এই শহরকে কি আদৌ তিলোত্তমা বলা চলে? এই শহরই কি প্রতিবাদে পথে নামে, ভালকে ভাল, মন্দকে মন্দ বলার সৎসাহস রাখে? এই শহরেই কি বইপ্রেমী লোকজন নাওয়াখাওয়া ভুলে মিলনমেলা প্রাঙ্গণে ভিড় জমান স্রেফ নতুন বইয়ের গন্ধ শুঁকে দেখবেন বলে? এই শহরেই কি আছে গড়িয়াহাট ফ্লাইওভার, যেখানে আজও দাবার বোর্ডে চোখ রেখে সময় কাটান অনেক সিধু জ্যাঠা? গতকালের পর থেকে তা তো আর বলতে পারছি না!
আসলে কলকাতা (Kolkata) বোধ হয় পাল্টে যাচ্ছে! আমরা ক্রমশ আরও বেশি অসহিষ্ণু বয়ে পড়ছি, কিংবা অন্যায় দেখেও প্রতিবাদ না করা হয়তো আমাদের অভ্যেসে দাঁড়িয়ে গিয়েছে! নইলে প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া ইউনিভার্স (Miss India Universe) উষসী সেনগুপ্ত (Ushoshi Sengupta) ও তাঁর ড্রাইভারকে মাঝ রাতে তাঁর নিজের আদরের কলকাতায় নিগৃহীত (Molested) হতে হয়? শুনতে অবাক লাগলেও, এটাই সত্যি! পরশুদিন রাতে কাজ সেরে কলকাতার একটি বিলাসবহুল পাঁচতারা হোটেল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। ঘটনাচক্রে তাঁর সঙ্গে নিজের গাড়ি ছিল না। মাঝরাস্তায় জনাকয়েক অজ্ঞাতপরিচয় হেলমেটহীন বাইক আরোহী রাস্তায় আটকায় তাঁর ট্যাক্সির। ধীরে-ধীরে শুরু হয় বচসা ও নিগ্রহ! উষসী নিজেই মোবাইলে ক্যামেরাবন্দি করেছেন এই ঘটনার অংশবিশেষ এবং পরে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে পুরো ঘটনার বিবরণও লিপিবদ্ধ করেছেন তিনি। পুরোটা পড়লে সত্যিই গায়ে কাঁটা দেবে আপনাদের। দেখে নিন, ঠিক কী বলেছেন উষসী…
ঘটনাচক্রে, এই পোস্টে উষসী লিখেছিলেন যে, তাঁর ট্যাক্সিচালককে মারধর করা হয় এবং এক সময় তাঁকেও গাড়ি থেকে টেনে নামানো হয়েছিল, যখন ভিডিয়ো তুলতে সক্ষম হন তিনি। কিন্তু পরে বিভিন্ন মিডিয়ায় তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করা হয়েছে বলে দাবি জানানো হতে থাকে এবং পরে একটি পোস্টে আবার উষসী জানিয়ে দেন যে, তিনি নন, শারীরিক নিগ্রহের শিকার হয়েছিল মূলত তাঁর ট্যাক্সির চালক! নীচে দেখে নিন, পরে কী বলেছেন ঊষসী…
প্রতিটি পোস্টে তৎকালীন পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধেও প্রশ্ন তুলেছেন ঊষসী। যদিও তাঁর এই পোস্টের পরে নড়েচড়ে বসে পুলিশ-প্রশাসন ও তড়িঘড়ি আটক করা হয় সাত জনকে। কিন্তু প্রশ্ন হল, একজন সেলেব্রিটিকে যদি এইরকম নিষ্ক্রিয়তার সম্মুখীন হতে হয়, তা হলে আমরা, মানে সাধারণ নাগরিকেরা কোন ভরসায় রাতে পথে বেরোব? আর কোনও এরকম অঘটনের সম্মুখীন হলে তা কি আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশ্বসুদ্ধ সকলকে ট্যাগ করে পোস্ট করতে হবে, তবে কোনও হেলদোল উঠবে প্রশাসনে? কলকাতা কোনওদিনই রাতে জাগে না। কিন্তু তা বলে রাতে কারও কোনও প্রয়োজনীয় কাজ থাকতে পারবে না, তা তো হয় না! যদি কোনও কাজে কাউকে পথে বেরতে হয় এবং তাঁর কাছে নিজস্ব বাহন না থাকে, তা হলে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব কে নেবে?
নিজের পরবর্তী অনেক বক্তব্যে ঊষসী একথা পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, তাঁর পোস্ট শুধুমাত্র মহিলাদের নিরাপত্তার দিকেই আঙুল তুলছে না। বরং তা তুলছে সমগ্র কলকাতাবাসীর নিরাপত্তার দিকেই। আমরা কতটা সুরক্ষিত আমাদের এই কল্লোলিনী তিলোত্তমায়? এই ঘটনার পরে সত্যিই তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে না কি?
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!