসব আমরা বলছি না, ওই নিন্দুকে বলছিল এই আর কী!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আমাদের এক্কেবারে নতুন POPxo Zodiac Collection মিস করবেন না যেন! এতে আছে নতুন সব নোটবুক, ফোন কভার এবং কফি মাগ, যেগুলো দারুণ ঝকঝকে তো বটেই, আর একেবারে আপনার কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে। হুমম…আরও একটা এক্সাইটিং ব্যাপার হল, এখন আপনি পাবেন ২০% বাড়তি ছাড়ও। দেরি কীসের, এখনই POPxo.com/shopzodiac-এ যান আর আপনার এই বছরটা POPup করে ফেলুন!