জীবনানন্দ দাশ লিখেছিলেন, “চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা…”। কবির বর্ণণার মতো অমন একঢাল চুল পেতে তো সকলেরই ইচ্ছে করে। কিন্তু তার জন্য চাই সঠিক যত্ন। তেল লাগিয়ে শ্যাম্পু করেই আমরা হেয়ার ট্রিটমেন্ট কমপ্লিট করে ফেলি। কিন্তু এরপরে কন্ডিশনার ব্যবহার করা জরুরি। লকডাউনে বাইরে বেরতে পারছি না আমরা অনেকেই। কিন্তু তা বলে তো বিউটি রুটিন থেমে থাকবে না। তাই বাড়িতেই কীভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে হেয়ার কন্ডিশনা তৈরি করবেন (Homemade Hair Conditioner Recipes In Bengali), তা নিয়ে এই প্রতিবেদনে আলোচনা করার চেষ্টা করলাম আমরা। যা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি।
ঘরোয়া হেয়ার কন্ডিশনার (12 Homemade Hair Conditioner Recipes)
চুলের যত্নে হেয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করাটা মাস্ট। বাড়িতেই যদি প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে হেয়ার কন্ডিশনার তৈরি করে নিতে পারেন, তার থেকে ভাল আর কিছু হতে পারে না। বাড়িতে সহজেই তৈরি করতে পারবেন, এমন কিছু হেয়ার কন্ডিশনারের খোঁজ দেব আজ।
১| মধু এবং অলিভ অয়েলের কন্ডিশনার
ছবি সৌজন্যে: পিক্সাবে
অলিভ অয়েল এবং মধু দুটোই প্রাকৃতিক উপাদান। চুলকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। চুলের পুষ্টি যোগায়। খুশকির সমস্যা থাকলে তা দূর করতেও মধু সাহায্য করে।
উপকরণ- দুই টেবিল চামচ মধু। চার টেবিল চামচ অলিভ অয়েল। শাওয়ার ক্যাপ।
পদ্ধতি- একটি বাটিতে মধু এবং অলিভ অয়েল ভাল করে মিশিয়ে নিন (Homemade Hair Conditioner)। চারটে ভাগে চুল ভাগ করে নিন। পুরো চুলে কন্ডিশনার লাগানো হয়ে গেলে শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে মাথা ঢেকে ফেলুন। ৩০ মিনিট রাখার পর সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। একদম শেষে মাইল্ড কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তাহে একবার এই কন্ডিশনার ব্যবহার করে চুল ভাল থাকবে। সেই সময় না হলে মাসে অন্তত দুবার ব্যবহার করতে হবে।
২| ডিম এবং অলিভ অয়েলের কন্ডিশনার
ডিমের কুসুমের মধ্যে থাকা পুষ্টিকর উপাদান চুলের কন্ডিশনার হিসেবে দারুণ কাজ করে। চুল পড়ার সমস্যা কমিয়ে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। খুশকির সমস্যা থাকলে তাও এই কন্ডিশনার ব্যবহারের ফলে কমে যায়। শুষ্ক চুলের জন্য় এই কন্ডিশনার এক কথায় আদর্শ।
উপকরণ- দুটি ডিমের কুসুম। দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েল। জল।
পদ্ধতি- একটি পাত্রে খুব ভাল করে ডিমের কুসুমের সঙ্গে অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটিকে তরল করতে অল্প পরিমাণে জল ব্যবহার করতে পারেন। চুলকে চার ভাগে ভাগ করে এই মিশ্রণটি লাগিয়ে নিন। কখনও কখনও পুরো চুলে না লাগিয়ে মাঝ বরাবর থেকে চুলের শেষ পর্যন্ত লাগাতে পারেন। এরপর শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে নিন। এক থেকে দুই ঘণ্টা রাখার পর চুল ভাল করে ধুয়ে ফেলতে হবে। অবশ্যই ঠাণ্ডা জল দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। অবশ্যই সাধারণ কোনও কন্ডিশনার এর পর অ্যাপ্লাই করবেন। সপ্তাহে একদিন এভাবে চুল কন্ডিশন করলেই যথেষ্ট।
৩| নারকেল তেল
ছবি সৌজন্যে: পিক্সাবে
সাধারণত সব ধরনের চুলের জন্যই নারকেল তেল ভাল কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। চুলের গোড়া শক্ত করতে সাহায্য করে প্রাকৃতিক উপাদানে ভরপুর নারকেল তেল।
উপকরণ- তিন টেবিল চামচ নারকেল তেল। গরম তোয়ালে।
পদ্ধতি- কয়েক সেকেন্ড গ্যাসে বসিয়ে নারকেল তেল হালকা গরম করে নিন (Natural Hair Conditioners at Home)। এরপর মাথার তালুতে ভাল করে মাসাজ করতে হবে। লম্বা চুল হলে শেষ পর্যন্ত লাগাতে পারেন। এরপর গরম তোয়ালে জড়িয়ে রাখতে হবে ৪৫ মিনিট। এরপর ঠাণ্ডা জলে সালফেট মুক্ত শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। কন্ডিশনার লাগাতে ভুলবেন না। সপ্তাহে তিন দিন তেল মাসাজ করলে ভাল উপকার পাবেন।
৪| শিয়া বাটার
শিয়া বাটারের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি অ্যাসিড এবং তেল থাকে। এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি-এর উপাদান। খুশকির দূর করতে খুব ভাল কাজ দেয়। যাঁদের কোঁকড়া চুল তাঁদের ক্ষেত্রে শিয়া বাটার খুব ভাল কন্ডিশনারের কাজ করে। চুলের ডগা ফেটে যাওয়া রোধ করতেও এর জুড়ি মেলা ভার।
উপকরণ- এক টেবিল চামচ শিয়া বাটার। দুই টেবিল চামচ নারকেল তেল। এক চা চামচ আর্গান অয়েল। দু-তিন ফোঁটা আপনার পছন্দের এসেনশিয়াল অয়েল। এটা অপশনাল।
পদ্ধতি- নারকেল তেল এবং শিয়া বাটার একসঙ্গে হালকা গরম করে নিন। মসৃণ তরল তৈরি না হওয়া পর্যন্ত গরম করতে হবে (Homemade Hair Conditioner Recipes)। এবার এর মধ্যে আর্গান অয়েল দিয়ে মিক্সচার তৈরি করুন। ইচ্ছে হলে এর মধ্যে মিশিয়ে নিতে পারেন নিজের পছন্দের এসেনশিয়াল অয়েল। খুব ভাল করে মাসাজ করে এই কন্ডিশনার মাথায় লাগিয়ে নিন। অন্তত আধ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এরপর সাধারণ জলে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করতে পারেন এই কন্ডিশনার।
৫| বেকিং সোডা
বেকিং সোডার কন্ডিশনার প্রায় সব রকম চুলের জন্যই ভাল। নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে এই কন্ডিশনার। মাথার তালুকে ফাংগাল ইনফেকশন হলেও তার সমাধান রয়েছে এই কন্ডিশনারে। তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণে বেকিং সোডা ব্যবহার করুন। কারণ পরিমাণে বেশি ব্যবহার করলে পিএইচ লেভেলের তারতম্যের কারণে চুলের ক্ষতি হতে পারে।
উপকরণ- ১/৪ কাপ বেকিং সোডা। আধ কাপ কন্ডিশনার। প্লাস্টিকের ব্যাগ। গরম তোয়ালে।
পদ্ধতি- প্লাস্টিকে বাটিতে বেকিং সোডা এবং কন্ডিশনার খুব ভাল করে মিশিয়ে নিন। এরপর পুরো চুলে লাগিয়ে নিন এই মিশ্রণ। পুরো চুলে লাগানো হয়ে গেলে একটা প্লাস্টিক ব্যাগ দিয়ে পুরো মাথা ঢেকে নিন। এর উপর দিয়ে গরম তোয়ালে জড়িয়ে নিন। এক ঘণ্টা রেখে দেওয়ার পর ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে নিন। মাসে একবার এই কন্ডিশনার ব্যবহার করাই যথেষ্ট।
৬| ACV and Guar Gum
চুলের ঘনত্ব বাড়াতে এই কন্ডিশনার অত্যন্ত উপকারী। অ্যাপেল সিডার ভিনিগারের সঙ্গে সাধারণত ব্যবহার হয়। খুশকির সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। চুলের পিএইচ লেভেল মেনটেন করতেও এর জুড়ি মেলা ভার।
উপকরণ- দুই কাপ জল। দুই চা চামচ ছোলার গুঁড়ো। এক চামচ ক্যারিয়ার অয়েল। এটি অলিভ অয়েল, নারকেল তেল এবং জোজোবা অয়েলের মিশ্রণে তৈরি। অর্ধেক কাপ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার। ১০-২০ ফোঁটা রোজমেরি এসেনশিয়াল অয়েল।
পদ্ধতি- মিনিটখানেক মতো জলে ছোলার গুঁড়ো ফুটিয়ে নিন। এর মধ্যে ক্যারিয়ার অয়েল, অ্যাপেল সিডার ভিনিগার, রোজমেরি এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন। আপনার পছন্দের এসেনশিয়াল অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন। এবার এই মিশ্রণ (Natural Hair Conditioners at Home) একটি পাত্রে ঢেলে ঘন করে নিতে হবে। ঠাণ্ডা হলেই ঘন হয়ে যাবে। এরপর সাধারণ জল দিয়ে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে নিন। এরপর আগে থেকে তৈরি করে রাখা ওই মিশ্রণ কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করুন। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার এই মিশ্রণ কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
৭| কলার কন্ডিশনার
কলার মধ্যে সিলিকনের প্রচুর উপাদান রয়েছে। এটি চুল পড়া যেমন কমায়, তেমনই চুল অনেক উজ্জ্বল করে তোলে। চুলকে সফট এবং বাউন্সি করে তোলে। অলিভ অয়েলের সঙ্গে কলা মিশিয়ে কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার বহুল প্রচলিত।
উপকরণ- একটা কলা। দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েল। এক টেবিল চামচ মধু। শাওয়ার ক্যাপ।
পদ্ধতি- একটি বাটিতে কলা খুব ভাল করে চটকে নিতে হবে। এর মধ্যে অলিভ অয়েল এবং মধু মিশিয়ে নিন। পুরো চুলে এই মিশ্রণ লাগিয়ে নিন (Homemade Hair Conditioner Recipes)। শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে অন্তত ৩০ মিনিট চুল ঢেকে রাখুন। এরপর ঠাণ্ডা জলে মাইল্ড সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। অবশ্যই কন্ডিশনার লাগিয়ে নিন। সপ্তাহে একদিন এই কন্ডিশনার ব্যবহার করলে উপকার পাবেন।
৮| অ্যপেল সিডার ভিনিগার
অ্যাপেল সিডার ভিনিগার চুলকে ময়শ্চারাইজ করে। অনেক বেশি উজ্জ্বল করে তোলে। ন্যাচারাল কন্ডিশনার হিসেবে ক্লিনজারের কাজ করে।
উপকরণ- দুই টেবিল চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার। এক কাপ জল।
পদ্ধতি- একটি পাত্রে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার এবং জল একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এবার মাইল্ড সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভাল করে ধুয়ে নিন। এরপর কন্ডিশনার হিসেবে ওই মিশ্রণটি অ্যাপ্লাই করুন। হালকা মাসাজ করে নিন, যাতে সব চুলে পৌঁছয়। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ঠা্ডা জলে চুল ধুয়ে নিন। একদন অন্তর ব্যবহার করতে পারেন এই হোমমেড কন্ডিশনার।
৯| মেয়োনিজ এবং ডিমের কন্ডিশনার
চুল পড়ে যাওয়া আটকাতে অব্যর্থ মেয়োনিজ। এর মধ্যে থাকা তেল চুলকে পুষ্টি জোগায়। আর মেয়োনিজ এবং ডিমের প্যাক চুলকে ভেতর থেকে মজবুত করে। চুল সিল্কি করতেও এই কন্ডিশনার উপকারী।
উপকরণ- দুটি ডিমে কুসুম। পাঁচ টেবিল চামচ মেয়োনিজ। এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল।
পদ্ধতি- একটি পাত্রে ডিমের কুসুম এবং মেয়োনিজ খুব ভাল করে মিশিয়ে নিন। এর মধ্যে অলিভ অয়েল মিশিয়ে স্মুথ করে নিন (Natural Hair Conditioners at Home)। পুরো মাথায় ভাল করে এই মিশ্রণ লাগিয়ে নিতে হবে। মিনিট ২০ রেখে দেওয়ার পর সালফেট যুক্ত শ্যাম্পু দিয়ে ঠাণ্ডা জলে চুল ধুয়ে নিন। অবশ্যই কন্ডিশনার লাগিয়ে নেবেন। সপ্তাহে একবার এই কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারলে ভাল।
১০| নারকেলের দুধের কন্ডিশনার
নারকেলের দুধের মধ্যে থাকা ভিটামিন বি, সি এবং ই চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় খুবই কার্যকরী।
উপকরণ- অর্ধেক টেবিল চামচ নারকেলের দুধ। এক টেবিল চামচ শ্যাম্পু।
পদ্ধতি- নারকেলের দুধের সঙ্গে খুব ভাল করে শ্যাম্পু মিশিয়ে নিন। এবার সাধারণ শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। এরপর ওই মিশ্রণটি ব্যবহার করুন (Homemade Hair Conditioners)। কিছুক্ষণ রেখে চুল ধুয়ে নিন। এরপর অর্ধেক টেবিল চামচ নারকেলের দুধ চুলে লাগিয়ে নিন। এটাই ন্যাচারাল কন্ডিশনারের কাজ করবে। সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করতে পারেন এই কন্ডিশনার।
১১| ইয়োগার্টের কন্ডিশনার
ইয়োগার্ট এবং অলিভ অয়েল যে কোনও রকম চুলের জন্যই ভাল। চুল ভেঙে যাওয়া আটকাতে ইয়োগার্ট খুবই উপকারী। অলিভ অয়েল খুশকির সমস্যার সমাধান করে।
উপকরণ- একটি ডিম। এক চা চামচ অলিভ অয়েল। দুই টেবিল চামচ ইয়োগার্ট। শাওয়ার ক্যাপ।
পদ্ধতি- ব্লেন্ডারের সাহায্যে সমস্ত উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এর পর হালকা মাসাজ করে সব চুলে লাগিয়ে নিন। ১৫ মিনিটের জন্য শাওয়ার ক্যাপের সাহায্যে চুল ঢেকে নিন। এরপর ঠাণ্ডা ডজলে ধুয়ে ফেলুন। দুই সপ্তাহে একবার এই কন্ডিশনার ব্যবহার করলেই ফিরবে চুলের স্বাস্থ্য।
১২| অ্যালোভেরা এবং কলার কন্ডিশনার
চুলের স্বাস্থ্য রক্ষার্থে অ্যালোভেরা অন্যতম একটি প্রাকৃতিক উপাদান। এর সঙ্গে কলার মধ্যে থাকা ভিটামিন বি যুক্ত হলে আলাদা পুষ্টি জোগায়।
উপকরণ- অ্যালোভেরা পাতা। তাতে অবশ্যই জেল থাকতে হবে। দুটো মাঝারি মাপের কলা। শাওয়ার ক্যাপ।
পদ্ধতি- অ্যালোভেরার জেল বের করে নিন। কলা ছোট টুকরো করে নিন। ব্লেন্ডারের সাহায্যে ভাল করে দুটি উপাদান মিশিয়ে নিন। এরপর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে শুকিয়ে নিন। এরপর ব্রাশের সাহায্যে ওই মিশ্রণ চুলে লাগাতে হবে। পুরো চুলে মিশ্রণটি লাগিয়ে শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে অন্তত দুই ঘণ্টা ঢেকে রাখতে হবে। এরপর আবার সাধারণ জলে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে।
ঘরোয়া হেয়ার কন্ডিশনারের উপকার (Benefits of Natural Hair Conditioner)
১| বাজারচলতি কন্ডিশনারে অনেক সময় কেমিক্যাল থাকে। ফলে প্রাকৃতিক উপাদানের সাহায্যে বাড়িতে তৈরি করে নেওয়াই ভাল।
২| প্রাকৃতি উপাদানে তৈরি কন্ডিশনার চুল ভিতর থেকে মজবুত করে।
৩| চুল ফেটে যাওয়া, ভেঙে যাওয়া রুখতে কন্ডিশনার ম্যাজিকের মতো কাজ করে।
৪| কন্ডিশনারের মধ্যে থাকা ভিটামিন ডি, সি চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
৫| সারা বছরই অনেকে খুশকির সমস্যায় ভোগেন সেক্ষেত্রে প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি কন্ডিশনার খুব ভাল।
৬| বর্ষাকালে ফাংগাল ইনফেকশন খুব সাধারণ একটি সমস্যা। নিয়মিত কন্ডিশনারের ব্যবহারে এই সমস্যাও দূর হয়ে যায়।
৭| কন্ডিশনার অ্যাপ্লাই করার পর সাধারণ জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে নিয়ে হবে। তবেই উপকার। চুলে কন্ডিশনার লেগে থাকলে তা থেকে পরে ইনফেকশন হতে পারে।
৮| কোনও কোনও ক্ষেত্রে স্নান করার পরে কন্ডিশনার ব্যবহার করে শুকিয়ে নিয়ে ফের ধুয়ে নিতে হয়। সেক্ষেত্রেও কেয়ারফুল থাকতে হবে।
প্রশ্নোত্তর (FAQs)
ঘরোয়া হেয়ার কন্ডিশনার (Homemade Hair Conditioners) সম্পর্কে সাধারণ কিছু প্রশ্নোত্তর নিয়ে এবার আলোচনা করা হবে।
১| বাড়িতে চুল ময়শ্চারাইজ করার উপায় কী?
মধু, ভিনিগার, কলা, অ্যাপেল সিডার ভিনিগার, ইয়োগার্টের মতো উপকরণ প্রায় সকলেরই ঘরে থাকে। এর যে কোনও একটি দিয়েও কন্ডিশনার তৈরি করে অ্যাপ্লাই করুন। চুল খুব ভাল ভাবে ময়শ্চারাইজ হবে।
২| শুষ্ক চুল প্রাকৃতিক ভাবে ময়শ্চারাইজ করা যাবে কীভাবে?
শুষ্ক চুলের ক্ষেত্রে দেখবেন, বাড়িতে মায়েরা অনেক সময়ই তেল দিয়ে দেন বেশি করে। নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল শুষ্ক চুলের খুব ভাল ময়শ্চারাইজার। ক্রিম বা বাটারও ব্যবহার করতে পারেন। তবে প্রতিদিন তেল না দিয়ে, একদিন অন্তর তেল মাসাজ করুন। অবশ্যই শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নেবেন।
৩| চুলে ডিপ কন্ডিশনার করার ঘরোয়া পদ্ধতি কী?
মধু এবং অলিভ অয়েল দুটোই খুব ভাল প্রাকৃতিক কন্ডিশনার। একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে এক ঘণ্টা চুলে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে হালকা কোনও কন্ডিশনার লাগিয়ে নেবেন।
৪| হোমমেড হেয়ার কন্ডিশনারের কোনও সাইড এফেক্ট রয়েছে?
ঘরোয়া পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়েই কন্ডিশনার তৈরি হয়। ফলে সাধারণ ভাবে এর কোনও সাইড এফেক্ট থাকে না। তবে সব রকমের চুলে সব ধরনের কন্ডিশনার ব্যবহার করা যায় না। সে কারণে আপনার চুল অনুযায়ী কোন কন্ডিশনার ব্যবহার করলে ভাল হবে, তা বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন।
৫| কন্ডিশনার না থাকলে কী ব্যবহার করা যাবে?
বাড়িতে কোনও রকম কন্ডিশনার না থাকলে, বা কন্ডিশনার ব্যবহার করতে না চাইলে সাধারণ তেল ব্যবহার করুন (Homemade Hair Conditioners)। এতেও চুল ভিতর থেকে মজবুত হবে।