একবিংশ শতাব্দী। লেখার শুরুতেই মনে হল, সময়টা একবার আমাদের সবারই মনে করা উচিত। এমন একটি সময় আমরা রয়েছি, যখন বিশ্ব উত্তর আধুনিক সময়ের চিন্তা করছে। সংস্কারমুক্ত হচ্ছে। জাতিবিদ্বেষ, বর্ণবিদ্বেষ, লিঙ্গ বৈষম্য, অসাম্য এইসবের উর্ধ্বে উঠে এক সুন্দর পৃথিবী গড়ার কথা ভাবছে। গত বছর কৃষ্ণাঙ্গ ব্য়ক্তি জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার পর আমেরিকার মানুষ প্রতিবাদের সুর তুলে রাস্তায় নেমেছিলেন। আশার আলো দেখেছিল পৃথিবী। সত্য়িই যেন আমরা বর্ণ বিদ্বেষ ছাপিয়ে এক অন্য পৃথিবীর স্বপ্ন দেখতে পেরেছি। হাথরসের তরুণির গণধর্ষণের প্রতিবাদেও সরব হয়েছিল ভারত। যেন সত্য়িই আমরা লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে।
এইসব দেখে বিশ্বাস করতেও ইচ্ছে করেছিল, আমরা সত্য়িই হয়তো অনেক অনেকটাই পাল্টে গিয়েছি। মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে নিজেদের পরামর্শ দিচ্ছি না। ত্বকের রং দিয়ে মানুষ বিচার করছি না। একজন পুরুষের মতো একজন নারীও সমান সম্মান পাচ্ছেন। কিন্তু না আমাদের এসব ধারণাই ভুল! আমাদের মধ্যে বর্ণবিদ্বেষ, জাতি বিদ্বেষ, নারী বিদ্বেষ, পিতৃতান্ত্রিক ধারণা এতটাই গভীর শিকড় বিস্তার করেছে যে, খুব সহজেই তা উপড়ে ফেলা সম্ভব নয়। তার প্রমাণ পেয়েছি বার বার এবং সম্প্রতিই (celebrity women faced at recent time)… আসুন দেখে নিই কোন কোন ঘটনার কথা বলছি আমি?
মন্দিরা বেদীর স্বামীর মৃত্য়ুতে শেষকৃত্য
That some people are still commenting on Mandira Bedi’s dress code or choice to carry out her husband Raj Kushal’s last rites shouldn’t surprise us. Stupidity is more abundant than any other element in our world after all ..
— Sona Mohapatra (@sonamohapatra) July 2, 2021
পিতৃতান্ত্রিক নিয়ম অনুযায়ী, পরিবারের কোনও সদস্যের মৃত্যু হলে তাঁর ছেলে বা ছেলের মতো কেউ থাকলে সেই শেষকৃত্য করে। যদিও এখন অনেক পরিবারই সেই নিয়ম ভেঙেছে। মৃতের কন্যা সন্তানও শেষকৃত্য করেন অনেক ক্ষেত্রে। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুতে স্ত্রী-কে শেষকৃত্য করতে দেখতে অভ্যস্ত নই আমরা। মন্দিরা বেদী সেই নিয়ম ভেঙেছেন। সম্প্রতি তাঁর স্বামী পরিচালক-প্রযোজক রাজ কৌশল চট্টোপাধ্যায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সেদিন ছবিতে দেখা যায়, স্বামীর শেষকৃত্যে রয়েছেন মন্দিরাই। তাঁর এই কাজ ও তাঁর পোশাকের জন্য নেটপাড়ায় অনেকেই তাঁকে ট্রোল করেন (celebrity women faced at recent time)। তাঁর এই কাজের সমালোচনা করেন। যদিও অনেকেই সেদিন মন্দিরার পাশে দাঁড়ান।
মা হওয়ার পর ওজন তুলনামূলক বাড়ে অভিনেত্রী শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের
তিনি যে মাতৃত্বকে উপভোগ করছেন, এই কথা ইউভানের জন্মের পর বার বার একাধিক জায়গায় বলেছেন শুভশ্রী। সম্প্রতি জনপ্রিয় একটি টিভি শো-এ এসে তিনি বলেছিলেন, তিনি একটি প্রাণের সৃষ্টি করেছেন। এটা তাঁর সবথেকে বড় পাওনা। আসলে আমাদের প্রত্যেকের কাছেই সাফল্য ও উপহারের সংজ্ঞাটা একটু বদলে যায়। শুভশ্রী মাতৃত্বকে সেই শ্রেষ্ঠ উপহার মনে করেছেন। মা হওয়ার পর স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর ওজন বাড়ে। এর জন্য শুভশ্রীকে একাধিকবার নেটিজেনদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। প্রায়ই তাঁকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ওজন নিয়ে কটাক্ষ শুনতে হয়। তার যথেষ্ট প্রতিবাদও করেন অভিনেত্রী। কিন্তু কেন শুনতে হবে বলতে পারেন? একজন অভিনেত্রীর শেষ পরিচয় কি তাঁর শরীরের গঠন ও গড়ন? তিনি একজন রক্ত মাংসের মানুষ (celebrity women faced at recent time)। তাঁর শরীরে পরিবর্তন আসাই স্বাভাবিক। সেই নিয়ে অন্য়ের মতামত শুনবেন কেন তিনি?
শ্যাম বর্ণা শ্রুতি দাসকে একের পর এক কটাক্ষ
মানুষের ত্বকের রং দিয়ে তাঁদের বিচার করার প্রবণতা আদিম। কিন্তু সেই বর্ণ বিদ্বেষ যে এখনও আমাদের মন থেকে যায়নি তা বোঝা যায়নি। ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি গ্লো অ্যান্ড লাভলি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু শ্যামবর্ণ মানেই অসুন্দর, এই ধারণা চলে যায়নি। তাই অভিনেত্রী শ্রুতি দাসকে বার বার কটাক্ষ শুনতে হয়েছে। কেন তাঁকে ধারাবাহিকে কাস্ট করা হল? তাঁকে দেখতে ইচ্ছে করে না, এই জাতীয় কথা বার বার উঠে এসেছে নেটিজেনদের মধ্যে থেকে। সম্প্রতি একটি ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ করেছেন শ্রুতি।
নুসরত জাহানের আসন্ন সন্তান নিয়ে মাথা ব্যথা
যদিও নুসরত তাঁর গর্ভাবস্থা নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করেননি। কিন্তু বিভিন্ন মিডিয়া এই নিয়ে বিভিন্ন তথ্য সম্প্রচার হয়েই চলেছে। সম্প্রতি একটি ছবিতে নুসরতের ‘বেবি বাম্প’ নাকি নজরে আসে, সেই ছবিও প্রকাশ করে মেনস্ট্রিম মিডিয়ায়। নুসরতের সন্তানের পিতৃপরিচয় কী? সেই নিয়ে সালিশী সভা বসিয়ে দিয়েছেন নেটাগরিকরা।
সাম্প্রতিক নয়, কিন্তু লজ্জার! রিয়া চক্রবর্তী
অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে রিয়া চক্রবর্তীকেই আসল অপরাধী বলে মনে করে নিয়েছিলেন অনেকে। এই ক্ষেত্রে মেনস্ট্রিম মিডিয়ার ভূমিকাও ছিল। রিয়ার বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ার পরেও তাঁকে নানা রকম ভাবে হেনস্থা পোহাতে হয়েছে। রিয়ার হেনস্থায় আমাদের প্রত্যেকের লজ্জা পাওয়া উচিত (celebrity women faced at recent time)! ভাবা উচিত, কোন সময়ে বাস করছি আমরা।
নীনা গুপ্তার পোশাক নিয়ে কটাক্ষ
সম্প্রতি নীনা গুপ্তার আত্মজীবনী ‘সাচ কহু তো’ প্রকাশ পেয়েছে। সেই বই নিয়েই গুলজারের কাছে গিয়েছিলেন নীনা। কিন্তু ‘এই বয়সেও’ গুলজারের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় কেন শর্টস পরে গেলেন? সেই নিয়ে হাজারও কটাক্ষ শুনতে হয় নীনাকে (celebrity women faced at recent time)।
POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!
বাড়িতে থেকেই অনায়াসে নতুন নতুন বিষয় শিখে ফেলুন। শেখার জন্য জয়েন করুন #POPxoLive, যেখানে আপনি সরাসরি আমাদের অনেক ট্যালেন্ডেট হোস্টের থেকে নতুন নতুন বিষয় চট করে শিখে ফেলতে পারবেন। POPxo App আজই ডাউনলোড করুন আর জীবনকে আরও একটু পপ আপ করে ফেলুন!