অবাঞ্ছিত লোম অপসারণ – কি কথাটা শুনে অবাক লাগছে? সহজভাবে বলতে গেলে শরীরের হেয়ার রিমুভ করা, আর আজ এই নিয়েই কথা বলব। যে-কোনও মহিলার জীবনে এটি একটি বড় সমস্যা। প্রতি মাসে এই অবাঞ্ছিত লোম দূর করা যে কী জ্বালা, সে আর অন্য কেউ বুঝবে না। ভাবুন তো আপনি বেশ সুন্দর একটা ড্রেস কিনেছেন পার্টিতে যাবেন বলে, কিন্তু আপনার পায়ে বা হাতে লোম রয়েছে! কীরকম অদ্ভুত দেখতে লাগবে… হাত বা পায়ের কথা না হয় ছেড়েই দিলাম, আমাদের আন্ডারআর্মস অর্থাৎ বগলেও কিন্তু অবাঞ্ছিত লোম থাকে। সুন্দর স্মুদ আন্ডারআর্মস পেতে সবারই ইচ্ছে করে, কিন্তু তার থেকেও বড় কথা হল শরীরের এক বিশেষ জায়গাতা পরিষ্কার রাখা। সে-কারণে Unwanted Hair Remove করতে আমাদেরকে নানা পদ্ধতি ব্যবহার করতেই হয়। কেউ ওয়াক্সিং করান, কেউ বা বাড়িতেই শেভ করে নেন আবার কেউ বা ভরসা করেন বাজারচলতি নানা হেয়ার রিমুভাল ক্রিমের উপরে। কিন্তু কোনটা যে আপনার জন্য ভাল আর কোনটা নয় – সে ব্যাপারে কিন্তু সম্যক ধারণা অনেকেরই নেই।
অবাঞ্ছিত লোম অপসারণ করার নানা পদ্ধতি (How To Remove Unwanted Hair In Bengali) নিয়ে আজ আমরা বিশদে আলোচনা করব, যাতে আপনার মনে আর কোনও কনফিউশন না থাকে!
ওয়াক্সিং (Waxing)
Unwanted Body Hair Remove করার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি হল ওয়াক্সিং। প্রতি মাসে হয় পার্লারে গিয়ে অথবা বাড়িতেই অনেকেই ওয়াক্সিং করে নেন অবাঞ্ছিত লোম দূর করার জন্য। হ্যাঁ, একটু ব্যাথা লাগে ঠিকই কিন্তু একসঙ্গে অনেকটা জায়গা পরিষ্কার হয়ে যায়। এছাড়া যেহেতু ওয়াক্সিং করালে একদম মূল থেকে লোম উৎপাটিত হয় কাজেই সামান্য ব্যাথা লাগলেও বেশ অনেকদিন পর্যন্ত নতুন লোম গজায় না। ওয়াক্স-এর কিন্তু আবার রকমফের আছে। রেগুলার বা নর্মাল ওয়াক্স, চকলেট ওয়াক্স, ব্রাজিলিয়ান ওয়াক্স ইত্যাদি। দেখে নিন, কোন ওয়াক্স কীরকম।
নর্মাল বা রেগুলার ওয়াক্স (Normal/Regular Wax)
যে-কোনও পার্লারে এই ধরনের ওয়াক্সিং খুবই জনপ্রিয়। বহুকাল ধরে হট এবং কোল্ড – এই দুই ধরনের ওয়াক্সিং পদ্ধতি চলে আসছে অবাঞ্ছিত লোম অপসারণ করার জন্য। এই পদ্ধতিতে বড় মাপের লোম একসঙ্গে একবারে অপসারণ করা গেলেও ছোট-ছোট Unwanted Body Hair Remove করা যায় না, ফলে একই জায়গায় বারবার করে ওয়াক্স লাগিয়ে টানতে হয় এবং ত্বকে ব্যাথা লাগে। যাঁদের ত্বক খুব সংবেদনশীল, তাঁদের অনেকসময় ত্বকে লালচে ছোপ পড়ে যায় ওয়াক্সিং-এর পর অথবা র্যাশও বেরিয়ে যায়। তবে একটা কথা, অন্যান্য ওয়াক্স-এর তুলনায় নর্মাল ওয়াক্স-এর খরচ অনেক কম।
সুবিধে (Advantages)
- একবারে অনেকটা জায়গার লোম দূর করা যায়
- অন্যান্য ওয়াক্সিং-এর ধরনের তুলনায় কম খরচসাপেক্ষ
অসুবিধে (Disadvantages)
- ছোট-ছোট লোম অপসারণ করা যায়না
- সংবেদনশীল ত্বকের জন্য উপযুক্ত নয়
- বিকিনি লাইনে এই ধরনের ওয়াক্স করা যায় না
চকোলেট ওয়াক্স (Chocolate Wax)
ছোট-ছোট লোম দূর করার জন্য চকোলেট ওয়াক্স বেশ কার্যকরী। গ্লিসারিন, কোকো, আমন্ড অয়েল, ভিটামিন ই, অলিভ অয়েল এবং সয়াবিনের তেল মিশিয়ে এই ওয়াক্স তৈরি করা হয়। আপনি বাড়িতে চাইলে এটি তৈরি করতে পারেন অথবা বাজার থেকেও কিনে নিতে পারেন। যাঁদের ত্বক খুব নরম অথবা শরীরের যে অংশগুলো তুলনামূলকভাবে নরম, সেখানে এই ধরনের ওয়াক্স করলে ভাল। এতে তুলনামূলক কম ব্যথা লাগে এবং কোনও রিঅ্যাকশন বা র্যাশ বেরোয় না। যে-কোনও ধরনের স্কিন টাইপের ক্ষেত্রেই চকোলেট ওয়াক্স ব্যবহার করা যায়; নর্মাল ওয়াক্স-এর তুলনায় যদিও এটি একটু দামি!
সুবিধে (Advantages)
- একবারে অনেকটা জায়গার লোম দূর করা যায়
- যে-কোনও ধরনের ত্বকের জন্য এই ওয়াক্স উপযোগী
- শুধুমাত্র হাত-পা নয়, আন্ডারআর্মসেও এই চকলেট ওয়াক্স করানো যায়
- ব্যথা কম লাগে
অসুবিধে (Disadvantages)
- তেমন কিছুই নেই
- বিকিনি লাইনে চকোলেট ওয়াক্স করানো যায়না
রিকা ওয়াক্স (Rica Wax)
চকোলেট ওয়াক্স-এরই আর একটি ভেরিয়েশন বলতে পারেন রিকা ওয়াক্স। রিকা ওয়াক্সকে হোয়াইট চকোলেট ওয়াক্স বা ইতালিয়ান ওয়াক্সও বলা হয় কারণ এটি ইতালিতে তৈরি হয়। একদম ছোট আর পাতলা লোম অপসারণের জন্য রিকা ওয়াক্স ব্যবহার করা যায়। শুধু যে লোম দূর করতে ব্যবহার করা হয় তা নয়, রিকা ওয়াক্স ত্বকের উপরিভাগের মরাকোষ এবং ট্যান দূর করতেও সাহায্য করে। যেহেতু বিদেশ থেকে এই ওয়াক্সটি আনানো হয়, কাজেই এর দামটা বেশ বেশি। অন্যান্য ওয়াক্স-এর মতো এটি গরম করার প্রয়োজন হয় না। ফলে ত্বকে জ্বালাও করে না। প্রি-ওয়াক্স জেল লাগিয়ে (এটি কিটের মধ্যেই থাকে) এই ধরনের ওয়াক্সিং করা হয় যাতে ত্বকের ভিতরের লোমও উঠে আসে এবং ত্বকের কোনও ক্ষতি না হয়।
সুবিধে (Advantages)
- একদম ছোট-ছোট লোম অপসারণ করা যায়
- যে-কোনও ধরনের ত্বকের জন্য এই ওয়াক্স উপযোগী
- ব্যথা লাগে না
- শুধুমাত্র হাত-পা নয়, বিকিনি লাইন এবং আন্ডারআর্মসেও এই রিকা ওয়াক্স করানো যায়
অসুবিধে (Disadvantages)
- বেশ দামি
ব্রাজিলিয়ান ওয়াক্স (Brazilian Wax)
যদি আপনি বিকিনি লাইন ওয়াক্স করাতে চান, তা হলে ব্রাজিলিয়ান ওয়াক্স সবচেয়ে ভাল। যেহেতু বিকিনি লাইন আমাদের শরীরের অন্যতম কোমল এবং সংবেদনশীল অংশ, কাজেই খুব বেশি ভারী ওয়াক্স অথবা এমন কোনও পদ্ধতি এখানে ব্যবহার করা যাবে না, যাতে ব্যথা লাগে। বিকিনি লাইনের Unwanted Body Hair Remove করার জন্য তাই ব্রাজিলিয়ান ওয়াক্স ব্যবহার করা হয়। এতে একদমই ব্যথা লাগে না এবং ত্বকের কোনও ক্ষতি হয় না।
সুবিধে (Advantages)
- একদম ছোট-ছোট লোম অপসারণ করা যায়
- বিকিনি লাইন ওয়াক্স করার জন্য বেস্ট
- ব্যথা লাগে না
অসুবিধে (Disadvantages)
- সব পার্লারে এই সুবিধে পাওয়া যায় না
- দামি
রেডি টু ইউজ ওয়াক্সিং স্ট্রিপ (Ready To Use Waxing Strips)
বাজারচলতি নানা ধরনের ওয়াক্সিং স্ট্রিপ পাওয়া যায়। এক-এক ধরনের ত্বকের জন্য এক-এক রকমের স্ট্রিপ। প্যাকেটের গায়ে ব্যবহার পদ্ধতি সম্পর্কে বিশদে লেখা থাকে। তবে এই ধরনের ওয়াক্স করার আগে বা কেনার আগে দেখে নেবেন যে, আপনার ত্বকের জন্য কোনটি উপযুক্ত।
সুবিধে (Advantages)
- বাড়ি বসেই আপনি যে-কোনও সময়ে ওয়াক্স করতে পারেন
- দাম খুব বেশি নয়
অসুবিধে (Disadvantages)
- হাত পাকা না হলে ওয়াক্সিং-এর সময়ে টানতে গেলে ব্যথা লাগতে পারে
বাড়িতে তৈরি করা ওয়াক্স (Homemade Wax)
আপনি যদি একদম কেমিক্যাল-ফ্রি প্রোডাক্ট চান, সেক্ষেত্রে বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারেন ওয়াক্স। আধ কাপ জল, তিন কাপ চিনি, একটি কাপের এক চতুর্থাংশ মধু আর লেবুর রস একটি পাত্রে দিয়ে ফুটিয়ে নিন। কম আঁচে ফুটতে দিতে হবে। কিছুক্ষণ পর দেখবেন মিশ্রণ ঘন এবং বাদামি হয়ে এসছে। তখন গ্যাস বন্ধ করে দিন এবং মিশ্রণ ঠান্ডা হতে দিন। রুম টেম্পারেচরে এলে স্ট্রিপের সাহায্যে শরীরের অবাঞ্ছিত লোম অপসারণ করুন!
সুবিধে (Advantages)
- বাড়ি বসেই আপনি যে-কোনও সময়ে ওয়াক্স করতে পারেন
- কোনও কেমিক্যাল নেই, ফলে ত্বকের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কম
অসুবিধে (Disadvantages)
- হাত পাকা না হলে ওয়াক্সিং-এর সময়ে টানতে গেলে ব্যথা লাগতে পারে
শেভিং (Shaving)
অনেকসময়ই এমন পরিস্থিতি আসে, যখন ওয়াক্সিং করাতে যাওয়ার সময় থাকে না। অথবা এমনও অনেক সময়ে হয় ওয়াক্সিং করানোর ব্যথাটা অনেকে সহ্য করতে পারেন না, সেক্ষেত্রে অবাঞ্ছিত লোম অপসারণ করার জন্য শেভিং বেস্ট। কিন্তু শেভিং করার কী কী সুবিধে-অসুবিধে রয়েছে বা শেভিং-এর আগে-পরে কী-কী বিষয় (How To Remove Unwanted Hair In Bengali) মনে রাখা উচিত তা জানেন কি?
শেভিং করার সুবিধে এবং অসুবিধে (Advantages and Disadvantages of Shaving)
শেভিং করার যেমন কিছু সুবিধে রয়েছে, তেমনই রয়েছে কিছু অসুবিধেও। আগে সুবিধেগুলো জেনে নিন –
সুবিধে (Advantages)
- তাড়াতাড়ি unwanted body hair remove করা যায়
- ব্যথা লাগে না
- খুব একটা খরচসাপেক্ষ নয়
- যখন-তখন করা যায়
অসুবিধে (Disadvantages)
- সাবধানতা অবলম্বন না করলে ত্বক কেটে যেতে পারে
- শুধুমাত্র ত্বকের উপরিভাগের অবাঞ্ছিত লোম অপসারণ করা যায় শেভিংয়ের সাহায্যে
- শরীরের সব অংশে শেভ করা যায় না, যেমন বিকিনি লাইন অথবা পিঠে
শেভিং-এর আগে এবং পরে এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন (Things You Need To Know About Shaving)
অবাঞ্ছিত লোম অপসারণ করার জন্য শেভিং তো না হয় করবেন। কিন্তু আগে-পরে কিছু বিষয় একটু মাথায় রাখুন যাতে ত্বকের কোনও সমস্যা না হয়।
- শেভিং করার আগে ভাল করে স্ক্রাব করে নিন এবং সাবান বা বডিওয়াশ কিছু একটা ব্যবহার করুন যাতে ত্বক শুকনো না থাকে। শুকনো ত্বকে শেভ করতে গেলে কিন্তু কাটা-ছড়ার ভয় থাকে সে-সঙ্গেই রুক্ষ ত্বকে ঠিকভাবে লোম দূর করাও সম্ভব হয় না।
- রেজার কেমন ব্যবহার করছেন, সেটা দেখে নিন। মাল্টি-লেয়ারড রেজার ব্যবহার করুন এবং তা যেন ইউজ অ্যান্ড থ্রো হয় অর্থাৎ একটি রেজার একাধিকবার ব্যবহার করা উচিত না। যদি আপনি দামি রেজার ব্যবহার করেন তা হলে মাঝে-মাঝেই ব্লেড বদলান। খেয়াল রাখবেন, রেজারের হাতল যেন রাবারের হয় যাতে গ্রিপ পিছলে না যায়।
- শেভ করা হয়ে গেলে ভাল করে জল দিয়ে শরীর পরিষ্কার করে নিন। সেদিনটা সাবান বা কোনও কেমিক্যাল ব্যবহার না করাই ভাল। কোনও হালকা ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন স্নানের পর তাতে ত্বক রুক্ষ হবে না এবং ত্বকের ভিতরের আর্দ্রতাও বজায় থাকবে।
- যদি আপনি আন্ডারআর্মসেও রেজার ব্যবহার করেন তা হলে শেভিং করার পর ডিওডোরেন্ট লাগাবেন না বা ভুল করেও লেবু ঘষবেন না এতে ত্বকের সংবেদনশীলতা বেড়ে যেতে পারে এবং জ্বালা করতে পারে।
হেয়ার রিমুভাল ক্রিম (Hair Removal Cream)
অবাঞ্ছিত লোম দূর করার জন্য ওয়াক্সিং বা শেভিং বাদে আরও একটি পদ্ধতি অনেকেই অবলম্বন করেন, তা হল হেয়ার রিমুভাল ক্রিম। বাজারচলতি অনেক হেয়ার রিমুভাল ক্রিম পাওয়া যায়। তবে সব ত্বকের জন্য সব ধরনের ক্রিম কিন্তু চলনসই হয় না। এই ধরনের ক্রিমের বাক্সে ক্রিমের সঙ্গে একটি স্প্যাচুলা দেওয়া থাকে। স্প্যাচুলার সাহায্যেই ক্রিম শরীরের লোমের উপরে লাগিয়ে নিতে হয় এবং কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ওই স্প্যাচুলার সাহায্যেই অবাঞ্ছিত লোম অপসারণ করতে হয়। যদিও হেয়ার রিমুভাল ক্রিম দিয়ে Unwanted body hair remove করার কিছু সুবিধে রয়েছে, যেমন ব্যথা লাগে না এবং তাড়াতাড়ি হয়ে যায়; কিন্তু বেশি মাত্রায় ব্যবহার করলে কিন্তু ত্বক কালো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে কীভাবে অবাঞ্ছিত লোম অপসারিত করবেন (Natural Ways To Remove Unwanted Hair at Home)
ঘরোয়া পদ্ধতিতেও অনেকেই অবাঞ্ছিত লোম দূর করার চেষ্টা করেন, তবে বুঝতেই পারছেন নিশ্চয়ই যে, এই পদ্ধতিগুলোতে ইনস্ট্যান্ট ফল পাওয়া যায় না। দেখে নিন, কী-কী ভাবে আপনি পার্লারে না গিয়েও বাড়িতে বসেই Unwanted body hair remove করতে পারেন।
১। কাঁচা পেঁপে এবং হলুদের সাহায্যে (Papaya & Turmeric Paste)
অবাঞ্ছিত হেয়ার গ্রোথ কমাতে সামান্য কাঁচা পেঁপে কুড়িয়ে তাতে দেড় চা চামচ হলুদগুঁড়ো মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে এবং শরীরে লাগিয়ে আধঘণ্টা রেখে ঊষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুবার করে অন্তত তিন থেকে চার মাস এই টোটকা ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
২। কর্নস্টার্চ এবং ডিমের সাহায্যে (Cornstarch & Egg Mask)
আমাদের মুখে অনেকসময় লোম থাকে এবং ওয়াক্সিং বা শেভিং কোনওটাই আমরা করতে চাই না। সেক্ষেত্রে একটা ডিমের সাদা অংশ, এক চা চামচ কর্নস্টার্চ এবং এক চা চামচ চিনি মিশিয়ে একটা পিল অফ মাস্ক তৈরি করতে পারেন। ওই মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে নিন এবং শুকিয়ে গেলে পিল অফ মাস্কের মতো সাবধানে টেনে তুলে নিন। মুখে জেল্লা বাড়বে সে তো জানা কথাই, কিন্তু সঙ্গে অবাঞ্ছিত লোমও উঠে আসবে।
৩। বেকিং সোডা এবং হলুদের সাহায্যে (Baking Soda & Turmeric Mix)
অবাঞ্ছিত লোম দূর করার মানে কিন্তু শুধু হেয়ার রিমুভ নয়, যাতে ধীরে-ধীরে হেয়ার গ্রোথ কম হয়, সে ব্যবস্থাও করা। এই ঘরোয়া টোটকাটিতে ধীরে-ধীরে শরীরের লোমের গ্রোথ কমতে শুরু করে ফলে অবাঞ্ছিত লোমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়াও সহজ হয়। সমপরিমাণে বেকিং সোডা এবং হলুদগুঁড়ো নিয়ে সামান্য জল মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিন। এবারে ধীরে-ধীরে যেখানে লোম অপসারণ করতে চান, সেখানে ওই পেস্ট দিয়ে স্ক্রাব করতে থাকুন। মিনিটপনেরো পর ঊষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এটি করতে হবে বেশ কিছুদিন।
৪। রসুনের রসের সাহায্যে (Garlic Paste)
রসুনের মধ্যে সালফার, সেলেনিয়াম আর জিঙ্ক রয়েছে, যা অবাঞ্ছিত লোম অপসারণ করতে সাহায্য করে। বেশ কয়েকটি রসুন বেটে তার থেকে রস বের করে নিন। এবারে তুলোর বলের সাহায্যে শরীরের যে অংশ থেকে অবাঞ্ছিত লোম দূর করতে চান, সেখানে লাগিয়ে নিন। মিনিটকুড়ি পর ভাল করে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। আপনি চাইলে এরপর কোনও সুগন্ধি ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন রসুনের উগ্র গন্ধ দূর করার জন্য।
৫। কাঁচা আলু এবং মুসুর ডালের সাহায্যে (Potato & Masoor Dal Paste)
এক কাপ কাঁচা মুসুর ডাল সারা রাত জলে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে জল ফেলে দিয়ে ডাল বেটে নিন। এবার একটা মাঝারি মাপের আলু কুড়িয়ে নিয়ে আলুর রস বের করে নিন। এবারে আলুর রস আর বাটা ডাল মিশিয়ে শরীরের যে অংশে লোম দূর করতে চান, সেখানে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে আঙুল দিয়ে ঘষে-ঘষে তুলে জল দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। এই পদ্ধতিতে ধীরে-ধীরে অবাঞ্ছিত লোম অপসারণ করা যায় এবং ত্বকে একটা আলাদা ঔজ্জ্বল্যও দেখা দেয়।
অবাঞ্ছিত লোম অপসারিত করা সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নোত্তর (FAQs)
১। প্রশ্ন: শেভ করলে কি অবাঞ্ছিত লোম আরও বেশি শক্ত হয়ে যায়?
উত্তর: একদমই না। শেভিং-এর সাহায্যে যখন আপনি শরীরের অবাঞ্ছিত লোম অপসারন করেন, তারপরে আবার যখন চামড়ার ভেতর থেকে নয়ুন লোম গজায় তখন প্রথমদিকে একটু খোঁচা-খোঁচা মনে হতে পারে, কিন্তু দু-একদিন পর সেটা ঠিক হয়ে যায়। তবে শেভিং-এর জন্য কখনোই লোম শক্ত হয়না।
২। প্রশ্ন: শেভ করলে কি ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়?
উত্তর: আমরা অনেক সময়েই ভুল পদ্ধতিতে শেভ করি। যেদিকে হেয়ারগ্রোথ সেদিকে না টেনে তার উল্টোদিকে রেজার চালাই, ফলে ইনার-গ্রোথ অনেকটাই বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আবার এক এক জনের ত্বক এক এক রকমের হয়। যাঁদের খুব বেশি সংবেদনশীল ত্বক হয় তাঁদের শেভিং বা ওয়াক্সিং-এর পর ত্বকে লালচে ছোপ দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে কোনও ভাল ডারমেটোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়াটা ভাল।
৩। প্রশ্ন: রিকা ওয়াক্স আর ব্রাজিলিয়ান ওয়াক্স কি এক নাকি কিছু তফাত আছে?
উত্তর: রিকা ওয়াক্স আর ব্রাজিলিয়ান ওয়াক্স-এর মধ্যে প্রধান তফাত হল এই দুটি ওয়াক্স-এর কার্যপদ্ধতি আলাদা। ব্রাজিলিয়ান ওয়াক্স সাধারণত বিকিনি লাইন থেকে অবাঞ্ছিত লোম অপসারণের কাজে সাহায্য করে আর রিকা ওয়াক্স হল হোয়াইট চকলেট ওয়াক্স। রিকা ওয়াক্স-এরও নানা রকমফের রয়েছে। এক-এক ধরনের ত্বকের জন্য এক-এক রকম রিকা ওয়াক্স ব্যবহার করা হয়। রিকা ওয়াক্স-এর সবচেয়ে বড় সুবিধে হল এতে ট্যানও দূর হয়ে যায়।
৪। প্রশ্ন: ওয়াক্সিং করলে কি মরা কোষও দূর হয়?
উত্তর: শুনতে অবাক লাগলেও কথাটা সত্যি! ওয়াক্সিং শরীরের অবাঞ্ছিত লোম অপসারণের সঙ্গেই ত্বকের উপরে জমে থাকা মরা কোষ এবং ট্যান দূর করতে সাহায্য করে।
৫। প্রশ্ন: গর্ভবতী থাকাকালীন কি ওয়াক্স করানো যায় নাকি করানো উচিত নয়?
উত্তর: গর্ভাবস্থায় ওয়াক্সিং করানোর ক্ষেত্রে কোনও রিস্ক নেই বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অর্থাৎ মা বা শিশুর স্বাস্থ্যের দিকে কোনও সমস্যা হয় না। তবে যেহেতু গর্ভাবস্থায় মহিলাদের শরীরে হরমোনের নানা তারতম্যের জন্য ত্বক খুব সংবেদনশীল হয়ে যায় এবং অনেকেরই শরীরের নানা অংশ চুলকোয়। সেক্ষেত্রে কিছুদিন ওয়াক্সিং না করানোই ভাল।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!