যেকোনোও বাঙালি বাড়িতে যদি আপনি যান, তাহলে সবার আগে তাঁদের একটি ব্যক্তিগত লাইব্রেরি দেখতে পাবেন। সে যত ছোটই হোক না কেন, বাঙালি বাড়িতে বইয়ের কালেকশন কিন্তু দেখার মতো। একইসঙ্গে আপনি প্রেমের উপন্যাস পাবেন আবার তার পাশেই হয়ত গোয়েন্দা গল্পের বইও পাবেন। বাংলা উপন্যাসের পরিমাণও কিন্তু কম কিছু নেই। তবে যদি আপনি জিজ্ঞেস করেন যে বাংলা সাহিয়তের শ্রেষ্ঠ প্রেমের উপন্যাস কোনটি (Best Bengali Romantic Novels), তাহলে এক কথায় তার জবাব দেওয়া খুব মুশকিল। কারণ বাংলা প্রেমের গল্প এত বেশি লেখা হয়েছে আর প্রতিটি প্রেমের গল্পই নিজের মতো করে পাঠককে আকর্ষণ করে যে ‘সেরা বাংলা প্রেমের উপন্যাস’ বলে যেকোনোও একটি বা দুটি উপন্যাসকে (Bengali Novels) চিহ্নিত করা অসম্ভব। বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব গুহ, সুচিত্রা ভট্টাচার্য – অনেকেই ভালবাসার গল্প লিখেছেন। আমরা চেষ্টা করলাম বাংলা সাহিত্যের দশটি শ্রেষ্ঠ প্রেমের উপন্যাসের সংকলন নথিবদ্ধ করার।
বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবস নিয়ে দু’চার কথা (World Book and Copyright Day 2020)
১৯৯৫ সালের ২৩শে এপ্রিল ইউনেসকোর তত্ত্বাবধানে প্রথমবার উদযাপিত হয় বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবস (World Book and Copyright Day)। বই পড়ার একটি সু-অভ্যাস তৈরি করার জন্যই প্রথমবার এই উদ্যোগটি নেওয়া হয়। তবে শুধুমাত্র বই পড়ানোর জন্য না, প্রকাশনা সংস্থা এবং কপিরাইটের প্রচারের জন্যও এই দিনটি পালিত হয়। বিশ্ব বই দিবসের মূল ধারণাটি আসে ভ্যালেন্সীয় লেখক ভিসেন্ত ক্লাভেল আন্দ্রেসের কাছ থেকে। তিনি তার প্রিয় লেখক মিগেল দে থের্ভান্তেসকে সম্মান জানানোর একটি উপায় হিসাবে ধারণাটি দেন। ১৯২৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রাজা আলফনসো ত্রয়োদশ স্পেন জুড়ে স্পেনীয় বই দিবস পালনের জন্য একটি রাজকীয় ফরমান জারি করেন। পরে সমগ্র স্পেনে দিবসটি পালন করা শুরু হয় (বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবস)। প্রথমে ৭ অক্টোবর থের্ভান্তেসের জন্মদিনে দিবসটি পালন শুরু হয়, পরে তা তার মৃত্যুদিন ২৩ এপ্রিলে স্থানান্তর করা হয়।
আরও পড়ুনঃ মে দিবসের শুভেচ্ছা ও উক্তি
শেষের কবিতা (Shesher Kobita By Rabindranath Tagore)
সারমর্ম – উপন্যাসের নায়ক বিলেত ফেরত অমিত রায় বিংশ শতকের নব্যভারতের একজন বুদ্ধিদীপ্ত যুবক। তার্কিক এবং একইসঙ্গে রোম্যান্টিক। শিলং-এ বেড়াতে গিয়ে এক দুর্ঘটনায় পরিচয় হয় নায়িকা লাবন্যের সঙ্গে (বাংলা উপন্যাস)। শুরু হয় তাঁদের ভালবাসার গল্প। কিন্তু এরই মধ্যে একদিন বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো উপস্থিত হয় কেতকী এবং দাবী জানায় সে অমিতের বাগদত্তা (বিখ্যাত বাংলা প্রেমের উপন্যাস)। ভেঙে যায় অমিত-লাবন্যের প্রেম।
তবে ‘শেষের কবিতা’ বাংলা সাহিত্যে শুধুমাত্র অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রেমের উপন্যাসের তকমাতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি (Best Bengali Romantic Novels), নব্য ভারতের অভিজাত সমাজের জীবনকাহিনীও শোনায় এই বইটি।
লেখক পরিচিতি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে নতুন করে বলার আর কিছুই নেই। সারা বিশ্বে পূজিত হন তিনি বিশ্বকবি রূপে। বলা যেতে পারে তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্যের একজন দিকপাল। একাধারে কবি, গিতিকার, গল্প লেখক, ঔপন্যাসিক ও দার্শনিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুকের জন্ম হয় ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫শে বৈশাখ, জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়।
প্রথম প্রকাশ – লেখা ও প্রকাশের দিক থেকে শেষের কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দশম উপন্যাস (বাংলা উপন্যাস)। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই রোম্যান্টিক উপন্যাসটি লেখেন ১৯২৮ সালে। শেষের কবিতা প্রথম প্রকাশিত হয় ‘প্রবাসী’তে, ধারাবাহিকভাবে ভাদ্র থেকে চৈত্র পর্যন্ত। অনেকে একে কবিতার বই ভেবে ভুল করে ফেলেন। আদতে এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম রোমান্টিক উপন্যাস।
রেটিং – ৪.২/৫
কোয়েলের কাছে (Koyeler Kache By Buddhadeb Guha)
সারমর্ম – পালামৌ-এর জঙ্গলের প্রেক্ষাপটে এই উপন্যাসটি লেখা হয়েছে (Bengali Novels)। যদিও প্রধান চরিত্র এখানে প্রকৃতি, কিন্তু উপন্যাসের চরিত্রগুলোয় প্রাণসঞ্চার করেছেন লেখক বুদ্ধদেব গুহ (Best Bengali Romantic Novels)। মারিয়ানার প্রেম, সুমিতার কামনা, লালতির সোহাগ, যশোয়ান্তের আদিমতা – সব কিছু মিলিয়ে ‘কোয়েলের কাছে’ একটি রোম্যান্টিক এবং সুখদায়ক লেখা।
লেখক পরিচিতি – বুদ্ধদেব গুহ একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক। তিনি মূলত বন, অরণ্য এবং প্রকৃতি বিষয়ক লেখার জন্য পরিচিত। বহু বিচিত্রতায় ভরপুর এবং অভিজ্ঞতাময় তার জীবন। ইংল্যান্ড, ইউরোপের প্রায় সমস্ত দেশ, কানাডা, আমেরিকা, হাওয়াই, জাপান, থাইল্যান্ড ও পূর্বআফ্রিকা তার দেখা। পূর্বভারতের বন-জঙ্গল, পশুপাখি ও বনের মানুষের সঙ্গেও তার সুদীর্ঘকালের নিবিড় ও অন্তরংগ পরিচয়। সাহিত্য-রচনায় মস্তিষ্কের তুলনায় হৃদয়ের ভূমিকা বড়- এই মতে তিনি বিশ্বাসী।
প্রথম প্রকাশ – আনন্দ পাবলিশিং, ১লা জানুয়ারি, ১৯৯০
রেটিং – ৪/৫
ন হন্যতে (Na Hanyate By Maitreyi Devi)
সারমর্ম – ‘ন হন্যতে’-কে উপন্যাস না বলে আত্মজীবনী বললেও হয়ত অত্যুক্তি হয় না। সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাংলা প্রেমের উপন্যাসটি লেখিকা মৈত্রেয়ী দেবীর আত্মকথন (Bengali Novels)। ১৯৩০ সালে কলকাতায় মৈত্রেয়ী দেবীর বাবা, প্রফেসর সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্তর কাছে পড়তে আসেন রোমানিয় মিরচা এলিয়েড। মৈত্রেয়ী দেবীর তখন ১৬ বছর বয়স। মেয়ের বুদ্ধিমত্তায় গর্বিত মৈত্রেয়ী দেবীর বাবা ওনাকে সেই সময় অপেক্ষা সংস্কারমুক্ত শিক্ষার পরিবেশে বড় করেছিলেন। নিজের প্রিয় ছাত্র মিরচা এলিয়েডের সাথে মেয়েকে অধ্যয়ন করতেও উৎসাহিত করেন উনি। মৈত্রেয়ী দেবীর কথায় উনি এবং মিরচা এলিয়েড ছিলেন যেন ওনার বাবার যাদুঘরের দুই প্রিয় নমুনা। এরই মধ্যে মিরচা এবং মৈত্রেয়ী একে অন্যের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন (বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ প্রেমের উপন্যাস)। তাদের গুপ্ত ভালবাসা সম্পর্কে অবহিত হবার পর মৈত্রেয়ী দেবীর বাবা মিরচাকে তাঁদের বাড়ী ছেড়ে চলে যেতে বলেন। ১৯৩৩ সালে মিরচা ‘মৈত্রেয়ী’ নামে একটি উপন্যাস প্রকাশ করেন এবং তাতে নিজের কল্পনাপ্রসূত কিছু ঘটনা লেখেন।
আরও পড়ুনঃ সুপারহিট বাংলা হাসির সিনেমা
লেখক পরিচিতি – মৈত্রেয়ী দেবীর জন্ম ১ সেপ্টেম্বর, ১৯১৪ সালে, কলকাতায় | তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক | পিতা সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত বিশ্ববিশ্রুত দার্শনিক এবং মনস্বী প্রবন্ধকার | আশৈশব মনিষী সাহিত্যিকবর্গের সাহচর্যে বড়ো হয়েছেন | সাহিত্যজীবনের স্ফুরণও নিতান্ত অল্পবয়সে | প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘উদিত’ ১৯৩০ সালে প্রকাশিত | পরবর্তী কাব্যগ্রন্থ : ‘চিত্তছায়া’ | ১৯৪২ সালে প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর অসামান্য স্মৃতিকথা- ‘মংপুতে রবীন্দ্রনাথ’ | কবির অন্তরঙ্গ আলাপচারিতার এক উজ্জ্বল পরিচয় ফুটে উঠেছে এই অনবদ্য গ্রন্থে | সাহিত্যরচনা ছাড়াও সমাজসেবামূলক কর্মে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহন করে আসছেন মৈত্রেয়ী দেবী | তাঁর সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘ন হন্যতে’ | এই গ্রন্থটির জন্য ১৯৭৬ সালের আকাডেমি পুরুস্কার লাভ করেছেন তিনি |
প্রথম প্রকাশ – ১৯৭৪ সাল। পরে এই উপন্যাসের অনুপ্রেরণায় বলিউডের ‘হম দিল দে চুকে সনম’ তৈরি হয়।
রেটিং – ৩.৯/৫
পরিণীতা (Parineeta By Sarat Chandra Chattopadhyay)
সারমর্ম – শেখর ও ললিতা, ছোটবেলার খেলার সাথী এবং বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এদের দু’জনের বন্ধুত্ব প্রেমের সম্পর্কে পরিণত হয় (সেরা প্রেমের উপন্যাস)। কিন্তু তাঁদের আর্থ-সামাজিক বৈষম্য তাঁদের প্রেমের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় (Romantic Novels In Bengali)। এরপর নানা ঘটনা ঘটে এবং শেষ পর্যন্ত কী হয়, তা যারা এই বাংলা রোম্যান্টিক উপন্যাস পরিণীতা পড়েছেন, তারা জানেন, আর যারা পড়েননি, তারা বরং পড়ে ফেলুন!
লেখক পরিচিতি – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ ভারতের প্রেসিডেন্সি বিভাগের হুগলি জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব তাঁর পশ্চিমবঙ্গে কাটলেও কৈশোর কাটে ভাগলপুরে, মামারবাড়িতে। এরপর তিনি কলকাতায় আসেন এবং একের পর এক উপন্যাসে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করতে থাকেন। ‘বড়দিদি’, ‘শ্রীকান্ত’, ‘পল্লিসমাজ’, ‘গৃহদাহ’, ‘পরিনীতা’ – তাঁর অমুল্য সৃষ্টি।
প্রথম প্রকাশ – ১৯১৪ সাল
রেটিং – ৩.৯/৫
চোখের বালি (Chokher Bali By Rabindranath Tagore)
সারমর্ম – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আরও একটি বাংলা রোমান্টিক উপন্যাস হল ‘চোখের বালি’। উপন্যাসের বিষয় “সমাজ ও যুগযুগান্তরাগত সংস্কারের সঙ্গে ব্যক্তিজীবনের বিরোধ” (বাংলা উপন্যাস)। সংসারের সর্বময় কর্ত্রী মা, এক অনভিজ্ঞা বালিকাবধূ, এক বাল্যবিধবা ও তার প্রতি আকৃষ্ট দুই পুরুষকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। উপন্যাসে চরিত্র গুলি হল – মহেন্দ্র, আশা, বিহারী, বিনোদিনী, রাজলক্ষ্মী, অন্নপূর্ণা (Bengali Novels)। সম্পর্কের নানা টানাপড়েন, সামাজিক অবস্থা, বন্ধুত্ব, পরকীয়া – সবই লেয়ারে লেয়ারে বর্ণিত হয়েছে উপন্যাসটিতে।
লেখক পরিচিতি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে নতুন করে বলার আর কিছুই নেই। সারা বিশ্বে পূজিত হন তিনি বিশ্বকবি রূপে। বলা যেতে পারে তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্যের একজন দিকপাল। একাধারে কবি, গিতিকার, গল্প লেখক, ঔপন্যাসিক ও দার্শনিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুকের জন্ম হয় ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫শে বৈশাখ, জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়।
প্রথম প্রকাশ – চোখের বালি উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশের কৃতিত্ব নিতে ভারতী ও নবপর্যায় বঙ্গদর্শন উভয় পত্রিকাই সচেষ্ট হয়েছিল। ১৯০৩ সালের ৫ এপ্রিল উপন্যাসটি (Bangla Romantic Story) কলকাতার মজুমদার লাইব্রেরি বই আকারে প্রকাশিত হয়। ক্রাউন ৮ পেজি ৩৩৮ পৃষ্ঠায় বইটি মুদ্রিত হয়। মুদ্রণের সংখ্যা ছিল ১০০০। দাম ছিল দু’টাকা চার আনা।
রেটিং – ৩.৯/৫
দেবদাস (Devdas By Sarat Chandra Chattopadhyay)
সারমর্ম – ‘দেবদাস’ উপন্যাসটি যদি আপনার পড়া নাও থাকে, সিনেমাটি সবাই’ই দেখেছেন। উপন্যাসের নায়ক দেবদাস ও নায়িকা পার্বতীর প্রেম, বিরহ, বিচ্ছেদ ও মৃত্যুর গল্পই হল দেবদাস। যদিও সিনেমায় কিছু কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে (বাংলা ভালোবাসার গল্প), কিন্তু এই রোমান্টিক উপন্যাসের মূল ভাব একই রাখা হয়েছে। কীভাবে দুই পরিবারের আর্থিক ও সামাজিক বৈষম্য একটু প্রেমের সম্পর্ককে নষ্ট করে দিয়ে একজন মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে, তারই কাহিনী বুনেছেন কথাশিল্পী শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
লেখক পরিচিতি – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ ভারতের প্রেসিডেন্সি বিভাগের হুগলি জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব তাঁর পশ্চিমবঙ্গে কাটলেও কৈশোর কাটে ভাগলপুরে, মামারবাড়িতে। এরপর তিনি কলকাতায় আসেন এবং একের পর এক উপন্যাসে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করতে থাকেন। ‘বড়দিদি’, ‘শ্রীকান্ত’, ‘পল্লিসমাজ’, ‘গৃহদাহ’, ‘পরিনীতা’ – তাঁর অমুল্য সৃষ্টি।
প্রথম প্রকাশ – যদিও শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ‘দেবদাস’ উপন্যাসটি (Bangla Novel) লেখা শেষ করে ফেলছিলেন ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দেই, কিন্তু তাঁর নিজের মনে এই রোমান্টিক প্রেমের উপন্যাসটি নিয়ে অনেক দ্বিধা ছিল বলে দীর্ঘ ১৭ বছর তিনি অপেক্ষা করেছিলেন এবং বইটি প্রকাশ করেননি। তাঁর বন্ধু প্রমথনাথ ভট্টাচার্যকে তিনি চিঠিতে লিখেছিলেন, “ওই বইটা একেবারে মাতাল হইয়া বোতল খাইয়া লেখা।” তবে পরে ১৯১৭ সালের জুন মাসে শেষ পর্যন্ত বইটি প্রথমবার ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয় এবং বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা প্রেমের উপন্যাস বলে মর্যাদাও পায়।
রেটিং – ৩.৯/৫
হেমন্তের পাখি (Hemanter Pakhi By Suchitra Bhattacharya)
সারমর্ম – ২৩ বছরের বিবাহিত জীবনে অদিতি ঠিক কী কী পেল, যখন তার হিসেব করতে বসল বুঝতে পারল যে স্বামি-সন্তানের থেকে আদপে সে তেমনভাবে কিছুই পায়নি (Bangla Novel)। বদলে নিজের সবটুকু নিংড়ে দিয়েছে তার সংসারকে। অবশেষে সে যখন ঠিক করল এবার থেকে তার নিজের পছন্দের কাজ অর্থাৎ লেখালিখি শুরু করবে, তখন হল কিছু নাটকীয় পরিবর্তন। ‘হেমন্তের পাখি’ উপন্যাসটিকে প্রেমের উপন্যাস না বলে যদি ‘সেলফ লাভের’ কাহিনী বলা যায়, তাহলেও ভুল কিছু নেই।
লেখক পরিচিতি – সুচিত্রা ভট্টাচার্য ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই জানুয়ারি ভাগলপুরে মামারবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও তার পিত্রালয় ছিল মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর শহরে, তবে কলকাতা শহরে তার স্কুল ও কলেজ জীবন কাটে। তিনি যোগমায়া দেবী কলেজ থেকে স্নাতক হন। শিক্ষালাভের সময় তিনি বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন। বিভিন্ন স্থানে চাকরি করার পর তিনি সরকারী চাকরিতে যোগদান করেন। লেখিকা হিসেবে সম্পূ্র্ণ রূপে সময় দেওয়ার জন্য তিনি ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে তার চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তিনি দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়া অঞ্চলের বাসিন্দা ছিলেন।
প্রথম প্রকাশ – ১৯৯৭ সাল
রেটিং – ৩.৮/৫
একটু উষ্ণতার জন্য (Ektu Ushnotar Jonno By Buddhadeb Guha)
সারমর্ম – এই বাংলা প্রেমের উপন্যাসের প্রধান চরিত্র আধুনিক এক লেখক যার মানসিক সত্ত্বা খুঁজে বেড়াত, সর্ব অর্থে এক নারীকে (Romantic Novels In Bengali)। ভালবেসে বিয়ে করা স্ত্রী সরে গিয়েছে দূর থেকে আরও দূরে, তাঁর সমস্ত অস্ত্বিত্বকে পৌঁছে দিয়েছিল এক অনিশ্চয়তায়। ঠিক সেই সময়ে তাঁর জীবনে আসে ‘ছুটি’, উপন্যাসের নায়িকা। এরপরে কী হয় তা জানতে পড়ে ফেলুন বুদ্ধদেব গুহ-র একটু উষ্ণতার জন্য (সেরা প্রেমের উপন্যাস)।
লেখক পরিচিতি – বুদ্ধদেব গুহ একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক । তিনি মূলত বন, অরণ্য এবং প্রকৃতি বিষয়ক লেখার জন্য পরিচিত (Bangla Novel)। বহু বিচিত্রতায় ভরপুর এবং অভিজ্ঞতাময় তার জীবন। ইংল্যান্ড, ইউরোপের প্রায় সমস্ত দেশ, কানাডা, আমেরিকা, হাওয়াই, জাপান, থাইল্যান্ড ও পূর্বআফ্রিকা তার দেখা। পূর্বভারতের বন-জঙ্গল, পশুপাখি ও বনের মানুষের সঙ্গেও তার সুদীর্ঘকালের নিবিড় ও অন্তরংগ পরিচয়। সাহিত্য-রচনায় মস্তিষ্কের তুলনায় হৃদয়ের ভূমিকা বড়- এই মতে তিনি বিশ্বাসী।
প্রথম প্রকাশ – ১৯৮৭ সাল
রেটিং – ৩.৬/৫
সুখের কাছে (Sukher Kache By Buddhadeb Guha)
ছবি সৌজন্যে: বুকস অ্যান্ড পাবলিশারস
সারমর্ম – সুখের কাছে উপন্যাসটির নাম সুখের হলেও কাহিনি তেমন সুখের ছিল না। এই উপন্যাসে প্রধান চরিত্রে যিনি ছিলেন তার নাম সুখ কিন্তু তিনি নিজেকে সুখেন মিস্ত্রি নামে পরিচয় দিতেন। সুখন মিস্ত্রী হলেও মনের দিক দিয়ে অনেক উচ্চশিক্ষিত লোকের চেয়ে বড় (Bengali Novels)। তার বেড়ার ঘরে ইংরেজি/বাংলা সাহিত্যের বইয়ে ঠাসা সে শহুরে জীবন সহ্য করতে পারে না। সুখেনের বিপরিতে ছিলেন মহুয়া নামের এক মেয়ে। নিজের অজান্তেই মহুয়া আটকে পড়েছে সুখেনের প্রেমে (Bengali Romantic Novels)।
লেখক পরিচিতি – বুদ্ধদেব গুহ একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক । তিনি মূলত বন, অরণ্য এবং প্রকৃতি বিষয়ক লেখার জন্য পরিচিত। বহু বিচিত্রতায় ভরপুর এবং অভিজ্ঞতাময় তার জীবন। ইংল্যান্ড, ইউরোপের প্রায় সমস্ত দেশ, কানাডা, আমেরিকা, হাওয়াই, জাপান, থাইল্যান্ড ও পূর্বআফ্রিকা তার দেখা। পূর্বভারতের বন-জঙ্গল, পশুপাখি ও বনের মানুষের সঙ্গেও তার সুদীর্ঘকালের নিবিড় ও অন্তরংগ পরিচয়। সাহিত্য-রচনায় মস্তিষ্কের তুলনায় হৃদয়ের ভূমিকা বড়- এই মতে তিনি বিশ্বাসী।
প্রথম প্রকাশ – ১৯৯৬ সাল
রেটিং – ৩/৫
বাবলি (Babli By Buddhadeb Guha)
সারমর্ম – লন্ডন থেকে ডিগ্রি লাভ করা অভি, একটু গোবেচারা ভান করা ছেলে। প্রচন্ড এই মেধাবী ছেলেটি নিজেকে লুকিয়ে রাখে সবসময় নিজের মধ্যে। ভদ্র ছেলে হিসেবে অভির খ্যাতি আশপাশে অনেক আগ থেকে ছড়িয়েছে। মোট কথা একজন সুপুরষ যাকে বলে। অন্যদিকে উপন্যাসের নায়িকা ‘বাবলি’-র মধ্যে মোটেও নায়িকাসুলভ ব্যাপার নেই। খুব সাধারণ দুটা চরিত্র নিয়ে এগিয়ে যাওয়া উপন্যাসটি পাঠককে খানিকবাদেই শিহরিত করা শুরু করে। দুটো চরিত্রই ঘটনাক্রমেই আকর্ষণ অনুভব (Bengali Romantic Novels) করতে থাকে একে অন্যের প্রতি। কিন্তু কেউ নিশ্চিত হতে পারেনা এই অনুভূতির মানে কি? কৈশোরে প্রথমবার প্রেমে পড়ার আগে এই মিষ্টি ভালবাসার গল্পটি (Bangla Romantic Story) একবার পড়ে নেওয়াই যায়!
লেখক পরিচিতি – বুদ্ধদেব গুহ একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক। তিনি মূলত বন, অরণ্য এবং প্রকৃতি বিষয়ক লেখার জন্য পরিচিত। বহু বিচিত্রতায় ভরপুর এবং অভিজ্ঞতাময় তার জীবন। ইংল্যান্ড, ইউরোপের প্রায় সমস্ত দেশ, কানাডা, আমেরিকা, হাওয়াই, জাপান, থাইল্যান্ড ও পূর্বআফ্রিকা তার দেখা। পূর্বভারতের বন-জঙ্গল, পশুপাখি ও বনের মানুষের সঙ্গেও তার সুদীর্ঘকালের নিবিড় ও অন্তরংগ পরিচয়। সাহিত্য-রচনায় মস্তিষ্কের তুলনায় হৃদয়ের ভূমিকা বড়- এই মতে তিনি বিশ্বাসী।
প্রথম প্রকাশ – ৩০শে জানুয়ারি, ১৯৮৫
রেটিং – ২.৮/৫