আপনি হয়তো এই কথাটা কোথাও না কোথাও শুনে থাকবেন। নাটক বা সিনেমাতে দেখেও থাকবেন। দুর্গা প্রতিমা (idol) গড়ার জন্য যে মাটি লাগে তার কিছুটা নিয়ে আসা হয় পতিতালয় (area) থেকে। সেই মাটি (soil) মিশিয়েই সেজে ওঠেন অসুরদলনী। যুগ যুগ ধরে এই প্রথা চলে আসছে। কিন্তু কেন এই প্রথার প্রচলন সেটা জানেন কি? যারা এই তথ্য এইমাত্র জানলেন তাঁরা হয়তো শিউরে উঠবেন এই কথা শুনে। সমাজে যারা অপাংক্তেয়, যারা ‘অশুচি’ আর ‘অপবিত্র’ বলে গণ্য, সেই অঞ্চলের মাটি নাকি দুর্গা পুজোয় লাগবে? কথাটা অদ্ভুত কিন্তু একদম সত্যি।
আমরা প্রায়ই এই কথা বলে থাকি যে জন্ম নেওয়ার পরই কোনও মেয়ে পতিতা হয় না। সমাজ তাঁকে এই অন্ধকারে ঠেলে দেয়। সমাজ মানে কে? আমি, আপনি আপনারা সবাই। তাই মা দুর্গা শুধু ত্রিশূলধারিণী অসুরদলনী নন। তাঁকে পুজো করা হয় নবকন্যা রূপে। এই নবকন্যা হলেন নর্তকী বা অভিনেত্রী, কাপালিকা, গোয়ালিনী, ধোপানী, নাপতেনি, ব্রাহ্মণী, শূদ্রাণী, মালিনী ও পতিতা। এই নবমকন্যা রূপে মায়ের আরাধনা করার সময় পতিতালয়ের মাটি লাগে। প্রচলিত ধারণা বলছে সমাজের সমস্ত পাপ, সমস্ত অনাচার আর কলুষতা পতিতারা নিজেদের শরীরে ধারণ করেন। এইভাবে তাঁরা সমাজকে নিষ্কলঙ্ক আর পরিষ্কার রাখেন। তাই মনে করা হয় এইখানকার মাটি সবচেয়ে শুদ্ধ ও পবিত্র বলে মনে করা হয়।
তবে সমাজতাত্ত্বিক এবং ঐতিহাসিকরা এই প্রথার নানারূপ ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁরা এই কথা মানতে নারাজ যে শুধু শরীরে সবার পাপ গ্রহণ করেন বলেই সেখানকার মাটি পবিত্র বিষয়টি শুধু তাই নয়। এই প্রথা জড়িয়ে আছে মাতৃতন্ত্রের বিজয়গাথার সঙ্গে। যে অসুরকে প্রচণ্ড শক্তিশালী দেবতারাও কাবু করতে পারছিলেন না তাঁকে বধ করে একজন নারী। যে বিশ্ব পুরুষের শক্তির কাছে পদানত, যে পুরুষ অহঙ্কারে মত্ত এই ভেবে যে তাঁদের ছাড়া পৃথিবী অচল, সেই পুরুষই পতিতালয়ে গিয়ে এক নারীর বশ হয়ে পড়েন। এই জায়গা তাঁদের অহঙ্কার ও পৌরুষ ত্যাগ করার জায়গা। তবে ঐতিহাসিকরা এই নিয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। তাঁরা বলেছেন এখন পতিতালয় বা বেশ্যালয় বলতে যা বোঝানো হয় প্রাচীনকালে তার ব্যপ্তি ছিল অন্ন। সংস্কৃতে বলা হচ্ছে “অভিষিক্তা ভবেৎ বেশ্যা ন বেশ্যা কুলটা প্রিয়ে।” যারা দশ মহাবিদ্যার উপাসক এটি তাঁদের মন্ত্র। এই মন্ত্রের অর্থ হল দশমহাবিদ্যার আরাধনা করার জন্য যে সব নারীর মন্ত্র চৈতন্য হয়েছে এবং যারা এই মন্ত্রের গুণে দেবত্বের অধিকারী হয়েছেন তাঁরাই হলেন বেশ্যা। তাই তাঁদের বাড়ির সামনে থেকে মাটি নেওয়া যেতে পারে।
ভিন্ন মত, ভিন্ন ব্যাখ্যা, তবে মা তো সবার। তাই তাঁদেরকে আলাদা করে না রেখে হিন্দুধর্ম যে তাঁদের বিশেষ সম্মান দিয়েছেন তা সত্যিই অভিনব, এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
Featured Images: Narayanganjer Durgapujo
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এসে গেল #POPxoEverydayBeauty – POPxo Shop-এর স্কিন, বাথ, বডি এবং হেয়ার প্রোডাক্টস নিয়ে, যা ব্যবহার করা ১০০% সহজ, ব্যবহার করতে মজাও লাগবে আবার উপকারও পাবেন! এই নতুন লঞ্চ সেলিব্রেট করতে প্রি অর্ডারের উপর এখন পাবেন ২৫% ছাড়ও। সুতরাং দেরি না করে শিগগিরই ক্লিক করুন POPxo.com/beautyshop-এ এবার আপনার রোজকার বিউটি রুটিন POP আপ করুন এক ধাক্কায়…