আমার না হয় হিমোগ্লোবিনটা একটু কম রয়েছে। তার জন্য আমায় কি সব সময় বেদানা খেতে হবে? না আমি সেটা মনে করি না। কোনও চিকিৎসকও সেটা মনে করেন না। কিন্তু সেই কথা মনে করে আমার মা। যখনই দেখে, ধরে বেঁধে আমায় বেদানা খাওয়াতে চায়। আর বলে, "তুই কি বুঝবি বেদানার কি গুণ? বেদানার গুণ বোঝার জন্যেও সামান্য বুদ্ধি থাকা দরকার। তা তোর নেই।" আমারও সেই কথা বেশ মানে লেগেছে। তাই একটা হেলথ জার্নাল খুলে পড়তেই বসে পড়লাম। কারণ, সত্যিই জানা দরকার বেদানার কী গুণ! বেদানার স্বাস্থ্যগুণ পড়ে তো আমার চোখ কপালে! সত্যিই ওই টুকু একটা ফলের এত গুণ। যার দেখো এত দানা, তার নামই হল বেদানা? এ ভারী অন্যায়। যারা আমার মতোই বেদানা দেখলে দশ হাত দূরে পালায়, তাদের সত্যিই জানা প্রয়োজন বেদানার উপকারিতা (health benefits of pomegranate) ।
বেদানায় (health benefits of pomegranate)রয়েছে অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট উপাদান। যা শরীরে একাধিক বিষাক্ত উপাদান নষ্ট করে দেয়। অর্থাৎ, শরীরকে ডিটক্স করে। টক্সিক উপাদান শরীর থেকে সরিয়ে দেয়। তাই দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ক্ষতির আশঙ্কা অনেকাংশেই কম হয়ে যায়। শরীরে বার্ধক্যের ছাপ পড়তে দেয় না। ত্বকও তরুণ রাখে।
বেদানায় আছে ভিটামিন সি। এছাড়াও এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা শরীরের অভ্যন্তরে রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কা অনেকাংশেই কম করে দেয়। এবং সেই সম্ভাবনা আর থাকে না বললেই চলে। রক্তের অনুচক্রিকা অর্থাৎ প্লেটলেটের কাজ হল রক্ত তঞ্চন বা রক্ত জমাট বাঁধানো। কিন্তু নানা রকম শারীরিক অসুস্থতার কারণে প্লেটলেটের সংখ্যায় সামঞ্জস্য না থাকার কারণে হার্ট বা ফুসফুসে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। সেই আশঙ্কাই অনেকাংশে কম করে দেয় বেদানা।
নিয়মিত বেদানা (health benefits of pomegranate)খেলে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা অনেক বাড়ে। একইসঙ্গে শরীরের সব অংশেই অক্সিজেন পরিমাণ মতো পৌঁছায়। হার্ট ও মস্তিষ্ক পরিমাণ মতো অক্সিজেন পায়। তাই সবরকম ভাবে শরীর চাঙ্গা হয়ে উঠতে কোনও সমস্যা হয় না। তাই ছোট বড় অসুখের সম্ভাবনা অনেকাংশেই কম হয়ে যায়।
জার্নাল অব এগ্রিকালচার ফুড কেমিস্ট্রিতে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত এক গ্লাস বেদানার রস খেলে শরীরে কয়েকটি উপাদানের মাত্রা বাড়ে। আর সেই জন্যই মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ ভাল হয়। তাই স্মৃতিশক্তির উন্নতি হয়। ডিমেনশিয়া এবং অ্যালঝাইমার্সের মতো অসুখের আশঙ্কাও অনেক কম হয়ে যায়।
দৈনন্দিন ডায়েটে বেদানাকে (health benefits of pomegranate) অন্তর্ভুক্ত করলে শরীরে পিউনিসিস অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। যে কারণে একদিকে যেমন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না, তেমনই খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমতে শুরু করে। ফলে হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অনেক অনেক কম হয়ে যায়।