লঙ্কার রাজা রাবণের অশোক কানন থেকে উদ্ধার করতে হবে সীতাকে। তারই প্রস্তুতি নিচ্ছেন রামচন্দ্র। কিন্তু রাবণকে বধ করা খুব একটা সহজ নয়। তিনি মহাজ্ঞানী, বীরযোদ্ধা। শিবের পরমভক্ত রাবণ। শিবের বর পেয়েছেন তিনি। নিজের শক্তি দ্বিগুণ করতে রামচন্দ্র বসলেন দেবী মহামায়ার স্তব করতে। কারণ দেবীর বর না পেলে তাঁর কার্যসিদ্ধি সম্ভব হবে না। (mythology behind sharodia durga and basanti puja)
কথিত আছে যে সময় রামচন্দ্র রাবণকে বধ করতে গেলেন তখন শরতকাল। এই সময় দেবতারা শয়ন করেন বা বিশ্রাম নেন। রামচন্দ্র দেখলেন মহাবিপদ। পুজো না করলেই নয়, এদিকে এই সময় আবাহন করলে দেবী আবার কুপিত না হন। যাইহোক সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে তিনি দেবীর আরাধনায় বসলেন। এদিকে দেবী দুর্গা দেখলেন এই সুযোগ। রামের সঙ্গে একটু মশকরা করা যাক। রামচন্দ্র দেবীকে তুষ্ট করার জন্য বেছে বেছে ১০৮ খানা নীল রঙের পদ্মফুল নিয়ে এসেছিলেন। সাজিয়ে গুছিয়ে দেবীকে দিচ্ছেন এমন সময় দুর্গা টুক করে একটা ফুল লুকিয়ে ফেললেন। এদিকে ফুল গুনতে গিয়ে রামচন্দ্র দেখলেন, কী বিপদ! ১০৮ নয়, রয়েছে ১০৭টি ফুল। তোলপাড় করে খুঁজেও সেই শেষ ফুলটি পাওয়া গেল না। উপায় না দেখে রামচন্দ্র নিজের একটি চোখ উপড়ে দিতে গেলেন। কারণ, তাঁর চোখ ছিল পদ্মের মতো সুন্দর। কিন্তু তাঁর আগেই দেবী আবির্ভূতা হলেন এবং রামের নিষ্ঠায় মুগ্ধ হলেন। দেবীর বরেই বধ হলেন রাবণ।
এই হল অকালবোধনের সেই চিরন্তন গল্প। যা আমরা যুগ যুগ ধরে শুনে আসছি। যে সময় পুজো করার কথা নয় সেই সময় পুজো হয়েছিল বলেই একে বলা হয় অকালবোধন। আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের এই পুজোকেই বাঙালি শারদীয়া দুর্গা পূজা বলে। (mythology behind sharodia durga and basanti puja)
পুরাণ কী কয়…
কালিকাপুরাণ ও বৃহদ্ধর্মপুরাণে এই অকালবোধনের উল্লেখ আছে। স্বয়ং ব্রহ্মা নাকি রামচন্দ্রকে সাহায্য করেছিলেন এই পুজো করতে। কৃত্তিবাসী রামায়ণেও এর উল্লেখ আছে যদিও রামায়ণের মূল রচয়িতা বাল্মিকি এই বিষয়ে কিছু বলেননি। বিশেষজ্ঞ পণ্ডিতরা বলছেন বৈদিক যজ্ঞের আধুনিক রূপ হল শরতকালে দেবী দুর্গার পুজো। আবার চৈত্র মাসে যে দুর্গা পুজো হয় সেটা হল বাসন্তী পুজো। ফাল্গুন ও চৈত্র এই দুই মাস নিয়ে হয় বসন্তকাল । তাই একে বাসন্তী পুজো বলা হয়।
বাসন্তী পুজোর গল্প
অকালবোধনের সঙ্গে যেমন রামচন্দ্রের নাম জড়িয়ে আছে ঠিক তেমনই বাসন্তী পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে সুরথ রাজার নাম। মার্কণ্ডেয় পুরাণে শ্রীশ্রী চণ্ডী গ্রন্থে বাসন্তী পুজোর উল্লেখ আছে। সেখানে বর্ণিত আছে এক কাহিনি। যা বলছে সত্য যুগে ছিলেন এক প্রবল পরাক্রমশালী রাজা যার নাম সুরথ। তিনি শত্রুদের চক্রান্তে সব হারিয়ে মেধস ঋষির আশ্রমে আসেন। সেখানে এক বৈশ্য মিত্রর সঙ্গে একযোগে তিনি দেবীর পুজো করেন। সেই পুজো হয় বসন্তকালে। অনেকেই এই পুজোকে প্রকৃত দুর্গা পুজো বলে অভিহিত করেছেন। তবে বর্তমানে বাসন্তী পুজো পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি বনেদি বাড়ির মধ্যেই আবদ্ধ আছে। (mythology behind sharodia durga and basanti puja)
POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!
বাড়িতে থেকেই অনায়াসে নতুন নতুন বিষয় শিখে ফেলুন। শেখার জন্য জয়েন করুন #POPxoLive, যেখানে আপনি সরাসরি আমাদের অনেক ট্যালেন্ডেট হোস্টের থেকে নতুন নতুন বিষয় চট করে শিখে ফেলতে পারবেন। POPxo App আজই ডাউনলোড করুন আর জীবনকে আরও একটু পপ আপ করে ফেলুন!