Our World

শহরময় আজও উজ্জ্বল নেতাজির স্মৃতি (Favourite foods and dining places of Netaji)

Doyel Banerjee  |  Jan 22, 2019
শহরময় আজও উজ্জ্বল নেতাজির স্মৃতি (Favourite foods and dining places of Netaji)

নেতাজিকে (Netaji) নিয়ে এই ১২২ বছর পরেও মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। তাঁকে নিয়ে আজ লেখা হয় অসংখ্য বই। তৈরি হয় সিনেমা ও ওয়েব সিরিজ। তৈরি হয় ধারাবাহিকও। পত্রপত্রিকায় লেখা হয় অসংখ্য প্রবন্ধ। নেতাজিই কি গুমনামী বাবা? এই প্রশ্নও মানুষের মনে সহস্রবার উঁকি দিয়ে যায়। আসলে ১২২ বছরেও নেতাজির (Netaji) জনপ্রিয়তায় এতটুকু ভাঁটা পড়েনি। তাঁর ব্যাক্তিত্ত্ব, তাঁর ম্যানারিজম এবং সর্বোপরি তাঁর বাঁধভাঙা দেশপ্রেম আজ নাড়িয়ে দিয়ে যায় আমাদের। স্বভাবতই এই প্রশ্ন আমাদের মনে জাগে যে তিনি কী খেতে ভালোবাসতেন (favourite foods) বা ছাত্রাবস্থায় কোন রেস্তরাঁয় তিনি যেতেন (dining places)।তাঁর জন্মদিনে আমরা সেটাই বোঝার চেষ্টা করেছি। কারণ এই শহরের আনাচে কানাচে আজও উজ্জ্বল নেতাজির স্মৃতি।  

শোনা যায় নেতাজির খাওয়া দাওয়া ছিল খুব সাধারণ। তিনি যেহেতু উড়িষ্যার কটকে জন্মেছিলেন, আন্দাজ করা যায় তাঁর ডায়েটে উড়িয়া খাবারের প্রভাব ছিল।তবে প্রতিদিনের খাবারে তিনি গড়পড়তা বাঙালিদের মতোই ডাল আর ভাত খেতেন।ডালের মধ্যে মুগ ছিল তাঁর পছন্দের তালিকায়। প্রতিদিনের খাবারে তাঁর পাতে থাকত দই। ভালোবাসতেন পুরী খেতে। আর ফলের মধ্যে তাঁর প্রিয় ছিল কলা।কয়েকটি সাধারণ খাবারের মধ্যেই নেতাজির ডায়েট ঘোরাফেরা করত। তিনি খিচুড়ি আর ভাতেভাত খেতে পছন্দ করতেন। তার মধ্যে ভাতেভাত ছিল নেতাজির খুব প্রিয় খাবার। ভাতেভাত হল কিছু সব্জি দিয়ে সেদ্ধ ভাত।সম্ভবত বেশি ঝাল মশলা দেওয়া রান্না নেতাজির সহ্য হত না। তাছাড়া রাজনীতিতে যোগদান করার পর তিনি বিভিন্ন জায়গায় যেতেন। বোঝাই যায় এইভাবে অমানুষিক পরিশ্রম করার সময় তাঁর খাওয়া দাওয়ার কোনও ঠিক থাকত না। সেই কারণেই তিনি একবার পেটের অসুখে পড়েছিলেন। ১৯৩৭ সাল নাগাদ যে কারণে তাঁর স্বাস্থ্য ভেঙে যায়। স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করতে তিনি গিয়েছিলেন হিমাচল প্রদেশের ডালহৌসিতে। শোনা যায় সেখানকার এক বাউলি বা জলাধারের জল খেয়ে তাঁর পেটের অসুখ সেরে যায়। জায়গাটি আজ বিখ্যাত সুভাষ বাউলি নামে।

তবে প্রত্যেক বাঙালির মতো তাঁর অমোঘ টান ছিল মিষ্টির প্রতি।খেতে ভালোবাসতেন রসগোল্লা, চমচম, পিঠে পুলি এবং সন্দেশ। তবে বাড়িতে তৈরি মিষ্টি নেতাজি বেশি ভালোবাসতেন। আর পছন্দ করতেন গ্রাম বাংলার মিষ্টি। তাই তিনি খুব ভালোবাসতেন চিনির পুলি, মনোহরা, নারকেল নাড়ু, রসবড়া, ছাতুর বরফি,মুড়ির নাড়ু, খইচুড়, তিলের নাড়ু এবং তিলের চাকতি। বোঝাই যাচ্ছে এগুলো সবই গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে তৈরি হত। নেতাজির সঙ্গে থেকেছেন এরকম বহু মানুষ দেখেছেন নেতাজি সারাদিনে ২০ থেকে ৩০ কাপ চা খেতেন।পরে বিদেশে থাকাকালীন কফির প্রতি তাঁর অনুরাগ জন্মায়। তাঁর মুখে থাকত সুপারি, লবঙ্গ ও হরিতকী। অনশন ভঙ্গ করার পর তিনি দিনে বহুবার লেবুর জল খেতেন। মা প্রভাবতী দেবীকে লেখা একটা চিঠি থেকে জানা যায় নেতাজি শেষের দিকে নিরামিষ খেতেন।তখন আমিষের মধ্যে মাছ ছাড়া আর কিছু তিনি খেতেন না।

কলকাতায় এমন কয়েকটি জায়গা এখনও আছে, যেগুলি নেতাজির স্মৃতিতে আজ উজ্জ্বল।ছাত্র বয়সে স্কটিশ চার্চ ও প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়ার সময় নেতাজি এইসব জায়গায় যেতেন। জানেন কি কোন জায়গা সেগুলো?

লক্ষ্মী নারায়ণ শ’ অ্যান্ড সন্স

১৯১৮ সালে এই চপের দোকানটি খোলা হয়েছিল। ১০০ বছরের পুরনো এই দোকানে নেতাজির উপস্থিতিতে দুবার পালিত হয়েছিল তাঁর জন্মদিন। এখানকার তেলেভাজা খুব বিখ্যাত। আজও এই দোকানে বিনামূল্যে নেতাজির জন্মদিনে বিলি করা হয় তেলেভাজা। যার নাম নেতাজির চপ।

প্যারামাউন্ট শরবত অ্যান্ড সিরাপ

কলেজ স্ট্রিটের এই দোকানটি সবাই চেনেন। এখানেও আসতেন নেতাজি। ডাবের শরবত ছিল তাঁর প্রিয়।

ইন্ডিয়ান কফি হাউস

 

কলকাতার কফি হাউজ হল বহু জ্ঞানী গুণী মানুষের আঁতুড়ঘর। এখানেও আসতেন নেতাজি।

ফেভারিট কেবিন

চট্টগ্রাম থেকে আসা দুই ভাই নূতনচন্দ্র বড়ুয়া ও গৌর বড়ুয়া এই কেবিন খুলেছিলেন।সূর্য সেন স্ট্রিটের এই কেবিনে নেতাজি আসতেন, যখন তিনি প্রেসিডেন্সির ছাত্র। এখানকার ৪ নম্বর টেবিল ছিল তাঁর জন্য বরাদ্দ। এখানে বসেই তিনি নজরুলের কবিতা ও গান শুনতেন। এখানকার রান্নাঘর লাগোয়া ছোট্ট ঘরে বসত গোপন বৈঠক। পুলিশের নজর পড়লেই বিপ্লবীদের সতর্ক করে দিতেন বড়ুয়া ভাইরা। পিছনের গেট দিয়ে পালিয়ে যেতেন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা।

তথ্যসূত্র ও ঋণস্বীকারঃ রাজ, সিক্রেটস, রেভোলিউশানঃ আ লাইফ অফ সুভাষচন্দ্র বোস (মিহির বোস রচিত), দা টেলিগ্রাফ, দা টাইমস অফ ইন্ডিয়া, সংবাদ প্রতিদিন 

 ছবি সৌজন্যঃ জি দেবনাথ, উৎসব ফটোগ্রাফি, অর্পিতা চন্দ 

POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!

Read More From Our World