যেমনটা আশা করা হয়েছিল, ব্যাপারটা ঠিক তেমনই হয়েছে! নুসরত জাহান (Nusrat Jahan) এবং নিখিল জৈন (Nikhil Jain) এই মুহূর্তে বোধ হয় সারা বাংলায় দিদির চেয়েও বড় সেলেব্রিটি! তিনি যা বলেন, সেটাই খবর, যা করেন, সেটাই ফলো করে সকলে! নুসরত এখন ট্রেন্ডসেটার, শুধু বাংলারই নয়, সারা ভারতের। তাঁকে নিয়ে ওয়াক দ্য টক করে ন্যাশনাল টেলিভিশন চ্যানেল, তিনি রথের দড়ি টানলেও লোকে হামলে পড়ে, বরের জন্য ডাল রাঁধলেও লোকে বলে, দেখেছ, সংসারও করছে কিন্তু! মোট কথা, সেই যে, আমি বিয়ে করতে চললুম বলে পুরো বলিউডি কায়দায় তিনি মি়ডিয়াকে এয়ারপোর্টে ডেকে, ক্যামেরার সামনে হাত-টাত নেড়ে তুরস্কে পাড়ি দিলেন, ব্যস, এক ধাক্কায় সক্কলে কাত! তারপর থেকে মিডিয়া ছিনে জোঁকের মতো রেডি হয়ে আছে। নুসরত কখন কী করবেন, আর আমরাও ব্রেকিং নিউজ দেব বলে! অবস্থা যা দাঁড়াচ্ছে, তাতে #thenjaffair যদি আর কদিন বাদে #visrshka কিংবা #deepvir-কেও ছাপিয়ে যায়, আমরা একটুও অবাক হব না।
এহেন নুসরত জাহান রুহি জৈনের কাল রিসেপশন (reception) ছিল। বিয়েটা বেশ কিছুদিন আগে হয়ে গেলেও, নুসরত ইচ্ছে করেই রিসেপশন একটু পরে রেখেছিলেন, যাতে দেশে ফিরে সংসদে শপথ-টপথ নিয়ে তারপর জমিয়ে পার্টি দিতে পারেন! অবশ্য তার মাঝে যে গঙ্গা-যমুনা দিয়ে অ্যাত্ত জল বয়ে যাবে, তা বোধ হয় তিনি নিজেও আন্দাজ করতে পারেননি। তাঁর হিন্দু সাজে বিয়ে, মুসলমান হয়েও হিন্দু পদবি গ্রহণ, সবকিছু তাঁকে একধাক্কায় আঞ্চলিক থেকে জাতীয় করে দিয়েছে। ফলে গতকাল রাতে কলকাতার আইটিসি রয়্যাল বেঙ্গলে তাঁর রিসেপশনেও হাজির ছিল স্থানীয়-জাতীয় নানা মিডিয়া। তাঁদের সামনে বেশ বক্তব্য-টক্তব্যও রেখেছেন তিনি। এমনকী, সতীর পুণ্যে পতির পুণ্য হয়েছে! নিখিলও রাতারাতি সেলেব্রিটি বনে গিয়েছেন! ক্যামেরার সামনে বেশ সপ্রতিভ লাগছিল তাঁকেও। হাল যা হয়েছে, তাতে এবার পুজোতে নিখিলের শাড়ির দোকান রঙ্গোলি সুপারহিট। তামাম বাঙালি ওই দোকানের শাড়ি কিনতে লাইন দিল বলে! সে যাই হোক, আমরা বরং দেখে নিই তাঁদের চোখধাঁধানো রিসেপশনের কিছু ছবি ও ভিডিয়ো…
বলেছিলাম না, স্ত্রীয়ের পাল্লায় পড়ে নিখিলও বেশ সপ্রতিভ হয়ে গিয়েছেন! কী সুন্দর কথা বললেন দেখুন। আর নায়িকার জেল্লা দেখেছেন! বোঝাই যাচ্ছে, নিখিল বউয়ের আঁচলবাঁধা হয়েই থাকবেন!
মিস্টার অ্যান্ড মিসেস জৈনের ফোটোশুট, রিসেপশনে উপস্থিত মিডিয়ার জন্য! সত্যি কথা বলতে গেলে, এত খুঁটিয়ে, পাক্কা বলিউডি কায়দায় আগে কোনও বাঙালি সেলেব্রিটি বিয়েও করেননি আর এক পিকচার পারফেক্ট ছবিও দেননি। বিরাট-অনুষ্কা যেমন একটি ক্লোদিং ব্র্যান্ডকে বিখ্যাত করে দিয়েছেন জোড়া ছবি তুলে, নিখিলও কিন্তু নিজের ব্যান্ড নিয়ে সেরকমটা করতে পারেন! কথা দিচ্ছি, হেব্বি হিট হবে!
বান্ধবীর বিয়ে কী করে এনজয় করতে হয়, তা লোকে দেখুক মিমি চক্রবর্তীকে দেখে! নিন্দুকে বলে, নায়িকা-নায়িকা নাকি বন্ধু হয় না। তাঁরা নাকি পরস্পরের ক্ষতি করতেই ব্যস্ত থাকেন! কিন্তু মিমি-নুসরতকে দেখে একটিবারও তা মনে হয়নি। বান্ধবীর জন্য মিমি শুটিং মুলতুবি রেখে, জরুরি কাজ বাকি রেখে উড়ে গিয়েছেন তুরস্কে। বান্ধবীর বিয়েতে নিজে লাইমলাইট কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেননি! বরং পাশে থেকেছেন প্রকৃত বন্ধুর মতোই। এরকমটাই তো হওয়া উচিত, তাই না?
ভিডিয়ো তো হল, এবার চলুন চোখ ফেরানো যাক তাঁদের রিসেপশনের ছবির দিকে…
শুরুটা এঁকে দিয়ে না করলেই নয়! কাল রাতে প্রথম হাই প্রোফাইল গেস্টই ছিলেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! সকলে এসে হইচই করার আগেই নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করে যান তিনি। মিডিয়ার অনুরোধে হাসিমুখে ছবিও তোলেন! ফোটো অপেও পাশে ছিলেন তাঁরই দলের আর এক সেলেব্রিটি সাংসদ মিমিও।
বলেছিলাম না, পাক্কা বলিউডি কায়দা! যেভাবে দীপ-বীর, বিরাট-অনুষ্কা, বিপাশা-করণ ছবি তোলানোর জন্য আলাদা জায়গা বরাদ্দ রেখেছিলেন, এঁরাও ঠিক সেটাই করেছিলেন! ফলে স্টেজের উপর বর-বউ দাঁড়িয়ে আছেন এবং সামনে একগাদা লোকের মাথা, এরকম সনাতনী টলিউডি ফোটো অপ একেবারেই ছিল না সেখানে!
কী পরেছিলেন নিখিল ও নুসরত? দুজনেই কালার কোঅর্ডিনেটেড পোশাক পরেছিলেন। নিখিল সেজেছিলেন ওয়াইন রংয়ের বন্ধগলাতে ও নুসরতের পরনে ছিল সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের ডিজাইন করা সেই একই রংয়ের ভেলভেটের জমকালো লেহঙ্গা। সঙ্গে কুন্দন, হিরে ও পোলকির মানানসই গয়না।
পার্টিতে উপস্থিত বাকি টলিউডি তারকারাও কিছু কম যাননি। প্রত্যেকেই সেজেছিলেন জমকালো সাজে, রাতের সঙ্গে মানানসই করে। দেখে নিন, তারই কিছু ছবি।
বেস্ট ফ্রেন্ড মিমি (ইনস্টাগ্রাম)
স্বামী রোশন মন্টির সঙ্গে এসেছিলেন শ্রাবন্তীও (ইনস্টাগ্রাম)
নায়িকাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চোখ ধাঁধিয়েছিলেন নায়কেরাও। ছিলেন প্রসেনজিৎ, জিৎ, আবির চট্টোপাধ্যায়। দেখে নিন, তাঁদের এক ঝলক…
ছেলে তৃষাণজিৎকে নিয়ে প্রসেনজিৎ
ভাই এবং ভাগ্নেকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন নুসরতের প্রথম নায়ক জিৎ। নুসরতকে জড়িয়ে ধরে শুভেচ্ছাও জানান তিনি।
আবির চট্টোপাধ্যায় (ইনস্টাগ্রাম)
এবার পালা ইন্ডাস্ট্রির বাইরের বন্ধুবান্ধবদের! সেই লিস্টও ছিল বেজায় লম্বা। রইল তাঁদের সঙ্গে নবদম্পতির কিছু ছবি…
নুসরতের পুরো টিম (ইনস্টাগ্রাম)
এত বড় যজ্ঞি সামলানো তো আর চাট্টিখানি কথা নয়! তাই দলে ছিল অনেক লোকই! ডিজাইনার, স্টাইলিস্ট, মেকআপ আর্টিস্ট, ফোটোগ্রাফার, পাবলিক রিলেশন অফিসার, ওয়েডিং প্ল্যানার…গ্রুপ ফোটো হল জমজমাট!
বিয়ের সাজগোজ তো হল, কিন্তু মেনুতে কী ছিল সেটা জানতে হবে তো! নুসরতের শ্বশুরবাড়ির অনেকেই নিরামিষাশী। তাই বুফের ভেজ মেনুর দিকে কড়া নজর রেখেছিলেন নায়িকা। যাঁরা তাঁকে চেনেন, তাঁরা জানেন যে, নুসরত নিজে ভীষণ খেতে ও খাওয়াতে ভালবাসেন! তাই রিসেপশনের মেনু তৈরির ভার নিখিল স্ত্রীয়ের হাতেই ছেড়ে দিয়েছিলেন। নায়িকা ইলিশ, চিংড়ি ও ভেটকি খেতে খুব ভালবাসেন, তাই এই তিনটি মাছের তৈরি পদ জায়গা পেয়েছিল মেনুতে। তা ছাড়াও ছিল তাঁর প্রিয় বিরিয়ানি। মিষ্টিও নুসরতের খুব পছন্দের। বসিরহাট থেকে বিশেষ মাখা সন্দেশ এসেছিল তাঁর বিয়েতে, উপহার হিসেবে। তাতে নায়িকা যোগ করিয়েছেন আমের ফ্লেভার! মেনু মূলত ভাগ করা হয়েছিল বাঙালি, ইতালিয়ান ও মোগলাই কুইজিনে।
আর শেষে রইল এক্কেবারে exclusive দুটি ছবি, আমাদের তরফ থেকে…
মূল ছবি সৌজন্য: ইনস্টাগ্রাম
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!
Read More From বিবাহ
চশমা পরা হবু কনেরা কিভাবে সাজবেন জেনে নিন
SRIJA GUPTA