আমাদের ভারতীয় সমাজের পারিবারিক কাঠামো যেভাবে তৈরি ছিল, মানে পুরনো নিয়ম অনুযায়ী একান্নবর্তী পরিবার ছিল এর অন্যতম ভিত। একটা বাড়িতে, সে যতই ছোট বা বড় হোক না কেন, বাবা-মা, ছেলে-মেয়ে, দাদু-ঠাকুরমার (Grandparents) সঙ্গে একই ছাদের নীচে থাকত। এখন সময় অনেক পাল্টে গেছে। একান্নবর্তী পরিবার আর প্রায় চোখেই পড়ে না। এখন চল হয়েছে নিউক্লিয়ার পরিবারের। যেখানে একটা ছোট ফ্ল্যাটে বাবা মায়ের সঙ্গেই ছেলেমেয়েরা থাকে, আর দাদু-ঠাকুরমার (Grandparents) বাড়ি হয়তো অন্য শহরে বা একই শহরে অন্য বাড়িতে থাকেন। কর্মসূত্রে যাঁরা অন্য শহরে থাকেন, তাঁদের ছেলেমেয়েরাও দাদু-ঠাকুরমার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পায় না। এমনটা হওয়া মোটেও স্বাভাবিক নয়। কারণ, পুরনো চাল ভাতে বাড়ে!দাদু ঠাকুরমার ভালবাসা আমাদের পাথেয়। অর্থাৎ আমাদের জীবনে দাদু-ঠাকুরমার প্রয়োজনীয়তা (Importance Of Grandparents In Bengali) বা গুরুত্ব অপরিসীম। এই লেখায় সেই বিষয়েই আলোচনা করছি আমরা।
Table of Contents
- দাদু-ঠাকুরমার সাহচর্যে বড় হওয়ার উপকারিতা কী-কী (Benefits Of Grandparents Raising Grandchildren):
- সংসারে দাদু-ঠাকুরমা থাকার উপযোগিতা কী-কী (The Role Of Grandparents In The Family):
- বাড়িতে দাদু-ঠাকুরমা না থাকলে কী-কী অসুবিধের আশঙ্কা থাকে (Problems Without Grandparents):
- দাদু-ঠাকুরমার প্রতি আমাদের কী-কী কর্তব্য আছে (Our Duty Towards Our Grandparents):
- বাবা-মায়েদের জন্য তাঁদের ছেলেমেয়েদের জীবনে দাদু-ঠাকুরমার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর (FAQs):
সংসারে দাদু-ঠাকুরমা থাকার উপযোগিতা কী-কী
বাড়িতে দাদু-ঠাকুরমা না থাকলে কী-কী অসুবিধের আশঙ্কা থাকে
দাদু-ঠাকুরমার প্রতি আমাদের কী-কী কর্তব্য আছে
জীবনে দাদু-ঠাকুরমার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর
দাদু-ঠাকুরমার সাহচর্যে বড় হওয়ার উপকারিতা কী-কী (Benefits Of Grandparents Raising Grandchildren):
দাদু-ঠাকুরমার সাহচর্যে যে সব নাতি নাতনিরা থাকে, তারা যে অন্যদের চেয়ে আলাদা হয়, বা তারা জীবনে বিশেষরূপে সফল হয়, তা কিন্তু নয়। তবে জীবন শুধু সাফল্যের মাপকাঠিতে মাপলে চলে না। জীবনের কিছু মানবিক দিকও থাকে। আর এইটুকুর জন্যই দাদু-ঠাকুরমার সাহচর্য বিশেষভাবে প্রয়োজন। কী-কী কারণে দাদু ঠাকুরমার সাহচর্য (Importance Of Grandparents) আমাদের প্রয়োজন, সেটা দেখে নেওয়া যাক।
১। স্নেহ ও ভালবাসা
মা-বাবার কাছ থেকে আমরা যে ভালবাসা ও স্নেহ পাই, দাদু-ঠাকুরমার কাছ থেকে তার চেয়ে অনেক বেশি ভালবাসা ও স্নেহ পাই। এমনিতেই বাংলায় প্রবাদ আছে, আসলের চেয়ে সুদ অনেক বেশি প্রিয়। আর এক্ষেত্রেও সেটাই হয়। ছেলে মেয়ে বড় হয়ে যাওয়ার পর, তাদের বাবা মায়েদের, মানে যাঁরা ইতিমধ্যেই নাতি-নাতনির মুখ দেখে ফেলেছেন, তাঁদের কোনও কাজ থাকে না। নাতি-নাতনি হওয়ার পর তাঁরা আবার সংসারে থাকার নতুন কারণ বা নতুন সুখ খুঁজে পান। আর সে কারণেই তাঁরা নাতি-নাতনিদের ভালবাসা আর স্নেহ দিয়ে ভরিয়ে রাখেন।
২। পরিবারের শিকড়
আমাদের দেশে পারিবারিক বন্ধন খুব মজবুত। আমরা প্রত্যেকেই চাই আমাদের বংশ এভাবেই এগিয়ে চলুক। আমি একদিন পৃথিবীতে থাকব না, কিন্তু আমার সৃষ্টি করা পরিবারের লোকজন থাকবে। এই অনুভূতি দাদু ঠাকুরমার মনে সব সময় কাজ করে। তাঁরা নিজেদের ছেলেমেয়েদের ছায়াই নাতি-নাতনিদের মধ্যে দেখতে পান। তাঁরা বিশ্বাস করেন, এরাই একদিন আরও বড় হবে এবং পরিবারের শিকড় আরও মজবুত হবে।
৩। গল্প, গানে আর ছড়ায়
দাদু-ঠাকুরমা এমন অনেক গল্প জানেন, যা আমাদের বাবা-মা জানেন না। বা জানলেও তাঁদের বলার সময় নেই! এঁরা হলেন পুরনো দিনের মানুষ, তাই তাঁদের গল্প, গান আর ছড়ার ঝুলি একদম ভরপুর থাকে। এঁরা সেগুলো নাতি-নাতনিদের শেখান। এভাবে আমাদের দেশে বহু রাজ্যে অনেক লোকগাথা মুখে-মুখে ছড়িয়েছে। দাদু -ঠাকুরমারা (Grandparents) যে অনেক গল্প জানেন, তার মস্ত বড় প্রমাণ হল আজও ঠাকুরমার ঝুলি ও ঠাকুরদার ঝুলির অপার জনপ্রিয়তা।
৪। জীবনের উপর প্রভাব
সব বাবা মা-ই চান, তাঁদের ছেলেমেয়েরা তাঁদের মতো হবে। তাঁদের অনেক অপূর্ণ সাধ বা স্বপ্ন তাঁরা ছেলে মেয়েদের মধ্যে দিয়ে পূর্ণ করতে চান। কিন্তু সব সময় ছেলেমেয়েদের উপর বাবা মায়েদের প্রভাব থাকে না। তাদের উপর দাদু-ঠাকুরমারও প্রভাব থাকে। অনেক সময় অনেক বলিউড বা টলিউডের তারকারাও এই কথা একবাক্যে স্বীকার করেছেন যে, তাঁরাও ছোটবেলায় অনেকটা সময় দাদু-ঠাকুরমার সাহচর্যে কাটিয়েছেন। ফলে তাঁদের জীবনের উপর তাঁদের গ্র্যান্ডপেরেন্টসের প্রভাব আছে। এর আরও একটা ভাল উদাহরণ দেওয়া যাক। আসামের গুয়াহাটির মেয়ে পূর্ণিমা দেবী বর্মণ একজন বিখ্যাত পরিবেশকর্মী। আসামের লুপ্তপ্রায় পাখি হাড়গিলা নিয়ে উনি কাজ করেন। পেয়েছেন গ্রিন অস্কার বা হুইটলি পুরস্কার। পূর্ণিমা জানিয়েছেন, ছোটবেলায় তাঁর বাবা-মা তাঁকে ঠাকুরমার কাছে রেখে যান। কারণ, তাঁর বাবা সেনাবাহিনীতে কাজ করতেন। পূর্ণিমার ঠাকুরমা পড়াশোনা জানতেন না। কিন্তু তিনিই ছোট্ট পূর্ণিমাকে নিয়ে যেতেন ধানক্ষেতে। পরিচয় করিয়ে দিতেন পশুপাখি আর পোকামাকড়ের সঙ্গে। পূর্ণিমা গর্ব করে বলেন, তাঁর আজকের সাফল্যের জন্য দায়ী তাঁর ঠাকুরমা, তাঁর বাবা-মা নন।
সংসারে দাদু-ঠাকুরমা থাকার উপযোগিতা কী-কী (The Role Of Grandparents In The Family):
সংসারে দাদু-ঠাকুরমা থাকার উপযোগিতা (Importance Of Grandparents In Bengali) যে কতটা, সেটা আপনারা ইতিমধ্যে বুঝতে পেরেছেন আশা করা যায়। দাদু-ঠাকুরমা বলতে যাঁদের বোঝানো হচ্ছে, অর্থাৎ বয়স্ক মানুষরা, তাঁদের আমাদের সব সময় সম্মান করা উচিত। আজকাল শোনা যায়, দাদু-ঠাকুরমারা এতটাই একাকীত্ব বোধ করেন যে, কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে তাঁরা পয়সা দিয়ে নকল নাতি-নাতনি ভাড়া করেন! এমনটা কি সত্যি কাম্য? নিজের সন্তানসন্ততি এবং তাদের সন্তানের সঙ্গে যে রক্তের বন্ধন, যে আত্মার বন্ধন তার স্বাদ কি সত্যি নকল নাতি-নাতনিদের মধ্যে পাওয়া সম্ভব? তাই আমাদের সংসারে দাদু-ঠাকুরমারা থাকুক, সেটাই কাম্য। দেখা যাক, তাঁদের সংসারে থাকার উপযোগিতা কী কী…
১। সংসার আগলে রাখেন
আমাদের বাবা-মায়েরা তাঁদের কেরিয়ার, চাকরি ও অন্যান্য নানা বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। সংসারের অনেক খুঁটিনাটি নিয়েই তাঁরা মাথা ঘামানোর সময় পান না। তা ছাড়া এখন কাজকর্মের ধারাও অনেক পাল্টেছে। বিশেষ করে যারা আইটি বা প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করেন, তাঁদের পক্ষে সংসার নিয়ে ভাবার সত্যিই সময় নেই। কিন্তু দাদু-ঠাকুরমার (Importance Of Grandparents)হাতে অনেকটাই সময় থাকে। তাঁদের কাছে সংসারের মায়াও অনেক বেশি। তাঁরা সংসারের সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে ভালবাসেন। আর তাই তাঁরা সংসার অনেক বেশি আগলে রাখেন। আর এই কাজটা তাঁরা সত্যিই ভালবেসে করেন।
২। নাতি নাতনিদের দেখাশোনা করেন
তাঁরা নাতি-নাতনিদের দেখাশোনাও ভাল করে করেন। আর এই কাজটাও বলা বাহুল্য ভালবেসেই করেন। বিশেষ করে নাতি-নাতনিদের স্কুল জীবনের অনেক দায়িত্বই দাদু-ঠাকুরমা আনন্দের সঙ্গে পালন করে থাকেন। আর নাতি-নাতনিরাও পছন্দ করে যে, তাদের এই বড় হয়ে ওঠার সময়টায় তারা দাদু-ঠাকুরমার সাহচর্য পাচ্ছে।
৩। সংসার-বিষয়ে অভিজ্ঞ হন
সংসারের অনেক প্যাঁচ পয়জার থাকে। যার বেশিরভাগই খুব সূক্ষ্ম। অনেক সময় আমাদের বাবা-মা সেগুলো সামলাতে পারেন না। আর এক্ষেত্রে দাদু-ঠাকুরমারাই কাজে আসেন।
৪। অভিজ্ঞতার অনেক দাম আছে
জীবনের প্রতিটি মোড় দাদু-ঠাকুরমা পেরিয়ে এসেছেন। তাঁরাও এক সময় তরুণ ছিলেন। তাঁরা বাবা-মা হয়েছেন, তারপর দাদু-ঠাকুরমা হয়েছেন। ফলে তাঁদের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। আপনি ইন্টারনেটে যা খুঁজে পাবেন না, যা আপনি অন্য কোথাও পাবেন না, সেই সব প্রশ্নের উত্তর আপনি দাদু-ঠাকুরমার কাছে পাবেন।
৫। সকলের মধ্যে বন্ধন গড়ে তোলেন
আজকের এই জেট এজে পারিবারিক বন্ধন খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তি আমাদের হাতে এক আশ্চর্য চাবিকাঠি তুলে দিয়েছে। আশ্চর্য, কিন্তু অভিশপ্ত। এ যেন এক প্যানডোরাজ বক্স! আমরা যদি পাড়া-প্রতিবেশী আর বন্ধু বান্ধবদের মধ্যে একটি সমীক্ষা করি, তা হলে দেখব, আমাদের মধ্যে অনেকেই দাদু-ঠাকুরমার আগের প্রজন্মের নাম বলতে পারছি না! আমরা এখন ফেসবুক বা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বন্ধুত্ব করি। ঘরে বসেই পৃথিবীর যে-কোনও প্রান্তের যে-কোনও জিনিস অনলাইনে কিনে ফেলি। অথচ দিনের মধ্যে ক’বার অন্য শহরে থাকা সেই নিঃসঙ্গ বুড়ো-বুড়ির খোঁজ নিই? আর এই সব কারণেই আমাদের পরিবারে দাদু-ঠাকুরমা থাকলে সবচেয়ে ভাল। কারণ, তাঁদের সঙ্গে ছোটবেলা থেকে থাকলে আমরা পারিবারিক বন্ধনের গুরুত্ব বুঝতে পারব। ছোটখাটো মনোমালিন্য কোথায় না হয়। তাই বলে তাঁদের আমরা এভাবে একাকীত্বের অন্ধকারে হারিয়ে দিতে যেতে পারি না।
বাড়িতে দাদু-ঠাকুরমা না থাকলে কী-কী অসুবিধের আশঙ্কা থাকে (Problems Without Grandparents):
বাড়িতে দাদু-ঠাকুরমা না থাকলে কিছু-কিছু সমস্যা হয়। আপাতদৃষ্টিতে সেই সব সমস্যা হয়তো খুবই সাধারণ মনে হয়। তবে এর কুপ্রভাব পরে বোঝা যায়। একটু বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে বলি। স্কুল, কলেজের বাইরে এবং অফিস জীবনে প্রবেশ করার আগে আমাদের চোখের সামনে একটাই আদর্শ থাকে। তাঁরা যা করেন, আমরা মনে করি, সেটাই ঠিক। কারণ, খুব ছোট বয়সে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে আমরা পারি না। আমরা যদি দেখি, আমার বাবা বা মা দাদু-ঠাকুরমার সঙ্গে বাজে ব্যবহার করছেন বা তাঁদের বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিচ্ছেন, তা হলে আমরা সেটাকেই ঠিক বলে ধরে নেব। আগামী ভবিষ্যতে আমরাও আমাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে একইরকম ব্যবহার করব। দেখে নেব, দাদু-ঠাকুরমা না থাকলে ঠিক কী-কী ধরনের সমস্যা বা অসুবিধের আশঙ্কা থাকে।
১| তাঁরা একা থাকলে আমরাও কোথাও না-কোথাও একা হয়ে যাব।
২| আমাদের বাবা-মায়ের কর্তব্য তাঁদের বাবা-মা’র খেয়াল রাখা, সেটা না করলে আমরাও শিখব না কীভাবে বয়স্ক মানুষদের দেখাশোনা করতে হয়।
৩| আমরা আমাদের নিজেদের পারিবারিক শিকড়ের গুরুত্ব বুঝতে পারব না।
দাদু-ঠাকুরমার প্রতি আমাদের কী-কী কর্তব্য আছে (Our Duty Towards Our Grandparents):
যাঁরা আমাদের বাবা-মায়ের বাবা-মা, তাঁদের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য (Importance Of Grandparents In Bengali) থাকবে না, সেটা হতে পারে না। দেখে নেব, দাদু-ঠাকুরমার জন্য আমরা কী-কী করতে পারি।
১। সময় কাটানো
তাঁদের সঙ্গে বেশি করে সময় কাটানো উচিত। তাঁদের সঙ্গে গল্প করলে বা আড্ডা দিলে তাঁরা খুশি হবেন।
২। বেড়াতে যাওয়া
তাঁদের নিয়ে কাছাকাছি বা দূরে কোথাও বেড়াতে গেলে তাঁরা খুব খুশি হন। কোনও ট্র্যাভেল এজেন্টের মাধ্যমে বুকিং না করে, নিজেরাই সব কিছু অ্যারেঞ্জ করুন। হয়তো সব সময় আপনি সঙ্গে যেতে পারবেন না। কিন্তু এই যে আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ, এটাতেই তাঁরা খুশি হবেন। তা ছাড়া এই যে আপনি নিজে থেকে জায়গা নির্বাচন করে দিচ্ছেন, হোটেল বুকিং করে দিচ্ছেন বা ফ্লাইটের টিকিট কেটে দিচ্ছেন, এর মধ্যে আন্তরিকতার ছোঁওয়া আছে। আর এটাই তাঁরা চান।
৩। ডিনার বা লাঞ্চে নিয়ে যাওয়া
দাদুরা নাতনিদের ঠাট্টা করে গার্লফ্রেন্ড আর ঠাকুরমারা নাতিদের আদর করে বয়ফ্রেন্ড বলে থাকেন। তা হলে একদিন তাঁদের নিয়ে লাঞ্চ ডেট বা ডিনার ডেটে যান। যে মজা আর আনন্দ তাঁরা পাবেন, সেটা ভাষায় ব্যক্ত করা যাবে না।
৪। নিয়ম করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া
হতে পারে আপনার দাদু-ঠাকুরমা শারীরিকভাবে সুস্থ। তবু তাঁদের বয়সের কথা চিন্তা করে প্রতিমাসে তাঁদের নিয়ম করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। তবে তাঁদের এই ইঙ্গিত দেবেন না যে, তাঁরা অসুস্থ। বরং বুঝিয়ে দিন, আপনি সব সময়, যে-কোনও পরিস্থিতিতে তাঁদের পাশে আছেন।
বাবা-মায়েদের জন্য তাঁদের ছেলেমেয়েদের জীবনে দাদু-ঠাকুরমার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর (FAQs):
১। প্রশ্ন: দাদু-ঠাকুরমাদের যদি নাতি-নাতনিরা সঙ্গ দেয়, তা হলে কি তারা মানসিকভাবে অনেক বেশি ভাল থাকেন?
উত্তর: হ্যাঁ, অবশ্যই। ভাল থাকা বা না থাকা অনেকটাই মনের শান্তির উপর নির্ভর করে। পরিবারের আপনার জন্য পাশে আছে, এই অনুভূতিই তাঁদের মানসিক শান্তি দেয়। তা ছাড়া সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলছে যে সব দাদু-ঠাকুরমারা নাতি-নাতনিদের সঙ্গে সময় কাটান, তাঁদের রোগব্যাধি কম হয় আর তাঁরা অনেক বেশি দিন সুস্থ হয়ে বাঁচেন।
২। প্রশ্ন: দাদু-ঠাকুরমারা যদি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকেন, তা হলে কি তাদের জনকল্যাণমূলক কাজে যুক্ত হওয়া উচিত?
উত্তর: হ্যাঁ, এই জাতীয় কাজ করলে তাঁদের ভাল লাগবে। গবেষণা বলছে, জনকল্যাণমূলক কাজ করলে বা নতুন কিছু শিখলে বয়স্কদের মস্তিষ্কের কোষ সজীব থাকে। তাই তাঁদের অ্যালঝাইমার জাতীয় রোগ কম হয়। দাদু ঠাকুরমাদের কোনও কাজে যুক্ত থাকার উৎসাহ দিন।
৩। প্রশ্ন: দাদু-ঠাকুরমা বা বয়স্ক মানুষদের সুরক্ষার জন্য আমাদের কি স্থানীয় কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বা পুলিশের সাহায্য নেওয়া উচিত?
উত্তর: হ্যাঁ, এরকম অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আছে, যাঁরা বয়স্ক মানুষদের দেখাশোনা ও যত্ন করেন। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। বিশেষ করে দাদু-ঠাকুরমা যদি একা থাকেন, তা হলে তাঁদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে অবশ্যই স্থানীয় থানায় পুলিশকে সতর্ক করে রাখা উচিত।
৪। প্রশ্ন: ছেলেমেয়েদের কি ছোট থেকেই দাদু-ঠাকুরমার যত্ন নিতে শেখানো উচিত?
উত্তর: হ্যাঁ, একদম ছোট থেকে এই শিক্ষা পেলে, তাদের মধ্যে মানবিকতা বোধের বিকাশ ঘটবে। আগামী প্রজন্মকে তারাও এই শিক্ষা দেবে যে, বয়স্কদের সম্মান করা উচিত।
৫। প্রশ্ন: প্রতি মাসে কি দাদু-ঠাকুরমাদের মেডিকেল চেকআপ বাঞ্ছনীয়?
উত্তর: অবশ্যই। তাঁরা সুস্থ থাকলেও এটা করবেন। কারণ, এতে আপনি একটা ট্র্যাক রাখতে পারবেন। পরে এই মেডিকেল রিপোর্ট কাজে লাগতে পারে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!