ওয়েলনেস

করোনা ভাইরাসের পর এবার ব্ল্যাক ফাঙ্গাস – কীভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন

Debapriya Bhattacharyya  |  May 24, 2021
করোনা ভাইরাসের পর এবার ব্ল্যাক ফাঙ্গাস - কীভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন in bengali

এমনিতেই এই মুহূর্তে আমরা অর্থাৎ ভারতের সব নাগরিকই করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে জর্জরিত, তার উপরে আবার গোদের উপর বিষফোঁড়ার মত আবির্ভাব হয়েছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস (all you need to know about black fungus reasons and safety measure) নামক ভয়ঙ্কর বস্তুটির। টেলিভিশন খুললেই বা কাগজ পড়তে গেলে সবার আগে শিরোনামে চলে আসছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের কথা। কিন্তু ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বিষয়টা কী? কিভাবেই বা এই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, কারাই বা এই সংক্রমণে আক্রান্ত হতে পারেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস থেকে সুরক্ষিতই বা থাকবেন কীভাবে – নানা প্রশ্ন উঠে আসছে সবার মনে। আমরা এই প্রতিবেদনে এরকম কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করলাম, হয়ত আপনার বা আপনার পরিবারের কাজে আসতে পারে।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কী?

ছবি – পেক্সেলস ডট কম

মিউকোর মাইকোসিস। হ্যাঁ চিকিৎসা পরিভাষায় এই নামেই পরিচিত ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এই ছত্রাক বা ফাঙ্গাসের প্রভাব বেশি দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন সমীক্ষায় অবশ্য জানা গিয়েছে যে এই বিরল প্রজাতির ছত্রাকটি (all you need to know about black fungus reasons and safety measure) আগেও ছিল। এক লক্ষের মধ্যে হয়ত এক জনের মধ্যে এই সংক্রমণ দেখা যেত। তবে, এই অতিমারি পরিস্থিতিতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের প্রকোপ বেড়েছে। শরীর দুর্বল ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে সে’সব শরীরে বাসা বাঁধে এই ছত্রাক।  

কীভাবে বুঝবেন কেউ ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত

১। নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং নাকের ভিতর কালো হয়ে যাওয়া

২। নাক থেকে কালচে রক্ত পড়া

৩। গাল এবং চোখ ফুলে যাওয়া

৪। দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হওয়া

৫। নাকের উপরে কালো ছোপ

৬। গলা ব্যথা, অনেক সময়ে সারা শরিরেই ব্যথা

৭। জ্বর

৮। শরীর অবশ হয়ে আসা

৯। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস (all you need to know about black fungus reasons and safety measure) শরীরে বেশি ছড়িয়ে গেলে অনেক সময়েই শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা শুরু হতে পারে

কীভাবে নিজেকে ও অন্যকে সুরক্ষিত রাখবেন

স্বাস্থ্য ও পরিবার সুরক্ষা মন্ত্রী ড: হর্ষ বর্ধন টুইট করে জানিয়েছেন যে কীভাবে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব। এই ছত্রাক সংক্রমণ রোধ করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে বেশ কিছু নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক সেগুলো কী কী

ক) হাইপারগ্লায়সেমিয়া অর্থাৎ রক্তে যেন শর্করার মাত্রা না বাড়ে সেদিকে খেয়াল রাখুন

খ) কোভিড রোগী এবং মধুমেহে আক্রান্তরা অবশ্যই নিজের ব্লাড সুগার লেভেল বার বার পরীক্ষা করুন

গ) অক্সিজেন থেরাপির জন্য পরিষ্কার এবং ফোটানো জল ব্যবহার করুন।

ঘ) পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন (all you need to know about black fungus reasons and safety measure)

ঙ) যদি আপনার সব কটি উপসর্গ নাও থাকে, তবুও যদি মনে হয় যে এক-দুটি উপসর্গও রয়েছে, সেক্ষেত্রেও চিকিৎসকের সাহায্য নিন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।

এছাড়াও, অন্যান্য অনেক চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আরও কিছু গাইডলাইন দেওয়ার চেষ্টা করলাম আমরা

ক) দিনে দু’বার খুব ভাল করে দাঁত ব্রাশ করুন।

খ) যদি আপনি সদ্য কোভিড অতিক্রম করে সুস্থ হয়ে ওঠেন, সেক্ষেত্রে অবশ্যই নতুন টুথ ব্রাশ ব্যবহার করবেন।

গ) দিনে কয়েকবার মাউথওয়াশ দিয়ে মুখের ভিতর পরিষ্কার করবেন, এতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসই নয়, অন্যান্য ছত্রাকের প্রকোপও কমবে।

ঘ) ডিহাইড্রেশন যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। বিশেষ করে গলা বা মুখের ভিতরের অংশ যেন শুকনো না থাকে, সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।

ঙ) প্লাস্টিকের জিভ-ছোলা পাওয়া যায়। তা দিয়ে দিনে অন্তত দু’বার জিভ পরিষ্কার করুন। সম্ভব হলে প্রতিবার খাওয়ার পর নুন জলে কুলকুচি করুন।

স্টেরয়েড কমানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকমহল

ছবি – পেক্সেলস ডট কম

যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের (all you need to know about black fungus reasons and safety measure) সংক্রমণ বেশি দেখা দিচ্ছে। তবে চিকিৎসকমহলের অনেকেই এক্ষেত্রে স্টেরয়েড কমানোর বা বন্ধ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। আসলে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের শরীরে স্টেরয়েড প্রয়োগ করার ফলে তাঁদের রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিচ্ছে যা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে শরীরে বাসা বাঁধার কাজে সাহায্য করছে। আর ঠিক সেই কারনেই, যখনই রোগীরা একটু সুস্থ হয়ে উঠছেন, তখনই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। চিকিৎসকদের মতে, যাঁদের শরীরে শর্করা বেশি, অর্থাৎ যারা ডায়েবেটিসে আক্রান্ত, তাঁদের মধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। খুব তাড়তাড়ি যদি চিকিৎসা না শুরু হয়, সেক্ষেত্রে রোগীর কিডনিতে এই ফাঙ্গাস ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগে না এবং একবার তা হলে, চিকিৎসা চালানো খুবই কঠিন।

কিছু জরুরী বিষয়

ক) ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ছোঁয়াচে নয়, অর্থাৎ এক জনের থেকে অন্য জনের মধ্যে এটি সংক্রমণ ছড়ায় না।

খ) যারা সম্পূর্ণভাবে সুস্থ এবং যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি, তাঁদের এই ফাঙ্গাস থেকে ভয়ের তেমন কোনও কারন নেই।

গ) অ্যান্টি-ফাঙ্গাল কোনও ওষুধ প্রয়োজন নেই।

ঘ) এটি কোনও নতুন ফাঙ্গাস নয়, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস (all you need to know about black fungus reasons and safety measure) আগেও ছিল, তবে এখন হঠাৎ এর প্রকোপ বেড়েছে।

https://bangla.popxo.com/article/how-to-check-oxygen-level-at-home-with-pulse-oximeter-in-bengali-951123

POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!      

বাড়িতে থেকেই অনায়াসে নতুন নতুন বিষয় শিখে ফেলুন। শেখার জন্য জয়েন করুন #POPxoLive, যেখানে আপনি সরাসরি আমাদের অনেক ট্যালেন্ডেট হোস্টের থেকে নতুন নতুন বিষয় চট করে শিখে ফেলতে পারবেন। POPxo App আজই ডাউনলোড করুন আর জীবনকে আরও একটু পপ আপ করে ফেলুন!

Read More From ওয়েলনেস