কী যে বলেন, বাঙালিকে আবার রোম্যান্টিক (Romantic) হওয়া শেখাতে হয় নাকি? আমরা আজন্ম রোম্যান্টিক! আমরা কথায়-কথায় প্রেমে পড়ি, প্রেমের বিভিন্ন পর্যায় নিয়ে গান-পদ্য-গল্প-উপন্যাস লিখি, প্রেম ভাঙলে দেবদাস হয়ে আরও রোম্যান্টিক হয়ে যাই, খুঁজে নিই কোনও চন্দ্রমুখীকে, আবার প্রেমে পড়ি, বিয়ে হলেও আমাদের প্রেম মরে না, হয় স্বামীর সঙ্গে আমরা নতুন করে প্রেম-প্রেম খেলা খেলি, নয়তো পুরনো প্রেমকে সযত্নে পুষে রাখি মনের কোণে...মোট কথা, বাঙালির মতো রোম্যান্টিক জাতি ভূ-ভারত কেন, সারা পৃথিবীতেই খুঁজে পাবেন না। তামাম ভারতবাসী যখন মন দিয়ে অঙ্ক কষে, তখন আমরা অঙ্ক খাতার পিছনে কবিতা লিখি! তা কেন, রোম্যান্টিক বলেই কিনা? তা হলে আমাদের রোম্যান্টিকতা (Romanticism) শিখতে হবে কোন দুঃখে?
নাঃ, শিখতে বলছি না, অত বড় ধৃষ্টতা আমাদের নেই। কিন্তু মানবেন তো যে যুগ পাল্টেছে? সময় পাল্টেছে? পাল্টেছে প্রেমের ভাষা? এখন রোম্যান্স মানে শুধু আর চাঁদনি রাতে ছাতে দাঁড়িয়ে মনের মানুষটির কথা ভেবে অকারণ আনন্দে ভেসে যাওয়া নয়, এই দেখনদারি সর্বস্ব সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে রোম্যান্সও হতে হবে চটকদার। সে রোম্যান্স দেখে আশপাশের লোকের চোখে ধাঁধা লাগা চাই, বন্ধুদের বুকে হিংসের কাঁপন ধরা চাই, তবে না রোম্যান্স সার্থক হবে এবং আপনি ও আপনার সঙ্গীটি রোম্যান্টিক খেতাবটি পাকাপাকিভাবে করায়ত্ত করবেন? আর দেখুন, সেই প্যানপ্যানানি, ধিকিধিকি প্রেম বয়ে নিয়ে চলা উত্তম-সুচিত্রার মোনোক্রোম্যাটিক রোম্যান্টিসিজমের দিন চলে গিয়েছে। এখন হাইটেক যুগ। প্রেম এখন ঝাঁ-চকচকে স্মার্ট, নিত্যদিন তা প্রকাশ করার কায়দা পাল্টাচ্ছে। এককালে বাঙালি যে ভ্যালেন্টাইনস ডে-র নামও জানত না, এখন সেটা পুরনো হয়ে গিয়েছে। এককালে ভিক্টোরিয়া-ময়দানে হাতে-হাত রেখে হাঁটাটা যে বাঙালি রোম্যান্টিসিজমের চূড়ান্ত বলে ভাবত, এখন তারাই টিন্ডারে বন্ধু খোঁজে। তাই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাঙালির রোম্যান্টিক হওয়ার কায়দা পাল্টেছে। সেই পাল্টে যাওয়া কায়দার সঙ্গে আপনাদের আরও একটু সড়গড় করে দেওয়াই আজ আমাদের উদ্দেশ্য।
দেখুন, আমরা মনে করি, বিভিন্ন ধরনের প্রেম বা রোম্যান্স হয়। তাই রোম্যান্টিকতা টিকিয়ে রাখারও বিভিন্ন কায়দা হওয়া উচিত। এখানে আমরা প্রেমের শ্রেণিবিভাগ করেছি এবং বিভিন্ন শ্রেণির প্রেম টিকিয়ে রাখার জন্য রোম্যান্টিকতার ধরনও পাল্টে দিয়েছি। প্রতিটি ধরনের জন্য রইল ১০টি করে টিপস (tips)। পড়ে দেখুন, আশা করি, কাজেই আসবে।
ধরে নিচ্ছি, এটা হল একেবারে প্রাথমিক পর্যায়। যদিও বয়ফ্রেন্ড আসার কিন্তু নির্দিষ্ট কোনও বয়স নেই। সে কিংবা তিনি আসতে পারে কিংবা পারেন যে-কোনও বয়সে। তবে প্রেমিক তো, কাজেই তাকে রোম্যান্টিসিজমে মুড়ে রাখার কায়দাটাও মোটামুটি একই হবে, এই আর কী।
এই সারপ্রাইজ যে সব সময় খুব বড় কিছু হতে হবে, তা কিন্তু নয়। ছোটখাটো জিনিসও অনেক সময় আনন্দ বয়ে আনে। যেমন ধরুন, আপনি হয়তো সব সময় ভারতীয় পোশাক পরতে পছন্দ করেন। একদিন তার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় পশ্চিমি পোশাক পরে যান। আর বলুন, সেটা শুধু তাঁরই জন্য। দেখবেন, আপনার এই ছোট্ট পরিবর্তন তাঁকে কতটা অবাক করে দিয়েছে।
তিনি যে আপনার কাছে কতটা স্পেশ্যাল, সেটা বোঝানোর জন্য রোম্যান্টিক লাভ মেসেজ পাঠান। এটা কিন্তু প্রতিদিন করতে যাবেন না, তা হলে সেটা আর রোম্যান্টিকতা থাকবে না, উল্টে শিরঃপীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আর সকালে উঠে গুড মর্নিং, রাতে শোওয়ার আগে গুড নাইট, এই ধরনের বালখিল্যপনার অভ্যেস থাকলে সেটা ত্যাগ করুন।
তিনি আপনার বয়ফ্রেন্ড মানে, তাঁর সঙ্গে প্রতিদিন হয়তো আপনার দেখা হয় না, কিংবা দেখা হলেও সেটা গতানুগতিক ভাবেই হয়। তাই মাঝে-সাঝে রোম্যান্টিক ডেট প্ল্যান করতেই পারেন। কোথায় যাবেন, কী করবেন, সেটা না হয় আপনিই ইনিশিয়েটিভ নিয়ে ঠিক করুন, তাঁর ভাল লাগা আর আপনার ভাল লাগা মিলিয়ে।
সেটা আপনাদের ভালবাসার বর্ষপূর্তিই হোক কিংবা অন্য কোনও বিশেষ দিন। চেষ্টা করুন, এই বিশেষ দিনগুলো একসঙ্গে কাটানোর। এমন কিছু একসঙ্গে করার প্ল্যান করুন, যেটা আগে কখনও করেননি, সেটা খুব ছোট কোনও জিনিস যেমন ধরুন, কম্পিটিশন করে ফুচকা খাওয়াও হতে পারে। মোট কথা, সেই দিনটার মেমরি যেন আপনাদের মনে গেঁথে থাকে বহুদিন ধরে।
আজকাল লোকে ছবি তো আর ক্যামেরায় তোলে না, তোলে মোবাইলে। ফলে কিছুদিন পরপর যখন মোবাইলের মেমরি ফুল হয়ে যায়, তখন সেই ছবি হয় কম্পিউটারে ডাম্প করা হয় কিংবা উড়িয়ে দেওয়া হয়। আপনি বরং মাসখানেক পরপর যত ছবি মোবাইলে তুলেছেন, তার প্রিন্ট আউট নিয়ে একটা অ্যালবাম তৈরি করুন। তারপর তা উপহার দিন তাঁকে। দেখবেন, স্মৃতি তাজা হয়ে ভালবাসা আবার নতুন প্রাণ পাবে।
এই পথ যদি না শেষ হয়...বাঙালির রোম্যান্টিকতার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে আছে। তাই গাড়ি থাকলে গাড়িতে, বাইক থাকলে বাইকে, সাইকেল থাকলে তাতে চড়েই একটু দূরের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ুন। দীর্ঘ যাত্রাপথ আপনাদের মধ্যে নতুন সেতু তৈরি করবে। যদি সম্ভব হয়, তা হলে রাতটাও একসঙ্গে কাটাতে পারেন।
সেটা ম্যাগিও হতে পারে আবার ঘ্যামচ্যাক কোনও ডিশ। কী রান্না করলেন, সেটা বড় কথা নয়, কিন্তু তার জন্য আপনার ব্যস্ত শিডিউলের মধ্যে থেকে সময় বের করে রান্নাটা করেছেন, এই ব্যাপারটাই তাঁর মুখে খুশির ঝলক এনে দেবে।
বোরিং টেক্সট মেসেজ পাঠিয়ে-পাঠিয়ে ক্লান্ত হয়ে গেলে, তাঁকে নিজের গলার গান রেকর্ড করে পাঠান। কি বললেন, গান গাইতে পারেন না? ঠিক আছে, তা হলে কোনও ভালবাসার কবিতা কিংবা গানের কলি আবৃত্তি করে পাঠান। উল্টোদিকের মানুষটির কাছে এই অপ্রত্যাশিত ভয়েস মেসেজ রোম্যান্টিসিজমের শেষ কথা হয়ে দাঁড়াবে।
এটা খুবই চালু টোটকা, কিন্তু অসম্ভব কাজে দেয়। তাঁর জন্মদিনে পার্টিটা আপনিই প্ল্যান করুন। আর সেই পার্টি এমন কিছু ছোট-ছোট এলিমেন্ট দিয়ে মুড়ে দিন, যাতে তিনি বুঝতে পারেন যে, প্ল্যানিংটি একান্তভাবে আপনারই করা।
কেনা উপহার তো সকলেই দিতে পারে। আপনি বিশেষ দিনগুলোতে নিজের হাতে কিছু তৈরি করে তাঁকে উপহার দিন। সেটা গ্রিটিংস কার্ড থেকে শুরু করে স্ক্র্যাপবুক, যা কিছু হতে পারে। মোট কথা তাতে যেন আপনার শ্রীহস্তটির ছোঁওয়া থাকে। সেটিই ওই উপহারটিকে বিশেষ করে তুলবে।
বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে রোম্যান্টিক হওয়াটা যতটা সহজ, বিবাহিত জীবনে রোম্যান্টিসিজম ততটা সহজে আসে না। আসলে এই জীবনে আপনাদের দু'জনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকেন আরও অনেকে। তাই রোম্যান্টিক হতে হবে অনেক দিক ভেবে আর সেই ভাবনার ঠেলায় বেশিরভাগ সময় রোম্যান্টিক হয়ে ওঠাই আর হয় না! তবে চিন্তা নেই, আমরা এখানে ১০টি কায়দার কথা বলে দিচ্ছি, এই টিপসগুলি মেনে আপনাদের বিবাহিত জীবনও রোম্যান্টিকতার নরম চাদরে মুড়ে দিন।
আপনি তাঁকে ভালবাসেন, সেটা রোজ একবার মনে করিয়ে দিন। তিনি অফিসে বেরনোর আগে একবার অন্তত কানে-কানে একবার বলুন আই লাভ ইউ...সেটা বলতে কোনওদিন ভুলে গেলে একবার ফোন করে বলুন। কিন্তু বলুন। তাঁকে কমপ্লিমেন্ট দিন, বুঝিয়ে দিন যে, বিয়ে হয়ে গেলেও তিনি এখনও আপনার কাছে স্পেশ্যাল।
বিয়ের পরে রোম্যান্টিক হওয়া মানেই কিন্তু সেক্স নয়। আপনার আলতো ছোঁওয়া, হালকা পাশে থাকাটাই অনেকসময় বুঝিয়ে দেবে যে তিনি আপনার জন্য কতটা স্পেশ্যাল। তাই ছোট্ট একটা চুমু, রাস্তায় বেরলো হাত ধরে চলা, রাতে ঘুম ভেঙে গেলে তাঁকে গাঢ়ভাবে জড়িয়ে ধরা, এই ছোট-ছোট জেশ্চারগুলোই যথেষ্ট।
একসঙ্গে বাইরে বেরনোটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেটা গতানুগতিক ডেট না-ও হতে পারে। দেখুন, একটা ব্যাপার আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। বিয়ের আগে আর বিয়ের পরে ব্যাপারটা এখনও আমাদের দেশে এক নয়। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিয়ের পরে ধেই-ধেই করে সিনেমা দেখতে যাওয়া কিংবা ভিক্টোরিয়ায় বসা না-ও হতে পারে। তবে রোজ বাড়ি থেকে বেরিয়ে অফিসে একসঙ্গে কিছুটা পথ যাওয়া আর সেই সময়টা হাতে-হাত রেখে চলাটাও কিন্তু আপনাদের জুটিকে রোম্যান্টিক করে দিতে পারে।
সেটা সিনেমা দেখতে যাওয়া হতে পারে, ডিনারে যাওয়া হতে পারে, তাঁর অফিসে হঠাৎ পৌঁছে গিয়ে চমকে দেওয়া হতে পারে, মোট কথা সারপ্রাইজ সব সময়ই যে-কোনও রিলেশনশিপেই রোম্যান্টিক।
তাঁর টিফিনের বাক্স নিজে হাতে গুছিয়ে দেওয়ার সময় তাতে ছোট্ট হাতে লেখা লাভ নোট ভরে দিন। টিফিন খেতে যাওয়ার সময় যখন নোটটি দেখবেন, আপনার পরিশ্রম, ভাবনা এবং রোম্যান্টিকতার তারিফ না করে পারবেন না।
সারা দিনের বিভিন্ন সময়ে মাঝে-মাঝেই তাঁকে ভালবাসা এবং দুষ্টুমিভরা মেসেজ পাঠান। অবশ্য এটা আবার রোজ নিয়ম করে করতে যাবেন না যেন! তা হলে সেটা আর রোম্যান্টিসিজম থাকবে না, ন্যাগিং হযে যাবে।
এটা হল বিবাহিত জীবনে রোম্যান্টিক হওয়ার সবচেয়ে চালু কায়দা। কীভাবে করবেন এই দুষ্টুমি? সেক্সি কোনও বেবিডল পরুন, নতুন অন্তর্বাস ট্রাই করুন, নতুন সেক্স পজিশন ট্রাই করুন...দেখবেন, মনের মানুষটি কেমন অন্যভাবে তাকাচ্ছেন আপনার দিকে।
চেনা ছকে নিজেকে না সাজিয়ে একটু পাল্টে নিন। যদি আপনি হাউজওয়াইফ হন, তা হলে তিনি অফিস থেকে ফেরার আগে একটু সাজুগুজু করে নিন মাঝে-মাঝে। যদি আপনিও চাকুরিরতা হন, তা হলে শনি-রবিবার একটু অন্যভাবে সাজুন। দেখবেন, আপনার এই ছোট্ট বদল তাঁকেও বদলে দেবে।
অস্বীকার করে লাভ নেই। বউ রান্না করলে যে-কোনও ভারতীয় পুরুষই ভারী খুশি হয়। তাই তাঁর পছন্দের কোনও রেস্তরাঁসুলভ ডিশ মাঝে-মাঝে নিজেই বাড়িতে রান্না করুন। তারপর একটা ক্যান্ডল লাইট ডিনার আয়োজন করে ফেলুন। রোম্যান্টিকতা বোঝানোর জন্য একটুকুই যথেষ্ট।
যখন তিনি উপহারের কথা ভাববেনও না, এমন দিনে উপহার দিন। সেটা একগাদা পয়সা খরচ করে কেনা কোনও উপহার হতে হবে, তার কোনও মানে নেই। আপনাদের দু'জনের একটা ছবি সুন্দর করে ফ্রেম করে বেডসাইড টেবিলে রেখে দিলেন হয়তো, সেটাও রোম্যান্টিকতায় মোড়া উপহার হতে পারে।
দেখে মনে হচ্ছে বটে, এটা খুব জলের মতো সোজা একটা ব্যাপার, আদতে কিন্তু মোটেও তা নয়। উল্টে পুরনো সম্পর্কে (relationship), বেশিরভাগ সময়েই একটা ঝিমিয়ে ধরা ভাব এসে যায়। আসলে পরস্পর-পরস্পরের কাছে তখন এতটাই খোলামেলা হয়ে গিয়েছেন যে, রহস্য ব্যাপারটাই থাকে না এবং গতানুগতিক ছন্দে চলতে থাকে সবকিছু। এই গতানুগতিকতা কাটিয়েই আপনি আবার পুরনো স্পার্ক ফিরিয়ে আনতে পারেন...যদি একটু রোম্যান্টিক হন। আর এই ক্ষেত্রে রোম্যান্টিকতা অনেকটাই নির্ভর করবে কী করবেন, তার চেয়েও কী করবেন না, সেটার উপর। কীভাবে, সেটাই বলে দিচ্ছি আমরা...
যদিও আপনারা একে-অপরকে হাতের তালুর মতো চেনেন, কিন্তু তবুও পরস্পরকে একটু বাড়তি সময় দিন। সম্পর্কের প্রথম দিকে যে আঁকুপাকু ব্যাপারটা ছিল, সেটা এখন আর থাকবে না। ফোন কলের সময়ও অনেক কমে আসবে। হয়তো দুজনেই স্টুডেন্ট লাইফ শেষ করে গিয়েছেন চাকরি জীবনে, এসেছে নতুন ব্যস্ততা। কিন্তু তার মাঝেও দিনের একটা সময় বরাদ্দ রাখুন নিজেদের মধ্যে গল্প করার জন্য।
ব্যস্ততা যতই বাড়ুক, সপ্তাহে একবার অন্তত দেখা করুন। সিনেমা দেখতে হোক, কফি শপে বসে গল্প করার জন্যই হোক...মোট কথা একসঙ্গে সময় কাটান। উল্টো দিকের মানুষটিকে মনে করিয়ে দিন, তিনি আপনার জন্য এবং আপনি তার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার স্টাইল ফান্ডা যা-ই হোক না কেন, নিজেকে সাজিয়েগুছিয়ে রাখুন। বিশেষত, তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার প্রোগ্রাম থাকলে মনে রাখুন, আপনাকে তিনি কীভাবে দেখতে পছন্দ করেন। সেভাবে সেজে যান।
কোনও উপলক্ষ ছাড়াই উপহার পাঠান। সেটা খুব বড় কিছু হতে হবে, তার কোনও মানে নেই। কিন্তু কারণ ছাড়া পাওয়ার খুশি থাকবে তার মধ্যে।
শুনতে অবাক লাগলেও, এটা হচ্ছে সবচেয়ে রোম্যান্টিক ব্যাপার। কোনও কারণ ছাড়াই তাঁর কাজের জায়গায় গিয়ে উপস্থিত হয়ে, তাঁকে বগলদাবা করে বেরিয়ে পড়ুন। কোনও বিশেষ জায়গায় যাওয়ার প্রয়োজন নেই। দরকার পড়লে ময়দানে গিয়েই বসে থাকুন। কিন্তু চমকে দেওয়াটাইতেই তো আসল মজা।
সম্পর্কের গায়ে যথেষ্ট গত্তি লেগেছে? দুজনে-দুজনের সঙ্গে জীবনটা কাটাবেন ঠিক করে ফেলেছেন কি? তা হলে তাঁকে না বলেই নাইট আউট প্ল্যান করে ফেলুন। তাঁর অফিসে পৌঁছে যান, তারপর সোজা সুদূরের আহ্বানে। দেখবেন, পুরনো সম্পর্কও আবার নতুন রং নিয়েছে।
নিজের জন্য নয়, তাঁর জন্য, তাঁকে নিয়ে শপিং করতে বেরোন। আল্টিমেটলি কী কিনলেন, কত দাম পড়ল, সেটা মুখ্য নয়। আপনারা একসঙ্গে কোনও কারণ ছাড়াই হাতে হাত রেখে হাঁটলেন, সেটাই বড় কথা।
এটা নির্ভর করবে তাঁর পরিবারের সঙ্গে আপনার কতটা হৃদ্যতা, তার উপরে। তবে যদি মনের মানুষটির পরিবারের সঙ্গে আপনার সুসম্পর্ক থাকে, তা হলে দ্বিতীয়টা করাই ভাল। নিজের পরিবারে আপনাকে উপস্থিত থাকতে দেখে এবং একসঙ্গে কিচেন শেয়ার করতে দেখলে তাঁর ভাল না লেগে উপায় নেই।
জানি, এটা ছেলেরাই বেশিরভাগ সময়ে করে। কিন্তু আরও একটা নতুন দশক এসে পড়ল নতুন মিলেনিয়ামে। এখনও যদি আপনি পুরনোপন্থী হয়ে ভাবেন যে, তিনিই শুধু ফুল পাঠাবেন আর আপনি নেবেন, তা হলে ভুল করবেন। আপনিও পাঠিয়ে দেখুন না? তাঁর মন্দ যে লাগবে না, এটুকু বলতে পারি।
এটা যতটা না রোম্যান্টিক তার চেয়ে ঢের বেশি দুষ্টুমিভরা। কিন্তু যেটাই হোক, এই ধরনের ছবি পেতে আপনার মনের মানুষটির যে ভালই লাগবে, তা হলফ করে বলা যায়।
দেখুন বাপু, আপনাকে খুব সাবধানে চলতে হবে। আজকাল লং ডিসট্যান্স রিলেশনশিপ টিকিয়ে রাখাটাই কঠিন হয়ে পড়ে তো সেই সম্পর্কে রোম্যান্টিকতার আভাস আনা তো আরও কঠিন! তবুও মাথা খাটিয়ে কতগুলো উপায় বের করেছি আমরা...
অন্যদের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটা ন্যাগিং। কিন্তু আপনার ক্ষেত্রে এটা রোম্যান্টিসিজম। আপনার দিন শুরু হচ্ছে তাঁর কথা ভেবে আবার রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগেও তাঁর কথা ভেবেই বালিশে মাথা রাখছেন...তবে হ্যাঁ, দয়া করে ফরওয়ার্ডেড মেসেজ পাঠাবেন না। নিজে হাতে টাইপ করে পাঠান।
সারা দিনের বিভিন্ন সময় ছোট-ছোট ছবি তুলুন আর দিনের শেষে সেটা কোলাজ করে পাঠিয়ে দিন তাঁর কাছে। এতে এটাও জানানো হল যে, সারা দিন আপনি কীভাবে সময় কাটালেন আবার এটাও বুঝিয়ে দিলেন যে, সব সময়ই তাঁর কথা ভেবেই ছবি তুলে রাখছিলেন।
সত্যি কথা বলতে গেলে, টেকনোলজি দূর-কেও এখন অনেকটাই কাছে এনে দিয়েছে। তাই রোজ একবার করে অন্তত ভিডিয়ো কলে কথা বলুন। তাঁকে দেখতে পেলে আপনার এবং আপনাকে দেখতে পেলে তাঁরও ভাল লাগবে।
সারা বছরের জন্য কতগুলো সারপ্রাইজ ভিজিট প্ল্যান করে রাখুন। যখন আচমকা তাঁর সামনে উপস্থিত হবেন, তখন কত ভাল লাগবে বলুন তো?
ছোট-ছোট উপহারের মাধ্যমে পরস্পরের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করুন। হয়তো তিনি আছেন বিদেশে, তাঁকে নতুন বাংলা গান কিংবা সিনেমার সিডি পাঠিয়ে দিন। এভাবে দেশের সঙ্গে এবং আপনার সঙ্গে জড়িয়ে থাকবেন তিনি।
কাগজে লেখা চিঠি পাঠাতে না পারলে ই-মেলই পাঠান। কিন্তু মনের কথা ডকুমেন্টেড করে পাঠানোর মধ্যে একটা অদ্ভুত ভাল লাগা যে লুকিয়ে আছে, তা অস্বীকার করে লাভ নেই।
ছোট কোনও মজার কথা, কোনও মজার জোক, ইন্টারনেটে পাওয়া কোনও মিম তাঁর সঙ্গে শেয়ার করুন। তারপর তা নিয়ে হাসুন মন খুলে। হাসি দূরে থাকার আনন্দ ভুলিয়ে দেবে।
সেটি ফোনের মধ্যে হতে পারে, মেসেজের মাধ্যমে হতে পারে, ই-মেলের মাধ্যমে হতে পারে, মোট কথা তিনি যেন বুঝতে পারেন যে, আপনি তাঁকে কতটা মিস করেন এবং কতটা ভালবাসেন।
তাঁকে নিয়ে আপনার কোনও ছোট ভাল লাগা, আপনার আর তাঁর কোনও বিশেষ মুহূর্তের কথা ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করুন তাঁকে ট্যাগ করে। এই পোস্টে কথোপকথনের মাধ্যমে আরও জমে উঠুক আপনাদের প্রেম।
এটা একটু সুড়সুড়িওয়ালা বটে, কিন্তু মাঝে-মধ্যে ভালবাসাতেও সুড়সুড়ির প্রয়োজন আছে বই কী!
রোম্যান্টিসিজম কখন মরে যায়? যখন আমরা ছোটখাটো মন্দ লাগাকে, ভাল লাগাগুলোর চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিই। দেখুন, কীভাবে রোম্যান্টিক হবেন, সেই টিপস তো দিয়ে দেওয়া হল। এগুলি সবই কী করবেন, তা বলা হচ্ছে। কিন্তু যে-কোনও সম্পর্কে রোম্যান্টিকতা ধরে রাখতে গেলে কিছু জিনিস জীবন থেকে বাদও দিতে হয়। নইলে অসুবিধে। এবার আমরা এক-এক করে সেগুলিই বলে দিচ্ছি।
মনোমালিন্য সব সম্পর্কেই আসতে পারে। কিন্তু কথায়-কথায় ঝগড়া আসলে বুঝবেন গোড়ায় গলদ আছে। তাই সব কথাতে রেগে যাওয়া এবং সব কথা মনে নেওয়া বন্ধ করুন।
আপনি নিজেরটুকু করুন মন দিয়ে। উল্টো দিকের মানুষটি কতটা করছেন আর কতটা করছেন না কিংবা কতটা আরও করতে পারতেন, এসব ভাবতে গেলে কিন্তু চাপ আরও বাড়বে এবং রোম্যান্টিসিজমের সাড়ে বারোটা বাজবে।
অমুকে প্রেমিকাকে কত উপহার দেয়, কত জায়গায় ঘুরতে যায় স্ত্রীকে নিয়ে, এসব নিয়ে তুলনা করতে যাবেন না। তুলনা টানতে গেলেই ভালবাসা কমতে বাধ্য। আর ভালবাসা না থাকলে রোম্যান্টিকতা থাকবে কোত্থেকে?
সকলেই দোষেগুণে মানুষ। সেটা মানতে এবং বুঝতে শিখুন। বরং তার ভুলটা কয়েকবার অদেখা করলে দেখবেন উল্টো দিকের লোকটাই আপনার ভালবাসা বুঝতে পেরে নিজেই রোম্যান্টিক হয়ে যাচ্ছে!
গোপন কথা কোনওদিন গোপন থাকে না। তাই সারপ্রাইজ ছাড়া অন্য কিছু লুকিয়ে রাখবেন না।
তাতে প্রেম কমে। রাগকে বশে আনতে শিখুন। উল্টোদিকের মানুষটি আপনারই প্রিয়জন, এটা মনে রাখলেই তাঁর ভুলটাও আর ভুল বলে মনে হবে না।
আপনি হয়তো একটু বেশিই রোম্যান্টিক, আপনার মনের মানুষটি তা নন। তাতে কী হয়েছে? আপনিই তার খামতিটুকু পুষিয়ে দিন না?
মনের মানুষটি ভুল স্বীকার করে নিলে তাঁকে মাফ করে দিতে শিখুন। ক্ষমা করে দিলে আপনি ছোট হবে না, উল্টে সেটাও একটা অন্য রকমের রোম্যান্টিকতা।
সেটা বাইরেই মিটিয়ে নিন। শপিংয়ে গিয়ে আপনাদের মনোমালিন্য হয়েছিল হয়তো, সেটা বাড়িতে টেনে এনে আবার নতুন করে জিইয়ে তুললে কোনও লাভ হবে না।
বিবাহিত সম্পর্কের ক্ষেত্রে ছেলেপুলে আসবেই এবং তারা আপনাদের দু'জনের নিজেদের জন্য বরাদ্দ সময়ে ভাগ বসাবেই। কিন্তু তাদের জন্য আপনাদের মধ্যে রোম্যান্টিসিজম কমে যাচ্ছে, না বাপু, এই বাজে অজুহাতটি না দিয়ে আসল কারণটি খুঁজুন বরং।
এই দশকটি আমরা শেষ করতে চলেছি #POPxoLucky2020-র মাধ্যমে। যেখানে আপনারা প্রতিদিন পাবেন নতুন-নতুন সারপ্রাইজ। আমাদের এক্কেবারে নতুন POPxo Zodiac Collection মিস করবেন না যেন! এতে আছে নতুন সব নোটবুক, ফোন কভার এবং কফি মাগ, যেগুলো দারুণ ঝকঝকে তো বটেই, আর একেবারে আপনার কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে। হুমম...আরও একটা এক্সাইটিং ব্যাপার হল, এখন আপনি পাবেন ২০% বাড়তি ছাড়ও। দেরি কীসের, এখনই POPxo.com/shopzodiac-এ যান আর আপনার আগামী বছরটা POPup করে ফেলুন!
Image Credits :