প্রেমের বিয়েই হোক কি দেখাশোনা করে ঠিকুজি মিলিয়েই বিয়ে হোক, বিয়ে বাড়িতে ফিসফাস, টুকটাক মন্তব্য হয়না, এমন বিয়েবাড়ি খুঁজে পাওয়া ভার। সব বিয়েরই কিছু রীতি রেওয়াজ থাকে। এই ধরুন আমাদের বাঙালি বিয়েতে যেমন সপ্তপদী বা জল সইতে যাওয়া। আবার অন্য প্রদেশের বিয়েতে আছে সঙ্গীত বা জুতো চুরি করার মতো প্রথা। অবশ্য বাঙালি এখন ‘গ্লোকাল’ হয়ে গেছে। তাই বাঙালি বিয়েতেও আকচার এইসব সঙ্গীত বা মেহেন্দি এখন দেখা যায়। পাল্টে গেছে অনেক কিছুই। যেটা পাল্টায়নি সেটা হল... ওই যে বললাম হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা কিছু কথা। সেগুলো শুনলে এখন আপনার হাসি পেতেই পারে কিন্তু এটাই রীতি। কি ধরণের কথা বলুন তো? বিয়েবাড়ি গেলেই কোন ধরণের কথা আমরা শুনবই শুনব? আসুন আজ সেটাই দেখে নেওয়া যাক।
বহু শাশুড়ি (Mother-In-Law) মানে ছেলের মা গোমড়া মুখ করে এ কথা বলে থাকেন।না ব্যাকরণগত ভুল যা থাকার সেতো আছেই। মোদ্দা কথা হল বউ যতই সুন্দরী বা শিক্ষিত হোক না কেন, ভালোবেসে বিয়ে করলে মার মনে টুং করে একটু লাগে। আহা তার বড় সাধ ছিল যে নিজে পছন্দ করে বউ আনবেন!
এটাও যাকে বলে টিপিক্যাল শাশুড়ি ব্রিগেডের কথা। সব মায়েরই মনে হয় বিয়ের পর ছেলে কোল ছাড়া হয়ে গেল। এতদিন তিনি খাইয়ে পরিয়ে ছেলেকে লালন পালন করেছেন। এখন একটু রদবদল হলে খারাপ তো লাগবেই। এই কথা আত্মীয়স্বজনদের কাছে ফ্যাচফোচ করে কেঁদে বলেননি, এমন শাশুড়ি একটা খুঁজে দেখান দেখি।
ছেলের মা এত কথা বললে মেয়ের মাই বা চুপ থাকেন কেন? পাড়া প্রতিবেশী থেকে শুরু করে আত্মীয়স্বজন সবার কাছে ফলাও করে তিনি বলে বেড়াবেন ‘হীরের টুকরো’ জামাই (Son-In-Law) পেয়েছেন। তার ওপর যদি সেই বিয়ে দেখাশোনা করে হয় তাহলে তো কথাই নেই। মেয়ের মাকে তখন আর পায় কে? তিনি শতমুখে বলে বেড়াবেন তার মেয়ে প্রেম-ট্রেম করার ধার ধারে না। এই ছেলে তাদের নিজেদের আবিষ্কার।
মেয়ের বাবা-মার কাছে এ বড় গর্বের বিষয়। ‘ইংরেজ ভারত ছাড়ো’ বললেই তো হল না। ইংরেজ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেও তাদের ভাষা এবং সাদা চামড়ার প্রতি আকর্ষণ আমরা মোটেও ছেড়ে দিয়নি। জামাই যদি আমেরিকাবাসী বা বিলেত ফেরত হয় তাহলে মেয়ের বাবা মার মুখে হাসি আর ধরে না। তারা বলবেন জামাই ‘এনআরআই’ (NRI) সে ‘স্টেটস’-এ থাকে বা ইউরোপে থাকে। আর কিছুদিনের মধ্যে মেয়েও হুস করে সোজা সাগর পারের দেশ আমেরিকা (America) বা ইউরোপ!
নিন্দুকেরা খাইতে পায়না বলে... বুঝতেই পারছেন মিয়াঁ বিবি (Couple) আর তার পরিবার বাদ দিয়ে এরা হলেন থার্ড পার্টি। তাই বলে এদের হেলাফেলা করবেন না। যে কোনও বিয়ের আসরে এদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। জগাছার রাঙামাসি হোক কি খড়দার ঢ্যাঙাপিসে। বিয়েবাড়ি শুরু হওয়ার দুদিন আগেই এনারা এসে হাজির হন।
বিয়েবাড়ি ও বউভাতের খাবারে। লাখটাকা খরচ করে খাওয়ালেও এরা বলবেন...মাংস নরম হয়নি বা তরকারিতে নুন কম।
এরা বলবেনই বলবেন এই মেয়ের আরও ভালো বর বা এই ছেলের আরও ভালো বউ হতে পারত।
ইহজীবনে কোনওদিন এদের নমস্কারির শাড়ি বা ছেলে কি মেয়ের বাড়ি থেকে আসা তত্ত্বের জিনিস পছন্দ হয়না।
আপনার সামনে বিয়ে বুঝি? এসব কথা গুলি মারুন। জব মিয়াঁ বিবি রাজি তো...বাকি সব গোল্লায় যাক! কি
বলুন?
ছবি সৌজন্যঃ ফেসবুক
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এগুলোও আপনি পড়তে পারেন