শীতের সবই ভাল কিন্তু একটাই সমস্যা। ত্বক-চুল শুষ্ক হতে শুরু করে। আর বাড়তে থাকে খুসকির (dandruff) সমস্যা। আর যাঁদের সারা বছরই রুক্ষ চুলের (dry hair) সমস্যা, তাঁরা তো এই মরসুমে পড়েন মহাফাঁপরে। তার উপর রোজই অফিস বেরোতে হচ্ছো। ফলে রাস্তাঘাটেও ধোঁয়া-ধুলো প্রাণহীন হয়ে পড়ে চুল। একে তো সময়ের অভাব, তার উপর আবার দূষণের চোখরাঙানি! যার জেরে চুলের অবস্থাও তথৈবচ। অথচ ত্বকের মতোই চুলের যত্ন নেওয়াটাও অত্যন্ত জরুরি। কারণ চুল ভাল থাকলে সৌন্দর্য আরও দ্বিগুণ বেড়ে যায়। তা হলে কর্মব্যস্ত জীবন সামলে কী ভাবে নেবেন শুষ্ক চুলের (dry hair) যত্ন? আসুন জেনে নিই ঘরোয়া পদ্ধতিতে শুষ্ক চুলের যত্ন নেওয়ার উপায় গুলো।
আরও পড়ুনঃ শীতকালে কোন ত্বকে কী ফেসপ্যাক লাগে
সপ্তাহে দু’-তিন দিন শ্যাম্পু (shampoo)
এক দিন অন্তর শ্যাম্পু দিয়ে স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখতে হবে। কারণ চুলের গোড়ায় ময়লা জমতে থাকলেই মুশকিল। বাড়বে খুসকির সমস্যাও। তাই স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখাটা খুবই জরুরি।
অয়েল মাসাজ (oil massage)
শ্যাম্পু করার আগে চুলে ভাল করে অলিভ অয়েল মাসাজ করতে হবে। এ ছাড়াও নারকেল তেল, জোজোবা অয়েল, ক্যাস্টর অয়েলও খুব উপকারী। কারণ এই তেলগুলোর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ই আর অ্য়ান্টিঅক্সিড্যান্টস। প্রথমে একটা পাত্রে তেল নিয়ে সামান্য গরম করে নিতে হবে। এর পর কয়েক মিনিট ধরে হালকা হাতে চুলে ওই গরম তেল মাসাজ করতে হবে। এর পর ইষদুষ্ণ (lukewarm) গরম জলে চোবানো একটি তোয়ালে দিয়ে কিছুক্ষণ চুল জড়িয়ে রাখতে হবে। ৩০-৪০ মিনিট পরে ভাল করে শ্যাম্পু করে নিতে হবে। আর চুলে তেল মাসাজ করে সারা রাত রেখে দিয়েও পরের দিন শ্যাম্পু করে নেওয়া যাবে।
নারকেল তেল (coconut oil)-কারি পাতা
নারকেল তেল চুলের জন্য খুবই উপকারী। নারকেল তেল দিয়ে বানানো ন্যাচারাল হেয়ার মাস্ক রুক্ষ চুলকে (dry hair) সতেজ করে তোলে। নারকেল তেলের মধ্যে কয়েকটা কারি পাতা ফেলে দিয়ে ২-৩ মিনিট ধরে ফুটিয়ে নিতে হবে। এর পর কয়েক দিন ওই মিশ্রণটাকে ঠান্ডা করার জন্য এক জায়গায় রেখে দিতে হবে। ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার পরে সেটি ব্যবহার করা যাবে। চুলে হালকা হাতে মাসাজ করতে হবে। এর পর ইষদুষ্ণ (lukewarm) জলে চোবানো তোয়ালে দিয়ে মাথা জড়িয়ে রাখতে হবে। কিছুক্ষণ রেখে দেওয়ার পরে ভাল করে শ্যাম্পু করে নিতে হবে।
ডিম-অলিভ অয়েল (egg-olive oil)
শুষ্ক চুলের (dry hair) যত্ন নিতে ডিমের জুড়ি মেলা ভার। কারণ ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন (protein), যা চুলের গোড়াকে মজবুত করে। প্রথমে একটি বড় বাটিতে তিনটে ডিম ফাটিয়ে নিতে হবে। এর পর ২ চা-চামচ অলিভ অয়েল আর এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে নিতে হবে। ওই মিশ্রণটি তৈরি হয়ে গেলে চুলে ও স্ক্যাল্পে মাসাজ করতে হবে। একটি শাওয়ার ক্যাপ আটকে ৩০ মিনিট রাখতে হবে। তার পরে শ্যাম্পু দিয়ে ঠান্ডা জলে চুল ধুয়ে নিতে হবে।
টক দই (curd)
রুক্ষ চুলের (dry hair) জন্য টক দইও খুব উপকারী। আধ কাপ দইয়ের মধ্যে ২ চা-চামচ অলিভ অয়েল আর ৬ ফোঁটা এসেন্সিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিতে হবে। এর পর শ্যাম্পু করা চুলে ওই মিশ্রণটা মাসাজ করে নিতে হবে। মাসাজ করার পরে একটা শাওয়ার ক্যাপ জড়িয়ে রাখতে হবে। এর ১৫-২০ মিনিট পরে ইষদুষ্ণ (lukewarm) জলে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।
পাকা কলা-মধু(banana-honey)
কলা শুষ্ক চুলের ভাল কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। একটা পাকা কলার সঙ্গে এক চা-চামচ মধু, আধ চা-চামচ দুধের সর ও এক চা-চামচ আমন্ড অয়েল মিশিয়ে একটা প্যাক বানিয়ে নিতে হবে। পুরো চুলে লাগিয়ে এক ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এর পর চুল ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে।
আমলা-মেথি-শিকাকাই
শুষ্ক চুলের (dry hair) যত্ন নিতে আমলকি, মেথি, শিকাকাইও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগের দিন রাতে ওগুলো জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। তার পরের দিন সকালে একটি মিশ্রণ বানিয়ে চুলে লাগাতে হবে। এ ভাবে এক ঘণ্টা রাখার পরে শ্যাম্পু করে নিতে হবে।
এ সব তো গেল ঘরোয়া উপায়ে চুলের যত্ন (care)! কিন্তু এ ভাবে বাইরে থেকেই শুধু যত্ন নিলে চলবে না। চুলকে (dry hair) প্রাণবন্ত করে তুলতে স্বাস্থ্যকর খাবার (healthy food) খেতে হবে। সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে জলও খেতে হবে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি এবং বাংলাতেও!
এগুলোও আপনি পড়তে পারেন