বহুকাল ধরেই রূপচর্চার ক্ষেত্রে রাসায়নিক কসমেটিকসের বদলে প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারের চল রয়েছে। ঠাকুরমা-দিদিমাদের সময়ে কি আর এত রেডিমেড ফেসপ্যাক ছিল? ছিল না তো, তা বলে কি তাঁদের কখনও ত্বকের সমস্যায় ভুগতে দেখেছেন! বরং অনেক বয়স পর্যন্ত তাঁদের ত্বক দাগ-ছোপহীন, কোমল এবং উজ্জ্বল থাকত। কীভাবে সেটা সম্ভব তা যদি ভাবতে বসেন তা হলে উত্তরটা আমিই দিয়ে দিচ্ছি। তাঁরা রূপচর্চার ক্ষেত্রে সবসময়েই প্রাকৃতিক উপাদানের উপরে ভরসা করতেন। খুব ছোট-ছোট জিনিস, যেগুলো সবসময়ে রান্নাঘরে মজুত থাকে, তা দিয়েই ত্বকের যত্ন নিতেন আর তার মধ্যে বেসন ছিল অন্যতম। আজ দিদিমার হেঁশেলের সব টপ সিক্রেট Homemade Besan Face Pack-এর হদিশ আপনাদের দেব, যাতে আপনার ত্বকও হয়ে উঠবে উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যে ঝলমলে! কিন্তু তার আগে আরও কয়েকটা বিষয় জানিয়ে দেওয়া জরুরি।
কোন ধরনের ত্বকে কেমন ফেসপ্যাক লাগানো উচিত, কীভাবে বাড়িতেই রকমারি ফেসপ্যাক তৈরি করা যায় সেসব জানার আগে Face Pack ব্যাপারটা কী, সেটা জানা খুব প্রয়োজন। ফেসপ্যাক লাগালে কী হয়, সেটা খায় না মাথায় দেয়, সবটাই তো জানতে হবে নাকি! সহজ ভাষায় যদি বলতে হয়, ফেসপ্যাক হল এমন একটি প্রোডাক্ট যা ত্বকের গভীরে পৌঁছে ত্বকের সমস্ত সমস্যার সমাধান করে এবং তার সঙ্গেই ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে ও হারিয়ে যাওয়া ঔজ্জ্বল্য ফিরিয়ে দেয়। মোট কথা, ত্বকের টেক্সচার ঠিক করতে, ড্যামেজ হয়ে যাওয়া ত্বক সারাই করতে, ত্বকের যাবতীয় সমস্যা দূর করতে ফেসপ্যাক (Homemade Besan Face Pack In Bengali) কাজে লাগে। বিভিন্ন ধরনের ত্বকের জন্য বিভিন্ন রকম ফেসপ্যাক হয়, মানে হল শুষ্ক ত্বকে যে ফেসপ্যাকটা কাজ দেবে, তেলতেলে বা সেনসিটিভ স্কিনে সেই ফেসপ্যাক কাজ দেবে না। মোটামুটি ১০ মিনিট থেকে শুরু করে ৩০ মিনিট পর্যন্ত যদি ফেসপ্যাক (Home Made Face Pack) লাগিয়ে রাখা হয়, তা হলেই যথেষ্ট।
উপকরণ: ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো, ৩ টেবিল চামচ দই এবং ৩ টেবিল চামচ বেসন
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: সব উপকরণ ভাল করে মিশিয়ে মুখে, গলায় এবং শরীরের যে অংশে ট্যান পড়েছে সেখানে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। প্রতিদিন যদি স্নানের আগে করেন তাহলে ভাল ফল পাবেন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: সব ধরনের ত্বকের জন্যই এই ফেসপ্যাকটি উপযুক্ত, তবে যাঁদের ট্যানের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা এই প্যাকটি (Besan Face Pack) ব্যবহার করলে বিশেষ সুফল পাবেন।
উপকরণ: ১ টেবিল চামচ বেসন, ১ চা চামচ দই এবং ১ চা চামচ লেবুর রস
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: বেসন, দই আর লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এবারে মুখে লাগিয়ে নিন। ১৫ মিনিট পর উষ্ণ জলে মুখ ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুবার করতে পারেন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: সব ধরনের ত্বকের জন্যই উপযোগী তবে যাঁদের Sensitive Skin, তাঁরা এই প্যাকটি ব্যবহার করবেন না, র্যাশ বেরতে পারে।
উপকরণ: ৩ টেবিল চামচ বেসন, পরিমাণমতো দুধ এবং ৩/৪ টি জাফরানের স্ট্রিং
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: উপকরণগুলো মিশিয়ে মুখে, গলায়, হাতে পায়ে লাগিয়ে নিন। মোটামুটি আধঘণ্টা রেখে উষ্ণ জলে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুবার করে করুন দেখবেন কিছুদিন পর থেকেই ত্বকের জেল্লা বেড়ে গেছে।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: যে-কোনও ত্বকের জন্যই ভাল।
উপকরণ: ২ টেবিল চামচ বেসন, ১ চা চামচ দুধ এবং এক চিমটি হলুদ গুঁড়ো
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: দুধ, হলুদ এবং বেসন একসঙ্গে মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করুন। এবারে ওই প্যাক মুখে লাগিয়ে মিনিট ১৫-২০ বাদে ঠান্ডা জলে ধুয়ে নিন। ত্বক কোমল হয়ে উঠবে। চাইলে আপনি প্রতিদিন স্নানের আগে এই প্যাক (Besan Face Pack) লাগাতে পারেন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: সাধারণ ত্বক এবং শুষ্ক ত্বকের জন্য উপযোগী।
উপকরণ: ৩ টেবিল চামচ বেসন এবং পরিমানমতো কমলালেবুর রস (ঘন পেস্ট তৈরি করার জন্য)।
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: বেসন ও কমলালেবুর রস মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এবারে মুখে এবং শরীরের অন্য অংশেও লাগিয়ে নিন। মিনিট ২০ রেখে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে একবার করে করুন, ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: সব ধরনের ত্বকের জন্যই উপযোগী, তবে যাঁদের Sensitive Skin তাঁরা এই প্যাকটি ব্যবহার করবেন না, র্যাশ বেরতে পারে।
উপকরণ: দুই টেবিল চামচ মুলতানি মাটি, ১ টেবিল চামচ বেসন এবং পেস্ট তৈরি করার জন্য পরিমানমতো জল বা গোলাপজল
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: উপকরণগুলো একসঙ্গে মিশিয়ে একটি ঘন অথচ স্মুদ পেস্ট তৈরি করে নিন। ১৫ মিনিটের জন্য ওই পেস্ট মুখে, ঘাড়ে এবং গলায় লাগিয়ে শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুবার করে করতে পারেন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: শুষ্ক ত্বক বাদে বাকি সব ধরনের ত্বকের জন্যই এই প্যাক উপযোগী।
উপকরণ: দুই টেবিল চামচ বেসন এবং ৩ টেবিল চামচ গোলাপজল
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: উপকরণগুলো একসঙ্গে মিশিয়ে একটি ঘন অথচ স্মুদ পেস্ট তৈরি করে নিন। ১৫ মিনিটের জন্য ওই পেস্ট (Besan for Face) মুখে, ঘাড়ে এবং গলায় লাগিয়ে শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মুখ ধোওয়ার পর ময়েশ্চারাইজার লাগিএ নেবেন। সপ্তাহে দুবার করলেই নিখুঁত ত্বকের অধিকারিণী হয়ে উঠবেন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: নর্মাল, তৈলাক্ত এবং কম্বিনেশন স্কিনের জন্য এই ফেসপ্যাকটি ভাল।
উপকরণ: ১ টি পাকা টোম্যাটো এবং ২ টেবিল চামচ বেসন
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: টোম্যাটো ছোট টুকরো করে নিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। এবারে ওই পিউরির সঙ্গে বেসন মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করে নিন এবং মুখে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ২-৩ বার করতে পারেন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী। যদি ট্যানের সমস্যা থাকে অথবা বলিরেখার সমস্যা থাকে তাহলে এই প্যাকটি অতি অবশ্যই ব্যবহার করবেন।
উপকরণ: ২ টেবিল চামচ বেসন এবং এক টেবিল চামচ অরগানিক অ্যালোভেরা জেল
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: উপকরণ দুটি মিশিয়ে ওই মিশ্রণ ত্বকে লাগিয়ে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জলে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ২/৩ বার করুন এবং শীতকালে পারলে প্রতিদিন এই প্যাক ব্যবহার করুন। শুষ্ক ত্বকে প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার হিসেবে এই প্যাক (Besan Face Pack) খুবই উপকারী।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: শুষ্ক ত্বক এবং Sensitive Skin-এর জন্য খুব ভাল।
উপকরণ: ২ টেবিল চামচ বেসন, ৩টেবিল চামচ দুধের ঘন সর এবং ১ টেবিল চামচ দই
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: উপকরণগুলো খুব ভাল করে মিশিয়ে একটা ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। মুখে এবং সারা শরীরেই বিশেষ করে কনুই, হাঁটু এবং গোড়ালিতে পেস্টটি লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নিন। স্নানের আগে এই প্যাকটি (Besan Face Pack for Glowing Skin) সপ্তাহে ২ বার করে লাগাতে পারেন। ত্বক নরমও হবে এবং উজ্জ্বলও হবে।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বক থেকে মুক্তির জন্য এই প্যাকটি ব্যবহার করুন।
উপকরণ: একটি ডিমের সাদা অংশ, এক টেবিল চামচ বেসন এবং আধ চা চামচ মধু
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: খুব ভাল করে উপকরণগুলি মিশিয়ে মুখে, ঘাড়ে এবং গলায় লাগিয়ে নিন। ১০-১৫ মিনিট পরে ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। বলিরেখা দূর করার জন্য এই পিল অফ ফেসপ্যাকটি খুব ভাল। ৪ দিনে একবার করুন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: শুষ্ক ত্বক বাদে সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী।
উপকরণ: ২ টেবিল চামচ বেসন এবং মাঝারি আকারের অ্যাভকাডোর অর্ধেকটা
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: অ্যাভোকাডোর বীজ ছাড়িয়ে ভাল করে ব্লেন্ড করে নিন। এবারে তাতে বেসন মিশিয়ে নিন। খুব শক্ত থাকলে সামান্য জল দিতে পারেন। এবারে ওই পেস্ট (Besan for Face) মুখে আধঘণ্টার জন্য রেখে ঠান্ডা জলে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে একবার করলেই যথেষ্ট।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: সব ধরনের ত্বকের জন্যই উপযোগী।
উপকরণ: কয়েক টুকরো পাকা পেঁপে, ১ টেবিল চামচ বেসন
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: পাকা পেঁপে চটকে নিয়ে তাতে বেসন দিয়ে একটা ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। এবারে ১০ মিনিট ধরে ওই পেস্ট দিয়ে মুখে মালিশ করে ভেজা তোয়ালে দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন। ত্বকের ভিতরের আর্দ্রতা দূর করতে এবং ময়লা টেনে বের করে ত্বককে ভিতর থেকে পরিষ্কার করতে এই ফেসপ্যাকটি খুবই ভাল।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: সব ধরনের ত্বকের জন্যই উপযোগী।
উপকরণ: তিন টেবিল চামচ বেসন এবং ৫ চা চামচ মধু
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: বেসন ও মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন। শুকোতে শুরু করলে সামান্য ঊষ্ণ জল দিয়ে হালকা হাতে মালিশ করুন। এতে ত্বকের মরা কোষ উঠে যাবে। মিনিট দশেক মালিশ করে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। দু’সপ্তাহে একবার করে করুন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী তবে শুষ্ক ত্বকের জন্য বেশি ভাল।
উপকরণ: দুই টেবিল চামচ বেসন এবং দুই টেবিল চামচ শশার রস
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: উপকরণ দুটি ভাল করে মিশিয়ে মুখে ২০-২৫ মিনিট লাগিয়ে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। যখন মুখ ধোবেন, তখন সার্কুলার মোশনে মুখ মালিশ করে মুখ ধোবেন। সপ্তাহে দুই-তিন বার এই প্যাকটি লাগাতে পারেন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: অ্যাকনের সমস্যা যাঁদের আছে, ত্বক তৈলাক্ত, কম্বিনেশন স্কিনের জন্য এই প্যাকটি খুব ভাল।
উপকরণ: এক কাপ গরম জল, একটি গ্রিনটি ব্যাগ এবং দুই টেবিল চামচ বেসন
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: গরম জলে গ্রিনটি ব্যাগ ভিজিয়ে রেখে গ্রিন টি তৈরি করে নিন। এবারে বেসনের (Besan for Face) সঙ্গে পরিমাণমতো গ্রিনটি মিশিয়ে ওই প্যাক মুখে, গলায় এবং ঘাড়ে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার করলেই যথেষ্ট।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: সব ধরনের ত্বকের জন্যই উপযোগী।
উপকরণ: ৪-৫টি আমন্ড, ১ টেবিল চামচ দুধ, কয়েকফোঁটা লেবুর রস এবং ১ চা চামচ বেসন
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: আমন্ড গুঁড়ো করে নিয়ে তা বাকি সন উপকরনের সঙ্গে মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করে নিন। ১৫-২০ মিনিটের জন্য ওই প্যাক মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন। সামান্য ময়শ্চারাইজার লাগাবেন মুখ ধোওয়ার পর। সপ্তাহে একবার করে এই প্যাক লাগান।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: শুষ্ক এবং নর্মাল ত্বকের জন্য উপযোগী।
উপকরণ: ২/৩টি পাকা কলা, ২ চা চামচ বেসন এবং জল
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: কলা চটকে নিয়ে তাতে বেসন মিশিয়ে একটা মণ্ড তৈরি করুন। খুব বেশি শক্ত থাকলে একটু জল মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন। এবারে মুখে এবং গলায় লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে ঊষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে নিন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: শুষ্ক ত্বকের জন্য এই প্যাকটি ভাল। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য উপকারী।
উপকরণ: ১ টেবিল চামচ ড্রাই নিম পাউডার, ১ টেবিল চামচ বেসন এবং ১ টেবিল চামচ টক দই
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: নিমের পাউডার এবং বেসন ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে তাতে টক দই দিয়ে ভাল করে ফেটিয়ে নিয়ে ওই পেস্ট মুখে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুবার করলেই যথেষ্ট। যাঁদের ব্রণ বা ইনফেকশনের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ভাল।
উপকরণ: একটা ছোট মাপের আলু এবং ২ টেবিল চামচ বেসন
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: আলু ছুলে নিয়ে কুরিয়ে নিন এবং রস চিপে বের করে নিন। আলুর রসের সঙ্গে বেসন মিশিয়ে ওই মিশ্রণ (Besan Face Pack for Glowing Skin) মুখে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ২/৩ বার এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: সব ধরনের ত্বকেই এই প্যাক ব্যবহার করা যায়, তবে যাঁদের ট্যানের সমস্যা আছে, তাঁদের জন্য এই প্যাকটি খুবই কার্যকরী।
উপকরণ: ১ টেবিল চামচ ওটমিলের গুঁড়ো, ১ টেবিল চামচ বেসন এবং ১ চা চামচ মধু, পরিমানমতো গোলাপজল
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: সবকটি উপকরণ একটি কাঁচের বাটিতে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে মুখে, গলায় এবং ঘাড়ে লাগিয়ে নিন। মিনিটপনেরো রেখে ঊষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে নিন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: সব রকম ত্বকেই এই প্যাক লাগানো যায়, তবে যাঁদের ত্বক শুষ্ক তাঁদের জন্য এটি খুবই উপকারী।
উপকরণ: ২ চা চামচ বেকিং সোডা, ১/৪ কাপ জল, ২ টেবিল চামচ বেসন এবং এক চিমটে হলুদ গুঁড়ো
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: সবকটি উপকরণ মিশিয়ে একটা পেস্ট তৈরি করুন। খেয়াল রাখবেন যেন পেস্টটি খুব ঘন বা পাতলা না হয়। আপনার মুখের যেখানে অ্যাকনের সমস্যা আছে সেখানে এই মিশ্রণ ১০ মিনিটের জন্য লাগিয়ে পরে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ২বার করুন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: যাঁদের অ্যাকনের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা এই প্যাকটি (Homemade Besan Face Pack) ব্যবহার করতে পারেন, তবে শুষ্ক ত্বকের অধিকারিণীরা এটি ব্যবহার করবেন না।
উপকরণ: ২ টেবিল চামচ বেসন এবং সামান্য জল (পেস্ট তৈরি করার জন্য)
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: একটা কাঁচের বাটিতে ২ টেবিল চামচ বেসন আর পরিমাণমতো জল নিয়ে ঘন একটা পেস্ট (Homemade Besan Face Pack) তৈরি করে নিন। এবারে ওই পেস্ট সারা মুখে, গলায় এবং ঘাড়ে লাগিয়ে মিনিটদশেক মাসাজ করুন এবং জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এরপরে মুখ মুছে নিয়ে হালকা কোনও ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। সপ্তাহে দুবার এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী।
উপকরণ: দুই চা চামচ বেসন, ১ টেবিল চামচ দই এবং ১ চা চামচ চন্দন গুঁড়ো বা বাটা
কীভাবে এই Face Pack ব্যবহার করবেন: উপকরণগুলো মিশিয়ে ওই পেস্ট মুখে লাগিয়ে নিন, বিশেষ করে যেখানে ব্রণ রয়েছে সেখানে। মিনিটদশেক পর ঊষ্ণ জলে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে একবার এই প্যাক (Besan Face Pack for Glowing Skin) ব্যবহার করলেই যথেষ্ট, তবে আপনার যদি অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বক হয়, সেক্ষেত্রে আপনি সপ্তাহে দুবার ব্যবহার করতে পারেন, তার বেশি নয়।
কীরকম ত্বকের জন্য এই ফেসপ্যাক উপযোগী: তৈলাক্ত ত্বক এবং যাঁদের ব্রণ বা অ্যাকনের সমস্যা রয়েছে তাঁদের জন্য এই প্যাক খুব উপকারী। যাঁদের শুষ্ক ত্বক, তাঁরা এই প্যাক একদমই ব্যবহার করবেন না।
১। প্রশ্ন: আমি কি সারা রাত মুখে মধু দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক লাগিয়ে রাখতে পারি?
উত্তর: আপনার যদি ত্বকে অ্যাকনের সমস্যা থাকে, তা হলে আপনি মুখের যে-যে জায়গায় অ্যাকনে রয়েছে, শুধুমাত্র সেখানে অল্প করে মধু লাগিয়ে রাখতে পারেন। পরদিন সকালে উঠেই কিন্তু মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে এবং কোনও ফেসওয়াশ ব্যবহার করা চলবে না সেক্ষেত্রে। কিন্তু যদি মধুর সঙ্গে অন্য কিছু মেশানো থাকে ফেস প্যাক হিসেবে তা হলে রাতে শোওয়ার আগে মুখ পরিষ্কার করে শুতে যাওয়া উচিত।
২। প্রশ্ন: ফেসপ্যাক ব্যবহার করার পর মুখে কি লাগানো উচিত? নাকি কিছুই লাগানো উচিত নয়?
উত্তর: প্রথমেই বলে রাখি, ফেসপ্যাক যখন লাগাবেন, তার আগে মাইল্ড কোনও ক্লেনজার দিয়ে ভাল করে মুখ পরিষ্কার করে নেবেন। তারপর ফেসপ্যাক লাগিয়ে মুখ পরিষ্কার করা হয়ে গেলে অ্যালকোহলহীন কোনও টোনার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিতে পারেন। সেটা সম্ভব না হলে, তুলোয় করে গোলাপ জলও লাগিয়ে নিতে পারেন।
৩। প্রশ্ন: প্রতিদিন কি মুখে মুলতানি মাটির ফেসপ্যাক লাগানো যায়?
উত্তর: না। প্রতিদিন মুলতানি মাটি লাগালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। দু’সপ্তাহে একবার মুলতানি মাটির ফেসপ্যাক লাগালেই যথেষ্ট। তবে যদি আপনার অতিরিক্ত তেলতেলে ত্বক হয়, সেক্ষেত্রে আপনি সপ্তাহে দুবার ব্যবহার করতে পারেন মুলতানি মাটির face pack.
৪। প্রশ্ন: কত দিন অন্তর ফেসপ্যাক লাগানো উচিত?
উত্তর: আপনার ত্বকের ধরন কেমন অথবা আপনার ত্বকে কী সমস্যা, তার উপরে এই প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করছে। সাধারণত সপ্তাহে একবার অথবা খুব বেশি সমস্যা থাকলে সপ্তাহে দু’বার ফেসপ্যাক লাগালেই তা যথেষ্ট। তবে আপনার যদি খুব বেশি স্কিনের সমস্যা থাকে, সেক্ষেত্রে কোনও ভাল ডারমাটোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ।
৫। প্রশ্ন: ফেসপ্যাক আর ফেস মাস্কের মধ্যে কি কোনও তফাত আছে?
উত্তর: হ্যাঁ। ফেস্প্যাক আপনার ত্বকের ময়লা এবং নানা সমস্যা দূর করে, আর অন্যদিকে ফেক মাস্ক ত্বকের মরা কোষ দূর করতে সাহায্য করে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!