ভাইরাল (Viral)। এই শব্দটা জেন ওয়াইের ডেলি রুটিনের অঙ্গ। কখন, কোথা থেকে, কীভাবে, কে ভাইরাল হয়ে যাবেন, তার আগাম আঁচ পাওয়া ভারী মুশকিল! ধরুন, আপনার বাড়ির সামনে জল জমেছে একদিনের বৃষ্টিতে। আপনি নৌকোয় চড়ে বাজারে যাওয়ার ভিডিয়ো ছেড়ে দিন ফেসবুকে… হতে পারে পরের দিন থেকে আপনি ভাইরাল। আবার ধরুন, ছেলেকে স্কুলে স্যার খুব পিটিয়েছেন। সেই স্যারের একটা ভিডিয়ো বাইট দিন না সোশ্যাল ওয়ালে। ভাইরাল, ট্রোলিং এসবের গুঁতোয় পালানোর জায়গা পাবেন না স্যার। ফলে ভাইরাল হয়ে যাওয়াটা নেহাতই কপাল! আর সেই কপালের নাম গোপাল তখনই হয়, যখন ভাইরাল এলিমেন্ট লতাকণ্ঠী গায়িকা রানু মণ্ডল (Ranu)।
রানাঘাট স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে আপন মনে গান (Song) গাইতেন নোংরা পোশাক, উস্কোখুস্কো চুলের রানু। সেই গান বহুদিন শুনেছেন পথচলতি সাধারণ মানুষ। কিন্তু কোনও হেলদোল ছিল না কারও। হঠাৎই একদিন রানুর গানের ভিডিয়ো কেউ একজন সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন। দেখা যায়, লতা মঙ্গেশকরের গলার সঙ্গে কী আশ্চর্য মিল রানুর! অপূর্ব গায়কী তাঁর। ব্যস, আর যাবেন কোথায়? মুহূর্তে ভাইরাল রানু!
সেই ভাইরাল ভাইব ছড়িয়েছিল সুদূর মুম্বই পর্যন্ত। আরব সাগরের তীর থেকে শঙ্কর মহাদেবনও রানুর গানের ভিডিয়ো রিটুইট করেন। তার পরই বেশ কিছু চ্যানেলের তরফে নাকি রানুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর মেকওভার হয়। খুঁজে পাওয়া যায় রানুর পরিবারের সদস্যদের। হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস যেন ফিরে আসে। আর সবচেয়ে বড় কথা, লটারির টিকিট পাওয়ার মতো রানু পেয়ে যান নিজের গান রেকর্ড করার সুযোগ। কলকাতার একটি নামী পুজোর আয়োজকরা রানুকে দিয়ে এবছরের থিম সং গাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। সদ্য নিজের প্রথম গানটা রেকর্ডও করে ফেলেঠেন রানু!
প্রথমবার রেকর্ডিং স্টুডিয়োতে ঢুকে ঘাবড়ে গেলেও পরে নিজেকে সামলে নেন রানু। ভাল করেই রেকর্ড করেছেন তাঁর পুজোর গান। বাগুইহাটির একটি ক্লাবের পুজোকর্তারা রানুকে দিয়ে থিম সং গাওয়ানোটা চমক বলতে নারাজ। বরং এটা তাঁদের কাছে সামাজিক দায়বদ্ধতা। মূলত শুনে-শুনে গান তুলে নিতে অভ্যস্ত রানু। প্রথমবার খাতা দেখে কোনও গান তুললেন। প্রথম নার্ভাস থাকলেও পরে দক্ষতার সঙ্গেই গান রেকর্ড করেছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, এক সময় মুম্বইয়ের বাসিন্দা ছিলেন রানু। গান-বাজনার চর্চা করেছেন নিয়ম করে। তার পর বিয়ে, সন্তান…কিন্তু পারিবারিক সুখ বেশি দিন কপালে ছিল না তাঁঁর। স্বামী মারা যাওয়ার পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। রানাঘাটে এক আত্মীয়র বাড়িতে আশ্রয় নেন। কিন্তু গান তাঁকে ছেড়ে যায়নি। সেই গানের হাত ধরেই আজ ফের সুখ ফিরেছে জীবনে। রানুর মেয়েও দেখা করতে এসেছিলেন। দীর্ঘ কয়েক বছর মায়ের খোঁজ না রাখার জন্য নিজের ভুল স্বীকারও করে নেন তিনি।
রানুর সামনে এখন নতুন পথ। নতুন স্বপ্ন। শুধু কলকাতা নয়। মুম্বইয়ের বিভিন্ন জায়গা থেকেও নাকি ডাক এসেছে তাঁর। তিনি মুম্বই পাড়ি দেবেন। আর সেখানে গিয়ে লতা মঙ্গেশকরের পা ছুঁয়ে প্রণাম করাই এখন একমাত্র সাধ ভাইরাল রানুর!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!