গত কয়েক বছরে কিটো ডায়েটের জনপ্রিয়তা বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি মাসে নাকি “কিটোজেনিক ডায়েট চার্ট” সম্পর্কে জানতে গুগলে প্রায় ১০ লক্ষ বার সার্চ করা হয়, তাহলে বুঝতেই পারছেন চটজলদি ওজন কমাতে সবারই প্রথম পছন্দ কিটো ডায়েট (Keto Diet Chart In Bengali)।
কিটো ডায়েটে কি কি খাওয়া যাবে
কিটো ডায়েটের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
এই কিটো ডায়েট কি? (What is Keto Diet in Bengali)
আপনার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে যে আসলে এই কিটো ডায়েট কি? কিটোজেনিক ডায়েট প্ল্যানটি (Keto Diet In Bengali) মেনে চললে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার একেবারে এড়িয়ে চলতে হবে। পরিবর্তে বেশি করে খেতে হবে প্রোটিন এবং ফ্যাট জাতীয় খাবার। আর তা থেকেই শরীরের এনার্জির ঘাটতি মিটবে। মস্তিষ্কের দৈনন্দিন কাজকর্ম চালাতে যে যে উপাদানের প্রয়োজন পড়বে, শরীর তাও সংগ্রহ করবে প্রোটিন এবং ফ্যাটি খাবার থেকেই।
কার্বোহাইড্রেড জাতীয় খাবার খাওয়া একেবারে বন্ধ করে দিলে শরীর যে বিশেষ Metabolic State-এ চলে যায়, তাকেই চিকিৎসার ভাষায় কিটোসিস নামে ডাকা হয়ে থাকে। আর সেই থেকেই এই ডায়েটের নাম কিটোজেনিক ডায়েট বা কিটো ডায়েট। চিকিৎসকেদের মতে শরীর যখন কিটোসিস স্টেটে থাকে, তখন প্রচুর মাত্রায় ফ্যাট বার্ন হয়, যে কারণে ওজন কমতে (Keto Diet Chart In Bangla) একেবারেই সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার না খাওয়ার কারণে ব্লাড সুগার এবং ইনসুলিন লেভেল একেবারে ঠিক থাকে। এছাড়াও আরও অনেক উপকার পাওয়া যায়। তবে জেনে রাখা জরুরি যে ইন্টারেনেটে কিটো ডায়েট চার্ট নিয়ে যে সব তথ্য পাওয়া যায়, তা কিন্তু সব সময় ঠিক হয় না। তাই কিটো ডায়েট প্ল্যান অনুসরণ করার আগে কখন, কী ধরনের কিটো ডায়েট খাবার খাওয়া উচিত, সে সম্পর্কে ডায়েটিশিয়ানের থেকে জেনে নেওয়াটা জরুরি। না হলে কিন্তু শরীরের উপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। এমনকী বেশ কিছু স্কিন ডিজিজ যেমন মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে, তেমনি শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
আরও পড়ুন: যোগাসনের গুণে ওজন হ্রাস
কিটো ডায়েটের উপকারিতা (Health Benefits of Keto Diet)
১| মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ে (Boosts Your Brain)
কিটোজেনিক ডায়েট মেনে খাবার খেলে Neurons-এর ক্ষমতা বাড়ে। সঙ্গে মস্তিষ্কের ভিতরে এমন কিছু এনজাইমের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যার প্রভাবে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ে চোখে পড়ার মতো (Keto Diet Chart In Bengali)। এমনকী অ্যালঝাইমার্সের মতো রোগও ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। বৃদ্ধি পায় স্মৃতিশক্তিও।
২| হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে (Keeps Heart Healthy)
এই বিশেষ ডায়েট প্ল্যানটি মেনে খাবার খেলে একদিকে যেমন ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে, তেমন ব্লাড প্রেসারও নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা কমে (কিটোজেনিক ডায়েট)। সেই সঙ্গে রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাও কমে (Ketogenic Diet) চোখে পড়ার মতো। ফলে হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না। চিকিৎসকেদের মতে বেসি পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার (কিটো ডায়েট চার্ট) খেলে ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর এক্ষেত্রে যেহেতু একেবারেই ‘কার্ব রিচ’ খাবার খাওয়া হয় না, তাই ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে যাওয়া কারণে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না।
৩| শরীরের ভিতরে প্রদাহের মাত্রা কমে (Helps To Resolve Inflammation)
বেশ কিছু স্টাডির পর একথা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে কিটো ডায়েট প্ল্যান (Keto Diet Plan In Bengali) মেনে কিটো ডায়েট খাবার খেলে শরীরে প্রদাহের মাত্রা কমে। ফলে দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যেমন থাকে না, তেমনি ছোট-বড় নানা রোগের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কাও যায় কমে। তাই এই বিষয়ে দ্বিমত নেই যে সুস্থ থাকার চাবিকাঠি লুকিয়ে কিটো ডায়েটের চার্টে।
৪| পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের প্রকোপ কমায় (Prevents PCOS)
বিশেষজ্ঞদের মতে কিটোজেনেটিক ডায়েট মেনে (কিটো ডায়েট চার্ট) খাবার খেলে শরীরে ইনসুলিন লেভেল ঠিক থাকে, যে কারণে পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। তবে এই ব্যাপারে একবার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া উচিত।
কিটো ডায়েটে কি কি খাওয়া যাবে? (Keto Diet Meal Plan In Bengali)
এক্ষেত্রে ডায়েটিশিয়ানরা শরীর অনুযায়ী ডায়েট চার্ট (Keto Diet Meal Plan) তৈরি করে থাকেন। তবে যে যে খাবারকে (Ketogenic Diet Foods) এই কিটো ডায়েট প্ল্যানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে থাকে, সেগুলি হল…
১| তেল (অলিভ এবং নারকেল তেল)
২| অ্যাভাকাডো
৩| ক্রিম
৪| পনির
৫| বাদাম
৬| সবুজ শাক-সবজি
৭| শসা, ব্রকলি এবং ফুলকপির মতো সবজি
৮| মুরগির মাংস এবং মটন
৯| ডিম
১০| মাছ
কিটো ডায়েটের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া (Side Effects Of Ketogenic Diet)
ঠিক ঠিক নিয়ম অনুযায়ী কিটো ডায়েট প্ল্যান (Ketogenic Diet) অনুসরণ না করলে কিটো ডায়েট এর সাইড ইফেক্ট বা একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষত, মাথা যন্ত্রণা, ক্লান্তি, খিদে বেড়ে যাওয়া, ঘুম কমে যাওয়া, মাথা ঘোরা এবং শরীরিক ক্ষমতা কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও কিছু কিছু ক্ষেত্রে মুখ থেকে দুর্গন্ধ বেরনো, মাসল ক্র্যাম্প, নানা ধরনের পেটের রোগ এবং কিডনিতে স্টোন হওয়ার মতো রোগও লেজুড় হতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। কখনও যদি কোনও সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে ডায়েটিশিয়ানের সঙ্গে আলোচনা করে সঙ্গে সঙ্গে কিটো ডায়েট (Keto Diet) বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!
এগুলোও আপনি পড়তে পারেন