পেরেন্টিং টিপস
নিয়ম করে চললে কর্মরতা মায়েরাও চাকরি সামলে ব্রেস্ট ফিডিং করাতে পারেন, কীভাবে? রইল পরামর্শ
সন্তানের জন্ম যে-কোনও মেয়ের জীবনেই বড় পরিবর্তন। তবে আপনি যদি কর্মরতা হন, তা হলে চ্যালেঞ্জটা কিছুটা বেশি। কারণ, মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে কর্মক্ষেত্রে ফেরার পর কাজ এবং সন্তান ব্যালেন্স করতে হয় সমান তালে। কর্মরতা মায়েরা অনেকেই কাজে যোগ দেওয়ার পর সন্তানকে আর মাতৃদুগ্ধ পান করান না। ফলে শিশুর পুষ্টি নিয়ে টান তো পড়েই, উপরন্তু ব্রেস্ট হেভি হয়ে অফিসে কাজের জায়গায় সমস্যায় পড়েন মায়েরাও। কিন্তু একটু রুটিন মেনে চললে কাজের সঙ্গেই ব্রেস্ট ফিড করাও সম্ভব। কীভাবে? কর্মরতা মায়েদের (working mom) জন্য ব্রেস্ট ফিডিং (Breastfeeding) করানোর ক্ষেত্রে আমরা কিছু পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করলাম। দেখুন তো, আপনার কাজে লাগে কিনা।
১) শেডিউল তৈরি করুন
সাধারণত এক বছর পর্যন্ত বেশিরভাগ শিশু দু’ ঘণ্টা অন্তর কিছু খেতে চায়। শিশুর ছ’ মাস বয়স পর্যন্ত যেহেতু দুধই তার একমাত্র খাবার, তাই আপনার উপর সে নির্ভরশীল। এর পর আস্তে-আস্তে সে সলিড খাবার খেতে শুরু করলে সমস্যা একটু কমে। কর্মক্ষেত্রে কাজ এবং যাওয়া-আসা মিলিয়ে মোটামুটি আট-দশ ঘণ্টা বাড়ির বাইরে থাকা আপনার হয়ে যাবেই। এই সময়টুকু ম্যানেজ করতে হবে আপনাকে। কাজে যোগ দেওয়ার আগে থেকেই একটা শেডিউল তৈরি করে ফেলুন মনে-মনে। অফিসে বেরনোর আগে একবার ফিড করিয়ে নিন বাচ্চাকে। তা হলে পরবর্তী দু’-তিন ঘণ্টা নিশ্চিন্ত। তারপর একবার পাম্প করে ব্রেস্ট মিল্ক (beast milk) বের করে নিন। বিকেলে আরও একবার। এই দু’বার আপনাকে এই দুধ স্টোর করতে হবে। বাড়ি ফিরে শিশুকে আগে সেই দুধ খাইয়ে দিন। তারপর আবার সরাসরি ফিড করাবেন। তবে ব্যক্তিবিশেষে এই রুটিন পাল্টাতে পারে। সেক্ষেত্রে বুদ্ধি খাটিয়ে রুটিন তৈরি করে নিতে হবে আপনাকেই। ধীরে-ধীরে দুটো ফিড কিংবা দু’ বার পাম্প করার মধ্যে সময়টা একটু করে বাড়ান। তা হলে কিছুদিন পরেই অফিসে দুধ বের করার সময়টা কমে একবারে এসে দাঁড়াবে।
২) ব্রেস্ট ফিডিংয়ের নিয়মকানুন সম্পর্কে জেনে নিন
সন্তানের (baby) জন্মের পর ছুটি কাটিয়ে অফিসে ফিরলে অনেক মা আস্তে-আস্তে ব্রেস্ট ফিডিং বন্ধ করে দেন। হয়তো ভাবেন, বাচ্চাকে খাওয়ানোর সময় ঠিক থাকছে বলে বোধ হয় দুধ উৎপাদন কমে যাবে। কিন্তু এমন হয় না। শরীর নিজে থেকেই দুধ তৈরি করবে। তাই ব্রেস্ট ফিডিংয়ের নিয়মকানুন সম্পর্কে ভাল করে জেনে নেওয়াটা জরুরি। শিশু যে ইন্টারভ্যালে দুধ খাবে, শরীরও ঠিক সেই ইন্টারভ্যালে দুধ তৈরি করবে। তাই শিশুর ফিডিংয়ের কিংবা ব্রেস্ট পাম্প করার ইন্টারভ্যাল বাড়িয়ে দিলে আস্তে-আস্তে শরীরও নতুন নিয়মে অভ্যস্ত হতে শুরু করবে।
৩) ফ্লেক্সিবল হতে হবে
নিজের জন্য যে শেডিউল তৈরি করবেন, তা মেনে চলতে হবে কঠোর ভাবে। অনেক অফিসেই সদ্য মায়েদের জন্য ব্রেস্ট পাম্প করার জন্য আলাদা ঘর থাকে। কিন্তু আপনার অফিসে সে ব্যবস্থা না থাকলে কনফারেন্স রুম বা ওয়াশ রুমের কোনও অংশ, কিংবা সিক রুম এই কাজের জন্য ব্যবহার করতে পারেন। সেক্ষেত্রে সহকর্মীদের এই বিষয়ে জানিয়ে রাখুন। তাঁরাও আপনাকে সাহায্য করতে পারবেন। আর এই বিষয়ে লজ্জা কাটিয়ে ফ্লেক্সিবল হতে হবে আপনাকে।
৪) অফিসের ব্রেস্ট পাম্প করার জিনিসপত্রের জন্য আলাদা ব্যাগ করুন
ব্যাগে দুধ স্টোর করার জন্য পরিষ্কার বোতল, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, অটোমেটিক ব্রেস্ট পাম্প, পাম্পের জন্য ব্যাটারি, চার্জার সব মনে করে গুছিয়ে নিন। প্রতিটি বোতলের গায়ে লেবেল আটকে তারিখ এবং সময় লিখে রাখুন। দুধ বোতলে ভরে ফ্রিজে আলাদা করে রাখুন। যদি অফিসে ফ্রিজ না থাকে আইস বক্সের ব্যবস্থা করুন। আর এসবের সঙ্গে আপনার অন্যান্য দৈনন্দিন টুকিটাকি রাখবেন না যেন। এসবের জন্য আলাদা ব্যাগ নিন।
৫) উপযুক্ত পোশাক এবং অন্তর্বাস পরে অফিস যান
কর্মক্ষেত্রেই যদি ব্রেস্ট পাম্প করতে হয়, তা হলে উপযুক্ত পোশাক পরুন। যাতে খুব সহজেই পোশাকের বাধা কাটিয়ে আপনি পাম্প করতে পারেন। ভি-নেক শার্ট ট্রাই করতে পারেন। আর তা সম্ভব না হলে আলাদা পোশাক ব্যাগে ক্যারি করুন। পরে থাকুন ব্রেস্ট ফিডিংয়ের জন্য তৈরি বিশেষ ব্রা। এই ধরনের ব্রা-তে আলাদা হুক দিয়ে কাপ আটকানো থাকে স্ট্র্যাপের সঙ্গে। এর ফলে চট করে কাপটা খুলে ব্রেস্ট পাম্প করতে পারবেন আপনি।
৬) মানসিক প্রস্তুতিও জরুরি
মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষের পর কাজ শুরু হলে রুটিনে পরিবর্তন আসাটা স্বাভাবিক। কয়েক মাস আপনি সদ্যোজাতর সঙ্গেই ছিলেন। ফলে দিনের অনেকটা সময় তাকে ছেড়ে থাকাটা কষ্টের। সন্তানকে মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানোর সময়েরও পরিবর্তন হবে। আবার এতদিন বাড়িতেই যে কাজটা কমফর্ট জোনে করতেন, এখন তা করতে হবে বাইরেও। এই সব কিছুর জন্য মানসিক প্রস্তুতি প্রয়োজন। আর তা আগে থেকে নিলে আপনারই সুবিধে।
৭) রিল্যাক্সড থাকুন
মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে কাজে ফেরার পর কয়েক মাস বেশ স্ট্রেসফুল লাইফ কাটাতে হয় মেয়েদের। সদ্যোজাত এবং অফিস, দুটো ব্যালেন্স করে চলাটা প্রাথমিক ভাবে সমস্যার হয় অনেকেরই। কিন্তু সেই সমস্যা আপনি ধীরে-ধীরে কাটিয়ে উঠবেন। নিজের উপর ভরসা রাখুন। যতটা সম্ভব রিল্যাক্সড থাকুন।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আমাদের এক্কেবারে নতুন POPxo Zodiac Collection মিস করবেন না যেন! এতে আছে নতুন সব নোটবুক, ফোন কভার এবং কফি মাগ, যেগুলো দারুণ ঝকঝকে তো বটেই, আর একেবারে আপনার কথা ভেবেই তৈরি করা হয়েছে। হুমম…আরও একটা এক্সাইটিং ব্যাপার হল, এখন আপনি পাবেন ২০% বাড়তি ছাড়ও। দেরি কীসের, এখনই POPxo.com/shopzodiac-এ যান আর আপনার এই বছরটা POPup করে ফেলুন!