২ লাখ ৩০ হাজার করোনা রোগীর উপর একটি গবেষণা করা হয়েছিল। সেই গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, আক্রান্তদের অন্তত ১/৩ অংশের নিউরোলজিকাল ও সাইকিয়াট্রিক চিকিৎসার প্রয়োজন হচ্ছে সংক্রমিত হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে। এদের মধ্যে ১৩ শতাংশের আগে কখনও কোনও নিউরোলজিকাল বা মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন হয়নি।
ল্যানসেট সাইকিয়াট্রি জার্নালে সম্প্রতি এই গবেষণা পত্র প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের দাবি, SARS-CoV-2 জটিল কিছু সমস্যা তৈরি করছে যা স্নায়ুতন্ত্রেও প্রভাব ফেলছে। তাই কোভিড-১৯ সংক্রমণ সেরে গেলেও ও সুস্থ হয়ে উঠলেও মানসিক ভাবে তার প্রভাব থেকেই যাচ্ছে অনেকদিন। গবেষকরা আরও দাবি করছেন যে, কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত ব্যক্তি তিন মাসের মধ্যে মুড ও অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত হতে পারেন (pandemic impact on mental health) ।
এমনিতেই প্যানডেমিকের কারণে সবার মনের মধ্যেই এক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। কেউ তাঁর পরিবারকে নিয়ে চিন্তিত তো কেউ কো-মর্বিডিটিস নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এছাড়াও এক মারাত্মক প্রভাব পড়েছে শিশু মনেও। সেই নিয়ে আগেও সাবধান করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। পাশাপাশি লকডাউনের কারণে অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন ও অনেকেরই চাকরির নিশ্চয়তা নিয়ে চিন্তা রয়েছে। তাই সব মিলিয়ে তার প্রভাব পড়ছে মনের উপরেই। যার ফলে ডিপ্রেশনের মতো অসুখের আশঙ্কা এই সময়ে অনেক অংশেই বেড়ে গিয়েছে। গত বছর দেখা গিয়েছিল, প্যানডেমিকের কারণে বেড়েছে আত্মহত্যার সংখ্যা। একাধিক গবেষণা পত্রে সেই তথ্য প্রকাশ করাও হয়েছিল। তাই আমাদেরই সতর্ক থাকতে হবে। কেউ করোনায় আক্রান্ত হোক কিংবা না হোক তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে লক্ষ্য রাখতেই হবে। যাতে অসুখ সেরে গেলেও তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যেও কোনওরকম ক্ষতি না হয় (pandemic impact on mental health)। মানসিক স্বাস্থ্যে করোনার প্রভাব কিন্তু অনেক।
কোয়ারান্টাইনে মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে গুরুত্ব দিন
মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়ার কারণ : কী বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)
প্যানডেমিকের কারণে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়ছে। সেই কথা উল্লেখ করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। কারণ হিসেবে চাকরি চলে যাওয়াও উল্লেখ করেছিল। ওয়ার্ক ফ্রম হোম করার কারণে একাকিত্ব ও একঘেয়েমি মানুষের উপর চেপে বসছে। এছাড়াও প্রচণ্ড কাজের চাপও মনের উপর প্রভাব ফেলছে। এছাড়া চাকরির অনিশ্চয়তা নিয়ে চিন্তা করছেন অনেকেই। তার প্রভাব পড়েছে মনের উপর। শিশু মনেও প্রভাব কম নয়। আগে বাড়ির শিশু সদস্যরা বাইরে খেলতে যেত। স্কুলে যেত। সবার সঙ্গে সময় কাটাত। প্যানডেমিক আসার ফলে তাদের জীবন ধারায় বড় পরিবর্তন এসেছে। তাদের বেশিরভাগ সময়ে বাড়ির মধ্য়েই থাকতে হয়। স্কুল বন্ধ এবং খেলতে যাওয়াও বন্ধ (covid-19 and mental health)। এছাড়াও মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বা আড্ডা দেওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বন্ধ হয়েছে স্কুল ও কলেজ। তাই বাড়িতেই বেশিরভাগ সময়ে আমাদের সবাইকে থাকতে হয়। আর তাই আমাদের শরীরের পাশাপাশি মনের দিকেও লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। যাতে মানসিক স্বাস্থ্যও সুস্থ থাকে।
করোনা আক্রান্তর ক্ষেত্রে …
করোনা আক্রান্ত যে ব্য়ক্তি হোম আইসোলেশনে থাকছেন, তাঁকে প্রায় ২০দিন এক ঘরে বন্দি থাকতে হচ্ছে। শারীরিক অসুস্থতা ও দুর্বলতার পাশাপাশি মানসিকভাবেও দুর্বল থাকছেন তিনি। প্রায় ঘরবন্দি থাকার কারণে প্রভাব পড়ছে মনের উপরেও (covid-19 and mental health)।
কী করতে পারি আমরা
- বাড়ির শিশু সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাতে হবে।
- পরিচিতদের সঙ্গে দেখা হওয়া বন্ধ হলেও ভার্চুয়ালি আড্ডা দেওয়া যেতে পারে।
- একে অপরকে ফোন করে প্রতিদিন খোঁজ নিতে পারি।
- বাড়িতেই নিজেকে নতুন করে খুঁজে পেতে পারি। নিজেদের হবিকে গুরুত্ব দিতে পারি।
- করোনা সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে ভিডিয়ো কলে নিত্য যোগাযোগ রাখতে পারি।
- পরিবারের কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে সুস্থ হওয়ার পর একজন মনোবিদের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে (pandemic impact on mental health)।
তথ্য সৌজন্য- ল্যানসেট ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!
বাড়িতে থেকেই অনায়াসে নতুন নতুন বিষয় শিখে ফেলুন। শেখার জন্য জয়েন করুন #POPxoLive, যেখানে আপনি সরাসরি আমাদের অনেক ট্যালেন্ডেট হোস্টের থেকে নতুন নতুন বিষয় চট করে শিখে ফেলতে পারবেন। POPxo App আজই ডাউনলোড করুন আর জীবনকে আরও একটু পপ আপ করে ফেলুন!