পুজো মানে নতুন জামা, নতুন জুতো, নতুন সাহিত্যও! সাহিত্যাপ্রেমী বাঙালি পুজোর সময় নতুন গল্প-উপন্যাসে চোখে ডুবিয়ে থাকতে সত্যিই পছন্দ করে। আর তাই আমরা আয়োজন করেছিলাম অণুগল্প প্রতিযোগিতার। পাঠকদের কাছ থেকে পুজোর (Durga Puja) জন্য স্পেশ্যাল (special) অণুগল্প (story) চেয়েছিলাম আমরা। বিপুল সাড়া মিলেছে। নানা স্বাদের অণুগল্প জমা পড়েছে আমাদের দফতরে। তার মধ্যে থেকেই বেছে নেওয়া হল কয়েকটি। পুজোর চারদিন সকাল-বিকেল দু’টি করে অণুগল্প আমরা পেশ করব পাঠকদের জন্য।
এই ‘উপহার’ গল্পটি লিখেছেন কমলিকা সেনগুপ্ত।
আজ একটা হেস্তনেস্ত করেই ছাড়বে তিতলি!
নবমী হয়ে গেল, এখনও পর্যন্ত একটা কিচ্ছু হাতে করে দিল না! এর নাম নাকি বয়ফ্রেন্ড! তা-ও আবার চাকরি করা! দুচ্ছাই, এর চেয়ে সুকন্যার টিউশনখাটা বয়ফ্রেন্ড কত্ত ভাল। মহালয়ার দিনই একটা ব্র্যান্ডেড টোট ব্যাগ নামিয়ে দিয়েছে! আর তিতলি এখনও খাবি খাচ্ছে আর ঠাকুর দেখছে!
আর দ্যাখো, পাশে বসে মোবাইলে কী দেখে চলেছে কে জানে! ছোট পিসি ঠিকই বলেছিল, চাকরি না পাওয়া বয়ফ্রেন্ড একরকম, আর চাকরি পাওয়া অন্যরকম! আগে কী সুন্দর ভেবেচিন্তে গিফট দিত। টেডি বিয়ার (হোক না সে নাক থেবড়া), চকোলেট (একটাও তিতলিপ পছন্দের ফ্লেভার নয়, বাড়িতে এসেই ভাইকে দিয়ে দিত), পেনড্রাইভে বেছে-বেছে গান ভরে (সব কানের পর্দা ফাটিয়ে দেওয়া গান, তিতলটি পরে সেগুলো ইরেজ করে অন্য গান সেভ করে নিত)…তখন মনে হত বটে, ব্যাটা ভারী কিপটে, কিন্তু এখন মনে হয় এক্কেবারে সিনেমার মতো!
আর এখন দ্যাখো, এই নিয়ে সকাল থেকে গুনে-গুনে তিরিশটা ঠাকুর দেখেছে, দু’বার থামস আপ, তিন বার চুরমুর (হাঁদাটা একবার ফুচকাও গিলেছে, তা-ও ফাউসমেত, এক্সট্রা তেঁতুল জলও চেয়েছে), একটা টেম্পটেশন চকোলেটও খেয়ে ফেলেছ! তিতলির বাঁ পায়ের পিছনের পুরনো ফোস্কাটা সকাল থেকে ঠাকুর দেখার ঠেলায় আবার নতুন হয়ে গেল, কিন্তু তিনি পকেট থেকে কোনও গিফট বের করেননি!
এদিকে তিতলি টিউশনির পয়সা জমিয়ে একটা শার্ট, একটা টি-শার্ট আর একটা ওয়ালেট কিনে সেই মহালয়ার পরের দিনই দিয়ে দিয়েছে। সেগুলো আবার উল্টেপাল্টে দেখে মন্তব্যও পেশ করেছিল হাঁদারাম! ওয়ালেটে কয়েন রাখার পকেট নেই কেন, কলকাতার গরমে কেউ ফুলহাতা শার্ট কেন কেনে, টি-শার্ট মানেই কলার থাকা উচিত ইত্যাদি ইত্যাদি! তিতলি মুখ উল্টে বলেছিল, তা-ও তো সে কিনেছে, হাঁদারাম তো একটা পয়সাও উপুড়হস্ত করেনি! অমনই আবার মোবাইল ঘাঁটতে শুরু করেছিল!
নাঃ, ছোট পিসি একটু ক্যাটক্যাটে বটে, কিন্তু হক কথাই বলে! নিশ্চয়ই হাঁদারামের মন উড়ু-উড়ু করছে। নইলে অত মোবাইল দেখবে কেন? তা-ও আবার লুকিয়ে-লুকিয়ে…
রাগের চোটে তিতলি কথাটা বলেই ফেলে…
– অমন হাঁ করে সব সময় মোবাইলের দিকে তাকিয়ে কী দেখিস বল তো?
– হুঁ…
– হুঁ মানে? আজ আর ক’টা ঠাকুর দেখবি? আমি আর পারছি না, পায়ে বড্ড ব্যথা করছে…
– হুঁ…
– আবার, হুঁ…ঠিক আছে, আমি সারা রাত আজ ঠাকুর দেখব, তারপর প্রতি ঘণ্টায় তোর মাকে ছবি তুলে পাঠাব…
– হুঁ…
– সেই সঙ্গে তোর বাবাকেও, তা-ও তোকে জাপটে ধরে!
– হুঁ…
ঈশ্বর, আর নেওয়া যাচ্ছে না! তুমুল রেগে তিতলি হাঁদারামের হাত থেকে এক টানে ছিনিয়ে নেয় মোবাইলটা…আজ দেখতেই হবে, কে সে! যার সঙ্গে সেই মহালয়ার দিন থেকে কথা হয়েই চলেছে…
কিন্তু এবার তিতলির বেকুব হওয়ার পালা, হাঁদার মোবাইলে আমাজন-এর ইওর অর্ডারস খোলা, যেখানে একটা আই ফোন কেনার তোড়জোড় করছে সে! মানে, অর্ডার দেওয়া, কিন্তু একবার সেটা ফেরত পাঠিয়ে আবার কিনেছে!
– এ..এ..এ-এটার মানে কী?
– তুই সেই কলেজের ফেয়ারওয়েলের দিন আমাকে বলেছিলি না, যেদিন চাকরি পাবি, সেদিন আমাকে একটা আই ফোন কিনে দিবি, রোজ গোল্ড? বিশ্বাস কর, আমি গোলাপিই বলেছিলাম। ওরা বলেওছিল যে, মহালয়ার মধ্যেই এসে যাবে। এসেওছিল, কিন্তু রুপোলিটা! ওটা তো আবার তোর দু’ চক্ষের বিষ! তাই ফেরত পাঠিয়ে আবার…সেটারই ডেলিভারি স্টেটাস চেক করেই চলেছি…পার্সেলটা সেই কলকাতা ফেসিলিটিতেই আটকে আছে…নইলে তো…
আমতা-আমতা করে বলতে থাকে হাঁদারাম! তিতলির মনটা হঠাৎই খুব খুশি-খুশি হয়ে যায়! আর ও বেশ বুঝতে পারে, ছোট পিসিরাও অনেকসময় ঠিক কথাটা বলে না!
Featured Image: Pixabay
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এসে গেল #POPxoEverydayBeauty – POPxo Shop-এর স্কিন, বাথ, বডি এবং হেয়ার প্রোডাক্টস নিয়ে, যা ব্যবহার করা ১০০% সহজ, ব্যবহার করতে মজাও লাগবে আবার উপকারও পাবেন! এই নতুন লঞ্চ সেলিব্রেট করতে প্রি অর্ডারের উপর এখন পাবেন ২৫% ছাড়ও। সুতরাং দেরি না করে শিগগিরই ক্লিক করুন POPxo.com/beautyshop-এ এবার আপনার রোজকার বিউটি রুটিন POP আপ করুন এক ধাক্কায়…