সাদাস্রাব অথবা Vaginal Discharge একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া, যা মহিলাদের যোনিপথ থেকে নিঃসৃত হয়ে থাকে। এটি সাধারণত পাতলা এবং সামান্য চিটচিটে হয়। অনেক সময়ে ঋতুস্রাবের আগে অথবা ঋতুস্রাব অনিয়মিত হলে, প্রচণ্ড ধকল গেলে বা মানসিক চাপ বৃদ্ধি পেলে, যৌন উত্তেজনা হলে কিংবা শরীরে হরমোনাল ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে মহিলাদের যোনিপথ থেকে এই তরল নিঃসৃত হয়ে থাকে। সাধারণত সাদাস্রাব জলের মতো ট্রান্সপারেন্ট হয়ে থাকে। তবে কখনও-কখনও এটি ঘন, অদ্ভুত রঙের এবং দুর্গন্ধযুক্তও হয়। তখন কিন্তু দেরি না করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
কেন হয় সাদাস্রাব?
সাদাস্রাব হওয়ার কারণ কী? অনেক কারণেই সাদাস্রাব হতে পারে। তবে দুঃখের বিষয় হল, বেশিরভাগ মহিলাই ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দেন না। জেনে নিন, ঠিক কী-কী কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়।
ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ
সাদাস্রাবের প্রথম কারণ হল, ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ। মহিলাদের শরীরে নানাভাবে জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে। পরিষ্কারপরিচ্ছনতার অভাব, পাবলিক টয়েলেটে মূত্রত্যাগ, আনপ্রোটেক্টেড সেক্স, মলদ্বার থেকে হওয়া সংক্রমণ – ইত্যাদি নানা কারণে জীবাণুর সংক্রমণ হতে পারে এবং ফলস্বরূপ Vaginal Discharge হতে পারে।
গনোরিয়া
সাদাস্রাব হওয়ার কারণ গনোরিয়াও হতে পারে। এটি একটি সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ। অনেকসময়ে আপনার পুরুষ সঙ্গীর কাছ থেকে এই জীবাণু আপনার শরীরে এসে বাসা বাঁধতে পারে এবং তার ফলে কিন্তু অতিরিক্ত সাদাস্রাবের সমস্যা আসতে পারে। বেশিরভাগ সময়েই দেখা যায়, যাঁদের মধ্যে আনপ্রোটেক্টেড সেক্স করার প্রবণতা আছে, তাঁদের এই সমস্যা বেশি হয়।
অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিক্রিয়া
অনেকেই নানা অসুখের জন্য বিভিন্ন রকম অ্যান্টিবায়োটিক খেতে বাধ্য হন। অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক শরীরে গেলে তা খুব স্বাভাবিকভাবেই নানা হরমোনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে এবং এর ফলেও Vaginal Discharge হতে পারে।
বার্থ কন্ট্রোল পিল
অবাঞ্ছিত গর্ভধারণ থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য অনেক মহিলাই নিয়মিত বার্থ কন্ট্রোল পিল বা গর্ভনিরোধক বড়ি খান। নিয়মিতভাবে এই বড়ি খেলে তা হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে না এবং নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হয়, সাদাস্রাবও তার মধ্যে একটি। আবার অনেক ক্ষেত্রে অ্যাবরশন বা গর্ভপাত করালেও সাদাস্রাবের সমস্যা দেখা যায়।
ইস্ট ইনফেকশন
পরিচ্ছন্নভাবে না থাকলে কিন্তু ইস্ট ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। অনেকেই ঋতুস্রাবের সময়ে অথবা এমনি সময়েও পরিষ্কারভাবে থাকেন না। ফলে তাঁদের মধ্যে এই সমস্যাটা দেখা যায়। একটি নির্দিষ্ট সময় পর-পর স্যানিটারি ন্যাপকিন বদলানো অথবা প্যান্টি বদলানো এই সময় একান্ত প্রয়োজন।
রাসায়নিক সাবান
অনেক মহিলা আবার একটু বেশিই পরিষ্কার থাকার চেষ্টা করেন এবং যোনিপথ বারবার সাবান দিয়ে পরিষ্কার করেন। এক্ষেত্রেও কিন্তু সাদাস্রাবের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সাবানের মধ্যে অনেক রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যা নরম চামড়ার জন্য ক্ষতিকর। যেহেতু মহিলাদের যৌনাঙ্গ ‘ওপেন অরগ্যান’অর্থাৎ বাইরের কোনও ক্ষতিকর পদার্থ অনায়াসে প্রবেশ করতে পারে, কাজেই সাবানের ক্ষতিকর রাসায়নিক সাদাস্রাবের কারণ হয়ে দাঁড়াতেই পারে।
মেনোপজ
অনেকসময়ে মেনোপজ অর্থাৎ ঋতুস্রাব চিরতরে বন্ধ হওয়ার আগে খয়েরি রঙের স্রাব নিঃসৃত হয়।
একাধিক যৌন সম্পর্ক
একাধিক যৌন সম্পর্কে যদি কেউ লিপ্ত থাকে তা হলে নানা জনের শরীর থেকে জীবাণু সংক্রমণ ঘটাটা খুব সাধারণ ব্যাপার এবং সেক্ষেত্রে সাদাস্রাবের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!
বাড়িতে থেকেই অনায়াসে নতুন নতুন বিষয় শিখে ফেলুন। শেখার জন্য জয়েন করুন #POPxoLive, যেখানে আপনি সরাসরি আমাদের অনেক ট্যালেন্ডেট হোস্টের থেকে নতুন নতুন বিষয় চট করে শিখে ফেলতে পারবেন। POPxo App আজই ডাউনলোড করুন আর জীবনকে আরও একটু পপ আপ করে ফেলুন!