মকর সংক্রান্তি (Makar Sankranti) মানেই বাঙালির কাছে পিঠে (pithe) পুলি উৎসব। দোকান থেকে কিনে খান বা বাড়িতে তৈরি করুন, পিঠে, পায়েস ছাড়া যেন শীতকাল জমে না! আমরা আপনাদের কিছু রেসিপির সাজেশন দেওয়ার চেষ্টা করলাম। দেখুন তো কাজে লাগে কিনা।
Table of Contents
মকর সংক্রান্তি বলতে কী বোঝায়? (What is the significance of Makar Sankranti)
পৌষ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তি বাঙালি সংস্কৃতিতে একটি বিশেষ উৎসবের দিন। বাংলা পৌষ মাসের শেষের দিন এই উৎসব পালন করা হয়। এই দিন বাঙালিরা বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করে খাকে। তার মধ্যে পিঠে খাওয়া, ঘুড়ি ওড়ানো অন্যতম। সারাদিন ঘুড়ি ওড়ানোর পরে সন্ধ্যায় পটকা ফাটিয়ে ফানুস উড়িয়ে উৎসবের সমাপ্তি করেন অনেকে। বীরভূমের কেন্দুলী গ্রামে এই দিনটিকে ঘিরে ঐতিহ্যময় জয়দেব মেলা হয়। বাউল গান এই মেলার অন্যতম আকর্ষণ। মূলত জ্যোতিষশাস্ত্রের একটি ক্ষণ ‘মকরসংক্রান্তি’ শব্দটি দিয়ে নিজ কক্ষপথ থেকে সূর্যের মকর রাশিতে প্রবেশকে বোঝানো হয়ে থাকে। ভারতীয় জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী ‘সংক্রান্তি’ একটি সংস্কৃত শব্দ, এর দ্বারা সূর্যের এক রাশি থেকে অন্য রাশিতে প্রবেশ করাকে বোঝানো হয়ে থাকে। ১২টি রাশি অনুযায়ী এরকম সর্বমোট ১২টি সংক্রান্তি রয়েছে। ভারত ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ায় এই দিবস বা ক্ষণকে ঘিরে উদযাপিত হয় উৎসব। নেপালে এই দিবসটি মাঘি নামে, থাইল্যান্ডে সংক্রান, লাওসে পি মা লাও, মিয়ানমারে থিং ইয়ান এবং কম্বোডিয়ায় মহাসংক্রান নামে উদযাপিত হয়। অবশ্যিকভাবে দেশ ভেদে এর নামের মতোই উৎসবের ধরনে থাকে পার্থক্য।
মকর সংক্রান্তিতে কোন কোন রেসিপি ট্রাই করতে পারেন (Bengali Dessert Recipes To Try This Makar Sankranti)
মকর সংক্রান্তিতে বিভিন্ন রকম মিষ্টি (sweet) খাওয়ার চল রয়েছে বাঙালিদের মধ্যে। অনেক বাড়িতে এটা নিয়মের মধ্যে পরে। পিঠে, পুলি, পায়েস জাতীয় মিষ্টি তৈরি করা হয় বাড়িতেই। মকর সংক্রান্তি স্পেশ্যাল ১৫টি রেসিপি দেখে নেওয়া যাক এক নজরে।
১) নলেন গুড়ের পায়েস
উপকরণ: গোবিন্দভোগ চাল হাফ কাপ, এক টেবিল চামচ ঘি, এক লিটার দুধ, কনডেনডস মিল্ক ১/৩ ক্যান, নলেন গুড় তিন থেকে চার কাপ, ভাঙা বাদাম, চিনি।
প্রণালী: হালকা আঁচে দুধ ফুটিয়ে নিন। ফোটার সময় সমানে নাড়তে থাকুন। চাল ধুয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট জলে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর সেই জল ঝরিয়ে নিন। প্যানে ঘি গরম করে চাল দিয়ে নেড়ে নিন। দুধ ঘন হয়ে এলে চাল দিয়ে দিন। হালকা আঁচে নাড়তে থাকুন। এতে তলা লেগে যাবে না। চাল সেদ্ধ হয়ে এলে কনডেনসড মিল্ক যোগ করুন। চিনি দিন প্রয়োজন মতো। চার-পাঁচ মিনিট নেড়ে নিন। চিনির মাপ ঠিক হয়েছে কিনা চেখে দেখতে পারেন। পায়েস হয়ে গেলে ভাঙা বাদাম ছড়িয়ে দিন। ঠাণ্ডা করে পরিবেশন করুন নলেন গুড়ের পায়েস।
২) পাটিসাপ্টা
উপকরণ: ২ লিটার দুধ। ৫০০ গ্রাম চিনি। দুই টেবিল চামচ সুজি। নারকোল মিহি করে কোরা আধ কাপ। চালের গুঁড়ো এক কেজি। আধ কাপ ময়দা। তেল ভাজার জন্য। নুন, জল পরিমাণ মতো।
প্রণালী: প্রথমে অর্ধেক চিনি এবং দুঝ ফুটিয়ে নিন। তার মধ্যে সুজি আর নারকোল কোরা দিয়ে ক্ষীর তৈরি করে নিতে হবে। ক্ষীর ঘন হলে নামিয়ে নিন। ক্ষীর তৈরির সময় খেয়াল রাখবেন, নীচে যেন পুড়ে না যায়। এবার চাল গুঁড়ো, বাকি চিনি, জল এবং অল্প নুন মিশিয়ে পাতলা গোল করে নিন। ফ্রাইং প্যানে অল্প তেল গরম করে ওই গোলা কিছুটা দিয়ে পাতলা রুটির মতো তৈরি করুন। সামান্য ভাজা হলে পরিমাণ মতো ক্ষীর দিন। এবার মুড়িয়ে পাটিসাপ্টার আকারে ভেজে নিন। ঠাণ্ডা করে পরিবেশন করুন।
৩) দুধ পুলি
উপকরণ: চালের গুঁড়ো আড়াই কাপ।ময়দা আধ কাপ। জল দেড় কাপ। নুন আধ চা চামচ। ঘি আধ চা চামচ। দুধ দেড় কেজি। চিনি স্বাদ মতো। গুঁড়ো দুধ প্রয়োজন মতো।কনডেন্সড মিল্ক – প্রয়োজন মতো। নারকেল কোড়া দেড় কাপ। এলাচ ২,৩টি।
প্রণালী: প্রথমে পুর তৈরির জন্য কিছুটা নারকেল আলাদা করে রাখুন। বাকি নারকেল কোরা ফ্রাইং প্যানে চিনি দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে তুলে নিন। এবার দুধের সঙ্গে গুঁড়ো দুধ, চিনি, কনডেন্সড মিল্ক, এলাচ মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। অন্য পাত্রে জলের সঙ্গে নুন এবং ঘি দিয়ে গরম করে নিন। এবার তার মধ্য়ে চাল গুঁড়ো এবং ময়দা মিশিয়ে নিন। গোলা তৈরি হয়ে গেলে ছোট ছোট লুচির মতো করে বেলে ভিতরে নারকেলের পুর ভরে দিন। এরপর আগে থেকে ফুটিয়ে রাখা দুধের মধ্যে দিয়ে ১০-১৫ মিনিট রান্না করুন। এরপর পাত্রের ঢাকা খুলে আগে থেকে কুড়িয়ে রাখা নারকেল দিয়ে মিনিট পাঁচেক রান্না করুন। ঠান্ডা হলে পরিবেশন করুন। আবার প্রয়োজন হলে ফ্রিজে রেখেও ঠাণ্ডা করে নিতে পারেন।
৪) ভাপা পিঠে
উপকরণ: চালের গুঁড়ো দুই কাপ। খেজুর গুড় এক কাপ। নারকেল গুঁড়ো এক কাপ। নুন আন্দাজ মতো।
প্রণালী: চালের গুঁড়ো চালুনিতে চেলে নিন। এরপর নিন এবং জল দিয়ে হালকা ভাবে মেখে নিন। দলা বেঁধে যাতে না যায়, খেয়াল রাখবেন। এরপর হাঁড়িতে অল্প আঁচে জল বসান। ওপরে ঢাকনিটা যেন ছিদ্রযুক্ত হয়। ঢাকনির পাশে ছিদ্র থাকলে আটা দিয়ে বন্ধ করে দিন। এরপর ছোট বাটিতে আগে থেকে মেখে রাখা চাল গুঁড়ো, গুড় এবং নারকেল গুঁড়ো দিন। পাতলা কাপড় দিয়ে বাটির মুখ ঢেকে হাঁড়ির ছিদ্রযুক্ত ঢাকনির ওপর বাটি উল্টে দিন। বাটি সরিয়ে নিন তিন মিনিট অপেক্ষা করলেই তৈরি ভাপা পিঠে। নারকেল গুঁড়ো ছড়িয়ে পরিবেশন করতে পারেন।
৫) গোলাপ পিঠে
উপকরণ: ময়দা ২ কাপ, দুধ ১ কাপ, চালের গুঁড়ো আধ কাপ, চিনি ২ টেবিল চামচ, ঘি ১ টেবিল চামচ, নুন স্বাদ মতো, সাদা তেল ১ কাপ। শিরার জন্য লাগবে চিনি ২ কাপ, এলাচ ৩টি, গোলাপ জল ২ চা চামচ।
প্রণালী: ময়দায় চালের গুঁড়ো, নুন, চিনি ও ঘি মিশিয়ে ময়ান দিয়ে নিন। হালকা গরম দুধ দিয়ে মণ্ড তৈরি করুন। তা কেটে বল তৈরি করে পাতলা রুটি বেলে নিন। এই রুটি থেকে সমান মাপের ছয়টি গোল টুকরো কেটে নিন। এই গোল টুকরো একটির উপরে আর একটি রাখুন। এই ছয়টি স্তরের রুটি একসঙ্গে রোল করে নিন। রোল মাঝখান থেকে ছুরি দিয়ে কাটুন। কাটার জায়গা হাতের চাপে জুড়ে নিন। এ বার গোলাপের পাপড়ির মতো খুলে দিন। গরম তেলে লাল করে ভেজে নিন। অন্য পাত্রে গরম জলে চিনি, এলাচ, দারচিনি দিয়ে ফুটিয়ে রস বানান। নামিয়ে গোলাপজল দিন। এতে পিঠে ডুবিয়ে রাখুন। তৈরি আপনার গোলাপ পিঠে।
৬) নকশি পিঠে
উপকরণ: চালের গুঁড়ো ২ কাপ, নুন অল্প, উষ্ণ জল ২ কাপ, নারকেল কোরা ২ কাপ, নলেন গুড় ২ কাপ, ঘি স্বাদ মতো।
প্রণালী: নারকেল কোরা ও খেজুরের গুড় একসঙ্গে জ্বাল দিয়ে পুর তৈরি করে নিন। একটি পাত্রে চালের গুঁড়ো, নুন ও গরম জল একসঙ্গে মেখে মণ্ড বানাতে হবে। এই মণ্ড থেকে ছোট ছোট অংশ কেটে বলের আকারে গড়ে নিন। এর মধ্যে নারকেলের পুর ভরে মুখটা আটকে পুলির মতো গড়ে নিন। পুলির গায়ে পছন্দ মতো নকশা করে নিন। একটি পাত্রে জল গরম করে মিনিট দশেক ভাপিয়ে নিলেই তৈরি নকশি পিঠে।
৭) চিতই পিঠে
উপকরণ: চালের গুঁড়ো ১ কাপ, নারকেল কোরা আধ কাপ, ঘি ২ টেবিল চামচ, নুন স্বাদ মতো, উষ্ণ জল ১ কাপ।
প্রণালী: চালের গুঁড়ো, নারকেল কোরা, ঘি, নুন ও গরম জল একসঙ্গে মিশিয়ে লেই তৈরি করতে হবে। ঢাকা সমেত মাটির সরা নিয়ে গ্যাসে বসান। সরাটা গরম করে ঘি ব্রাশ করুন। এক হাতা লেই সরার মাঝখানে দিন। ঢাকা দিয়ে জলের ছিটে দিতে হবে। মিনিট পাঁচেক রাখুন। চারপাশে খুন্তি দিয়ে ঠেলে পিঠে আলগা করে তুলে নিন। গুড়ের সঙ্গে খেতে পারেন ।
৮) নারকেলের তিল পুলি
উপকরণ: নারকেল কোরা ২ কাপ, ভাজা তিলের গুঁড়ো আধ কাপ, খেজুরের গুড় ১ কাপ, আতপ চালের গুঁড়ো ২ টেবিল চামচ, এলাচ গুঁড়ো, দারচিনি ২-৩টা, নুন, প্রয়োজন মতো জল এবং ভাজার জন্য তেল।
প্রণালী: প্রথমে নারকেল কোরা আর গুড় দিয়ে ১৫-২০ মিনিট রান্না করুন। একটু শক্ত হয়ে এলে এলাচ, তিল ও আতপ চালের গুঁড়ো ছড়িয়ে আরও একটু রান্না করতে হবে। তেল উঠে পুর যখন পাকানোর মতো শক্ত হয়ে যাবে, তখন সেটা নামিয়ে ঠাণ্ডা করে লম্বা ভাবে সব পুর বানিয়ে নিন। এবার আতপ চালের গুঁড়ো সেদ্ধ করে ভাল ভাবে কম আঁচে নাড়ুন, যাতে ডেলা পাকিয়ে না যায়। একটু ঠাণ্ডা হলে রুটি বানাতে হবে। রুটির এক ধারে পুর রেখে অন্য ধার বাঁকিয়ে উল্টে নিয়ে আটকে দিতে হবে। এবার পিঠে কাটার চাকতি দিয়ে কেটে নিতে হবে। এবার গরম তেলে মচমচে করে ভাজতে হবে।
৯) সিমাই শোনপাপড়ি
উপকরণ: সিমাই এক প্যাকেট, ঘি আধ কাপ, চিনি আধ কাপ, কনডেন্সড মিল্ক এক কাপ, বাদাম-কিসমিস পছন্দ মতো, দুধের গুঁড়ো দুই টেবিল চামচ।
প্রণালী: প্রথমে একটি ননস্টিক পাত্রে ঘি গরম করে নিন। এবার সিমাই ছোট ছোট করে ভেঙে গরম ঘিয়ে দিয়ে মৃদু আঁচে ঘন ঘন নাড়তে থাকুন। সিমাই লালচে হয়ে এলে এতে চিনি, কনডেন্সড মিল্ক ও বাদাম-কিসমিস মিশিয়ে আঠালো হওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন।এরপর গ্যাস বন্ধ করে দিন। ঠান্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপর একটি সমান ট্রেতে সামান্য ঘি মাখিয়ে নিয়ে সিমাইগুলো ঢেলে চেপে চেপে সমান করে নিন। ফ্রিজে এক ঘন্টা জমাট বাঁধার জন্য রেখে দিন। এরপর ছোট ছোট টুকরো করে কেটে দুধের গুঁড়ো দিয়ে পরিবেশন করুন সিমাই শোনপাপড়ি।
১০) গোকুল পিঠে
উপকরণ: ময়দা এক কাপ, চালের গুঁড়ো আধ কাপ, তেল এক টেবিল চামচ, দুধ আধ কাপ। পুরের জন্য লাগবে: নারকেল কোরা এক কাপ, ক্ষীর আধ কাপ, চিনি আধ কাপ এবং রস তৈরি করতে সমপরিমাণ জল আর চিনি।
প্রণালী: প্রথমে পিঠে তৈরি করার জন্য সব উপকরণ একটি পাত্রে ভাল করে মিশিয়ে নিন। পিঠে তৈরির মিশ্রণটি যেন বেশি পাতলা না হয়। মিশ্রণটি আগের দিন রাতে করে রাখলে বেশি ভাল হয়। তৈরি করার সময় আর একবার ভাল করে ফেটিয়ে নিতে হবে। এবার পুর তৈরি করার জন্য সব উপকরণ একটি পাত্রে মিশিয়ে ওভেনে কম আঁচে ভাল করে নাড়তে থাকুন। মিশ্রণটা আঠালো হয়ে গেলে ওভেন থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা করতে দিন। চিনি ও জল একসঙ্গে মিশিয়ে সিরাপ তৈরি করে নিন। সিরাপ কিছুটা ঘন হয়ে আঠালো হয়ে এলে নামিয়ে ফেলুন। এরপর অল্প করে পুর নিয়ে হাতের তালুতে প্রথমে ঘুরিয়ে গোল করে নিন। এরপর হাতের তালুর চাপে সেটাকে চ্যাপ্টা করে নিন। এবার কড়াইয়ে তেল গরম করুন। একটি ডালের চামচে পিঠের গোলা নিয়ে একটি করে নারকেলের পুর ভরে দিন। এরপর সেটাকে ডুবো তেলে দিয়ে দিন। পিঠে লালচে করে ভেজে তুলে ফেলুন। সবগুলো পিঠে ভাজা হয়ে গেলে পিঠেগুলোকে সিরাপে দিয়ে দিন। ভেতরে রস ঢুকে গেলে পিঠেগুলোকে তুলে একটি পাত্রে রেখে পরিবেশন করুন।
১১) নারকেলের বরফি
উপকরণ: কোরানো নারকেল এক কাপ, চিনি এক কাপ, এলাচ গুঁড়ো সামান্য, বাদাম পাঁচ-সাতটি, ঘি- এক টেবিল চামচ।
প্রণালী: একটি পাত্রে বাদাম ভেজে আলাদা করে তুলে রাখুন। এরপর নারকেল ও চিনি একসঙ্গে পাত্রে দিয়ে মাঝারি আঁচে ভাজতে থাকুন। চিনি গলে গেলে মিশ্রণটি ঘন হয়ে যাবে। এর পর ভাল করে নাড়তে থাকুন। খেয়াল রাখবেন যেন বাদামি না হয়ে যায়। এর পর এতে বাদাম ও এলাচ গুঁড়া দিয়ে ভালো করে নাড়ুন। এর পর আভেন থেকে নামিয়ে একটি অ্যালুমিনিয়াম পেপারে রেখে চারকোনা আকৃতি দিন। গরম থাকা অবস্থায় ডিজাইন করে কেটে ফেলুন। তৈরি আপনার নারকেলের বরফি।
১২) মোহন ভোগ
উপকরণ: সুজি এক কাপ, চিনি আধ কাপ, দুধ আধ কাপ, ঘি আধ কাপ, কিসমিস দুই টেবিল চামচ, তেজপাতা ২টো, এলাচ ২টো, কাজু- দুই টেবিল চামচ।
প্রণালী: কড়াইতে ঘি গরম করুন। এর পর সুজি বাদামি করে ভেজে নিন। এর মধ্যে বাকি সব উপকরণ দিয়ে দিন। দুধ পুরোপুরি টেনে না আসা পর্যন্ত নাড়তে থাকুন। এর পর দেখবেন একদম শুকনো হয়ে গিয়েছে। কড়াই থেকে ঘি ছাড়তে শুরু করলে নামিয়ে নিন। গরম গরমও পরিবেশন করতে পারেন আবার ঠান্ডা করে নিয়েও দিতে পারেন।
১৩) গুড়ের জিলিপি
উপকরণ: ময়দা দুই কাপ, টক দই পাঁচ টেবিলচামচ, ইস্ট-দেড় চামচ, কর্নফ্লাওয়ার চার টেবিলচামচ, চিনি এক চা-চামচ, নুন-স্বাদ মতো, তেল চার টেবিলচামচ, তেল তিন কাপ, অল্প গরম জল দুই কাপ। সিরার তৈরির জন্য লাগবে- জল তিন কাপ, গুড় দুই কাপ, চিনি এক কাপ, ঘি এক টেবিলচামচ, গোলাপজল এক চা-চামচ, এলাচ তিনটি, লেবুর রস এক চা-চামচ, লাল ফুড-কালার এক ফোঁটা।
প্রণালী: প্রথমে ময়দার সঙ্গে কর্নফ্লাওয়ার, চিনি, তেল, নুন, দই ও ইস্ট মিশিয়ে জল দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে এক ঘণ্টা চাপা দিয়ে রেখে দিন৷ সিরা বানানোর জন্য একটি বড় পাত্রে জল, গুড়, চিনি ও বাকি উপকরণ দিয়ে মিশিয়ে নিন। এর পরে পাত্রটি আঁচে বসিয়ে ফুটিয়ে নিন। ফুটে উঠলেই বন্ধ করে দেবেন, তা নাহলে সিরাটি জমে যাবে। এরপর কড়াইতে তেল গরম করুন। গরম হতে হতেই একটি পাইপিং ব্যাগে জিলিপির মিশ্রণটি ভরে নিন। তেল গরম হলে হাত ঘুরিয়ে, যতটা পারা যায় পেঁচিয়ে মিশ্রণটি তেলে দিন। ছোট ছোট প্যাঁচ দিলে ভাজতে সুবিধে হবে। এর পর ছাঁকা তেলে মুচমুচে করে ভেজে তুলে গরম সিরায় ডুবিয়ে দিন। উল্টেপাল্টে ভাল করে সিরা মাখিয়ে প্লেটে তুলে নিলেই তৈরি গুড়ের জিলিপি।
১৪) সিমাইয়ের মালাই ক্ষীর
উপকরণ: দুধ-দেড় লিটার, চিনি-পরিমাণ মতো, মালাই-আধ কাপ, কাজু, কিসমিস, পেস্তা, কাঠ বাদাম আধ কাপ, সিমাই-এক কাপ, এলাচ, দারুচিনি-৬/৭ টি, ঘি দুই টেবিল চামচ, জাফরান- সামান্য।
প্রণালী: প্রথমে বাদাম গুলো খোসা ছাড়িয়ে মোটা কুচি করে নিন। এরপর দেড় লিটার দুধ জ্বাল দিয়ে অর্ধেকের কম পরিমাণ করে রাখুন। এবার প্যানে ঘি দিয়ে গরম করুন। এলাচ, দারুচিনি দিয়ে একটু ভাজুন। এবার বাদাম কুচি, কিশমিশ ও সেমাই দিয়ে দিন এবং মৃদু আঁচে হালকা ভাজুন। গন্ধ ছড়ালে ঘন দুধ দিয়ে দিন। সিমাই সেদ্ধ হয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে দুধ ঘন হয়ে আসবে। সিমাই সেদ্ধ হয়ে গেলে মালাই দিয়ে দিন। জাফরান দিন। এরপর ভাল করে মিশিয়ে গ্যাস বন্ধ করে দিন। ছোট ছোট বাটিতে এই ক্ষীর সাজিয়ে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে বাদাম ও কিসমিস ছিটিয়ে পরিবেশন করুন।
১৫) দুধ সিমাই
উপকরণ: সিমাই ২০০ গ্রাম, চিনি হাফ কাপ, এলাচ তিনটে, দারচিনি তিন টুকরো, তেজপাতা একটি, এক লিটার দুধ।
প্রণালী: প্রথমে এক লিটার দুধ ভাল করে গরম করে কমাতে থাকুন, তাতে হাফ কাপ চিনি দিয়ে দিন। এরপর এক এক করে এলাচ, দারুচিনি এবং একটা তেজপাতা দিন। এরপর খালি একটা গরম কড়াইতে সিমাইগুলো ভেজে নিন। মচমচে হলে তা গরম দুধে ঢেলে দিন। হালকা গরম থাকতেই পরিবেশন করুন মজাদার দুধের সেমাই।
মকর সংক্রান্তির মিষ্টি নিয়ে সাধারণ কিছু প্রশ্নোত্তর
মকর সংক্রান্তির মিষ্টি নিয়ে সাধারণ কিছু প্রশ্নোত্তর দেখে নেওয়া যাক।
১) মকর সংক্রান্তির মিষ্টি তৈরিটা কি নিয়ম?
এখনও পর্যন্ত কোনও কোনও বাড়িতে মকর সংক্রান্তির মিষ্টি তৈরিটা নিয়মের মধ্য়েই পড়ে। যদি আপনার পরিবারে সে নিয়ম থাকে, মানতে পারেন। আর যদি নাও থাকে, বাড়িতে ভাল খাবার তৈরি করতে কে না চায়, বলুন!
২) মকর সংক্রান্তিকে একবারে চিনে নেওয়া যায় কোন মিষ্টি দিয়ে?
ভোজন রসিকদের কাছে মকর সংক্রান্তির অপর নাম যেন পিঠেপুলিই হয়ে গিয়েছে।
৩) মকর সংক্রান্তিতে পিঠে ছাড়াও অন্য মিষ্টি তৈরি করা যায় কি?
মকর সংক্রান্তিতে পিঠে খাওয়ার নিয়ম রয়েছে বহু পরিবারে। তবে আপনি চাইলে অন্য যে কোনও মিষ্টি তৈরি করতেই পারেন।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এসে গেল #POPxoEverydayBeauty – POPxo-র স্কিন, বাথ, বডি এবং হেয়ার প্রোডাক্টস নিয়ে, যা ব্যবহার করা ১০০% সহজ, ব্যবহার করতে মজাও লাগবে আবার উপকারও পাবেন! এই নতুন লঞ্চ সেলিব্রেট করতে প্রি অর্ডারের উপর এখন পাবেন ২৫% ছাড়ও। সুতরাং দেরি না করে শিগগিরই ক্লিক করুন POPxo.com/beautyshop-এ এবার আপনার রোজকার বিউটি রুটিন POP আপ করুন এক ধাক্কায়..