বিরিয়ানি থেকে শুরু করে একাধিক সুস্বাদু পদ তৈরি করার সময় জায়ফলের ব্যবহার হয়ে থাকে। কারণ খাবারের স্বাদ বাড়াতে এই প্রাকৃতিক উপাদানটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তবে শরীরকে সুস্থ রাখতেও জায়ফল (Nutmeg) কিন্তু বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে (Health Benefits Of Nutmeg)। বিশেষত যে কোনও ধরনের ব্যথা কমাতে, হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটাতে, অনিদ্রার সমস্যা দূর করতে এবং মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি নানাভাবে সাহায্য করে থাকে (Nutmeg Benefits)। তবে এখানেই শেষ নয়, নিয়মিত জায়ফল খাওয়া শুরু করলে আরও বেশ কিছু শারীরিক উপকার পাওয়া যায়, যে সম্পর্কে এই লেখায় বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তবে তার আগে জায়ফল সম্পর্কে অরও একটু সুলুক-সন্ধান করে নেওয়া উচিত।
জায়ফলের পুষ্টিগুণ (Nutmeg Nutritional Benefits):
১০০ গ্রাম জায়ফলে মজুত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে উপকারী উপাদান। যেমন…
১. ৬.২৩ গ্রাম পরিমাণ জল
২. ৫.৮৪ গ্রাম প্রোটিন
৩. ৩৬.৩১ গ্রাম ফ্যাট
৪. ৪৯.২৯ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট
৫. ২০.৮ গ্রাম ফাইবার
৬. ১৮৪ এমজি ক্যালসিয়াম
৭. ৩.০৪ এমজি আয়রন
৮. ১৮৩ এমজি ম্যাগনেসিয়াম
৯. ২১৩ এমজি ফসফরাস
১০. ৩৫০ এমজি পটাশিয়াম
১১. ১৬ এমজি সোডিয়াম
১২. ২.১৫ এমজি জিঙ্ক
১৩. ৩ এমজি ভিটামিন সি এবং আরও অনেক উপকারী উপাদান। যেমন ধরো রাইবোফ্লবিন, নিয়াসিন, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি-১২, ভিটামিন এ, ভিটামিন কে,উপকারী ফ্যাটি অ্যাসিড, ফলেট প্রভৃতি।
জায়ফলের উপকারিতা (Incredible Nutmeg Benefits):
নিয়মিত জায়ফল গুঁড়ো খাওয়া শুরু করলে শরীরে এত পরিমাণে প্রাকৃতিক উপাদানের প্রবেশ ঘটে যে তার প্রভাবে একাধিক শারীরিক উপকার মেলে। বিশেষত বেশ কিছু রোগ দূরে ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। যেমন ধরো…
১। যে কোনও ধরনের ব্যথা কমে (Pain Reliever)
নিমেষে যন্ত্রণা কমাতে জায়ফল তেলের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। ২০১৬ সালে ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন রিসার্চ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র অনুসারে জায়ফল গাছের বীজ থেকে তৈরি এই বিশেষ তেলটি ব্যথার জায়গায় লাগিয়ে যদি কিছু সময় মাসাজ করা যায়, তাহলে কষ্ট কমতে একেবারেই সময় লাগে না। এমনকি জয়েন্টের ব্যথা কমাতেও জায়ফল তেল বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে আরেকভাবেও জায়ফল তেলকে কাজে লাগানো যেতে পারে। অল্প পরিমাণে জায়ফল তেল নিয়ে তা নারকেল তেল অথবা অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে যদি ব্যথার জায়গায় লাগানো যায়, তাহলে কিন্তু বেশ উপকার পাওয়া যায়।
Also Read Nutmeg Benefits in Hindi
২। অনিদ্রার সমস্যা দূর হয় (Treating Sleep Disorders)
দিনের পর দিন কি রাতে ঠিক মতো ঘুম আসে না? তাহলে সময় থাকতে থাকতে সাবধান হওয়াটা জরুরি। কারণ চিকিৎসকেদের মতে দীর্ঘ সময় যদি রাতে ঠিক মতো ঘুম না হয়, তাহলে একদিকে যেমন মস্তিষ্কের ক্ষমতা কমতে শুরু করে, তেমনি নানাবিধ কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও যায় বেড়ে। এখানেই শেষ নয়, ইনসমনিয়ার কারণে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে, এমনকি ডায়াবেটিসের মতো রোগও ঘাড়ে চেপে বসতে পারে। তাই সাবধান!
এখন প্রশ্ন অনিদ্রার সমস্যা দূর করার উপায় কী? এক্ষেত্রে প্রতিদিন রাতে শুতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস দুধে অল্প পরিমাণে জায়ফল গুঁড়ো মিশিয়ে পান করা শুরু করলে ইনসমনিয়ার মতো সমস্যা দূরে পালাতে একেবারেই সময় লাগে না (how to eat nutmeg)। ফলে শরীরের কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের ক্ষমতাও বাড়ে।
৩। হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে (Improve Digestion System)
এদিক সেদিকের খাবার খাওয়ার কারণে অনেকরই মাঝে মধ্যে পেট গোলমাল করে থাকে। তাই সবারই নিয়মিত জায়ফল গুঁড়ো খাওয়া শুরু করলে আমাদের শরীরে এমন কিছু উপকারী উপাদানের প্রবেশ ঘটে, যেমন ধরো ফাইবার, যার প্রভাবে পাচক রসের ক্ষরণ ঠিক মতো হতে শুরু করে দেয়। ফলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে স্টমাক আলসারের মতো রোগের খপ্পর থেকেও নিস্তার মেলে।
৪। ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায় (Improve Brain Power)
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে জায়ফলে রয়েছে বেশ কিছু উপকারী তেল, যেমন ধরো ইগুয়ানল (eugenol) এবং এলেমিসিন, যা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র সেরোটোনিন এবং ডোপামাইন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যে কারণে মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস নামক অংশের ক্ষমতা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। শুধু তাই নয়, সার্বিকভাবে ব্রেন পাওয়ার এতটাই বেড়ে যায় যে অ্যালঝাইমার্স এবং পার্কিনসনের মতো রোগের খপ্পরে পড়়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে। এক্ষেত্রে প্রতিদিন রাতে শুতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধে অল্প করে জায়ফল গুঁড়ো, বাদাম এবং কয়েকটি এলাচ ফেলে খেতে হবে।
৫। দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে (Take Care Of Your Teeth And Gums)
এই প্রাকৃতিক উপাদানটির শরীরে মজুত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা দাঁতের প্রতিটি কোনায় লুকিয়ে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াদের যেমন মেরে ফেলে, তেমনি শরীরে উপস্থিত টক্সিক উপাদানদেরও বার করে দেয়। ফলে একদিকে যেমন মুখ থেকে বাজে গন্ধ বেরনোর আশঙ্কা কমে, তেমনি ক্যাভিটির মতো সমস্যাও দূরে থাকতে বাধ্য হয়। এক্ষেত্রে নিয়মিত জায়ফল মশলা যেমন খেতে পারেন, তেমনি জায়ফল গাছের বীজ থেকে তৈরি এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করলেও কিন্তু সমান উপকার পাওয়া যায়। ইচ্ছা হলে জায়ফল গুঁড়ো দিয়ে দাঁতও মাজতে পারো। কারণ এমনটা করলেও দাঁতে পোকা হওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে। এক্ষেত্রে আরেকটি জিনিসও জেনে রাখা একান্ত প্রয়োজন, তা হল দাঁতের ব্যথা কমাতে জায়ফল তেল কিন্তু বেশ কাজে আসে। তাই এবার থেকে এমন ধরনের কোনও সমস্যার চিকিৎসায় এই এসেনশিয়াল অয়েলটিকে কাজে লাগানো যেতে পারে।
৬। লিভারের ক্ষমতা বাড়ে (Keeps Liver Healthy)
নিয়মিত জায়ফল মশলা অথবা এই গাছের বীজ থেকে তৈরি তেল গ্রহণ করা শুরু করলে লিভারে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে শুরু করে, সেই সঙ্গে শরীরের এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটির কর্মক্ষমতা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে কোনও ধরনের লিভারের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে।
৭। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে (Control Blood Circulation)
রোজের ডায়েটে এই প্রাকৃতিক উপাদানটিকে অন্তর্ভুক্ত করলে রক্তচাপ জনিত অনেক সমস্যা অনেক নিয়ন্ত্রণে আসে! ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেল্থের প্রকাশ করা এক রিপোর্ট তাই বলছে। তবে এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় মাথায় রাখাও একান্ত প্রয়োজন, তা হল আমরা কী পরিমাণে নুন খাচ্ছি, তার উপরও কিন্তু ব্লাড প্রেসার বাড়বে না স্বাভাবিক থাকবে, তা অনেকাংশে নির্ভর করে। তাই বেশি পরিমাণে নুন বা সোডিয়াম খাওয়া একেবারেই চলবে না।
৮। ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ দূরে থাকে (Prevents Cancer)
গত কয়েক বছরে আমাদের দেশে ক্যান্সার রোগের প্রকোপ বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। এমনকী আগামী কয়েক বছরের মধ্যে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন চিকিৎসকেরা। এমন অবস্থায় ক্যান্সারের মতো রোগকে দূরে রাখতে বেশ কিছু প্রাকৃতিক উপাদানের উপর ভরসা না রাখলেই নয়, যার মধ্যে অন্য়তম হল জায়ফল। আসলে এই প্রাকৃতিক উপাদানটির শরীরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ক্যান্সার উপাদান, যা দেহে প্রবেশ করা মাত্র ক্যান্সার সেলেদের ধ্বংস করতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এমন মারণ রোগের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা যায় কমে। বিশেষত, লিউকেমিয়ার মতো ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে।
৯। খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে (Reduce Bad Cholesterol)
হার্টকে যদি সুস্থ রাখতে হয়, তাহলে রক্তে যাতে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা না বাড়ে, সেদিকে নজর রাখতে হবে। আর এই কাজটি করবে কীভাবে? খুব সহজ! নিয়মিত জায়ফল গুঁড়ো খাওয়া শুরু করো। দেখবে উপকার মিলবে একেবারে হাতেনাতে। আসলে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করা মাত্র খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি আরও বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না।
১০। ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় (Gives You Glowing Skin)
ব্রণ এবং ব্ল্যাক হেডসের মতো সমস্যার প্রকোপ কমাতে জায়ফল বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে এতে উপস্থিত একাধিক অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপদান, একদিকে নানাবিধ ত্বকের রোগকে দূরে রাখতে যেমন বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, তেমনি ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতেও সাহায্য করে।
এতসব উপকার পেতে সম পরিমাণে জায়ফল গুঁড়ো এবং মধু মিশিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই মিশ্রণটি সারা মুখে লাগিয়ে কম করে ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হলে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখ। এইভাবে সপ্তাহে ২-৩ দিন যদি ত্বকের পরিচর্যা করা যায়, তাহলে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে দেখবে সময়ই লাগবে না।
১১। ডিপ্রেশন এবং অ্যাংজাইটির প্রকোপ কমায় (Helps Overcome From Depression and Anxiety)
একথা নিশ্চয় জানা আছে যে স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটি কিন্তু শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে। তাই তো বড় কোনও ক্ষতি হওয়ার আগেই যদি সাবধান হওয়া না যায়, তাহলে কিন্তু বিপদ! এখন প্রশ্ন হল স্ট্রেসকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় কীভাবে? এক্ষেত্রে সম পরিমাণে জায়ফল গুঁড়ো এবং আমলকি গুঁড়ো নিয়ে এক গ্রাস জলে মিশিয়ে দিনে একবার করে পান করতে হবে। এমনটা করলে শরীরে সেরাটোনিন এবং ডোপামাইন হরমোনের ক্ষরণ যাবে বেড়ে, যে কারণে স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটির প্রকোপ কমতে দেখবে সময়ই লাগবে না। ফলে শরীরের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকবে না বললেই চলে।
১২। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে (Strengthen Immune System)
নিয়মিত এক গ্রাস দুধে অল্প করে জয়ফল গুঁড়ো মিশিয়ে খাওয়া শুরু করলে শরীরে এমন কিছু ভিটামিন এবং মিনারেলের প্রবেশ ঘটে, যার প্রভাবে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। আর একবার ইমিউনিটি বেড়ে গেলে ছোট-বড় কোনও রোগের পক্ষেই যে আর ক্ষতি করে ওঠা সম্ভব হয় না, তা তো বলাই বাহুল্য। এমন সব উপকার পেতে দুধের পরিবর্তে চায়েও জায়ফল গুঁড়ো মিশিয়ে খাওয়া চলতে পারে।
জায়ফলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া (Side Effects Of Nutmeg):
একাধিক রোগ থেকে শরীরকে বাঁচাতে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে ঠিকই। কিন্তু বেশি মাত্রায় যদি জয়ফল গুঁড়ো খাওয়া শুরু করো, তাহলে কিন্তু বিপদ! কারণ সেক্ষেত্রে মাথা ঘোরা, বমি হওয়া এবং পেট খারাপের মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা যায় বেড়ে। সেই সঙ্গে শরীরের আরও বেশ কিছু ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই নিয়মিত অল্প করে জায়ফল গুঁড়ো খেতে হবে, ভুলেও বেশি মাত্রায় খাওয়া চলবে না কিন্তু!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এগুলোও আপনি পড়তে পারেন
Read More From লাইফস্টাইল
এই ৬টি ঠোঁটের অধিকারিণীরা এইসব গুণের মানুষ হন
SRIJA GUPTA
চুল ভাল রাখতে শ্যাম্পুর বদলে এগুলি ব্যবহার করুন
SRIJA GUPTA