বৈশাখ মাস পড়ে গেল মানে অফিশিয়ালি গরমকাল (summe) চলে এল। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে একইভাবে আমাদের জীবনযাত্রা, খাওয়াদাওয়া এবং ফ্যাশনেরও পরিবর্তন হয়। আমরা শীতকালে যেমন গরম পোশাক পরি তেমনই গরমকালে এমন পোশাক পরি যাতে গরমে হাঁসফাঁস না করতে হয়। বেশিরভাগ সময়েই আমরা গরমকালে সুতির পোশাক পরি কারণ এই ফ্যাব্রিকটি যথেষ্ট আরামদায়ক। কিন্তু গরমকাল এল মানেই ফ্যাশনে শুধুমাত্র সুতির পোশাক থাকবে তা তো হতে পারে না। আর সব জায়গায় সুতির পোশাক পরে যাওয়াও যায় না। সুতি বাদেও এমন অনেক ফ্যাব্রিক (fabrics) রয়েছে যা কিন্তু গরমকালে পরতে বেশ আরামদায়ক। সেগুলো কী কী চলুন জেনে নিই।
লিনেন
গরমে পরার জন্য লিনেনের শাড়ির বিকল্প নেই (ছবি – ইনস্টাগ্রামের সৌজন্যে)
গরমকালে পরার জন্য সুতির পরেই আদর্শ ফ্যাব্রিক হল লিনেন। লিনেনের শাড়ি থেকে শুরু করে কুর্তি, চুড়িদার, ড্রেস, প্যান্টস, শার্ট – মোটামুটি সবই পরা যায়। আর সত্যি কথা বলতে কী, লিনেনের পোশাকে বেশ একটা স্মার্ট লুকও আসে!
আমাদের পছন্দ – হালকা সবুজ ও রানির কম্বিনেশনের শাড়ি
খাদি
গরমে পরার জন্য খাদির চুড়িদারের বিকল্প নেই (ছবি – ইনস্টাগ্রামের সৌজন্যে)
গরমকালে (summer) পরার জন্য খাদির ফ্যাব্রিকও (fabrics) খুব ভাল একটি অপশন। অনেকেই ভাবেন যে খাদি মানেই অনুজ্জ্বল রঙের পোশাক। এই ধারণা কিন্তু সঠিক নয়। খাদির শাড়ি, কুর্তি, ব্লাউজ এমনকি পশ্চিমি পোশাক পরেও আপনি তাক লাগিয়ে দিতে পারেন!
আমাদের পছন্দ – খাদির তুঁতে ফুল হাতা লং কুর্তি
রেয়ন
গরমে পরার জন্য রেয়নের পোশাক বেশ আরামদায়ক (ছবি – ইনস্টাগ্রামের সৌজন্যে)
সিল্কের মতোই দেখতে কিন্তু অনেক বেশি আরামদায়ক এবং পকেটসই এই ফ্যাব্রিকটি বাজারে ছেয়ে গিয়েছে। সবচেয়ে ভাল ব্যাপার হল প্যাচপ্যাচে গরমেও এই ফ্যাব্রিকটি গায়ের সঙ্গে লেপ্টে থাকে না। সুতি, গাছের ছাল এবং অন্যান্য ন্যাচারাল ফ্যাব্রিকের মিশ্রণে তৈরি রেয়নের পোশাক গরমকালে পরতে পারেন।
আমাদের পছন্দ – লাল ও কালোর কম্বিনেশনের স্কার্ট ও টপ
লন ক্লথ
গরমে পরার জন্য লন ক্লথ ফ্যাব্রিকের বিকল্প নেই (ছবি – ইনস্টাগ্রামের সৌজন্যে)
সুতি ও লিনেনের মিশ্রণ হল লন ক্লথ। এটি খুবই হালকা একটি ফ্যাব্রিক যা গরমকালে পরার জন্য বেশ আরামদায়ক। একরঙা পোশাক বা নকশা করা শাড়ি, ড্রেস বা চুড়িদার ও কুর্তি পরতে পারেন লন ক্লথের।
আমাদের পছন্দ – কালো জমিতে নানা রঙের জ্যামিতিক নকশার কুর্তি
গরমকালে পোশাকের ফ্যাব্রিক বাছার সময়ে যে বিষয়গুলি অবশ্যই মাথায় রাখবেন
১। ভারী ফ্যাব্রিকের বদলে হালকা ফ্যাব্রিক বাছুন। জমকালো এমব্রোয়েডারি করা পোশাক গরমকালে পরবেন না। যদি কোনও অনুষ্ঠানে যেতে চান সেক্ষেত্রে চিকনকারি পরতে পারেন।
২। ন্যাচারাল ফাইবারের পোশাক গরমকালে পরলে তা বেশ আরামদায়ক হয়। উপরোক্ত প্রথম দুটি ফ্যাব্রিক অর্থাৎ লিনেন এবং খাদি দুটিই ন্যাচারাল ফ্যাব্রিক। এতে গায়ে র্যাশ বেরনোর আশঙ্কা অনেক কম থাকে।
৩। যে পোশাকটি পরছেন তা ব্রিদেবল কিনা সে ব্যাপারে নজর রাখুন। ব্রিদেবল অর্থাৎ পোশাকটি পরলে শরীরে হাওয়া লাগবে কিনা সে বিষয়টি মাথায় রেখেই পোশাক বাছুন। পোশাকের ফ্যাব্রিক যত ব্রিদেবল হবে, তত বেশি আরামদায়ক এবং ঘাম হবে কম।
৪। গরমকালে পোশাক বাছার সময়ে কিন্তু রঙের বিষয়টিও মাথায় রাখা উচিত। উজ্জ্বল রং পরুন কোনও ক্ষতি নেই, কিন্তু ক্যাটক্যাটে রং না পরাই ভাল। এমনিতেই গরমকালে চারদিকে ঝলসানো তাপমাত্রা থাকে, তার উপরে যদি ক্যাটক্যাটে কমলা বা গোলাপি বা সবুজ পরেন তাহলে তা চোখের পক্ষে বড়ই কষ্টদায়ক। এমন রং পরুন যা দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যায়।
এই মুহূর্তে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক ও লকডাউনের কারণে অনলাইন শপিং-এর ক্ষেত্রে শুধুমাত্র অত্যাবশ্যক পণ্যই ডেলিভারি করা হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গরমে ফ্যাশন করার জন্য এ’ধরনের পোশাক আপনারা অবশ্যই কিনতে পারেন।