গত কয়েক বছরে গ্রিন কফি (green coffee) বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। আর কেন করবে নাই বা বলো! শরীরকে (Health) সুস্থ রাখতে এই পানীয়টি যে নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। বিশেষত, এই প্রাকৃতিক উপাদানটিতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান এবং ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড (chlorogenic acid) শরীরে প্রবেশ করা মাত্র এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে, তার প্রভাবে একদিকে যেমন ওজন কমতে শুরু করে, তেমনি আরও অনেক উপকার মেলে, যে সম্পর্কে এই প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে (green coffee benefits)। কিন্তু প্রশ্ন হল গ্রিন কফি জিনিসটা ঠিক কী?
কফি গাছ থেকে কফি বিনস সংগ্রহ করার পরে তা রোস্ট করে পাউডার বানিয়ে বাজারে বিক্রি করা হয়, যার রং হয় বাদামী। সাধারণত আমরা এই ধরনের কফিই খেয়ে থাকি। কিন্তু গ্রিন কফি হল সেই কফি, যা কফি বিনসকে রোস্ট না করে বানানো হয়। আর রোস্ট না করার কারণে গ্রিন কফি বিনসের শরীরে উপস্থিত পুষ্টিকর উপাদানগুলির কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। তাই তো এমন কফি খাওয়া শুরু করলে একাধিক শারীরিক উপকার পাওয়া যায়, যেমন ধরো…
১. অতিরিক্ত মেদ ঝরে যেতে সময় লাগে না:
গ্রিন কফিতে উপস্থিত ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড শরীরে প্রবেশ করা মাত্র মেটাবলিক রেট প্রায় ৩-১১ শতাংশ বেড়ে যায়। আর হজম ক্ষমতা বাড়ার কারণে স্বাভাবিকভবেই অতিরিক্ত মেদ ঝরে যেতে সময় লাগে না। তাই তো বলি, ওবেসিটির কারণে যদি চিন্তায় থাকো, তাহলে এক্সারসাইজ করার পাশাপাশি নিয়মিত গ্রিন কফি খেতে ভুলো না যেন! তবে কী পরিমাণে এই পানীয়টি পান করা উচিত, সে সম্পর্কে একবার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে হবে।
২. ডায়াবেটিসের মতো রোগ দূরে থাকে:
পরিবারে এই মারণ রোগের ইতিহাস আছে? তাহলে তো রোজের ডায়েটে গ্রিন কফিকে জায়গা করে দিতেই হবে। আসলে এই কফি বিনসের শরীরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড, যা রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ডায়াবেটিসের মতো রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না।
৩. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে:
গত কয়েক বছরে আমাদের দেশের যুব সমাজের মধ্যে এই মারণ রোগের প্রকোপ চোখে পড়ার মতো বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই তো এমন পরিস্থিতিতে নিয়মিত গ্রিন কফি পানের প্রয়োজনও বেড়েছে। কারণ এই প্রাকৃতিক উপাদানটির শরীরে উপস্থিত নানাবিধ উপকারী উপাদানের কারণে “আর্টারিয়াল ইলাস্টিসিটি”এর উন্নতি ঘটে, যে কারণে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে।
৪. শরীর বিষ মুক্ত হয়:
বিশেষজ্ঞদের মতে নিয়মিত গ্রিন কফি পান করা শুরু করলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে দেহের ইতি-উতি জমে থাকা টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যায়। ফলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে।
এক্ষেত্রে আরেকটা জিনিস জেনে রাখাও উচিত, তা হল গ্রিন কফিতে উপস্থিত নানাবিধ পুষ্টিকর উপাদান শরীরকে বিষ মুক্ত করার পাশাপাশি লিভারকে সুস্থ রাখতে এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
কীভাবে বানাবে গ্রিন কফি (how to make green coffee)?
একটা পাত্রে দেড় চামচ গ্রিন কফি বিনস নিয়ে তাতে ২ কাপ জল মিশিয়ে কম করে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নাও। সময় হয়ে গেলে আঁচটা বন্ধ করে জলটা ছেঁকে নিয়ে পান করো।
গ্রিন কফি বিনস দুবার ব্যবহার করা যেতে পারে। তাই প্রথমবার ব্যবহার করার পরে বিনসগুলি একটি এয়ার টাইট পাত্রে রেখে দাও পরের বারের জন্য। তবে দুবারের বেশি ব্য়বহার করা চলবে না।
গ্রিন কফির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া:
একথা ঠিক যে একাধিক রোগকে দূরে রাখতে গ্রিন কফি নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু ভুলেও বেশি মাত্রায় পান করা চলবে না। কারণ মাত্রাতিরিক্ত হারে গ্রিন কপি খেলে মাথা ঘোরা, বারে বারে বমি হওয়া, ডায়ারিয়া এবং শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা যেতে পারে। তাই সাবধান! বিশেষত গর্ভবতী মহিলাদের এমন কফি পান না করাই শ্রেয়।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!