Love

সম্পর্কে দূরত্ব নাকি দূরত্বের সম্পর্ক – লং-ডিস্টেন্স রিলেশনশিপে কি কি করা উচিত আর কি কি নয় জানুন (Dos and Donts For Long Distance Relationship In Bengali)

Debapriya Bhattacharyya  |  Dec 6, 2018
সম্পর্কে দূরত্ব নাকি দূরত্বের সম্পর্ক – লং-ডিস্টেন্স রিলেশনশিপে কি কি করা উচিত আর কি কি নয় জানুন (Dos and Donts For Long Distance Relationship In Bengali)

এণাক্ষী আর আকাশ ছোটবেলার বন্ধু. এক পাড়ায় থেকে একই স্কুলে পড়ে বড় হয়েছে ওরা. তাই ওদের মধ্যেকার সম্পর্কটাও (relationship) খুব গভীর. সময়ের সাথে সাথে ওদের বন্ধুত্বও প্রেমে পরিণতি পায়. সবই ঠিকঠাক চলছিল কিন্তু সমস্যা শুরু হলো যখন এণাক্ষী চাকরি পেয়ে চলে গেলো ব্যাঙ্গালোরে আর আকাশ পারি দিলো একেবারে দেশের বাইরে. তবুও প্রথম প্রথম সবই মোটামুটি ঠিক চলছিল, কিন্তু যত দিন গড়াতে থাকলো, ততই ওদের সম্পর্কের (relationship) বাঁধন কেমন যেন আলগা হতে আরম্ভ করলো. শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি এমন একটা জায়গায় এসে দাঁড়ালো যে ব্রেক-আপ (break-up) হয় হয়. কিন্তু এতদিনের বন্ধুত্ব, প্রেমে আর সিরিয়াস একটা সম্পর্ক এভাবে নষ্ট হতে দেওয়া যায় না. কিন্তু ওরা কিছুতেই বুঝতে পারছিলো না যে কেন সব কিছু হঠাৎ করে এতটা পাল্টে গেলো! দুজনেই ভৌগোলিক দূরত্বকে (physical distance) ওদের সমর্কের এই করুন পরিণতির জন্য দায়ী করছিলো. কিন্তু ওরা ভুলে গেছিলো যে লং-ডিস্টেন্স রিলেশনশিপেও (long distance relationship) সবসময় ব্রেক-আপ (break-up) করে নেওয়াটাই একমাত্র পথ নয়.

শুধু এণাক্ষী বা আকাশ নয়, এরকম সমস্যার মুখোমুখি অনেকেই হয়. অনেকের মতেই  লং-ডিস্টেন্স রিলেশনশিপে (long distance relationship) সমস্যা অনেক বেশি. আর লং-ডিস্টেন্স রিলেশনশিপ (long distance relationship) টেকানোও খুব একটা সহজ না, তাই ব্রেক-আপই (break-up) হলো একমাত্র রাস্তা! না, একেবারেই না! এটা ঠিক যে লং-ডিস্টেন্স রিলেশনশিপে (long distance relationship) ভৌগোলিক দূরত্ব (physical distance) থাকে কিন্তু তার মানে তো এটা নয় যে দু’জন মানুষের মনের দূরত্বও বাড়বে! লং-ডিস্টেন্স রিলেশনশিপে (long distance relationship) থাকাটা সহজ নয় কিন্তু কয়েকটা ব্যাপার মাথায় রাখলে আর একটু প্লানিং করে চললেই কিন্তু অনেক সমস্যার সমাধান করা যায়, এমনকি অনেক অবাঞ্ছিত সমস্যা তৈরীই হয় না. POPxo আজ এরকমই কয়েকটা টিপস শেয়ার করবে যাতে যারা লং-ডিস্টেন্স (long distance relationship) রিলেশনশিপে রয়েছে, তাদের এণাক্ষী আর আকাশের মতো অবস্থা না হয়!

১| লং-ডিস্টেন্স রিলেশনশিপে (long distance relationship) সারাক্ষন কথা বলা একটা অন্তরায়

বেশিরভাগ কাপল যে ভুলটা করে সেটা হলো তারা ভাবে যে যেহেতু ভৌগোলিক দূরত্বটা (physical distance) বেশি, তাই যতটা সম্ভব কথা বলা উচিত. দিনের মধ্যে মোটামুটি ১২-১৩ ঘন্টা কথা না বললেই নয়. কিন্তু এটা ভুলে যায় যে ওভার-পোসেসিভ (over possessive) হওয়াটা যে কোনো সম্পর্কের (relationship) ক্ষেত্রে একটা বড় অন্তরায়. অতিরিক্ত ভালোবাসাও কিন্তু একটা সময়ের পড়ে বোঝা বলে মনে হয় এবং সম্পর্কে (relationship) যখন স্পেস (space) থাকে না তখন দমবন্ধ হয়ে আসে. এর ফলে কিছুদিন পর সেই সম্পর্ক (relationship) থেকে মুক্তির প্রয়োজন বোধ হতে থাকে এবং তখন “লং-ডিসটেন্স রিলেশনশিপ’কেই (long distance relationship) সবাই দোষ দিতে আরম্ভ করে.

২| অতিরিক্ত প্রত্যাশা  (expectations) না রেখে একটু প্রাকটিক্যাল (practical) হওয়াটা জরুরি

আপনারা নিশ্চই কোনো একটা কারণের জন্য “লং-ডিসটেন্স রিলেশনশিপ’-এ (long distance relationship) রয়েছেন! সেটা চাকরি হতে পারে, পড়াশোনার জন্য হতে পারে আবার অন্য কোনো কারণও হতে পারে. কারণটা যাই হোক না কেন যখন যখন আপনি কোনো একটা সম্পর্কে (relationship) জড়িয়ে থাকেন তখন আপনার মনে আপনার সঙ্গীর প্রতি কিছু প্রত্যাশা (expectations) তৈরী হয়েই যায় এবং আপনার সঙ্গীরও আপনার থেকে কিছু প্রত্যাশা (expectations) থাকে. কিন্তু ভৌগোলিক দূরত্বের (physical distance) জন্য অনেক সময় অনেক প্রত্যাশা (expectations) আপনারা পূরণ করে উঠতে পারেন না. তখন তৈরী হয় কষ্ট (emotional pain), সেখান থেকে ক্ষোভ (anger) এবং তারপরে ভুল-বোঝাবুঝি (misunderstanding). এই সবগুলো নেগেটিভ ইমোশন (negative emotions) কিন্তু একটা সম্পর্ককে শেষ করার জন্য যথেষ্ট. তাই এমন কিছু প্রত্যাশা (expectations) তৈরী করবেন না কিংবা তৈরী হতেও দেবেন না যাতে পরে গিয়ে তার খেসারত আপনাদের দুজনকে দিতে হয়.

৩| লং-ডিস্টেন্স রিলেশনশিপকে (long distance relationship) একটা অনুকূল সময় এবং সুযোগ (opportunity) হিসেবে দেখুন

“যদি তোমরা একসাথে থাকতে চাও, তাহলে আগে একা একা বাঁচতে শেখো” – প্রাচীন প্রবাদ.

লং-ডিস্টেন্স রিলেশনশিপ-এ (long distance relationship) থাকাকালীন সময়টাকে নেগেটিভ (negative) ভাবে না ভেবে, এর পসিটিভ (positive) দিক গুলো দেখুন. আপনারা দু’জন আলাদা হয়ে যাচ্ছেন, কিংবা আগে যেরকম দেখা হতো এখন সেভাবে দেখা হয় না বা একসাথে অনেকদিন সময় কাটান না – এভাবে না ভেবে এই সময়টাকে একটা “লার্নিং জার্নি” (learning journey) হিসেবে দেখুন. নিজেকে সময় দিন, নিজেকে আরো ভালোভাবে খুঁজে দেখার চেষ্টা করুন.

৪| প্রতিদিন একে-অপরের খোঁজ নিন

জানি আপনি হয়তো বলবেন, এইমাত্র আমি সারাক্ষন কথা বলতে বারন করে আবার এখন কেন বলছি যে প্রতিদিন খোঁজ নিন একে-অন্যের! প্রতিদিন একবার করে কথা বলা কিংবা খোঁজ নেওয়া আর দিনের মধ্যে বেশিরভাগ সময়টাই একে অন্যের সাথে বকবক করার মধ্যে তো তফাৎ আছে, তাই না? আপনি যদি ঘুম থেকে উঠে একটা “গুড মর্নিং” (good morning) টেক্সট পান আপনার সঙ্গীর থেকে বলুন তো আপনার ভালো লাগবে না? ঠিক সেরকমই আপনার সঙ্গীও, যে না জানি কত হাজার মাইল দূরে আছে আপনার থেকে, সেও যদি দেখে যে আপনি তার ব্যাপারে চিন্তা করেন এবং তাকে কতটা ভালোবাসেনা, ভৌগোলিক দূরত্ব (physical distance) থাকা সত্বেও, তারও তো ভালো লাগবে তাই না? তা ছাড়া আপনাদের দু’জনেরই একে-অপরের জীবনে কি ঘটছে, সে সম্পর্কে একটা ধারণা থাকবে.

৫| মাঝেমাঝে “ডার্টি টক” (dirty talk) কিন্তু সম্পর্কে উদ্দীপনা (spice up) বাড়িয়ে দেয়

যৌন উত্তেজনা (sexual intensity) নিঃসন্দেহে দম্পতিদের মধ্যে সবচেয়ে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার.   যৌন ইচ্ছা (sexual desire) এমন একটা বিষয়, যেটা কাপলদের একটা সম্পর্কে (relationship) বেঁধে রাখে এবং একে অন্যের থেকে দূরে যেতে দেয়না. কিন্তু লং-ডিস্টেন্স রিলেশনশিপে (long distance relationship) সেটা সম্ভব হয় না. তাই মাঝ মধ্যে একটু আধটু “ডার্টি টক” (dirty talk) আপনাদের সম্পর্কে নতুন উদ্দীপনা (spice up) নিয়ে আসতে সাহায্য করে. যদি আপনার কথা বলতে অসুবিধে হয়, তাহলে সেক্সী টেক্সটও পাঠাতে পারেন.

৬| একে অন্যের সাথে মাঝে মাঝে দেখা করুন

লং-ডিসটেন্স রিলেশনশিপে (long distance relationship) যেহেতু ভৌগোলিক দূরত্বটা (physical distance) অনেক বেশি থাকে, তাই সবসময় একে অন্যের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ হয়ে ওঠে না. কিন্তু মাঝে মধ্যে তো একে অন্যের সাথে দেখা করে যায়! নিজেদের সুবিধে মতো নিজেদের মধ্যে ঠিক করে নিন যে কবে কোথায় কে কার সাথে দেখা করতে যাবে বা আসবে. বছরে একবার আপনি আপনার সঙ্গীর ঠিকানায় পৌঁছে গেলেন আবার অন্য বার তিনি এলেন আপনার শহরে আপনার সাথে দেখা করতে. কিংবা, দুজনের সুবিধেমত কোনো একটা সময় ঠিক করে একসাথে কোথাও থেকে ঘুরেও আসতে পারেন.

৭| চিঠি লিখুন

মনে আছে, আগেকার দিনে মা-ঠাকুমারা সবাইকে চিঠি লিখতেন? নীল রঙের ইনল্যান্ড লেটারে কিংবা ঘিয়ে রঙের পোস্টকার্ডে! কিন্তু যুগের সাথে সাথে এখন প্রযুক্তিগত কারণে সেসব কাগজ হারিয়ে গেছে, এসেছে শর্ট মেসেজ সার্ভিস. কিন্তু চিঠিতে যে ব্যাপারটা ছিল এখন বৈদ্যুতিন বার্তায় সেই ব্যাপারটা নেই. কাজেই যদি লং-ডিস্টেন্স রিলেশিপে (long distance relationship) এক্স-ফ্যাক্টর (x-factor) আনতে চান আর উদ্দীপনা (spice up) বজায় রাখতে চান, তাহলে একে অন্যেকে চিঠি লিখুন, কিংবা পোস্টকার্ড পাঠান. জন্মদিনে কিংবা অন্য কোনো অকেশনে ফুল বা চকলেট বা অন্য কিছু উপহারও পাঠাতে পারেন. তবে যদি চান, কোনো উপলক্ষ্য ছাড়াও গিফট (gift) পাঠাতে পারেন, আপনার সঙ্গীর ভালোই লাগবে ব্যাপারটা.

 

POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!

Read More From Love