বাঙালিরা সাধারণত সরষের তেলে রান্না করতেই অভ্যস্ত। মাঝে-মধ্যে বিশেষ কিছু পদ তৈরির সময় সানফ্লাওয়ার তেলের ব্যবহার হয় বটে, তবে এছাড়া বাঙালি হেঁশেলে আর কোনও তেলের হদিশ সে ভাবে মেলে না। তবে এবার থেকে সরষের তেলের পাশাপাশি অলিভ অয়েল (Olive Oil) খাওয়াও শুরু করুন। কেন, তাতে কী হবে? শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে সরষের তেল নানা ভাবে সাহায্য করে থাকে ঠিকই, কিন্তু একথাও উপেক্ষা করা সম্ভব নয় যে, গত কয়েক বছরে ছোট-বড় যে সব রোগের প্রকোপ বেড়েছে, তার অধিকাংশেরই দাওয়াই মজুত রয়েছে অলিভ অয়েলে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ, আর্থ্রাইটিস এবং হাই কোলেস্টেরলের মতো সমস্যাকে দূরে রাখতে অলিভ অয়েলের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তবে এখানেই শেষ নয়, এই তিলটিতে উপস্থিত নানা ভিটামিন-মিনারেল এবং অন্যান্য উপকারী উপাদানের গুণে যেমন ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, তেমনই হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটতেও সময় লাগে না। এমনকী, শরীর এবং ত্বকের বয়সও কমে। তাই বুঝতেই পারছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সুস্থ-সুন্দর থাকতে মাঝে মধ্যে অলিভ অয়েল খেতে (Health Benefits of Olive Oil) ভুলবেন না যেন! স্যালাডের ড্রেসিং হিসেবে বা মাছ-মাংস ম্যারিনেট করার সময় অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। আবার পাস্তা-স্প্যাগেটিতেও অল্প করে অলিভ অয়েল ছড়িয়ে দিলে খেতে মন্দ লাগবে না, সঙ্গে শরীরেরও নানা উপকার হবে।
অলিভ অয়েলের পুষ্টিগুণ (Olive Oil Nutrition Facts)
এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, সেই সঙ্গে ভিটামিন কে এবং ই। রয়েছে Oleic Acid এবং Palmitoleic Acid-এর মতো দু’টি উপকারী উপাদানও, যা নানা ভাবে শরীরের কাজে লেগে থাকে। বিশেষ করে অলিভ অয়েলে (Olive Oil) উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তে মিশে থাকা ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানগুলিকে ধ্বংস করে দেয়। ফলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনই দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থারও উন্নতি ঘটে। ফলে ছোট-বড় কোনও কোনও রোগই ধারেকাছে ঘেঁষার সুযোগ পায় না।
অলিভ অয়েলের প্রকারভেদ (Types of Olive Oil)
অলিভ অয়েল (Olive Oil) মূলত চার ধরনের হয়। ভার্জিন অলিভ অয়েল, এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল, পিওর অলিভ অয়েল এবং Lampante অলিভ অয়েল। এর মধ্যে ভার্জিন এবং এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলই রান্নায় (Olive Oil Health Benefits) ব্যবহার করা হয়। আর যদি প্রশ্ন করেন, ভার্জিন এবং এক্সট্রা ভার্জিনের মধ্যে কোন তেলটা ব্যবহার করা উচিত? তা হলে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলই যে বেশি ভোট পাবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
অলিভ অয়েলের নানা উপকারিতা (Olive Oil Health Benefits)
সপ্তাহে দিনতিনেক অলিভ খাওয়া শুরু করলে শরীরে বিশেষ কিছু উপকারী উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যে কারণে নানা উপকার (Benefits of Olive Oil) পাওয়া যায়। যেমন ধরুন…
১| অলিভ অয়েলে রয়েছে পচুর পরিমাণে উপকারী ফ্যাট (Rich In Healthy Dietary Fat)
শরীরকে সুস্থ রাখতে উপকারী ফ্যাটের প্রয়োজন পড়ে। বিশেষ করে হরমোনাল এবং ব্রেন ফাংশন ঠিক রাখতে উপকারী ফ্যাটের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো শরীরে যাতে এমন ফ্যাটের ঘাটতি না হয়, সেদিকে নজর রাখা একান্ত প্রয়োজন। আর সেই কাজটা করবেন কীভাবে? মাঝে মধ্যেই অলিভ অয়েল (Olive Oil) খেতে হবে। কারণ, এতে রয়েছে একাধিক উপকারী ফ্যাট। বিশেষ করে Oleic Acid-এর মতো Monounsaturated Fat নানা ভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে। রয়েছে ওমেগা সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিডও, যা একাধিক রোগের প্রকোপ কমায়। শুধু তাই নয়, শরীরে এই সব উপকারী ফ্যাটের পরিমাণ বাড়তে শুরু করলে প্রদাহের মাত্রা কমতে যেমন সময় লাগে না, তেমনই ক্যান্সারের মতো মারণ রোগও দূরে থাকতে বাধ্য হয়।
২| খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে (Helps To Reduce Bad Cholesterol)
Harvard School of Public Health-এর গবেষকদের করা এক স্টাডিতে দেখা গেছে, অলিভ অয়েলে উপস্থিত প্রায় ৪০ ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নানা ভাবে ‘এল ডি এল’ বা খারাপ কোলেস্টেলের মাত্রা কমায়, সেই সঙ্গে উপকারী কোলেস্টেরলের চাহিদা মেটাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। ফলে হার্টের কোনও ধরনের বড় ক্ষতির আশঙ্কা আর থাকে না। তবে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পাশাপাশি অলিভ অয়েলে (Olive Oil) উপস্থিত মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডও এক্ষেত্রে নানা ভাবে সাহায্য করে থাকে।
৩| ডায়াবেটিসের মতো রোগকে দূরে রাখে (Prevents Diabetes)
গত কয়েক বছরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এতটাই বেড়েছে যে সারা বিশ্বের মধ্যে আমাদের দেশ ডায়াবেটিস ক্যাপিটালে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই সংখ্যাটা বছর বছর বাড়ছে। তাই এখন থেকেই সাবধান না হলে কিন্তু বিপদ! কিন্তু প্রশ্ন হল, ডায়াবেটিসের মতো রোগকে কি আদৌ দূরে রাখা সম্ভব? আলবাত সম্ভব! কীভাবে? প্রায় দিনই এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল (Olive Oil) খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন, ডায়াবেটিসের মতো রোগ ধারেকাছেও ঘেঁষতে পারবে না। কারণ, এই তেলে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা ইনসুলিনের কর্মক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে, যে কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে।
৪| পেটের রোগের প্রকোপ কমে (Manage Digestive Problems)
বাঙালি চিরকালই একটু পেটরোগা। আর কেন হবে না-ই বা বলুন! কব্জি ডুবিয়ে খাওয়ার ব্যাপারে যে বাঙালিকে কেউ হারাতে পারবে না। ফলে গ্যাস-অম্বলের সমস্যা যেমন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী, তেমনই লেজুড় হয় বদহজমের মতো সমস্যাও। তাই তো বেশি করে অলিভ আয়েল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাতে কী হবে? অলিভ অয়েলে উপস্থিত Monosaturated Fat-এর কারণে Bowel Movement-এর উন্নতি ঘটে। ফলে গ্যাস-অম্বল এবং বদহজমের মতো সমস্যা তো দূরে পালায়ই, সেই সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগের প্রকোপ কমতেও সময় লাগে না। এত সব উপকার পেতে নিয়মিত এক চামচ অলিভ অয়েলের সঙ্গে সম পরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন, উপকার পাবেই পাবেন!
৫| শরীর এবং ত্বকের বয়স কমে (Keeps Your Skin Young)
উপকারী ফ্যাট এবং নানা ভিটামিন-মিনারেলের পাশাপাশি অলিভ অয়েলে মজুত রয়েছে প্রায় চল্লিশ ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রক্তে মিশে থাকা টক্সিক উপাদানদের ধ্বংস করে দেয়। ফলে খাতায় কলমে বয়স বাড়লের তার কোনও ছাপ শরীরের উপর পড়ে না। আর যদি অলিভ অয়েলের সঙ্গে নানা প্রাকৃতিক উপাদান মিশিয়ে তৈরি ফেস প্যাক মুখে লাগাতে শুরু করেন, তা হলে ত্বকের বয়স কমতেও দেখবেন সময় লাগবে না। সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্যও বাড়বে।
৬| কোষের ক্ষমতা বাড়ে (Boost Your Immunity)
২০১৮ সালে Internation Journal of Molecular Sciences-এ প্রকাশিত একটি স্টাডি অনুসারে অলিভ অয়েলে উপস্থিত Polyphenols নামক উপাদানটি কোষের ক্ষমতা বাড়ায়। সেই সঙ্গে Arterial Wall-এর ইলাস্টিসিটিও বাড়ে, যে কারণে নানা ধরনের হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বেশ কয়েক বছর আগে The Lancet পত্রিকায় প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুসারে ১৯৯০-২০১৬ সালের মধ্যে এদেশে হার্টের রোগে আক্রান্তের সংখ্যাটা প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই বুঝতেই পারছেন, এমন পরিস্থিতিতে হার্টকে চাঙ্গা রাখতে হলে অলিভ অয়েলের উপর ভরসা না করে কোনও উপায় নেই।
৭| ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে দূরে রাখে (Prevents Cancer)
গত বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশ করা এক রিপোর্ট অনুসারে গত কয়েক বছরে আমাদের দেশের বেশির ভাগ নাগরিকই হয় হার্টের রোগ, নয়তো ক্যান্সারের কারণে মারা গেছেন। শুধু তাই নয়, আগামী দিনে এদেশে ক্যান্সার রোগে আক্রান্তের সংখ্যাটা যে আর বাড়বে, সে বিষয়ে এক প্রকার নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে ব্রেস্ট ক্যান্সারের প্রকোপ বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তাই তো এমন পরিস্থিতিতে আট থেকে আশি, সকলেরই নিয়ম করে আলিভ আয়েল খাওয়া উচিত। কারণ, এই তেলটিতে মজুত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের ধ্বংস করার মধ্যে দিয়ে Oxidative Damage আটকায়, সেই সঙ্গে ক্যান্সার সেলগুলিকেও ধ্বংস করে দেয়। ফলে এমন মারণ রোগ ধারেকাছেও ঘেঁষতে পারে না।
৮| রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে (Controls Blood Pressure)
অলিভ অয়েলে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটও মজুত থাকে, যা রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। তাই যাঁদের পরিবারে এমন রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাঁরা মাঝে মধ্যেই অলিভ অয়েল দিয়ে তৈরি নানা খাবার খেতে ভুলবেন না যেন! ইচ্ছা হলে কাঁচা অলিভ অয়েলও খেতে পারেন।
৯| স্ট্রেস-ডিপ্রেশনের প্রকোপ কমবে (Reduce Stress-Depression)
আমাদের দেশের যুবসমাজের একটা বড় অংশই আজ ডিপ্রেশন, নয়তো স্ট্রেস-অ্যাংজাইটির শিকার, যে কারণে আত্মহত্যার সংখ্যা যেমন লাফিয়ে-লাফিয়ে বাড়ছে, তেমনই স্ট্রেসের লেজুড় হয়ে আসা নানা ছোট-বড় রোগে আক্রান্তও হচ্ছেন অনেকে। তাই সময় থাকতে থাকতেই স্ট্রেস এবং ডিপ্রেশনের মতো সমস্যাকে বাগে আনতে হবে, না হলেই বিপদ! কিন্তু প্রশ্ন হল এমনটা করবেন কীভাবে? এক্ষেত্রেও ভরসা রাখতে পারেন অলিভ অয়েলের উপর। কারণ, অলিভ অয়েল খাওয়ামাত্র শরীরে serotonin নামে এক প্রকার ‘ফিল গুড’ হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যে কারণে ডিপ্রেশনের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না।
১০| ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায় (Improves Brain Power)
এক্কেবারে ঠিক শুনেছেন! ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে বাস্তবিকই অলিভ অয়েলের জুড়ি মেলা ভার। এতে উপস্থিত ওমেগা ৩ এবং ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অ্যালঝাইমার্সের মতো মস্তিষ্কের রোগকে দূরে রাখতেও অলিভ অয়েল বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে অলিভ অয়েলে (Olive Oil) উপস্থিত নানা উপাদান ব্রেন সেলে তৈরি হওয়া Beta-Amyloid Plaque দূর করে, যে কারণে এমন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না।
১১| ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে (Manage Weight)
চটজলদি ওজন কমাতে চান তো অলিভ অয়েল খেতে ভুলবেন না যেন! Harvard School of Public Health-এর গবেষকদের করা একটা স্টাডিতে একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে অলিভ অয়েল নানা ভাবে সাহায্য করে থাকে। তাই পুজোর আগে ওজন কমাতে চোখ বন্ধ করে অলিভ অয়েলের উপর ভরসা রাখতে পারেন। অলিভ ওয়েল কীভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে? বিশেষজ্ঞদের মতে, এই তেলে উপস্থিত Monounsaturated Fat এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
১২| শরীরের প্রদাহ কমে ( Has Anti-Inflammatory Properties)
শরীরে প্রদাহের মাত্রা বাড়তে শুরু করলে হার্টের যেমন মারাত্মক ক্ষতি হয়, তেমনই ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, অ্যালঝাইমার্স এবং আর্থ্রাইটিস মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। তাই তো প্রদাহের মাত্রা যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। কিন্তু এই কাজটা করবেন কীভাবে, তা জানেন কি? এক্ষেত্রেও অলিভ অয়েল (Health Benefits of Olive Oil) আপনাকে সাহায্যে করতে পারে। কীভাবে? এই তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা অল্প সময়েই প্রদাহের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। ফলে শরীরের কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না।
অলিভ অয়েল ব্যবহারের নিয়ম (Easy Ways To Use Olive Oil)
স্যালাডের ড্রেসিং হিসেবে, নয়তো পাস্তা-স্প্যাগেটি অলিভ অয়েলে রান্না তো করতেই পারেন। নিয়মিত এক চামচ করে কাঁচা অলিভ অয়েল খাওয়া শুরু করলেও উপকার মেলে। কিন্তু ভুলেও বাঙালি কোনও পদ বা ভাজাভুজি রান্নার সময় অলিভ অয়েল ব্যবহার করবেন না। কারণ, এই তেলের heat point খুব কম। অর্থাৎ একটু বেশি আঁচেই তেলটা পুড়ে যায়। ফলে অলিভ অয়েল খুব বেশি গরম করলেই এর পুষ্টিগুণ সব নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কোনও উপকারই মেলে না। হালকা আঁচে যেসব পদ তৈরি করা সম্ভব, তাতে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতেই পারেন। এমনকী, মাছ-মাংস ম্যারিনেট করার সময়ও অলিভ অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে।
অলিভ অয়েলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া (Side Effects of Olive Oil)
একাধিক রোগকে দূরে রাখতে অলিভ অয়েল নানা ভাবে কাজে আসে ঠিকই। কিন্তু এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও (Side Effects of Olive Oil) রয়েছে। যেমন ধরুন…
১| অ্যালার্জির প্রকোপ বাড়তে পারে (Can Cause Allergies)
চিংড়ি মাছ বা ডিম খেলে যেমন অনেকের অ্যালার্জি হয়, তেমনই অলিভ অয়েলও (Olive Oil) অনেকের সহ্য হয় না। তাই তো এই তেল ব্যবহারের আগে অল্প করে একটু খেয়ে দেখে নেওয়া উচিত কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া (Side Effects) হচ্ছে কিনা। যদি দেখেন অ্যালার্জি বা অন্য কোনও ধরনের সমস্যা হচ্ছে না, তা হলে নিশ্চিন্তে খেতে পারেন।
২| ব্লাড সুগার হঠাৎ করে কমে যেতে পারে (Can Lower Your Blood Sugar Level)
যাঁরা ডায়াবেটিক, তাঁরা অলিভ অয়েল খাওয়ার আগে একবার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে ভুলবেন না যেন! কারণ, অনেক সময় অলিভ অয়েল খাওয়া মাত্র ব্লাড সুগার হঠাৎ করে অনেকটা নেমে যায়, যা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। বিশেষ করে যাঁরা ডায়াবেটিস রোগী, তাঁদের তো এমন সুগার ফল করা একেবারেই উচিত নয়।
৩| বেশি মাত্রায় খেলে ওজন বাড়তেও পারে (Excess Consumption Can Increase Weight)
অলিভ অয়েল ওজন কমাতে সাহায্য করে ঠিকই। কিন্তু বেশি মাত্রায় খাওয়া শুরু করলে একেবারে উল্টো ঘটনা ঘটে। এক্ষেত্রে ওজন তো কমেই না, বরং বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে ব্লাড প্রেশার কমে যাওয়া এবং Gallbladder Blockage-এর মতো সমস্যাও হতে পারে। তাই বেশি মাত্রায় অলিভ অয়েল (Olive Oil) খাওয়া একেবারেই উচিত নয়।
এই বিষয়ে সাধারণ কিছু প্রশ্নের উত্তর (FAQs)
১| অলিভ অয়েল কি ত্বক এবং চুলের যত্নেও কাজে আসে?
অবশ্যই। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে অলিভ অয়েল যেমন বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, তেমনই বলিরেখা কমাতে, ফাটা গোড়ার চিকিৎসায়, খুশকি দূর করতে এবং চুল পড়া কমাতেও সাহায্য করে।
২| অলিভ অয়েল খাওয়া শুরু করলে নাকি স্ট্রোকের আশঙ্কাও কমে?
নিয়মিত অল্প পরিমাণে অলিভ অয়েল খেলে শরীরে monounsaturated fat-এর মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যে কারণে স্ট্রোকের আশঙ্কা তো কমেই, সঙ্গে হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও আর থাকে না।
৩| অলিভ অয়েল কীভাবে স্টোর করতে হবে?
সব সময় ঠান্ডা জায়গায় অলিভ অয়েলের শিশি রাখবেন। আর যদি অন্ধকার জায়গায় রাখতে পারেন, তাহলে তো কথাই নেই। খুব গরম জায়গায় এই তেলটি রাখলে কিন্তু এর পুষ্টিগুণ সব নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তবে ঠিক-ঠিক নিয়ম মেনে যদি অলিভ অয়েল স্টোর করতে পারেন, তা হলে অন্তত তিন বছর তেলটা নষ্ট হবে না।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!