কথায় বলে, বাপ কা বেটা, সিপাহি কা ঘোড়া, কুছ নহি তো থোড়া থোড়া! বা ধরুন লাইক ফাদার, লাইক সন। কিংবা বাপের ব্যাটা। মানে, হিন্দি, বাংলা, ইংরেজি, তামিল, তেলুগু, যে ভাষাতেই খুঁজুন না কেন, বাবার সঙ্গে সন্তানের তুলনা টেনে গুচ্ছখানেক উদাহরণ মিলবে। কিন্তু মা? যিনি দশ মাস দশ দিন গর্ভে (mothers) ধরে সন্তানকে জন্ম দিলেন, তিনি? তাঁর সঙ্গে তুলনা? নাঃ, খুব বেশি হলে লাইক মাদার (mothers) লাইক ডটার( daughter) শুনতে পাবেন বটে, কিন্তু তার বেশি কিছু নয়। (mothers) মা-কে বরাবারই ইতিহাস ওই দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করেই রেখে দিয়েছে। মায়েরাও (mothers কিন্তু কম যান না। মাতৃদিবসের প্রাক্কালে আমরা এমন কিছু ভারতীয় মায়ের (celebrity) কথা খুঁজে বের করছি, যাঁদের পরিচয় অনেকটা গড়ে দিয়েছে তাঁদের সন্তানের ভাগ্য!
বলিউড ডায়েরি
মা-মেয়ে কিংবা মা-ছেলে-মেয়ের জুটির ভুরি-ভুরি উদাহরণ মিলবে এখানে। অভিনেত্রী মায়ের সন্তানেরা অনেক ক্ষেত্রেই এড়াতে পারেননি লাইটস-ক্যামেরা-অ্যাকশনের হাতছানি। শোভনা সমর্থ-নূতন-তনুজা থেকে শুরু করে হালফিলের অমৃতা সিংহ-সারা আলি খান বা শ্রীদেবী-জাহ্ণবী, সকলেই প্রায় একই ছকে এগিয়েছেন। তালিকায় আছে বেশ কিছু নাম। ডিম্পল-টুইঙ্কল, ববিতা-করিনা-করিশমা, শর্মিলা ঠাকুর-সইফ আলি খান-সোহা আলি খান, হেমা মালিনী-এষা দেওল তখতানি, তনুজা-কাজল-তনিশা, সোনি রাজদান-আলিয়া ভট্ট…সকলেই প্রায় একই পথের পথিক। আছেন এমন কিছু মা, যাঁরা অভিনেত্রী হলেও তাঁদের মেয়েরা বেছে নিয়েছেন অন্য পেশা, কিন্তু তাঁরাও স্বমহিমায় উজ্জ্বল। যেমন, নীনা গুপ্তার মেয়ে মাসাবা নামী ফ্যাশন ডিজাইনার, রাখি গুলজারের মেয়ে মেঘনা গুলজার প্রশংসিত পরিচালক, জয়া বচ্চনের মেয়ে শ্বেতা সদ্য পা রেখেছেন ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ের দুনিয়ায়…ইত্যাদি ইত্যাদি।
রাজনীতির অঙ্গন
বলিউড তো হল, চলুন এবার উঁকি মারা যাক রাজনীতির দুনিয়ায়। যদিও সবচেয়ে প্রাচীন ভারতীয় রাজনৈতিক দলটির সবচেয়ে সফল নেত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীই ছিলেন একজন মহিলা এবং পরবর্তী কালে তাঁরই রিফ্লেক্টেড গ্লোরিতে রাজপাট সামলেছেন তাঁর ছেলে, কিন্তু ইন্দিরা-রাজীব-সঞ্জয় গাঁধী ছাড়া ভারতীয় রাজনীতেতে মা-সন্তানের ফাটাফাটি জুটি সেরকম চোখে পড়ে না। অনেকে ভুরু-টুরু কুঁচকে এখনই সনিয়া-রাহুল-প্রিয়ঙ্কার কথা বলবেন ঠিকই, কিন্তু রাহুল-প্রিয়ঙ্কার ক্ষেত্রে বাবা ফ্যাক্টরটাও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তবে এটা বলা যেতে পারে যে, রাহুল-প্রিয়ঙ্কার রাজনৈতিক শিক্ষা এগিয়েছে তাঁদের মায়ের ছত্রছায়াতেই। তা ছাড়া, শীলা দীক্ষিত (দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী)-সন্দীপ দীক্ষিত (প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ) বা মার্গারেট আলভা (লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার)-নিরেট আলভা (প্রোডাকশন হাউজ মিডিটেক এর কর্ণধার) মতো ইতিউতি দু-একটা উদাহরণ মাথায় এলেও, সেগুলো এমন বড়সড় কিছু নয়।
বাঙালি মায়েরা
আমাদের এই সোনার বাংলাতেও প্রতিভাময়ী মাতৃমূর্তি কিন্তু কম নেই! এক নিঃশ্বাসে কয়েকটা উদাহরণ দিয়ে ফেলা যাক। সুচিত্রা সেন-মুনমুন সেন, অপর্ণা সেন-কঙ্কণা সেনশর্মা, সুমিত্রা সেন-ইন্দ্রাণী সেন-শ্রাবণী সেন, তনুশ্রীশঙ্কর-শ্রীনন্দাশঙ্কর, অমলাশঙ্কর-মমতাশঙ্কর…ইত্যাদি ইত্যাদি। এক্ষেত্রে সংখ্যা একটু কমের দিকে হলেও, প্রতিভার দিক থেকে এঁরা যে-কোনও সময় যে-কারও সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন!
বিখ্যাত মহিলা বিজ্ঞানী মাদাম মারি কুরির নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন? প্রথম মহিলা হিসেবে নোবেল পেয়েছিলেন ইনি, তা-ও আবার পদার্থবিদ্যায় এবং দু’-দু’বার, ১৯০৩ এবং ১৯১১ সালে! ১৯০৬ সালে স্বামী পিয়ের কুরি মারা যাওয়ার পর দুই মেয়েকে একা মানুষ করেছিলেন তিনি। আর এতটাই ভালভাবে মানুষ করেছিলেন যে, তাঁর মেয়ে আইরিন ১৯৩৫ সালে রসায়নে নোবেল পান! বুঝতে পারছেন, মহীয়সী মায়েরা ঠিক কেমন হন?
Picture Courtsey: Instagram
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!