এক সময় এমন চল ছিল বটে। কিন্তু এখন আর কোনও বাড়িতেই মাটিতে বসে খাওয়ার রেওয়াজ নেই। আর ঠিক এই কারণেই কিন্তু একাধিক শারীরিক সমস্যার দাপাদাপি এত বেড়েছে!
আসলে মাটিতে, বাবু হয়ে বসে খাওয়ার সময় আমাদের শরীরের ভিতরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে বেশ কিছু উপকার মেলে। যেমন ধরো...
মাটিতে বসা মানে আসলে পদ্মাসনে বসা। আর এই আসনটির উপকারিতা সম্পর্কে নিশ্চয় আর আলাদা করে বলে দিতে হবে না! তবু জানিয়ে রাখি মাটিতে বসে খাবার খাওয়ার সময় আমরা কম-বেশি ১০-১৫ মিনিট পদ্মাসনে বসে থাকি। ফলে স্পাইনাল কর্ডের নিচের অংশের ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। আর এমনটা হওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই কোমরের যন্ত্রণা কমতে তো সময় লাগেই না, সেই সঙ্গে শরীরের নিচের অংশের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
মাটিতে বসে খাওয়ার সময় (eating on the floor) আমাদের বারে বারে সামনে-পিছনে যেতে হয়, যে কারণে বিশেষ কিছু পাচক রসের ক্ষরণ যায় বেড়ে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে বদহজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যাও যায় কমে।
দিনের পর দিন পদ্মাসনে বসে খাবার খেলে (health benefits of sitting on the floor) কোমর, পেলভিস এবং তলপেটের আশেপাশের অংশের ক্ষমতা তো বাড়েই, সেই সঙ্গে দেহের নিচের অংশের গুরুত্বপূর্ণ পেশীগুলির ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। ফলে সার্বিকভাবেই শরীর খুব নমনীয় বা ফ্ল্যাক্সিবল হয়ে ওঠে।
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে মাটিতে বসার অভ্যাস করলে শিরদাঁড়া সোজা থাকে। সেই সঙ্গে স্পাইনাল কর্ডের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে দেহের গঠন যেমন ঠিক থাকে, তেমনি পিঠ, কোমর এবং কাঁধের যন্ত্রণা কমতেও সময় লাগে না। এই কারণেই তো যারা সারাদিন চেয়ারে বসে কাজ করে, তাদের সুযোগ পেলেই মাটিতে বসে খাওয়া উচিত।
বেশ কিছু গবেষণা অনুসারে পা দুটো ভাঁজ করে মাটিতে বসা শুরু করলে নাকি সারা শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি হার্টের ক্ষমতা বাড়ে চোখে পরার মতো। আর এমনটা হলে স্বাভাবিকভাবেই যে কোন ধরনের হার্টের রোগ ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না, তা তো বলাই বাহুল্য!
একেবারে ঠিক শুনেছো বন্ধু! মাটিতে বসে খেলে বাস্তবিকই স্ট্রেস লেভেল কমতে সময় লাগে না। আসলে পদ্মাসনে থাকাকালীন আমাদের শরীরের ভিতরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে স্ট্রেস লেভেল তো কমেই, সেই সঙ্গে নার্ভের ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, হজম ক্ষমতারও উন্নতি ঘটে চোখে পরার মতো!
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে চেয়ার-টেবিলে বসে খেলে ভেগাস নার্ভ (vagus nerve) ব্রেনে ঠিক মতো সিগনাল পাঠাতে পারে না। ফলে কখন যে পেট ভরেছে, তা বুঝতেই পারা যায় না। আর এমনটা হওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই বেশি মাত্রায় খাওয়া হয়ে যায়। ফলে ওজন বাড়তে সময় লাগে না। কিন্তু মাটিতে বসে খেলে একেবারে উল্টো ঘটনা ঘটে। এক্ষেত্রে পেট ভরা মাত্র এই বিশেষ নার্ভটি মস্তিষ্কে খবর পাঠিয়ে দেয়। ফলে সঙ্গে সঙ্গে খাবার ইচ্ছা চলে যায়। আর দিনের পর দিন নির্দিষ্ট পরিমাণ খাওয়ার কারণে ওজনও আর বিপদ সীমা পেরতে পারে না।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!