Our World

পণ হিসেবে পাত্র পেলেন এক লাখ টাকার বই! দারুণ খুশি পাত্রীও

Parama Sen  |  May 23, 2019
পণ হিসেবে পাত্র পেলেন এক লাখ টাকার বই! দারুণ খুশি পাত্রীও

বিশ্বাস হচ্ছে না? ভাবছেন আমরা মিথ্যে কথা বলছি? মোটেও না। এমনটা সত্যিই ঘটেছে এদেশে। বিয়েতে যেখানে এখনও অনেক পাত্রপক্ষ লুকিয়েচুরিয়ে, অনেকে খোলাখুলিভাবেই পণ (Dowry) দাবি করেন এবং কন্যাদায়গ্রস্ত বাবা-মা যথাসাধ্য চেষ্টা করে বা কোনও-কোনও সময় সাধ্যের বাইরে গিয়ে তা মেটানোরও চেষ্টা করেন, সেখানে এহেন কথা শুনলে অবিশ্বাস হওয়ারই কথা! তবে এমনটা সত্যিই ঘটেছে। তা-ও আবার আমাদের এই বাংলাতেই! 

পণপ্রথার বিরুদ্ধে আগেও প্রতিবাদ করেছেন অনেকেই। তা নিয়ে কেউ-কেউ সংবাদ শিরোনামে এসেছেন, কেউ-কেউ আসেননি। কোনওসময় বিয়ের কনে পণপ্রথার বিরুদ্ধাচরণ করে বিয়েটাই ভেঙে দিয়েছেন, কোনওসময় আবার পণপ্রথার আগুনে বলি হতে হয়েছে অনেক নিষ্পাপ মেয়েকে। কিন্তু এই প্রথা এখনও ভারতীয় সমাজে বেশ জেঁকেই বসে আছে এবং একমাত্র সঠিক জনসচেতনতা, মানসিক উন্নতি ও শিক্ষার প্রসারই এই কুপ্রথাটিকে সমূলে উৎপাটিত করতে পারে আমাদের সমাজ থেকে। তবে সত্যি কথা বলতে গেলে, তা এখনও দূর অস্ত! এখনও বিয়ের সময় মেয়ের বাবা-মা প্রমাদ গোনেন এই ভেবে যে, পাত্রপক্ষ কোনও অন্যায় দাবি জানিয়ে বসলে ঠিক কী করে তা সামাল দেবেন! অনেকে বলবেন, এই অবস্থা শুধুমাত্র সমাজের নিম্নস্তরের মানুষদের মধ্যেই এখনও বর্তমান। তারা অশিক্ষার আগুনে এখনও এতটাই ঝলসাচ্ছে যে, এসব কুপ্রথার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলে লড়াই করার সাহসটাই তারা করে উঠতে পারেনি। আমরা বলব, ভুল! সমাজের প্রতিটি স্তরেই এখনও এই প্রথাটি ঘাপটি মেরে রয়েই গিয়েছে। নিম্নস্তরে হয়তো তার প্রভাব অনেক বেশি চোখে পড়ে, উচ্চ স্তরের বাসিন্দারা চাপাঢাকা দেওয়ায় অনেক পারদর্শী বলে, তা চোখে পড়ে না! মনে নেই, মাসকয়েক আগে আমাজন প্রাইম ডিজিট্যাল প্ল্যাটফর্মে ‘মেড ইন হেভন’ নামে একটি সিরিজ মুক্তি পেয়েছিল? সেখানে একটি উচ্চবিত্ত পরিবারের বিয়েতে পাত্রের বাবা-মা চুপি-চুপি পণ দাবি করেন পাত্রীর বাবা-মায়ের কাছে! পাত্র তা জেনেও চুপ করে থাকে। কিন্তু ঘটনাচক্রে পাত্রী বিয়ের সময় তা জানতে পেরে ভেস্তে দেয় বিয়েটাই…

যাই হোক, বলতে গেলে ওরকম অনেক গল্পই বলা যায়! আমরা বরং বলি সূর্যকান্ত বণিকের কথা।

ছবি সৌজন্য: দ্য টেলিগ্রাফ

গ্রামবাংলার একটি ছোট স্কুলের শিক্ষক সূর্যবাবু তাঁর বিয়েতে পণ নেবেন না বলে শুরু থেকেই বলে দিয়েছিলেন পাত্রীপক্ষকে! শিক্ষা দেওয়া যাঁর পেশা, যিনি মানুষ গড়ার কারিগর, তাঁর কাছ থেকে তো এমনটাই প্রত্যাশিত! কিন্তু পাত্রীপক্ষ তো ভেবে আকুল! বরকে (groom) সঠিক উপহার না দিলে যদি পরে মেয়ের বিবাহিত জীবনটি সুখের না হয়…তাই অনেক ভেবেচিন্তে শেষ পর্যন্ত কনে (Bride) প্রিয়ঙ্কা বেজের বাবা-মা তাঁদের জামাইকে উপহার দিয়েছেন মাত্র ১,০০০টি বই! “আমি তো উপহার দেখে অবাক! আগে থেকেই ওঁদের সাবধান করে দিয়েছিলাম যে, পণ দেবেন না, আমি কোনও কিছু পণ হিসেবে স্বীকার করব না। কিন্তু এই জিনিস তো স্বীকার না করে উপায় নেই!” জানিয়েছেন সূর্যকান্ত। বই পড়তে তিনি বরাবরই ভালবাসেন, হবু স্ত্রী প্রিয়ঙ্কাকে পছন্দ করার পিছনেও ছিল ওই একই কারণ। তিনিও বই পড়তে ভালবাসেন যে! স্বামী-স্ত্রী ১,০০০টি বই ‘পণ’ হিসেবে পেয়ে খুবই খুশি! যদিও বইয়ের দাম পড়েছে এক লাখ টাকা, কিন্তু সৎ কাজে টাকা খরচ নিয়ে কে-ই বা কবে মাথা ঘামিয়েছে! এখন কে আগে কোন বইটা পড়বেন, সেটা নিয়েই সমস্যা হচ্ছে!

ঈশ্বর করুন, সূর্যকান্তবাবুর মতো ‘পণ’ যেন এদেশের প্রতিটি পাত্র ভবিষ্যতে দাবি করেন! 

 

POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!

আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!

Read More From Our World