কবীর সুমনের সেই গানটা মনে আছে? ‘প্রথম স্কুলে যাওয়ার দিন/প্রথমবার ফেল, প্রথম ছুটি হাওড়া থেকে ছেলেবেলার রেল।” সুমন কোন ট্রেনের কথা ভেবে এই গান লিখেছিলেন জানি না। তবে আমাদের ছেলেবেলায় দেখা সেই রাজকীয় ট্রেন হাওড়া নিউ দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস (Rajdhani Express) আজ পা দিল পঞ্চাশে। আজকের দিনেই ১৯৬৯ সালে এই ট্রেন প্রথমবার হাওড়া থেকে দিল্লি পৌঁছয়। ভারতীয় রেলের গর্ব এই ট্রেনের ফলেই কলকাতা দিল্লির দূরত্ব ২৪ ঘণ্টা থেকে কমে ১৭ ঘণ্টায় দাঁড়ায়। আইআরসিটিসির কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন আজ যে রাজধানীটি (Rajdhani) হাওড়া থেকে ছাড়বে তার যাত্রীদের জন্য থাকবে স্পেশ্যাল মেনু। যার মধ্যে থাকতে পারে রাজধানীর (Rajdhani) বিখ্যাত ফিশ ফ্রাইও। আজ যাত্রীদের দেওয়া হবে গোলাপ ফুল, চকোলেট ও গ্রিটিংস কার্ড।
রাজধানীর (Rajdhani) কথা বলতেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে উত্তমকুমার আর শর্মিলা ঠাকুরের সেই বিখ্যাত দৃশ্য। ছবির নামটা কি বলব? জানি আমি মুখ খোলার আগেই আপনারা সমস্বরে বলবেন, ‘নায়ক।’ (Nayak)যেখানে ট্রেনে চেপে দিল্লিতে পুরস্কার আনতে যাচ্ছিলেন পর্দায় নায়ক (Nayak)। বিষয় হচ্ছে যে ট্রেনে উত্তমকুমার দিল্লি যাচ্ছিলেন সেটা কিন্তু আদতে রাজধানী নয়। কারণ রাজধানী চলতে শুরু করে ১৯৬৯ সালে আর নায়ক ছবি মুক্তি পায় ১৯৬৬ তে। যদিও ছবিটা দেখলে রাজধানী ট্রেনের কথাই মনে আসে। যদিও ছবির শুটিং হয়েছিল ভেসটিবিউল ডিলাক্সে।
তবে নায়ক (Nayak) তো একটি কাল্ট ছবি। কিন্তু বাংলা ছবির ইতিহাসে এরকম অনেক মণিমুক্তো ছড়িয়ে আছে। মানে আমি বলতে চাইছি এমন অনেক বাংলা ছবি আছে যেখানে ট্রেন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের বাংলা ছবিতেই এমন অনেক মণিমুক্তো ছড়িয়ে আছে। যদি বাংলা ছবি ভালোবাসেন তাহলে ট্রেন বলতেই আপনার কোন কোন ছবির দৃশ্যের কথা মনে পড়ে? আমার কোনগুলো মনে পড়ে তাহলে বলি আপনাদের। দেখুন দেখি আমার সঙ্গে ঠিক কতটা মেলে আপনার পছন্দ।
#top train scene 5
জতুগৃহ
উত্তমকুমার আর অরুন্ধতী দেবীর একটু অন্য ধাঁচের জুটি। একজন সফল স্থপতি আর সন্তানের জন্ম দিতে অক্ষম এক নারীর অতি সংবেদনশীল গল্প। শেষ দৃশ্য। বহু বছর পরে দেখা হয়েছে স্বামী স্ত্রীর। স্টেশন এক। গন্তব্য আলাদা। দু’জনে চেপে বসলেন দুটি ট্রেনে। উপর থেকে টপ শট। দুদিকে আস্তে আস্তে চলে যাচ্ছে দুটি ট্রেন।
#top train scene 4
প্রাক্তন
‘রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা’ বলেছিলেন কবিগুরু তার ‘হঠাৎ দেখা’ কবিতায়। মূলত সেখান থেকেই প্রাক্তন ছবির আসল গল্প শুরু। যেখানে ট্রেনে দেখা হয় বহুদিন আগে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া এক দম্পতির। প্রাক্তন ছবির বেশিরভাগটাই ট্রেনে শ্যুট করা।
#top train scene 3
অভিযান
পাঞ্জাবী ড্রাইভার নরসিংরুপী সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং তার সহকারীর ভূমিকায় রবি ঘোষ। বাংলা ছবির এক অমর সৃষ্টি অভিযান। তার ভাঙা গাড়ি নিয়ে রেলের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে নরসিং। তাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেড়িয়ে গেছে গাড়ি। আর তাই নরসিং বিরক্ত, ক্রুদ্ধ। তার গারির যাত্রীদের পৌঁছে দিতে হবে আগের স্টেশনে। যাতে তারা গাড়ি ধরতে পারে। বাংলা ছবির ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে এই দৃশ্য।
#top train scene 2
সোনার কেল্লা
ফেলুদা যদি এই ছবির নায়ক হন, তাহলে ট্রেন এই ছবির সহনায়ক! মন্দার বোস আর নকল ডাক্তার হাজরা দু’জোড়া পা এগিয়ে আসছে। মিলিয়ে দেখছে তালিকা। তোপসে সহ ফেলুদা যাচ্ছে যোধপুর। স্টেশন ছেড়ে আস্তে আস্তে হেলেদুলে বেড়িয়ে যাচ্ছে ট্রেন। হাওড়া স্টেশনে সেই চিরপরিচিত ‘বড় ঘড়ি।’ আর শেষের দিকে উটের পিঠে ফেলুদা চলেছে রামদেওরার দিকে আর পাশেই ট্রেনে নকল হাজরা আর মুকুল। আহা, মগনলালের ভাষায় যাকে বলে, নাজুক, নাজুক!
উটের পিঠে ফেলুদা আর হুস করে বেরিয়ে যাচ্ছে ট্রেন
# top train scene 1
পথের পাঁচালি
বুকে হাত দিয়ে বলুন দেখি, আপনিও মনে মনে এক নম্বরে ঠিক এই ছবিটাই রেখেছিলেন কিনা? উত্তর হ্যাঁ, আমি জানি। এযে অমর এক দৃশ্য। এ দৃশ্য ভোলার নয়। দিদি দুর্গার হাত ধরে ছুটছে অপু। চারদিকে শরতের সাদা কাশফুল। আর ভাই বোনের সেই অম্লান দৃশ্যকে চিরে কালো ধোঁয়ার বিজয়কেতন উড়িয়ে এগিয়ে আসছে ট্রেন! অপুর চোখে বিস্ময়। আমাদেরও। প্রযুক্তি আর অগ্রগতি কীভাবে গ্রাস করে সরলতা এর চেয়ে ভালো উদাহরণ আর হতে পারে কি?
Image Source: Facebook
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
Read More From লাইফস্টাইল
এই ৬টি ঠোঁটের অধিকারিণীরা এইসব গুণের মানুষ হন
SRIJA GUPTA
চুল ভাল রাখতে শ্যাম্পুর বদলে এগুলি ব্যবহার করুন
SRIJA GUPTA