লাইফস্টাইল

সাইবার সিকনেস – সারা বিশ্ব ভুগছে এই অতিমারিতে!

Debapriya Bhattacharyya  |  Aug 27, 2021
সাইবার সিকনেস – সারা বিশ্ব ভুগছে এই অতিমারিতে!

আজকাল আমরা কম্পিউটারের উপরে কতটা নির্ভরশীল বলুন তো? যারা অফিসে কাজ করেন বা ব্যবসা করেন, তাঁরা তো সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ডেস্কটপ বা ল্যাপটপের মনিটরে চোখ সাঁটিয়ে বসে আছেন। এখন শিশুরাও বাদ যাচ্ছে না। দিনের অনেক্ষন সময় যাচ্ছে অনলাইন ক্লাস করতে। বাকি সময়টা আবার অনেকে মোবাইল স্ক্রল করে। বাদ পড়েন না বাড়ির বয়স্করাও। সারাদিনই দেখবেন মোবাইল নিয়ে খুটখুট করেন। হয় ফেসবুক করছেন নয়ত হোয়াটসঅ্যাপে বন্ধু-আত্মীয়দের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেন। (all you need to know about cyber sickness)

সব সময়েই মোবাইল স্ক্রল করে চলেছি

বুঝতেই পারছেন, আমরা কতটা নির্ভরশীল এই ইন্টারনেট, কম্পিউটার ও মোবাইলের উপরে। এক কথায় বলতে গেলে সাইবার দুনিয়া আমাদের উপরে এক প্রকার কবজা করেই ফেলেছে। আচ্ছা, কখনও এমন হয়েছে যে মোবাইল বা ল্যাপটপের স্ক্রিন স্ক্রল করতে করতে হঠাৎ করে মাথা ঘুরে গেল! বা বমি বমি ভাব হচ্ছে যখনই আপনি ল্যাপটপ বা মোবাইল ঘাঁটছেন! যদি এমন কিছু হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে আজই সাবধান হয়ে যান। কারণ হতে পারে আপনি সাইবার সিকনেসে আক্রান্ত। (all you need to know about cyber sickness)

সাইবার সিকনেস কী?

যখন আপনি কম্পিউটার বা মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকান, কখনও কখনও কি এমন হয় যে মাথাটা একটু ঘুরে গেল! বা হঠাৎ চোখের সামনে এক-দুই সেকেন্ডের জন্য অন্ধকার হয়ে গেল! অথবা স্ক্রিনের দিকে তাকালেই বমি বমি ভাব! এগুলোর কোনওটাও যদি হয়, তাহলে বুঝবেন, আপনি সাইবার সিকনেসে আক্রান্ত।

আসলে অনেক্ষন এক ভাবে মোবাইল বা কম্পিউটারের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমাদের ব্রেনের কাছে ক্লান্তির সিগনাল পৌঁছয়। স্ক্রিনের নীলচে আলো আমাদের চোখের নার্ভকে পীড়া দেয়। কিন্তু অভ্যেসবশতই হোক বা কাজের চাপে – আমরা সেই সিগনাল অবহেলা করি। দীর্ঘদিন এটা করতে করতে সাইবার সিকনেসে আক্রান্ত হই।

অনেক সময়েই বেশিক্ষন স্ক্রিন স্ক্রল করলে বা এক সঙ্গে অনেকগুলো স্ক্রিনে কাজ করলে বা ভার্চুয়াল মিটিং চলাকালীন এই সমস্যা প্রকট হয়ে ওঠে। (all you need to know about cyber sickness)

কীভাবে বুঝবেন আপনি সাইবার সিকনেসে ভুগছেন

একটানা কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে থাকতে কষ্ট হয়?

এতটা পড়ার পর আপনি ভাবতেই পারেন যে সাইবার সিকনেস না হয়ে এটা তো চোখের কোনও সামান্য সমস্যাও হতে পারে। যদি আপনি সেটাই ভেবে থাকেন, তাহলে বলতে বাধ্য হচ্ছি, আপনি ভুল ভাবছেন। কারণ চোখের পাওয়ার বেড়ে যাওয়া বা মোশন সিকনেস ও সাইবার সিকনেস কিন্তু এক ব্যাপার নয়। কিছু কিছু উপসর্গ দেখে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি আদৌ সাইবার সিকনেসে ভুগছেন কিনা –

১। বমি ভাব – সাইবার সিকনেসে আক্রান্ত হওয়ার প্রথম লক্ষণ এটি। বিশেষ করে যদি সব সময়েই আপনার মনে হয় পেট ভার হয়ে আছে বা কোনও বিশেষ গন্ধে আপনার বমি পাচ্ছে (পাওয়া উচিত নয় যদিও) সেক্ষেত্রে বুঝতে হবে আপনার মোবাইল বা কম্পিউটার স্ক্রিন থেকে সমস্যা হচ্ছে। খেয়াল করে দেখুন তো, আপনি কি একটানা এক জায়গায় বসে অনেকক্ষণ কাজ করেন? (all you need to know about cyber sickness)

২। চোখে ব্যথা – সারাদিন ইলেকট্রনিক যন্ত্রের দিকে তাকিয়ে বসে থাকলে চোখের উপরে চাপ পড়বেই। তবে সাইবার সিকনেসের ক্ষেত্রে চোখে ব্যথার সঙ্গে সঙ্গে ড্রাই আইজ বা দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়ার মত সমস্যাও দেখা দেয়; এবং মাঝে মাঝেই।

৩। মাথা ঘোরা – মাঝে মাঝেই কি কাজ করতে করতে মনে হয়, ঘরের সব জিনিসপত্র একটু দুলে উঠল বা নড়ে গেল? অথবা অনেক্ষন কাজ করার পর চোখ বন্ধ করলে কি আলোর ফুল্কি দেখতে পান? এমন হলে প্লিজ অবহেলা করবেন না

সাইবার সিকনেসের কারণ কী?

সাইবার সিকনেসের কারণ হল একটানা অনেক্ষন মোবাইল বা ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে থাকা। না মশাই, এতটাও সহজ নয় ব্যাপারটা। এক্ষেত্রে আমাদের ব্রেন এবং দেহের বিপরীত আচরণ দায়ী। বুঝলেন না তাই তো?

আপনি যখন বসে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপে কাজ করছেন অথবা শুয়ে শুয়ে মোবাইল ঘাঁটছেন, তখন আপনার চোখের সামনে স্ক্রিনে নানা অ্যাক্টিভিটি চলছে। এই অ্যাক্টিভিটিগুলো গতিশীল। সে আপনি স্ক্রলই করুন বা গেম খেলুন বা কোনও মিটিং অ্যাটেন্ড করুন। সেক্ষেত্রে আপনার চোখ ব্রেনকে গতিশীলতার সিগনাল পাঠাচ্ছে। (all you need to know about cyber sickness)

অন্য দিকে, ভেবে দেখুন আপনার শরীর কিন্তু নড়ছে না। সেটি স্থির। ফলে, একই সঙ্গে আপনার ব্রেনের কাছে দুটি সম্পূর্ণ বিপরীত সিগনাল পৌচ্ছে যাচ্ছে আর আপনার ব্রেন কনফিউসড হয়ে যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে আপনার মাথা, ঘাড় ও পেটে। ফলে আপনি আক্রান্ত হচ্ছেন সাইবার সিকনেসে!

কোনও চিকিৎসা আছে?

একটু ব্রেক নিন, গাছের সঙ্গে সময় কাটান

সাইবার সিকনেস দূর করার চিকিৎসা আপনাকে নিজেকেই করতে হবে –

মনিটর বা স্ক্রিনের সামনে বেশিক্ষণ থাকা যাবে না। কাজ করার ও মোবাইল ঘাঁটার সময় বেঁধে নিন

যদি আপনাকে অনেক্ষন কাজ করতে হয়, সেক্ষেত্রে প্রতি আধ ঘন্টা অন্তর ব্রেক নিন। একটু হেঁটে নিন। পারলে একটু স্ট্রচিং করুন। এতে শরীরও গতিশীল হবে।

প্রতি আধ ঘন্টা বা পঁয়তাল্লিশ মিনিট অন্তর ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে নিন। সেরকম হলে জানালা দিয়ে গাছপালা দেখুন। বা চোখ বন্ধ রাখুন পাঁচ-দশ মিনিটের জন্য।

এক সঙ্গে এক গাদা ট্যাব খুলে রাখবেন না (all you need to know about cyber sickness)

অনলাইনে বই পড়ার অভ্যেস ত্যাগ করে প্রিন্ট করা বই পড়ুন।

শুয়ে শুয়ে ফোন ঘাঁটবেন না। বা কম্পিউটরে কাজ করবেন না

আপনি যে ঘরে বসে কাজ করেন, সেই ঘরে যেন আলো বাতাস ভাল আসে – খেয়াল রাখবেন।

যখন অনেক্ষন ল্যাপটপের সামনে থাকতে হবে, তার আগে পেট ভরে খাবার খাবেন না

গাড়িতে চলাকালীন বা হাঁটতে হাঁটতে মোবাইলের দিকে চোখ রাখবেন না

মাঝে মাঝে চোখের উপরে ঠান্ডা টি-ব্যাগ বা চামচ রাখতে পারেন। এতে চোখ আরাম পাবে।

প্রয়োজনে ডাক্তারের সাহায্য নিতে ভুলবেন না (all you need to know about cyber sickness)

POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!      

বাড়িতে থেকেই অনায়াসে নতুন নতুন বিষয় শিখে ফেলুন। শেখার জন্য জয়েন করুন #POPxoLive, যেখানে আপনি সরাসরি আমাদের অনেক ট্যালেন্ডেট হোস্টের থেকে নতুন নতুন বিষয় চট করে শিখে ফেলতে পারবেন। POPxo App আজই ডাউনলোড করুন আর জীবনকে আরও একটু পপ আপ করে ফেলুন!

Read More From লাইফস্টাইল