যারা ফ্যশন করতে ভালবাসি, তাদের আলমারিতে অন্তত এক জোড়া স্লিম ফিট প্যান্টস (slim fit pants) থাকবে না, তা কি আদৌ সম্ভব? স্লিম ফিট প্যান্টস (skinny pants) মানে কিন্তু কেবলমাত্র জিনসের কথা হচ্ছে না, স্লিম ফিট প্যান্টসেরও নানা রকমফের রয়েছে। এছাড়াও বেশিরভাগ মহিলার নিত্যদিনের সঙ্গী লেগিংসও কিন্তু স্লিম ফিট প্যান্টসের মধ্যেই পড়ে! গ্রীষ্ম থেকে শুরু করে শীত, বসন্ত – সব ঋতুতেই ফ্যশনেবল এই পোশাকটি। যাদের প্রতিদিন কাজে বেরতে হয়, তাঁরা খুব ভাল করেই জানেন যে এই প্যান্টগুলো ফ্যশনেবল হওয়ার সঙ্গে কতটা আরামদায়কও বটে! ক্যাসুয়াল টপ থেকে শুরু করে ফর্মাল শার্ট – সব কিছুর সঙ্গে পরা যায় এই বটমওয়্যারটি। কিন্তু স্লিম ফিট প্যান্ট ব্যাপারটা কী, তা সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া যাক আগে।
আজ থেকে যদি একটু সময়টা রিওয়ান্ড করে দেওয়া যায় অর্থাৎ একটু যদি পিছনদিকে ফিরে দেখা যায় তাহলে কিন্তু দেখা যাবে স্লিম ফিট প্যান্টস বহুকাল ধরেই ফ্যশনে ইন। সবচেয়ে মজার বিষয় হল পঞ্চাশের দশক থেকে মহিলারা নিজেদেরকে ফ্যশনেবল করে তুলতে স্লিম ফিট প্যান্টস (skinny pants) পরে আসছেন। এই যে আজ আপনি রিপড জিনস নিয়ে এত মাতামাতি করছেন, আপনি কি জানেন সত্তরের দশকে প্রথম উৎপত্তি হয়েছিল এই পোশাকটির? এমনকি সিগারেট প্যান্টসও কিন্তু বাজারে প্রথম এসছিল ওই একই সময়ে। এরপর আশির দশকে আসে লেগিংস, নব্বই-এর দশকে আসে স্কিনি জিনস (skinny pants) যেগুলো গোড়ালি পর্যন্ত ঝুল থাকত, এখন যা ‘মম জিনস’ নামে পরিচিত। তবে শুধুমাত্র ডেনিম ফ্যাব্রিকেই সিমাবদ্ধ থাকেনি এই ফ্যশন। অন্যান্য নানা ফ্যব্রিকের সঙ্গেও রীতিমত পরীক্ষা করা হয়েছে স্লিম ফিট প্যান্টসের ডিজাইন; আর আশ্চর্যের বিষয় হল প্রতিটি ফ্যশনের পরীক্ষাতেই সম্মানের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে এই পোশাকটি।
দেখে নিন কোন স্টাইল কখন খুব বেশি জনপ্রিয় হয়েছিল
১৯৬০ - ক্যেপ্রি প্যান্টস ছিল খুব জনপ্রিয়
১৯৭০ - রিপড জিনস, সিগারেট প্যান্টস সবাই খুব পছন্দ করতেন
১৯৮০ - স্কিনটাইট লেগিংস পরার চল ছিল
১৯৯০ - মিড-ওয়েস্ট এবং স্কিনি মম জিনস বাজারে আসে
২০০০ - লো-ওয়েস্ট এবং অত্যন্ত স্কিনি প্যান্টস (skinny pants) কিছুটা জনপ্রিয়তা লাভ করে
স্লিম ফিট প্যান্টস-এর ইতিহাস তো না হয় জানা গেল, কিন্তু স্লিম ফিট প্যান্টস ডেনিম বা জিনসের ফ্যাব্রিক ছাড়া আরও কোন কোন ফ্যাব্রিকেও তৈরি হয়েছে তাও নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করছে? চলুন দেখে নেওয়া যাক স্লিম ফিট জিনস (skinny pants) ছাড়াও আর কী কী ধরনের প্যান্টস হয়
নিশ্চয়ই ভাবছেন যে লেগিংস নিয়ে কী কথা বলব তাও আবার নতুন করে, প্রতিদিনই তো ঘরে হোক বা বাইরে, এই পোশাকটি মোটামুটি সব্বাই পরছেন! কিন্তু কথা আছে, আর সেগুলোই আপনাদেরকে জানাবো। লেগিংস যে ফ্যাব্রিক দিয়ে তৈরি হয় তাকে বলা হয় লাইক্রা। এই ফ্যাব্রিকটি যেহেতু স্ট্রেচেবল তাই আশির দশকে এই লাইক্রার দ্বারা নির্মিত প্যান্টস বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাঁরাই ব্যবহার করতেন যারা নিয়মিত খেলাধুলোর সঙ্গে যুক্ত। আসলে যারা নিয়মিত খেলাধুলো বা শরীরচর্চা করেন তাঁদের অনেকবেশি ফ্লেক্সিবল হতে হয় এবং সেসময়ে যদি এমন পোশাক পরা হয় যাতে হাত-পা ছুড়তে অসুবিধে হতে পারে তাহলে মুশকিল! সেজন্যই খেলোয়াড়রা এই ধরণের স্লিম ফিট প্যান্টস পরতে বেশি স্বচ্ছন্দবোধ করতেন।
প্রায় ২০০০ সালের শুরুর দিকেই লেগিংস এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল যে জিনসের বাজার বেশ মাড় খাচ্ছিল। আজ্ঞে হ্যাঁ, একদম ঠিক পড়লেন আপনি। আসলে লেগিংস-এর ফ্যাব্রিক খুবই আরামদায়ক হওয়ায় নব্বই-এর দশকের ফ্যশন কুইনরা সেদিকেই বেশি ঝোঁকেন। প্রতিদিনের পরার মত সাধারণ লেগিংস নয়, নানা ডিজাইনের, নানা প্যাটার্নের লেগিংস বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করছিল এবং এখনও কিন্তু সমানভাবে জনপ্রিয়। সত্যি করে বলুন তো, আপনার আলমারিতে ঠিক কটা লেগিংস রয়েছে? প্রতিদিন অফিস যাওয়ার জন্যই হোক বা বাজার যাওয়ার সময়ে, বন্ধুদের সঙ্গে ব্রাঞ্চে যাওয়ার সময়ে হোক বা সিনেমা দেখতে যাওয়ার সময়ে অথবা কোনও পার্টিতে – এই স্লিম ফিট প্যান্টস কিন্তু সব মহিলারই সঙ্গী!
চলুন দেখে নেওয়া যাক কয়েকরকমের লেগিংস -
জেগিংস ব্যাপারটা কী? সোজা কথায় বলতে গেলে লেগিংস আর জিনসের মাঝামাঝি একটি পোশাক হল জেগিংস। আগেই যেমন বললাম, বিংশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময় থেকে স্লিম ফিট প্যান্টস, বিশেষ করে জিনস খুব জনপ্রিয় হতে থাকে। তবে এই জিনসগুলো মোটা ডেনিমের ফ্যাব্রিকের না, বরং পাতলা কাপড়ের ডেনিম দিয়ে তৈরি প্যান্টস খুব বেশি পছন্দ করতে শুরু করেছিলেন মহিলারা। তবে জেগিংস কিন্তু এর থেকে একটু আলাদা। সুতির ফ্যাব্রিক এবং স্প্যান্ডেক্স নামে আরও একটি ফ্যাব্রিক মিশিয়ে তৈরি হয় জেগিংস, যেগুলো দেখতে অনেকটা জিনসের মত হলেও ‘পুল অন প্যান্টস’ নামেও পরিচিত।
অনেকেই সব সময়ে জিনস পরতে পছন্দ করেন না, তাঁরা কিন্তু এই জেগিংস পরে বেশ স্বচ্ছন্দবোধ করতে পারেন। জেগিংস অনেক বেশি হালকা, আরামদায়ক এবং শরীরের সঙ্গে সেঁটে থাকে।
চলুন দেখে নেওয়া যাক কয়েকরকমের জেগিংস -
লেগিংস বা জেগিংস যতই জনপ্রিয় হোক না কেন, কিছু কিছু সমস্যা এই দুটি পোশাকেরও রয়েছে। লেগিংসের সঙ্গে ক্রপ টপ বা ছোট ঝুলের টপ পরা যায় না, ঠিক তেমনই কোনও ফর্মাল অনুষ্ঠানে জেগিংস পরে যাওয়া যায় না। তাহলে? এর সমাধানও আছে! ফর্মাল ট্রাউজারের আভিজাত্য আর লেগিংস-এর আরাম – দুইয়ের মেলবন্ধন হল ট্রেগিংস। ট্রেগিংসের সঙ্গে আপনি অনায়াসে ছোট ঝুলের টপ পরতে পারেন আবার লম্বা কোনও শার্ট টাক-ইন করেও ফ্যশন করতে পারেন!
চলুন দেখে নেওয়া যাক কয়েকরকমের ট্রেগিংস -
আপনি কেমন সাজবেন, কোন পোশাক পরবেন, সে বিষয়ে কি সবার থেকে মতামত নিয়ে তবে ফ্যশন করবেন নাকি? তবুও যদি কখনও আপনার মনে প্রশ্ন জাগে যে আপনি কেন স্লিম ফিট প্যান্টস পরবেন, তাহলে আমরা আপনাকে কয়েকটা কারণ জানাতে পারি
১। এই পোশাকে পা বেশ লম্বা দেখতে লাগে
২। স্লিম ফিট প্যান্টস অনেক বেশি স্টাইলিশ দেখতে লাগে
৩। অনেক রকমের পোশাকের সঙ্গে স্লিম ফিট প্যান্টস পরতে পারেন
৪। স্কিনি জিনস বাদে বাকি সব রকমের স্লিম ফিট প্যান্টস কিন্তু হালকা, আরামদায়ক এবং সব ঋতুতে পরার উপযোগী হয়। বিশেষ করে গরমকালে এই পোশাকগুলো খুবই আরামদায়ক।
নানা রকমের টপ বা শার্টের সঙ্গে আরামসে পরা যায় স্লিম ফিট প্যান্টস। নীচে কয়েকটি স্টাইলিং টিপস দেওয়া হল –
আপনার স্লিম ফিট প্যান্টস আপনি কীভাবে পরবেন তা সম্পূর্ণভাবে আপনার উপরে। আপনি কোন উপলক্ষ্যে পোশাকটি পরছেন, তার উপরে নির্ভর করবে আপনার স্টাইল। কোনও ক্যাসুয়াল স্টাইল করতে চাইলে লম্বা টিশার্টের নীচে পরতে পারেন স্কিনি জিনস বা জেগিংস, তবে টিশার্টের সঙ্গে লেগিংস না পরাটাই ভাল, কারণ দেখতে ভাল লাগে না।
অনেকেই অফিসে ফর্মাল পোশাক পরে যান না, মানে যেতে হয় না আর কি! তাই বলে কিছু এটিকেট তো রক্ষা করতেই হয়। যেমন তেমন একটা পোশাক গলিয়ে চলে গেলে ত আর হয় না। অফিসে যদি আপনি বাটন ডাউন শার্ট পরে যান সেক্ষেত্রে আপনি ট্রেগিংস-এর সঙ্গে তা টীমআপ করতে পারেন।
শীত আসছে, অনেকেই এবার টার্টলনেক টপ বা সোয়েটার পরা শুরু করবেন। আপনার টার্টলনেক সোয়েটার যদি লম্বা ঝুলের হয় তাহলে তার সঙ্গে স্লিম ফিট প্যান্টস পরে নিতে পারেন অথবা টপের সঙ্গে পরে তার উপরে একটা লং জ্যাকেট বা স্টোল নিতে পারেন।
সাদা শার্টের সঙ্গে যে-কোনও বটমওয়্যারই দেখতে দারুণ লাগে। আপনার যদি নীল রঙের স্লিম ফিট জিনস থাকে তাহলে সাদা শার্টের সঙ্গে তা ভালই মানাবে।
আজকাল রিপড জিনস খুব বেশি ইন ফ্যশনে। কোনও পুরনো স্লিম ফিট প্যান্টকে নিজেই বাড়িতে রিপড জিনসে কনভারট করে নিতে পারেন অথবা নতুনও কিনতে পারেন। ক্যাসুয়াল লুকের জন্য পারফেক্ট!
এতকিছু যে জানালাম, নিশ্চয়ই এবার স্লিম ফিট প্যান্টস (slim fit pants) আরও বেশি করে পরবেন? আর যারা এতদিন পরেননি, কোনও না কোনও কারণে, আশা করি তাঁরাও কিনবেন! কিন্তু আপনি যদি প্রথমবার স্লিম ফিট প্যান্টস (slim fit pants) পরেন, তাহলে কিছু কিছু বিষয় একটু মাথায় রাখলে ভাল
১। স্লিম ফিট প্যান্টসের (slim fit pants) সঙ্গে কিন্তু আপনি ছোট ঝুলের স্কার্টও পরতে পারেন, অথবা শর্ট ড্রেসও বেশ মানাবে।
২। যদি অ্যাঙ্কেল লেন্থ স্লিম ফিট প্যান্টস পরেন তাহলে তার সঙ্গে স্লিপারস বা স্যান্ডেল পরবেন না, বরং শর্ট বুটস পরুন।
৩। যাঁদের চেহারা বেশ রোগার দিকে, তাঁরা যদি কখনও স্কিনি জিনস পরেন তাহলে তার সঙ্গে লং জ্যাকেট বা শ্রাগ পরতে পারেন, দেখতে ভাল লাগবে।
৪। হাই ফ্যাশন করতে চাইলে এই পোশাকটির সঙ্গে স্টিলেটো বা হাই পাম্প শ্যুজ পরুন।
৫। চওড়া বেল্ট দিয়ে যদি স্লিম ফিট প্যান্টস পরেন, বেশ গরজিয়াস দেখতে লাগবে।
১। স্কিনি জিনস পরলে তার উপরে কখনও শর্টস বা হট প্যান্ট পরবেন না।
২। যদি আপনি ছোট ঝুলের শার্ট পরেন বা এমন কোনও টপ পরেন যা আপনার নিতম্ব পর্যন্ত ঝুল নয়, তাহলে তার সঙ্গে লেগিংস পরবেন না। ক্রপ টপ বা ছোট শার্টের সঙ্গে ট্রেগিংস পরতে পারেন অবশ্য।
৩। চুড়িদার আর লেগিংস কিন্তু এক পোশাক নয়। কুরতির সঙ্গে আপনি লেগিংস পরতে পারেন, কিন্তু সব রকম স্লিম ফিট প্যান্টের সঙ্গে কিন্তু কুর্তি পরতে পারেন না।
৪। হুডি আর টিশার্ট দিয়েই স্লিম ফিট প্যান্টস পরা যায় তেমন ধারণা ছাড়ুন।
৫। খুব বেশি টাইট স্লিম ফিট প্যান্টস (slim fit pants) পরবেন না, মনে রাখবেন আপনি কিন্তু ‘ক্যাট ওম্যান’ নন!
একটা ধারণা আছে যে যারা খুব রোগা তাঁরাই একমাত্র স্লিম ফিট প্যান্টস (slim fit pants) পরতে পারেন। কিন্তু সত্যি কথা হল, যে কেউ এই পোশাকটি পরতে পারেন। কীভাবে আপনি একটি পোশাক পরছেন তার উপরেও কিন্তু নির্ভর করে আপনাকে কেমন দেখতে লাগছে।
আপনি যদি আঁটোসাঁটো পোশাক পরতে স্বচ্ছন্দ হন, তাহলে আপনি অবশ্যই স্লিম ফিট প্যান্টস (slim fit pants) পরতে পারেন। আর স্লিম ফিট প্যান্টস মানেই কিন্তু জিনস বা লেদার প্যান্টস নয়, সেকথা তো এতক্ষনে নিশ্চয়ই বুঝে গিয়েছেন!
না, সামান্য তফাৎ রয়েছে। স্কিনি প্যান্টস পায়ের সঙ্গে একদম সেঁটে থাকে আর গোড়ালির কাছেও একদম সেঁটে থাকে, কিন্তু স্লিম ফিট প্যান্টস (slim fit pants) অতটা বেশি সেঁটে থাকে না। আসলে স্লিম ফিট প্যান্টস হাঁটুর উপরের অংশ অর্থাৎ থাই এবং নীচের অংশ অর্থাৎ কাফ মাসলের সঙ্গে একটু লেগে থাকে কিন্তু এর কাট বুটকাটও হতে যা স্কিনি প্যান্টসের ক্ষেত্রে হয় না। স্কিনি প্যান্টস দেখে মনে হয় যেন তা চামড়ার উপরের আরও একটি স্তর।
চিনোস হল একধরনের ফ্যাব্রিক এবং এই ফ্যাব্রিকের নামেই এই পোশাকটির নামকরণ করা হয়। স্লিম ফিট প্যান্টসের (slim fit pants) একটি ধরণ বলা যেতে পারে এই প্যান্ট গুলিকে।
বিখ্যাত ডেনিম ব্র্যান্ড ‘Levi’s’ প্রথমবার বাজারে আনেন স্কিনি জিনস, মোটামুটি ২০০৬-২০০৭ সাল নাগাদ।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এসে গেল #POPxoEverydayBeauty - POPxo Shop-এর স্কিন, বাথ, বডি এবং হেয়ার প্রোডাক্টস নিয়ে, যা ব্যবহার করা ১০০% সহজ, ব্যবহার করতে মজাও লাগবে আবার উপকারও পাবেন! এই নতুন লঞ্চ সেলিব্রেট করতে প্রি অর্ডারের উপর এখন পাবেন ২৫% ছাড়ও। সুতরাং দেরি না করে শিগগিরই ক্লিক করুন POPxo.com/beautyshop-এ এবার আপনার রোজকার বিউটি রুটিন POP আপ করুন এক ধাক্কায়...