পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম অর্থাৎ PCOS এখন মহিলাদের কাছে খুবই পরিচিত একটি শব্দ। খাবারে অতিরিক্ত রাসায়নিকের প্রয়োগ, অনিয়মিত জীবনযাপন, স্ট্রেস, হরমোনাল ইমব্যালান্স, শরীরচর্চা না করা এবং আরও নানা কারণে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, বেশিরভাগ মহিলাই প্রথমদিকে এই সমস্যাকে অতটা গুরুত্ব দেন না এবং ফলে পরে গিয়ে এটি বড় আকার ধারণ করে। PCOS-এর সমস্যা সমাধানের জন্য নিয়মিত ওষুধ খাওয়াটা (Polycystic Ovary Treatment In Bengali) যেমন দরকার, ঠিক তেমনই একটা নির্দিষ্ট ডায়েট মেনে চলাও কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। PCOS থাকলে অন্য শারীরিক সমস্যার সঙ্গে-সঙ্গে প্রেগনেন্সির ক্ষেত্রেও অনেক রকম সমস্যা হতে পারে। এমনকী, সন্তান ধারণের ক্ষেত্রেও সমস্যা হতে পারে। তবে ওই যে বললাম, বেশিরভাগ মহিলাই ব্যাপারটিকে প্রথমে গুরুত্ব দেন না…এমনকী, শুনলে অবাক হবেন যে, অনেকেই আছেন যাঁদের পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম ব্যাপারটা কি, সেই ধারণাটাই ঠিকমতো নেই! চলুন, আজ এই বিষয়েই বিশদে আলোচনা করা যাক।
Table of Contents
- পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম কি? (What Is PCOS In Bengali?)
- PCOS এর লক্ষণ কি? (PCOS Symptoms In Bengali)
- কেন হয় PCOS? এবং ধরা পড়লে কি করা উচিত? (PCOS Causes In Bengali)
- PCOS এর চিকিৎসা (PCOS Treatment In Bengali)
- ঘরোয়া পদ্ধতিতে কীভাবে PCOS দূর করবেন? (PCOS Home Remedies In Bengali)
- PCOS সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নোত্তর (FAQs)
কেন হয় PCOS এবং ধরা পড়লে কি করা উচিত?
ঘরোয়া পদ্ধতিতে কীভাবে PCOS দূর করবেন?
PCOS সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নোত্তর
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম কি? (What Is PCOS In Bengali?)
আপনি কি জানেন পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম কি? প্রথমবার ঋতুস্রাবের সঙ্গে-সঙ্গেই মেয়েরা সন্তানধারণের ক্ষমতা লাভ করেন। এই বয়সের পর যদি কোনও সময় মহিলাদের শরীরে হরমোনাল ইমব্যালান্স অর্থাৎ হরমোনের ভারসাম্যে তারতম্য দেখা দেয়, এবং তার ফলে যদি জরায়ুতে (OVARY) সিস্ট তৈরি হয়, তা হলে সেই অবস্থাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম’ (PCOS) বা ‘পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজঅর্ডার’ (PCOD)। এরকম পরিস্থিতিতে মহিলাদের শরীরে ‘ফিমেল হরমোন’-এর ঘাটতি দেখা দেয় (Polycystic Ovary Meaning In Bengali) এবং ‘মেল হরমোন’ বা অ্যান্ড্রোজেন বাড়তে থাকে । যখনই শরীরে অ্যান্ড্রোজেনের মাত্রা বেড়ে যায়, তার ফলস্বরূপ ওভারিতে একটি বা তার বেশি সিস্ট দেখা দিতে পারে।
PCOS এর লক্ষণ কি? (PCOS Symptoms In Bengali)
সব সময় যে PCOS এর লক্ষণ (PCOS Symptoms In Bengali) বাইরে থেকে দেখে বোঝা যায় তা নয়। আবার অনেকসময়ই এই সমস্যার লক্ষণগুলো প্রকট হয়ে ওঠে। যেমন –
- হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়া এবং উত্তরোত্তর বাড়তে থাকা
- অনিয়মিত ঋতুস্রাব
- শরীরের নানা অংশে, বিশেষ করে মুখে লোম গজানো
- ব্রণর বাড়াবাড়ি
- হঠাৎ করে ত্বক তেলতেলে হয়ে যাওয়া
- মাথার চুল খুব বেশি মাত্রায় ঝরতে শুরু করা
- পেলভিক পেন বা শরীরের নিম্নাঙ্গে মাঝে-মাঝেই যন্ত্রণা হওয়া
- ওভারিতে একের বেশি সিস্ট
- অকারণ মুড সুইং
এরকম কিছু-কিছু লক্ষণ দেখে বোঝা যেতে পারে যে, আপনি হয়তো পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমের সমস্যায় ভুগছেন।
কেন হয় PCOS? এবং ধরা পড়লে কি করা উচিত? (PCOS Causes In Bengali)
সত্যি কথা বলতে গেলে, বিজ্ঞানীরা আজ পর্যন্ত PCOS-এর কোনও সঠিক কারণ খুঁজে বের করতে পারেননি! তবে অনেক মনে করেন যে, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমের সমস্যা জেনেটিক হতে পারে, অর্থাৎ বংশগত কারণে এই সমস্যা আসতে পারে। এ ছাড়া, খাবারে নানা ক্ষতিকর রাসায়নিকের প্রয়োগ, আমাদের অনিয়মিত জীবনযাপন, অতিরিক্ত ওজন এবং স্ট্রেস থেকেও PCOS হতে পারে বলে মনে করা হয়।
উপরে লেখা একটা লক্ষণও যদি আপনি নিজের মধ্যে দেখতে পান, তা হলে দেরি না করে সঙ্গে-সঙ্গে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। এছাড়াও মনে করে থাইরয়েড টেস্ট করাবেন এবং ব্লাড সুগারও একবার পরীক্ষা করিয়ে নেবেন। PCOD বা PCOS থাকলে রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকটাই বেড়ে যায়। আর যখনই রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়, তখনই শরীরে মেল হরমোনের মাত্রাও বাড়তে শুরু করে।
PCOS এর চিকিৎসা (PCOS Treatment In Bengali)
পলিসিস্টিক ওভারি থেকে মুক্তির পদ্ধতি বলতে সাধারণত দু’ভাবে এই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করা হয়ে থাকে। যদিও PCOS কোনওদিনই পুরোপুরিভাবে নির্মূল হয় না, তবে নানা চিকিৎসার মাধ্যমে শরীরে হরমোনাল ব্যালান্স ঠিক রাখার চেষ্টা করে থাকেন চিকিৎসকরা। তা ছাড়া পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম এর চিকিৎসা করার আগে অনেকগুলো বিষয়ও মাথায় রাখতে হয়। যে মহিলা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমে আক্রান্ত, তিনি ভবিষ্যতে প্রেগন্যান্সি চান কিনা, চাইলেও কতদিনের মধ্যে চান, তাঁর বয়স কত – এরকম অনেক বিষয়ই (PCOS Treatment) মাথায় রাখতে হয়। আবার ওভারিতে সিস্টের সংখ্যা কত, শরীরে অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের মাত্রা কতটা বেশি, তার উপরেও এই রোগের চিকিৎসা (PCOS Treatment Bangla) পদ্ধতি নির্ভর করে। তা ছাড়া যিনি PCOS সমস্যার সমাধান করতে চিকিৎসা করাতে চাইছেন, তাঁর অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা আছে কিনা, বিশেষ করে তিনি ডায়াবেটিক কিনা বা তাঁর হার্টের অবস্থা কীরকম – এরকম অনেক দিক মাথায় রেখে তারপরই PCOS রোগীর চিকিৎসা শুরু করা হয়। সাধারণত, দু’ভাবে এই সমস্যার চিকিৎসা করা হয় –
১। খাবার ওষুধ (PCOS Medicine) –
বার্থ কন্ট্রোল পিল (Birth Control Pills) : এই ওষুধগুলোর সাহায্যে অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দূর করার চেষ্টা করা হয় এবং শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখা হয়।
ফার্টিলিটি পিল (Fertility Pills): অনেক মহিলাই PCOS-এ আক্রান্ত হন কিন্তু তাঁরা এই সমস্যা দূর করে মা হতেও চান, তাঁদের কিন্তু চিকিৎসা পদ্ধতি অন্যরকম হয়।
ডায়বেটিস পিল (Diabetes Pills): PCOS থাকলে অনেকসময় রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তা কমানোর জন্য ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
অনেকসময় প্রেগন্যান্সির পরেও অনেকের মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে PCOS –এর জন্য ওষুধ খাওয়ার সময় কিন্তু ব্রেস্ট ফিডিং না করানোর পরামর্শই অনেক চিকিৎসক দিয়ে থাকেন।
২। সার্জারি (PCOS Surgery) –
অনেক ক্ষেত্রে যখন ওষুধে কাজ হয় না, তখন সার্জারি করে সিস্ট বের করা (Polycystic Ovary Treatment In Bengali) ছাড়া আর অন্য কোনও পথ খোলা থাকে না। সার্জারিরও আছে রকমভেদ, যেমন –
সিস্ট অ্যাস্পিরেশন (Cyst Operation): এই পদ্ধতির সাহায্যে ওভারিয়ান সিস্টের FLUID বের করে দেওয়া হয় (সিস্ট দূর করার উপায়)।
ওফোরেক্টোমি (Oophorectomy): একটা অথবা দুটো ওভারিই (যে ওভারিতে সিস্ট আছে) সার্জারির মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেওয়া হয়।
হিস্টোরেক্টোমি (Hysterectomy): জরায়ুটির যে সিস্টে আক্রান্ত, সার্জারির মাধ্যমে সেটুকু অংশ বাদ দিয়ে দেওয়া হয় (পলিসিস্টিক ওভারি থেকে মুক্তির পদ্ধতি)।
ওভারিয়ান ড্রিলিং (Ovarian Drilling): সার্জারির মাধ্যমে ওভারিতে ছোট-ছোট গর্ত করে দেওয়া হয় যাতে আর অ্যান্ড্রোজেন তৈরি হতে না পারে।
(তথ্যসূত্র – মেডিক্যাল নিউজ টুডে)
ঘরোয়া পদ্ধতিতে কীভাবে PCOS দূর করবেন? (PCOS Home Remedies In Bengali)
ডায়েট, ঘরোয়া কিছু টোটকা এবং হেলদি লাইফস্টাইল – শুরুতেই সাবধান হলে, এভাবেও পলিসিস্টিক ওভারি ঘরোয়া চিকিৎসা সম্ভব।
ছবি সৌজন্যে – Fuzzyrescue
PCOS থাকলে কীরকম ডায়েট মেনে চলবেন (PCOS Diet Chart in Bengali)
আপনি ওষুধ খান কিংবা সার্জারি করান, PCOS কন্ট্রোল করতে গেলে কিন্তু নিজের ডায়েটের দিকেও নজর দিতে হবে। কি খাচ্ছেন, কতটা খাচ্ছেন, সেটা দেখা যেমন জরুরি, ঠিক সেরকমই পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম আটকাতে কী-কী খাবেন না, সেটা জানাও খুব জরুরি।
১। লো-কার্ব খাবার (Follow a Low-Carb Diet) –
আপনার যদি PCOS-এর সমস্যা থাকে, তা হলে লো-কার্ব খাবার অর্থাৎ যে খাবারে কার্বোহাইড্রেট কম, সেই ধরনের খাবার খান। এর ফলে আপনার শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়বে না, ফলে অযথা ওজনও বাড়বে না। ভাত, আলু, ময়দা, তরমুজ, কর্নফ্লেক্স ইত্যাদি না খাওয়াই ভাল (PCOS Diet Chart In Bengali)। তা হলে কী খাবেন সেটাই ভাবছেন তো? আপনার খাদ্যতালিকায় থাকতে পারে মাল্টিগ্রেন ব্রেড, সয়াবিনের দুধ, ওটস, আপেলের রস, আনারস, লো-ফ্যাট দই, মুয়েসলি, গাজর ইত্যদি।
২। দুগ্ধজাত খাবার বেশি নয় (No More Dairy Products) –
গোরুর দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার যদি প্রায় বাদ দিতে পারেন, তা হলে সবচেয়ে ভাল হয়। একান্তই যদি খেতে হয়, তা হলে যতটা সম্ভব কম খেলে ভাল। গোরুর দুধের বদলে নারকলের দুধ, আমন্ড দুধ, সয়াবিনের দুধ খেতে পারেন।
৩। প্রসেসড ফুড একদম নয় (Avoid Processed Food) –
PCOS অথবা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমে কিন্তু প্রসেসড ফুড যেমন হ্যাম, সসেজ, চিজ, যেকোনো ক্যানড খাবার একেবারেই চলবে না। এই খাবারগুলিতে চিনি, ফ্যাট, প্রেজারভেটিভ এবং অতিরিক্ত পরিমানে সোডিয়াম থাকে যা এমনিতেই শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর; আর PCOS থাকলে তো এই পদার্থগুলি সেই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
৪। মিষ্টি খাবেন না (Eat Less Sugar) –
চিনি না খেলেই ভাল। অনেকেই চিনি ছাড়া চা খেতে পারেন না। তাঁরা মধু দিয়ে গ্রিন টি খেতে পারেন। বাড়িতে কোনও মিষ্টি খাবার তৈরি করতে চাইলে চিনির বদলে গুড় দিয়ে করুন। এছাড়া মিষ্টি, আইসক্রিম, চকোলেট ও নরম (PCOS Diet Chart In Bengali) পানীয় যতটা পারেন এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।
ঘরোয়া টোটকা (PCOS Treatment at Home)
ওষুধ এবং ডায়েট যেমন ফলো করছেন করুন, তার সঙ্গে PCOS কন্ট্রোল (পলিসিস্টিক ওভারি ঘরোয়া চিকিৎসা) করার জন্য কিছু ঘরোয়া টোটকাও ফলো করতে পারেন।
১। দারচিনি (Cinnamon) –
এক গ্লাস গরম জলে এক চা চামচ দারচিনি গুঁড়ো ভাল করে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খান। এতে অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যা দূর হয় এবং পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমের সমস্যা কমে (Polycystic Ovary Treatment In Bengali)। যদি গরম জলে দারচিনি গুঁড়ো না খেতে পারেন, তা হলে চায়ে অথবা দইয়ে মিশিয়ে খান। এটা কিন্তু নিয়ম করে খেয়েই যেতে হবে।
২। তিসি / ফ্ল্যাক্সসিড (Flax Seed) –
অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের আধিক্য, মানে যে কারণে সাধারণত পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (Polycystic Ovary In Bengali) দেখা যায়, তিসি তা কম করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপ কমাতেও সাহায্য করে তিসি। দুই টেবিল চামচ (৩০ গ্রাম মতো) তিসি হামানদিস্তায় পিষে নিয়ে সকালে খালি পেটে জলে গুলে খেয়ে নিন, যতদিন না পর্যন্ত আপনি সুফল পাচ্ছেন (সিস্ট এর ঘরোয়া চিকিৎসা)। তিসি মোটেও সুস্বাদু নয় (PCOS Diet Chart In Bengali)। জলে গুলে খাওয়া সম্ভব না হলে ফলের রসের সঙ্গে তিসির গুঁড়ো মিশিয়েও খেতে পারেন। ততদিন খেতে হবে, যতদিন না সিস্টের সমস্যা দূর হচ্ছে।
৩। অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার (Apple Cider Vinegar) –
দু’ চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার এক গ্লাস জলে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে হয় খালি পেটে অথবা লাঞ্চ-ডিনারের আগে কয়েক মাস খান। অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এতে শরীরের বাড়তি মেদ ঝরে খুব তাড়াতাড়ি ওজনও কমে।
এই টোটকাগুলো যাচাই করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে একবার পরামর্শ করে নেবেন। কারণ, আপনার শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করছে যে আপনি এই ঘরোয়া টোটকাগুলো আদৌ ট্রাই করতে পারবেন নাকি পারবেন না।
হেলদি লাইফস্টাইল (Healthy Lifestyle for PCOS)
অনিয়মিত জীবনযাপন কিন্তু PCOS-এর একটা অন্যতম কারণ (Polycystic Ovary Syndrome In Bangla)। কাজেই যদি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান, তা হলে নীচের দেওয়া বিষয়গুলি মাথায় রাখুন।
১। এক্সারসাইজ (Regular Exercise) –
নিয়মিত এক্সারসাইজ করুন। জিমে গিয়ে এক্সারসাইজ না করতে পারলে ক্ষতি নেই, বাড়িতেই যোগব্যায়াম করুন। আর কিছু না হলে সকাল-বিকেল হাঁটুন।
২। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন (Manage Your Weight) –
ওজন যদি বাড়তে থাকে তা হলে কিন্তু সিস্ট হতে বাধ্য। কারণ, জরায়ুতে মেদ জমে-জমেই ঋতুস্রাব অনিয়মিত হয় এবং সিস্টের সমস্যা দেখা দেয়। কাজেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
৩। নিয়মিত চেক-আপ করান (Regular Health Checkup) –
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (Polycystic Ovary In Bengali) বা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজঅর্ডার কিন্তু কখনওই সম্পূর্ণভাবে নির্মূল হয় না। যতদিন নিজের শরীরের দিকে খেয়াল রাখবেন এবং নিয়মিত ওষুধ খাবেন, ততদিনই PCOS নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এই সমস্যা একবার কমে গেলেও কয়েকবছর পর আবার ফিরে আসতে পারে, একথাটা মাথায় রাখবেন। তাই নিয়মিত চেক-আপ করানো এক্ষেত্রে খুবই জরুরি।
PCOS সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নোত্তর (FAQs)
১। PCOS থাকলে কি প্রেগন্যান্সিতে সমস্যা আসতে পারে?
উত্তর: হ্যাঁ, PCOS থাকলে সন্তানধারণে সমস্যা হতে পারে। তবে এটাও সত্যি যে, সঠিক চিকিৎসার সাহায্যে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেয়ে অনেকেই মাতৃত্বের স্বাদ পেয়েছেন।
২। PCOS কি ওষুধ খেলে ঠিক হয়ে যায়?
উত্তর:আপনার সমস্যাটা কতটা গভীর তার উপরে এই প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করছে। যদি গোড়াতেই PCOS ধরা পড়ে, তা হলে নিয়মিত ওষুধ খেলে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
৩। PCOS এর চিকিৎসা না করালে কি হতে পারে?
উত্তর:দীর্ঘদিন ধরে এই রোগের চিকিৎসা না করালে (Polycystic Ovary Syndrome In Bangla) আস্তে-আস্তে তা এন্ডোমেট্রিয়াম ক্যান্সারের দিকেও গড়াতে পারে।
৪। মুখে লোম থাকাটা কি সবসময়েই PCOS-এরই লক্ষণ?
উত্তর: অনেক মহিলারই মুখে হালকা লোম থাকে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তাঁরা সকলেই পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমের শিকার। তবে হ্যাঁ, যদি মুখে অতিরিক্ত লোম দেখা যায় এবং পাশাপাশি তাঁর ওজনও বাড়তে থাকে, তা হলে কিন্তু তা PCOS এর লক্ষণ হতে পারে। সেক্ষেত্রে অতই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৫। আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে কি PCOS ধরা পড়ে?
উত্তর: হ্যাঁ। আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে স্পষ্টভাবেই ওভারিয়ান সিস্ট চোখে পড়ে।
তা হলে কি বুঝলেন? PCOS-এ ঘাবড়ে যাবেন না, কয়েকটা ছোট-ছোট পরিবর্তন আপনার জীবনে আনুন এবং এই সমস্যার সমাধান করুন।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!