পাহাড়ের একটা আলাদা “চার্ম” আছে বটে। কিন্তু ভ্রমণ পিপাসুদের পক্ষে সমুদ্রের মাদকতাকে উপেক্ষা করাও সম্ভব নয়! কারণ আমরা এমন একটা দেশে থাকি, যার তিন দিকই জলে ঘেরা। উপরন্তু এ দেশের প্রায় প্রতিটি সমুদ্র সৈকতের (beaches in india) সৌন্দর্য বাস্তবিকই মন কাড়া! তাই তো বলি বন্ধু, যদি ভ্রমণ রসিক হয়ে থাকো, তাহলে এ জীবনে একবার অন্তত এই লেখায় আলোচিত ৩ টি সমুদ্র সৈকতে (list of top 3 beaches in india) ঘুরতে যেতে ভুলো না যেন! কারণ ভারতের দক্ষিণ এবং পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত এই সি বিচগুলির প্রাকৃতিক শোভা এতটাই অপূর্ব যে পৌঁছানো মাত্র প্রকৃতিক কোলে হারিয়ে যেতে মন চাইবে। সেই সঙ্গে শহুরে জীবনের সব স্ট্রেস নিমেষে ফুরুৎ করে উড়ে যাবে! ফলে মন ভরে উঠবে অফুরন্ত আনন্দে।
তাহলে হে ভ্রমণ রসিক অপেক্ষা কিসের! ঝটপট পড়ে ফেলো প্রবন্ধটা আর গুছিয়ে ফেলো ব্যাগ প্যাক! প্রথম ডেস্টিনেশেন হল….
১. ভারকলা বিচ, কেরালা:
হলুদ বালিয়াড়ির বুকে পাহাড় এবং সমুদ্রের এক অপূর্ব প্রেমের নিদর্শন হল এই সমুদ্র সৈকত। তাই তো এখানে যখন স্নান করবে, তখন সবুজে ঢাকা পাহাড় তোমাকে ঘিরে রাখবে। আর সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য তো এক কথায় অসাধারণ! উপরন্তু স্নান করতে করতে যদি খিদে পেয়ে যায়, তাহলে হাতের কাছে যেমন পেয়ে যাবে হরেক স্বাদের খাবার, তেমনি গলা ভেজাতে কম পয়সায় মিলবে নারকেলও। শুধু তাই নয়, ভারকালা বিচে রয়েছে একাধিক মাসাজ সেন্টার, যার একটায় পৌঁছে গেলেই উপভোগ করতে পারবে কেরালার বিখ্যাত বডি মাসাজ।
কীভাবে যাবে: এই বিচটি কেরালার ত্রিবান্দ্রামে অবস্থিত। হাওড়া থেকে একাধিক ট্রেন ত্রিবান্দ্রাম পর্যন্ত যায়। আর সেখান থেকে ভারকালা বিচ (beaches) পৌঁছাতে সময় লাগবে কমবেশি এক থেকে দেড় ঘন্টা। ইচ্ছা হলে বাসে যেতে পারো। আবার গাড়ি ভাড়াও করতে পারো। তবে প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া নিলে খরচ পড়বে ১৭০০-২৪৭১ টাকা।
২. পালোলেম বিচ, গোয়া:
শহুরে জীবন থেকে কয়েক দিন ছুটি নিয়ে একটু বিশ্রামের ইচ্ছা যদি থাকে, তাহলে পালোলেম বিচে যাওয়া চাইই চাই! কারণ ভারতের তো বটেই, এমনকি গোয়ার (goa beaches) সবকটি সমুদ্র সৈকতের মধ্যে সবথেকে সুন্দর হল এই বিচটি। আর কেন হবে নাই বা বলো! নীল জলকে সঙ্গী করে বেড়ে ওঠা এই অর্ধগোলাকার বিচটিকে ঘিরে রয়েছে নারকেলের বন। তাই তো নীল জল, হালকা হলুদ বালি আর সবুজের মেল বন্ধনে এক অপরূপ রঙের প্যালেট সৃষ্টি করেছে প্রকৃতি, যা উপভোগ করতে করতে যেমন সমুদ্রে স্নান করতে পারো, তেমনি অংশ নিতে পারো নানান অ্যাডভেঞ্চার অ্যাকটিভিটিতেও। সেই সঙ্গে এই সমুদ্র সৈকতের নাইট লাইফ তো উপরি পাওনা।
কীভাবে যাবে: হাওড়া থেকে অমরাবতী এক্সপ্রেসে ভাস্কো-দা-গামা স্টেশন পর্যন্ত গিয়ে সেখান থেকে গাড়িতে পৌঁছে যেতে পারো এই সমুদ্র সৈকতে। তবে ট্রেনে এলে কলকাতা থেকে গোয়া পৌঁছাতে সময় লাগবে তিন দিন। তাই একটু আগে থেকে যদি প্লেনের টিকিট কেটে ফেলতে পারো, তাহলে খরচ কম হবে। আর দিনের দিন পৌঁছেও যেতে পারবে। প্রসঙ্গত, পানাজি এয়ারপোর্ট থেকে পালোলেম বিচ পৌঁছাতে সময় লাগবে এক ঘন্টা চল্লিশ মিনিট। ভাড়া গাড়ি নিলে খরচ পড়বে ১৮০০-১৯০০ টাকার মধ্যে।
৩. রাধানগর বিচ, আন্দামান:
আন্দামানের হ্যাভলক দ্বীপে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকতটি সারা বিশ্বের সবথেকে সুন্দর ৭ টি সিবিচের অন্যতম। আর কেন হবে নাই বা বলো! হালকা হলুদ বালি আর নীল জলকে ঘিরে রয়েছে ঘন সবুজ বনানী, যা এক কথায় অসাধারণ! তাই তো বলি বন্ধু, এ জীবনে একবার এই সমুদ্র সৈকতে না এলে কিন্তু ভুল করবে। তবে আরেকটা কারণে রাধানগর বিচে যাওয়া মাস্ট! আর তা হল নীল জলে শরীর ভিজিয়ে এখানকার সূর্যাস্ত দেখার অভিজ্ঞতা সত্যিই না ভোলা স্বপ্নের মতো।
কীভাবে যাবে: প্রতিদিন কলকাতা থেকে কমবেশি প্রায় ৩০ টা ফ্লাইট যায় আন্দামানের রাজধানী পোর্টব্লেয়ার পর্যন্ত। সেখানে থেকে সরকারি বোর্ট নিয়ে পৌঁছে যেতে পারবে হ্যাভলক আইল্যান্ড। তারপর ৭০০ টাকায় একটা স্কুটি ভাড়া নিয়ে আধ ঘন্টাতেই হ্যাভলক জেটি থেকে রাধানগর বিচ পৌঁছে যাওয়া সম্ভব। প্রসঙ্গত, আন্দামানের যেখানেই যাও না কেন সঙ্গে ভোটার কার্ড রাখতে ভুলো না যেন! কারণ এখানে যে কোনও টিকিট কাটতেই এই পরিচয় পত্রটির প্রয়োজন পড়়ে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!