নতুন-নতুন জায়গায় বেড়াতে যাওয়া এবং জমিয়ে খাওয়াদাওয়া করা – এই দুটো ব্যাপার বাঙালিদের কাছে খুব প্রিয়। টুকটাক ছুটি পেলেই হল, আমরা বেরিয়ে পড়ি। উইকএন্ড ট্যুর তো রয়েছেই, সঙ্গে লম্বা ছুটি থাকলে অনেক দুরেও বেড়াতে চলে যাই। অনেকেই আছেন যাঁরা সমুদ্র পছন্দ করেন, আবার অনেকে পছন্দ করেন পাহাড়। আর বাঙালির ঘরের কাছের পাহাড় মানেই, দার্জিলিং! আসলে দার্জিলিং যাওয়ার জন্য আপনাকে শিলিগুড়িতে নামতে হবে এবং সেখান থেকে গাড়ি করে তারপর আপনি পৌঁছবেন পাহাড়ে। শুধু দার্জিলিং নয় অবশ্য, শিলিগুড়ি থেকে সিকিমেও যাওয়া যায়। কিন্তু যদি আপনার হাতে দু’-একদিন সময় থাকে, তা হলে কিন্তু আপনি শিলিগুড়িতেও ঘুরতে পারেন। ছোট শহর বলে ভাববেন না যে এখানে দেখার বা করার মতো কিছু নেই! এক-দু’দিনের জন্য শিলিগুড়িতে (Siliguri) কী-কী করতে পারেন, তারই একটা ছোট্ট ট্রাভেল গাইড (Travel Guide) রইল আপনাদের জন্য।
Table of Contents
- শিলিগুড়ি জায়গাটা ঠিক কোথায়? (Siliguri Location)
- কীভাবে যাবেন? (How To Reach Siliguri By Train, Flight and Road)
- কোথায় থাকবেন? (Hotels In Siliguri)
- শিলিগুড়িতে দেখার মতো কী-কী আছে? (Places To Visit Around Siliguri)
- শিলিগুড়িতে থাকাকালীন কীভাবে আনন্দ করতে পারেন (Best Things To Do In Siliguri)
- শিলিগুড়িতে কেনাকাটা কোথায় করবেন? (Best Shopping Markets In Siliguri)
- একটু খাওয়াদাওয়া না করলে কি চলে? (Places To Eat In Siliguri)
- শিলিগুড়ি থেকে একটু দূরে কোথায় কোথায় যেতে পারেন? (Places To Visit Near Siliguri)
শিলিগুড়ি জায়গাটা ঠিক কোথায়? (Siliguri Location)
উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে যাওয়ার দরজা বলতে পারেন শিলিগুড়িকে। রাজ্যের অন্যান্য শহরের সঙ্গে এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের যোগাযোগস্থাপনের একমাত্র রাস্তা বলতে পারেন এই মহকুমা শহরটিকে।
কীভাবে যাবেন? (How To Reach Siliguri By Train, Flight and Road)
শিলিগুড়িতে যাওয়ার তিন রকম উপায় রয়েছে –
রেলপথে শিলিগুড়ি পৌঁছবেন কীভাবে: কলকাতা থেকে শিয়ালদহ বা হাওড়া স্টেশন থেকে নিউ জলপাইগুড়ি যাওয়ার জন্য অনেক ট্রেন রয়েছে। দার্জিলিং মেল, শতাব্দী এক্সপ্রেস, কাঞ্চনজঙ্ঘা, কাঞ্চনকন্যা এবং আরও নানা এক্সপ্রেস ট্রেনে চেপে আপনি আরামসে পৌঁছে যাবেন শিলিগুড়ি।
সড়কপথে শিলিগুড়ি পৌঁছবেন কীভাবে: কলকাতার সঙ্গে শিলিগুড়ির মেলবন্ধন স্থাপন করেছে জাতীয় সড়ক ১০, ১১০, ২৭ এবং ১২। কলকাতা থেকে প্রচুর বাস ছাড়ে শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে। যে-কোনও একটিতে চেপে বসুন। নানা ভলভো বাস সার্ভিসও রয়েছে। এসপ্ল্যানেড থেকে এই বাসগুলো ছাড়ে। এছাড়া আপনি চাইলে নিজের গাড়ি নিয়েও যেতে পারেন, যে কোনও সময় রাস্তা খুঁজে নেওয়ার জন্য গুগল ম্যাপ তো রয়েছেই!
বিমানপথে শিলিগুড়ি পৌঁছবেন কীভাবে: বাগডোগরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই বিমানবন্দর দেশের নানা জায়গার সঙ্গে যুক্ত। দেশের নানা শহর থেকে বিমান পরিষেবার মাধ্যমে শিলিগুড়িতে পৌঁছনো সম্ভব।
কোথায় থাকবেন? (Hotels In Siliguri)
শিলিগুড়িতে যেহেতু সারা বছর দেশ-বিদেশের অনেক মানুষের সমাগম হয়, কাজেই থাকার জায়গার কোনও অভাব এখানে নেই। এখানে বাজেট হোটেল থেকে শুরু করে স্টার ক্যাটাগরির রিসর্টও রয়েছে। বরসানা হোটেল, ভিরাম্মা হোটেল, সিনক্লেয়ার্স-এর মতো লাক্সারি হোটেলের পাশাপাশি মারিনা’জ মোটেল, মানিলা, অতিথি গেস্ট হাউজের মতো কম বাজেটের হোটেলও রয়েছে। আপনি আপনার পকেট অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন।
শিলিগুড়িতে দেখার মতো কী-কী আছে? (Places To Visit Around Siliguri)
কীভাবে শিলিগুড়ি পৌঁছবেন, কোথায় থাকবেন, সেসব তো না হয় জানলেন, কিন্তু শিলিগুড়িতে কী-কী দেখাবেন সেটাও তো জানতে হবে, তাই না?
১। ইসকন মন্দির (ISKCON Temple, Siliguri)
আপনি যদি শহরের শোরগোল থেকে একটু বিরতি চান, তা হলে ঘুরে আসতে পারেন ইসকন মন্দির থেকে। রাধাকৃষ্ণের এই মন্দিরে শুধু বিগ্রহ দর্শন নয়, আরতিও দেখার মতো। ঘণ্টাখানেক সময় হাতে নিয়ে যাবেন। এখানে কোনও প্রবেশ মুল্য নেই। সকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মন্দির খোলা থাকে আবার বিকেলে সাড়ে চারটে থেকে সন্ধে সাড়ে আটটা পর্যন্ত জনসাধারণের জন্য মন্দির খোলা থাকে। শিলিগুড়ির যে-কোনও জায়গা থেকে আপনি ট্যাক্সি ভাড়া করে ইসকন মন্দির ঘুরে আসতে পারেন।
২। শালুগারা মনাস্ট্রি (Salugara Monastery)
বাগডোগরা থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মনাস্ট্রি বা বৌদ্ধ স্তূপ। শান্তির আশ্রয় খুঁজতে যেতে পারেন এখানে। ১১০ ফুট উঁচু এই মনাস্ট্রি কালু রিনপোচে নামে একজন তিব্বতি লামা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। লোকমতে এই মনাস্ট্রির চারদিকে যে পাহাড় রয়েছে, তা নাকি এই বৌদ্ধ স্তূপকে রক্ষা করে! এখানে প্রবেশ করার জন্য কোনও প্রবেশমূল্য দরকার হয় না। শিলিগুড়ির যে-কোনও জায়গা থেকে আপনি ট্যাক্সি ভাড়া করে শালুগারা মনাস্ট্রি ঘুরে আসতে পারেন।
৩। সূর্য সেন পার্ক (Surya Sen Park)
আপনার সঙ্গে যদি ছোট বাচ্চা থাকে, তা হলে শিলিগুড়িতে থাকাকালীন ঘুরে আসতে পারেন সূর্য সেন পার্ক থেকে। এখানে প্রবেশমূল্য জনপ্রতি মাত্র পাঁচ টাকা। এখানে জিরানো ছাড়া আর তেমন কিছুই করার নেই, তবে মাঝে-মাঝে একটু বিশ্রাম নিতেও তো ইচ্ছে করে!
৪। নর্থ বেঙ্গল সায়েন্স সেন্টার (North Bengal Science Center)
হাতে বেশ কিছুটা সময় থাকলে ঘুরে আসুন নর্থ বেঙ্গল সায়েন্স সেন্টার থেকে। শিলিগুড়ির যে-কোনও জায়গা থেকে অটো পেয়ে যাবেন সায়েন্স সেন্টার যাওয়ার জন্য। শুধুমাত্র বড়দের জন্য নয়, বাচ্চাদের জন্যও অনেক মজাদার জিনিস রয়েছে এখানে।
তথ্যসূত্র – নর্থ বেঙ্গল সায়েন্স সেন্টারের ওয়েবসাইট
৫। সেবকেশ্বরী কালী মন্দির (Sevokeshwari Kali Mandir)
শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাওয়ার পথে পড়ে এই মন্দির। ইচ্ছে হলে একবার ঘুরে আসতে পারেন এবং পুজো দিয়ে আসতে পারেন।
শিলিগুড়িতে থাকাকালীন কীভাবে আনন্দ করতে পারেন (Best Things To Do In Siliguri)
ছোট একটা মহকুমা শহর বলে ভাববেন না যে এখানে দেখার মতো বা করার মতো কিছুই নেই! টয়ট্রেনে চেপে কু ঝিক ঝিক করে বেড়ানোর সঙ্গে চা বাগানে ভ্রমণ এবং আরও অনেক কিছুই আপনি করতে পারেন শিলিগুড়িতে থাকাকালীন…
১। টয় ট্রেনে জয় রাইড (Toy Train Ride)
শিলিগুড়ি বেড়াতে যাচ্ছেন আর টয় ট্রেনে চড়বেন না, তা কি কখনও হয়? শিলিগুড়ি জংশন থেকে টিকিট কেটে উঠে পড়ুন টয় ট্রেনে আর পাহাড়ি দৃশ্য দেখতে দেখতে পৌঁছে যান রংতঙ্গে। এখানে জঙ্গল সাফারিও করতে পারেন। না, আপনাকে কষ্ট করে টয় ট্রেন থেকে নামতে হবে না। সকালে সাড়ে ১০ টা নাগাদ শিলিগুড়ি থেকে ট্রেন ছাড়ে। শুকনা ফরেস্ট হয়ে রংতঙ্গে পৌঁছয় প্রায় ১২টা নাগাদ। সেখানে ২০ মিনিটের একটা হল্ট নিয়ে আবার ফিরে আসতে পারেন শিলিগুড়ি। ৩২ কিলোমিটারের এই যাত্রায় সময় লাগে প্রায় তিন ঘন্টা।
২। চা বাগান ট্যুর (Beautiful Tea Garden Tour)
শিলিগুড়ি যাচ্ছেন মানেই কিন্তু চা বাগানে একবার বেড়াতে যেতে হবেই! শিলিগুড়ির আশেপাশে অনেক চা-বাগান রয়েছে যারা চা বাগানে সারাদিনের ট্যুর করানোর ব্যবস্থা করেন। হ্যাপি ভ্যালি টি গার্ডেন, গুডরিক টি গার্ডেন ইত্যদি সব বিখ্যাত চা বাগান। কীভাবে চা গাছ থেকে চা পাতা তোলা হয়, কীভাবে ফ্যাক্টরিতে চা তৈরি হয় – সবই দেখতে পাবেন এই ট্যুরে। অনেক ট্র্যাভেল এজেন্ট রয়েছেন, যাঁরা এই ট্যুরগুলোর ব্যবস্থা করেন। অতুলনীয় স্বাদের চা, স্থানীয় মানুষদের রান্না করা লোকাল খাবার এবং নয়নাভিরাম দৃশ্য – আর কী চাই!
৩। মহানন্দা ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি (Experience Mahananda Wildlife Sanctuary)
জঙ্গলে ঘুরতে যেতে চাইলে আপনি মহানন্দা ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারিতে ঘুরে আসতে পারেন। সুদূর-বিস্তৃত এই স্যাংচুয়ারিতে আপনি নানা বন্য জন্তু দেখতে পাবেন, তার সঙ্গে নানা পাখিও দেখতে পাবেন। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার থেকে শুরু করে হরিণ, হাতি সবই দেখতে পাবেন। এখানে প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা; যদি আপনি গাইড নেন তা হলে তাঁর জন্য আপনাকে আরও ১৫০ টাকা দিতে হবে এবং প্রতি ক্যামেরায় ১০০ টাকা করে দিতে হবে। সোমবার যাবেন না, কারণ, ওদিন পার্ক বন্ধ থাকে। জুন মাসের ১৬ তারিখ থেকে সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখ পর্যন্ত স্যাংচুয়ারি বন্ধ থাকে। শিলিগুড়ির যে-কোনও জায়গা থেকে আপনি ট্যাক্সি ভাড়া করে স্যাংচুয়ারি ঘুরে আসতে পারেন।
তথ্যসূত্র – দার্জিলিং ট্যুরিজম
৪। ড্রিমল্যান্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্ক (Enjoy Dreamland Amusement Park)
পরিবারের সকলের সঙ্গে ভাল সময় কাটানোর জন্য ড্রিমল্যান্ড অ্যামিউজমেন্ট পার্কে একবার ঘুরে আসতে পারেন। নানা ধরনের রাইড রয়েছে এখানে যা শুধু বাচ্চাদেরই নয়, বড়দেরও আনন্দ দেবে। এছাড়া আপনি এখানে বোটিংও করতে পারেন।
৫। তিস্তায় রিভার র্যাফটিং (Teesta River Rafting)
যাঁরা একটু অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন, তাঁরা কিন্তু তিস্তায় রিভার র্যাফটিং করতে যেতে পারেন। শিলিগুড়ি থেকে ঘণ্টাদেড়েকের মধ্যে সড়কপথে পৌঁছে যাবেন তারখোলা, সেখান থেকে উত্তাল নদীর বুক চিরে র্যাফটে করে পৌঁছে যান কালিঝোড়া। সময় লাগবে ঘণ্টাতিনেক। তিস্তায় রিভার র্যাফটিং করার সময়ে কিছু বিষয় মাথায় রাখবেন, কোনওমতেই ইনস্ট্রাক্টরের অবাধ্য হবেন না, ভরা পেটে র্যাফটিং করবেন না। আপনি যদি সাঁতার না জানেন তা হলে সেটা আগেই বলে দেবেন।
শিলিগুড়িতে কেনাকাটা কোথায় করবেন? (Best Shopping Markets In Siliguri)
আমরা যেখানেই বেড়াতে যাই না কেন, কিছু না-কিছু কেনাকাটা তো করতেই হয়…
১। হংকং মার্কেট (Hong Kong Market)
শিলিগুড়ির হংকং মার্কেট বিশ্ববিখ্যাত! না আমি এতটুকুও বাড়িয়ে বলছি না। নেপাল এবং চিন থেকে যা জিনিস চোরাপথে ভারতে আসে, তা এখানেই বিক্রি হয় এবং সেটাও যথেষ্ট কম দামে! এখানে পাবেন না এমন জিনিস নেই, তবে হ্যাঁ, যখন কেনাকাটা করবেন, তখন দরদাম না করলে ঠকতে পারেন।
২। মহাবীরস্থান (Mahabirsthan Market)
শিলিগুড়ির একটি অন্যতম পুরনো মার্কেট হল মহাবীরস্থান। এই মার্কেটটি অবশ্য পোশাক এবং পর্দার জন্য বিখ্যাত। খুব সুন্দর-সুন্দর পর্দা, বিছানার চাদর এখানে পাওয়া যায়। এখানেও আপনাকে দরদাম করতেই হবে। মহাবীরস্থানে যখন কেনাকাটা করতে যাবেন, একটা কথা মাথায় রাখবেন, এখানে কিন্তু খুবই ভিড়, কাজেই নিজের ব্যাগ সামলে রাখবেন।
৩। শ্রী লাল মার্কেট (Seth Srilal Market)
একদম শহরের বুকে অবস্থিত এই মার্কেটটি রুপোর গয়নার জন্য বিখ্যাত। দারুণ-দারুণ ডিজাইনের সব রুপোর গয়না আপনি পেয়ে যাবেন এখানে। যদিও এখানে বেশিরভাগই পাইকারি মুল্যে বিক্রিবাটা হয়, তবে খুচরোও আপনি কিনতে পারেন।
৪। বিধান মার্কেট (Bidhan Market)
শাল, পোশাকআশাক, গয়না, ব্যাগ, জুতো, কার্পেট, পারফিউম – কী নেই বিধান মার্কেটে? আপনার পছন্দের সবই পাবেন এখানে। এছাড়াও দারুণ-দারুণ সব খাবারের দোকান রয়েছে বিধান মার্কেটে। কেনাকাটার সঙ্গে পেটপুজোও জমে যাবে!
৫। সিটি সেন্টার মল (City Centre Siliguri)
যাঁরা রাস্তায় ঘুরে-ঘুরে কেনাকাটা করতে একদম পছন্দ করেন না (জানি না তেমন মহিলা আছেন কিনা কেউ), তাঁরা ঢুঁ মারুন সিটি সেন্টার মলে। আর পাঁচটা মলের মতোই এখানে রয়েছে নানা ব্র্যান্ডেড দোকান, ফুড কোর্ট, সিনেমা দেখার জায়গা এবং আরও কত কী!
একটু খাওয়াদাওয়া না করলে কি চলে? (Places To Eat In Siliguri)
শিলিগুড়ি জংশন বলুন, বিমানবন্দরের আশেপাশে বলুন আর একদম শহরের বুকেই বলুন, খাওয়াদাওয়া করার জায়গার কিন্তু অভাব নেই! এই শহরে যেমন আপনি ফাইন ডাইনিং রেস্তোরাঁ পাবেন তেমনই পাবেন পাইস হোটেল। আপনি যদি স্থানীয় বাঙাল খাবার খেতে চান (শিলিগুড়িতে বেশিরভাগ মানুষ ওপার বাংলার, কাজেই বাঙাল রান্না এবং খাবারের চল আজও এখানে রয়েছে) তা হলে পাইস হোটেলে খেতে পারেন। ফ্যান্সি রেস্তরাঁর মতো না হলেও মোটামুটি পরিস্কার-পরিচ্ছন্নই হয়। পাইস হোটেলে খেতে যাওয়ার আগে কয়েকটা বিষয় একটু মাথায় রাখবেন,
- এখানে কোনও মেনু কার্ড আপনি পাবেন না, ভাত, ডাল, আলুভাজা, তরকারি – এগুলো আপনি ‘থালি’ হিসেবে পাবেন এবং বাকি যা খেতে চান, তা আলাদাভাবে আপনাকে অর্ডার দিতে হবে।
- পাইস হোটেলে টেবিল আপনাকে অন্য কারও সঙ্গে শেয়ার করতে হতে পারে।
শিলিগুড়ি থেকে একটু দূরে কোথায় কোথায় যেতে পারেন? (Places To Visit Near Siliguri)
শিলিগুড়ি শহর থেকে একটু বাইরে বেরলে কিন্তু বেশ ভাল ভাল জায়গা আছে বেড়াতে যাওয়ার জন্য। আপনার হাতে যদি দু’-একদিন বেশি সময় থাকে, তা হলে আপনি ঘুরে আসতে পারেন…
১। গরুমারা ন্যাশনাল পার্ক (Gorumara National Park)
প্রায় ৮০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে অবস্থিত গরুমারা ন্যাশনাল পার্ক জঙ্গল সাফারির জন্য বিখ্যাত। নানা ধরণের বন্য জন্তু দেখা যায় এখানে। নাম গরুমারা হলেও এই অভয়ারণ্য বিখ্যাত কিন্তু গন্ডারের জন্য। এছাড়াও এখানে গৌর, হাতি, ময়ূর এবং হরিণ দেখতে পাবেন আপনি। আগে থেকে বুকিং করে গেলে ভাল। বিশদে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন
২। জলদাপাড়া ন্যাশনাল পার্ক (Jaldapara National Park)
শিলিগুড়ি থেকে গাড়িতে ঘণ্টাতিনেক সময় লাগে জলদাপারা অভয়ারণ্যে পৌঁছতে। শুধুমাত্র রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, সম্বর হরিণ, গৌর অথবা কেউটে দেখার জন্য নয়, জলদাপাড়া অভয়ারণ্য এখানকার আদিবাসীদের জন্যও বিখ্যাত। টোটো উপজাতির একমাত্র বাসস্থান এখানে এবং এটি একটি নৃতাত্বিক পর্যটনস্থানও বটে।
৩। সিলেরি গাঁও (Sillery Gaon)
শিলিগুড়ি থেকে যদি পাহাড়ে বেড়াতে যেতে চান, কিন্তু দার্জিলিং বা গ্যাংটকের মতো কোথাও না গিয়ে নিরিবিলিতে যেতে চান তা হলে চলে যেতে পারেন সিলেরি গাঁও। কালিম্পং ছাড়িয়ে পেডং-এর রাস্তায় পড়ে এই ছোট্ট গ্রাম। অসম্ভব সুন্দর নৈসর্গিক দৃশ্য আপনার মন ভরাতে যথেষ্ট। এখানে মোটামুটি দশ-বারোটি হোমস্টে আছে যেখানে আপনি আন্তরিক আতিথেয়তা আশা করতে পারেন।
৪। মিরিক (Mirik)
শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাওয়ার পথে বা দার্জিলিং থেকে শিলিগুড়ি ফেরার পথে ঘুরে আসুন মিরিক। এখানে থাকার ব্যবস্থা আছে ঠিকই তবে যদি আপনি না থাকতে চান, তা হলেও বেশি কিছু মিস করবেন না। নৈসর্গিক দৃশ্যের সঙ্গে এখানে উপরি পাওনা ধুপি পাইনের বন ঘেরা মিরিক লেক এবং পশুপতি মার্কেট।
৫। পাঙ্খাবাড়ি (Pankhabari)
শিলিগুড়ি থেকে গাড়িতে মিনিটচল্লিশেক সময় লাগে পাঙ্খাবাড়ি যেতে। যদি জিজ্ঞেস করেন কী করবেন, সেখানে গিয়ে, আমরা বলব, সিমপ্লি রেস্ট নেবেন, চা বাগানের দারুণ সুস্বাদু দার্জিলিং চা খাবেন আর প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখবেন; মাঝে-মাঝে তো এরও দরকার পড়ে তাই না?
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!