সকালে যেখানে ঘাম ঝরছে, সেখানে রাতের বেলা গায়ে চাদর চাপিয়ে শুতে হচ্ছে। এমন আবহাওয়ায় সর্দি-কাশির মতো সমস্যা লেজুড় হতে সময় লাগে না। বিশেষ করে যাঁদের রোগ প্রতিরোগ ক্ষমতা দুর্বল, তাঁদের তো ওয়েদার চেঞ্জের সময় বেশি করে সতর্ক থাকা উচিত। কারণ, একটু এদিক-সেদিক হলেই যে রোগের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা বহু গুণে বেড়ে যায়। কিন্তু প্রশ্ন হলে নানা সাবধানতা অবলম্বন করেও যদি বুকে কফ জমে, তা হলে কী করণীয়? সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যেতেই পারে। কিন্তু হাতের কাছে যখন ‘এক সে বরকর এক’ ঘরোয়া টোটকা (home remedies) রয়েছে, তখন ডাক্তারের পিছনে টাকা খরচ করার মানে কী!
Table of Contents
- সর্দি-কাশি এবং বুকে কফ জমার পিছনে কারণ কী? (Causes of Cough and Cold)
- এমন সব রোগ-ব্য়াধিকে দূরে রাখার উপায় (Prevention for Cough and Cold)
- সর্দি-কাশি এবং কফের প্রকোপ কমাতে ঘরোয়া চিকিৎসা (Home Remedies for Cough and Cold)
- কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত? (When to See a Doctor for Cough and Cold)
- বাড়িতেই তৈরি করে ফেলুন নানা ধরনের কফ সিরাপ (Homemade Cough Syrup Recipe)
- এই নিয়ে সাধারণ কিছু প্রশ্নের উত্তর (FAQs)
সর্দি-কাশি এবং বুকে কফ জমার পিছনে কারণ কী? (Causes of Cough and Cold)
বছরের এই সময় একাধিক ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়, যে কারণে হাঁচি-কাশির মতো সমস্যা যেমন হতে পারে, তেমনই বুকে কফ জমতেও সময় লাগে না। আবার জ্বরজ্বালার খপ্পরেও পড়তে পারেন। তাই তো কোনও ভাবে যদি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলা যায়, তাহলে কিছুটা হলেও নিশ্চিন্ত। কারণ, সেক্ষেত্রে ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়াগুলি দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে উপেক্ষা করে শরীরের ক্ষতি করতে পারে না। ফলে এমন সব রোগ-ব্যাধি ঘাড়ে চেপে বসার আশঙ্কা কমে। এখন প্রশ্ন হল, নানা জীবাণুর কারণেই যে বুকে কফ জমেছে, তা কীভাবে বোঝা সম্ভব? এক্ষেত্রে নাক থেকে অনবরত জলা পরা, গলায় ব্যথা, কফ, মাথা যন্ত্রণা, বারে বারে হাঁচি হওয়া এবং জ্বর আসার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে কফ সিরাপ অথবা অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট খেলে সঙ্গে সঙ্গে উপকার পাওয়া যায় ঠিকই। কিন্তু নানা প্রাকৃতিক উপাদানকে কাজে লাগিয়ে যদি চিকিৎসা করা যায়, তাহলে কিন্তু আরও বেশি উপকার মেলে। তাই তো সর্দি-কাশি এবং কফের চিকিৎসায় কী কী ঘরোয়া টোটকা কাজে আসে, সে সম্পর্কে জেনে নিলে কিন্তু লাভবান হবেন!
এমন সব রোগ-ব্য়াধিকে দূরে রাখার উপায় (Prevention for Cough and Cold)
মূলত নানা ক্ষতিকর ভাইরাসের আক্রমণের কারণেই যেহেতু এমন সব রোগ ঘাড়ে চেপে বাসে। তাই তো কোনও ভাবে যদি এই সব ব্যাকেটরিয়াগুলিকে দূরে রাখা যায়, তাহলেই আর কোনও চিন্তা থাকবে না। আর সেই কারণেই এই নিয়মগুলি মেনে চলা একান্ত প্রয়োজন। যেমন ধরুন…
১| ভাল করে হাত পরিষ্কার করতে হবে
দু’হাতের প্রতি স্কয়ার সেন্টিমিটারে কম-বেশি প্রায় ১৫০০ ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান মেলে। ফলে বুঝতেই পারছেন জীবাণুর বিরুদ্ধ লড়াইটা কিন্তু সহজ নয়। তাই সাবধান থাকাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কারণেই বারে বারে সাবান বা hand sanitizer দিয়ে হাত ধোয়ার প্রয়োজন রয়েছে। তাতে করে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াগুলি মারা যাবে। ফলে শরীরের কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা আর থাকবে না।
২| বাথরুম এবং রান্না ঘর ভাল করে পরিষ্কার করতে হবে
বাড়ির এই দুই জায়গায় প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া এসে ভিড় জমায়। তাই তো শরীরকে সুস্থ রাখতে নিয়ম করে disinfectant দিয়ে ভাল করে রান্না ঘর এবং বাথরুম পরিষ্কার করতে হবে, তাতে জীবাণুর প্রকোপ কমবে। ফলে বারে বারে জ্বরজ্বালার খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা আর থাকবে না।
৩| রুমাল নয়, টিস্যু পেপার ব্যবহার করুন
সর্দি-কাশির সময় রুমাল ব্যবহার করা চলবে না। কারণ, রুমালে উপস্থিত জীবাণুর কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকে মোর নিতে পারে। তাহলে কী করণীয়? প্রয়োজনে টিস্যু পেপার ব্যবহার করে সঙ্গে সঙ্গে ফেলে দিন। এমনটা করলে শরীরে বাসা বেঁধে থাকা ব্যাকটেরিয়াগুলি চারিপাশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কমবে। তাতে করে রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগবে না।
৪| অ্যান্টিএক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তুলতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি রয়েছে, এমন খাবার বেশি করে খেতে ভুলবেন না যেন! তাতে সর্দি-কাশির মতো সমস্যা তো দূরে থাকবেই, সেই সঙ্গে রক্তে মিশে থাকা টক্সিক উপাদানগুলিও ধ্বংস হয়ে যাবে। ফলে ছোট-বড় কোনও রোগ-ব্যাধিই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারবে না।
সর্দি-কাশি এবং কফের প্রকোপ কমাতে ঘরোয়া চিকিৎসা (Home Remedies for Cough and Cold)
প্রাকৃতিক উপাদানের উপর ভরসা রাখলে রোগের প্রকোপ তো কমবেই, সেই সঙ্গে ভিটামিন-মিনারেল এবং নানা উপকারী উপাদানের গুণে শরীরের ক্ষমতাও বাড়বে। তাছাড়া ঘরোয়া চিকিৎসার খরচও কম। তাই এবার থেকে সর্দি-কাশির চিকিৎসায় চোখ বন্ধ করে ঘরোয়া টোটকার উপর ভরসা রাখতেই পারেন। এক্ষেত্রে যে সব প্রাকৃতিক উপাগুলির উপর ভরসা রাখতে হবে, সেগুলি হল…
১| মধু
এক কাপ হার্বাল টিতে চামচ দুয়েক মধু মিশিয়ে সেই পানীয় দিনে বার দুয়েক পান করলে কফের প্রকোপ কমতে দেখবেন সময় লাগবে না। সেই সঙ্গে সর্দি-কাশির (cold) খপ্পর থেকেও মুক্তি মিলবে। আর যদি চায়ে মধু মিশিয়ে খেতে ইচ্ছা না করে, তাহলে এক কাপ ঈষদুষ্ণ গরম জলে চামচ তিনেক মধু মিশিয়ে খেলেও সমান উপকার মিলবে। তবে যতদিন না বুকে বসে যাওয়া কফ বেরিয়ে যাচ্ছে, ততদিন কিন্তু এই ঘরোয়া চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।
২| আদা
এক্কেবারে ঠিক শুনেছেন! কফের প্রকোপ কমাতে আদার জুড়ি মেলা ভার। এতে উপস্থিত বেশ কয়েকটি অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান membrane-এ প্রদাহের মাত্রা কমায়, যে কারণে অল্প দিনেই কফের প্রকোপ কমে যায়। সেই সঙ্গে সর্দি-কাশির মতো সমস্যাও দূরে পালায়। এখন প্রশ্ন হল, এত সব উপকার পেতে কীভাবে আদা খেতে হবে? এক কাপ গরম জলে ২০-৪০ গ্রাম আদার কুচি ফেলে মিনিট খানেক ফুটিয়ে নিয়ে তাতে অল্প পরিমাণ মধু অথবা লেবুর রস মিশিয়ে যদি খাওয়া যায়, তাহলে উপকার মিলবেই মিলবে। কিন্তু তাই বলে বেশি মাত্রায় আদা খাওয়া চলবে না। তাতে করে পেট খারাপ হতে পারে।
৩| বারে বারে স্টিম নিন
বড় বাটির এক বাটি গরম জল নিয়ে তাতে যে কোনও একটি এসেনশিয়াল তেল মিশিয়ে নিন। এবার টাওয়াল দিয়ে মাথা ঢেকে নিয়ে বাটির কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে মিনিটপাঁচেক স্টিম নিন। দিনে বার তিনেক এইভাবে স্টিম নিলে অল্প দিনেই শরীর সুস্থ হয়ে উঠবে। বিশেষ করে কফের হাত থেকে মুক্তি মিলবেই।
৪| লেবুর রস, দারচিনি এবং মধু
একটা বাটিতে হাফ চামচ মধু নিয়ে তার সঙ্গে অল্প পরিমাণে পাতিলেবুর রস এবং এক চিমচে দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে সেই মিশ্রণ নিয়মিত খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন, উপকার পেতে সময় লাগবে না। আর যদি অল্প দিনেই সর্দি-কাশি কমিয়ে ফেলতে চান, তাহলে এই ঘরোটা ওষুধটি দিনে দু’বার খেতে হবে, তাহলেই ফল মিলবে।
৫| তুলসি পাতা, আদা এবং গোলমরিচ
এক কাপ লিকার চায়ে খান পাঁচেক তুলসি পাতা, অল্প করে আদা কুচি এবং এক চিমটে গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে, সেই সঙ্গে প্রদাহের মাত্রাও কমে, যে কারণে বুকে জমে থাকা কফ বেরিয়ে যেতে সময় লাগে না। এমনকী, ক্ষতিকর ভাইরাসগুলিও মারা যায়। ফলে সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই রোগের প্রকোপ কমে যায়। তাই এবার থেকে জ্বর বা সর্দি-কাশি হলে মুঠো মুঠো অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট না খেয়ে এই সব প্রাকৃতিক উপাদানগুলিকে একবার কাজে লাগিয়ে দেখতে পারেন।
৬| মধু এবং লেবুর রস
পাতিলেবুর রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিক্সিডেন্ট, যা অল্প সময়েই ইমিউনিটি বাড়িয়ে তুলে রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াগুলিকে মেরে ফেলে। অন্যদিকে মধুতে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, শরীরে প্রদাহের মাত্রা কমানোর মধ্যে দিয়ে জ্বর, সর্দি-কাশি এবং কফের চিকিৎসা করে। তাই তো এমন সময় নিয়ম করে এক গ্লাস গরম জলে চামচ দুয়েক মধু এবং এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে খেলে দারুন উপকার পাওয়া যায়।
৭| আমলকি
প্রতিদিন একটা করে কাঁচা আমলকি খেলে শরীরে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি মিটতে সময় লাগে না। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি তো ঘটেই, সেই সঙ্গে রক্তে মিশে থাকা ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানগুলিও শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়, যে কারণে সর্দি-কাশির প্রকোপ কমতে যেমন সময় লাগে না, তেমনই নানাবিধ সংক্রমক রোগের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কাও কমে। আমলকিতে উপস্থিত অন্যান্য উপকারী উপাদানের গুণে লিভারের ক্ষমতাও বাড়ে। সেই সঙ্গে সারা শরীরে রক্তের প্রবাহে উন্নতি ঘটার কারণে শরীরও চনমনে হয়ে ওঠে। তাই বুঝতেই পারছেন, ছোট-বড় নানা রোগের চিকিৎসায় আমলকির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।
৮| তুলসি পাতা এবং আদা
দিন সাতেকের মধ্যেই কফের (cough) প্রকোপ কমাতে চান নাকি? তাহলে একটা কাজ করুন। চামচ চারেক আদা থেঁতো করে সেই রসের সঙ্গে এক চামচ মধু এবং খান দুয়েক তুলসি পাতা মিশিয়ে সেই মিশ্রণটি প্রতিদিন বার দুয়েক করে খান। দেখবেন, কষ্ট কমতে সময় লাগবে না। শুধু তাই নয়, জ্বর এবং সর্দি-কাশির চিকিৎসাতেও এই ঘরোয়া ওষুধটি কিন্তু বেশ কাজে আসে।
৯| হলুদ দুধ
হলুদে উপস্থিত curcumin সহ একাধিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ক্ষতিকর জীবাণুদের নিমেষে মেরে ফেলে, যে কারণে কষ্ট কমতে সময় লাগে না। আর যদি এক গ্লাস দুধে আধ চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে নিয়ম করে খাওয়া যায়, তাহলে তো কোনও কথাই নেই। কারণ হলুদ এবং দুধের যুগলবন্দী শরীরকে সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
১০| রসুন
এক্কেবারে ঠিক শুনেছেন! এমন সব রোগের চিকিৎসায় এই প্রাকৃতিক উপাদানটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। একটা রসুনের কোয়া ঘিয়ে একটু ভেজে নিয়ে মধুর সঙ্গে খেলে উপকার মিলবেই মিলবে। ফুসফুসের সংক্রমণের মতো রোগের চিকিৎসাতেও এই টোটকাটি দারুন কাজে আসে। আসলে রসুনে উপস্থিত বেশ কয়েকটি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান খুব অল্প সময়েই রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াগুলিকে মেরে ফেলে, যে কারণে রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না।
১১| গুঁড়
বুকে জমে থাকা কফ বের করে দিতে গুঁড়ের জুড়ি মেলা ভার। তবে শুধু শুধু গুঁড় খেলে কিন্তু চলবে না। তাহলে কী করতে হবে? এক বাটি জলে এক চিমটে গোলমরিচ, চামচ তিনেক জিরা এবং চার চামচ গুঁড় মিশিয়ে জলটা ফুটিয়ে নিয়ে পান করুন। প্রতিদিন বার দুয়েক এই পানীয় খেলে কষ্ট কমতে সময় লাগবে না।
১২| গাজরের রস
সর্দি-কাশি এবং জ্বরের প্রকোপ কমাতে তো বটেই, সেই সঙ্গে কফের চিকিৎসাতেও গাজরের রস বিশেষ ভূমিকা নেয়। আসলে এই প্রাকৃতিক উপাদানটিতে উপস্থিত ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং পটাশিয়াম সহ একাধিক উপকারী উপাদানের গুণে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে নিমেষেই শারীরিক কষ্ট কমে যাবে।
১৩| জোয়ানের পাচন
গরম জলে চামচ দুয়েক জোয়ান এবং খান দুয়েক তুলসি পাতা মিশিয়ে যদি খাওয়া যায়, তাহলে উপকার মিলবেই। কারণ, সর্দি-কাশি এবং কফের চিকিৎসায় জোয়ান এবং তুলসি পাতার জুড়ি মেলা ভার। তবে সকাল-বিকাল এই পাচন খেতে হবে, তবেই কিন্তু ফল পাবেন।
১৪| নুন জল দিয়ে গার্গেল করতে হবে
গলার ব্যথা এবং কফের প্রকোপ কমাতে এই ঘরোয়া টোটকাটি দারুন কাজে আসে। এক্ষেত্রে এক কাপ গরম জলে আধ চামচ নুন মিশিয়ে ততক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে, যতক্ষণ না নুনটা জলে মিশে যাচ্ছে। তারপর সেই জল মুখে নিয়ে বার চারেক গার্গেল করুন। দিন বার পাঁচেক গার্গেল করলেই কষ্ট কমে যাবে।
১৫| অ্যাপেল সিডার ভিনিগার
এতে উপস্থিত acetic acid প্রকৃতিতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, যা অল্প সময়েই রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুদের মেরে ফেলে, যে কারণে রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। এখন প্রশ্ন হল সর্দি-কাশির চিকিৎসায় অ্যাপেল সিডার ভিনিগারকে কীভাবে কাজে লাগাতে হবে? এক গ্লাস জলে চামচ দুয়েক অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে দিনে দু’বার পান করুন, তাতেই ফল মিলবে। আর যদি এক গ্লাস জলে অ্যাপেল সিডার ভিনিগারের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন, তাহলে তো কোনও কথাই নেই। কারণ, সেক্ষেত্রে আরও দ্রুত উপকার পাবেন।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত? (When to See a Doctor for Cough and Cold)
দিন তিনেক ঘরোয়া চিকিৎসা চালানোর পরেও যদি ১০১.৩ ফারেনহাইটের নিচে জ্বর না নামে, তাহলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তবে আরও কয়েকটি লক্ষণ দেখলেও রোগীকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে দেরি করবেন না যেন! কী কী লক্ষণের কথা বলছেন শুনি? টানা পাঁচ দিন যদি জ্বর থাকে, সেই সঙ্গে শ্বাস কষ্ট এবং গলা-মাথায় যন্ত্রণা হওয়ার মতো লক্ষণ প্রকাশ পায়, তাহলে আধুনিক চিকিৎসা শুরু করার ক্ষেত্রে দেরি না করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
বাড়িতেই তৈরি করে ফেলুন নানা ধরনের কফ সিরাপ (Homemade Cough Syrup Recipe)
সর্দি-কাশি আর কফের প্রকোপ কমাতে বাজার চলতি কফ সিরাপ খাবেন কেন, যেখন বাড়িতেই এই ওষুধ তৈরি করে ফেলা সম্ভব। কীভাবে কফ সিরাপ তৈরি করবেন তাই ভাবছেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
১| পেঁয়াজ এবং মধু
কড়াইয়ে এক বাটি পেঁয়াজ কুচি নিয়ে কয়েক মিনিট নাড়িয়ে নেওয়ার পরে তাতে হাফ কাপ মধু মিশিয়ে আঁচটা কমিয়ে মিনিট কুড়ি রেখে দিন। তারপর মিশ্রণটা একটা এয়ার টাইট পাত্রে ঢেলে নিয়ে ফ্রিজে রেখে খাওয়া শুরু করুন। এই সিরাপটি দিনে দু’বার খেলেই কফের প্রকোপ কমে যাবে। কমবে সর্দি-কাশিও।
২| মধু, পাতি লেবুর রস এবং আদা
এক কাপ জলে এক চিমটে আদা কুচি, এক চামচ লেবুর রস, চামচ দুয়েক মধু, এক চিমটে গোলমরিচ এবং এক চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে নিয়ে সেই মিশ্রণটি মিনিটপাঁচেক ফুটিয়ে নিন। এবার সেই মিশ্রণটি একটা অন্য পাত্রে ঢেলে নিয়ে তার থেকে এল্প অল্প করে নিয়ে পান করুন। দেখবেন, উপকার পেতে সময় লাগবে না। কারণ, গোলমরিচ যেখানে সংক্রমণের প্রকোপ কমাবে, সেখানে আদা, মধু এবং অ্যাপেল সিডার ভিনিগারে উপস্থিত নানা উপকারী উপদানের গুণে সর্দি-কাশি এবং কফের প্রকোপও কমবে। সঙ্গে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও চাঙ্গা হয়ে উঠবে।
৩| অলিভ অয়েল
হাফ কাপ একস্ট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলের সঙ্গে এক কাপ মধু, হাফ কাপ আদা কুচি এবং চামচ চারেক অ্যাপেল সিডার ভিনিগার, নয়তো পাতি লেবুর রস মিশিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন, তা হল আদা এবং মধু মেশানোর পরে কম করে নয় ঘন্টা অপেক্ষা করে বাকি উপাদানগুলি মেশাবেন। সবকটি উপাদান মেশানো হয়ে গেলে মিশ্রণটি ছেঁকে নিয়ে ফ্রিজে রেখে দিতে ভুলবেন না যেন! এবার সেই মিশ্রণটি থেকে চামচ দুয়েক করে নিয়মিত খেলেই উপকার মিলবে।
এই নিয়ে সাধারণ কিছু প্রশ্নের উত্তর (FAQs)
১| বারে বারে গরম জল খেলেও নাকি উপকার পাওয়া যায়?
গরম জল খেলে গলার ব্যথা তো কমবেই, সঙ্গে শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর জীবাণুরাও বেরিয়ে যাবে, যে কারণে কষ্ট কমতে সময় লাগবে না। তবে শুধু গরম জল খেয়ে কিন্তু এমন রোগের চিকিৎসা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে এই টোটকার পাশাপাশি বাকি ঘরোয়া চিকিৎসাগুলিকেও কাজে লাগাতে হবে। তবেই কিন্তু দ্রুত উপকার মিলবে।
২| শুধু শুধু মধু খেলেও কি উপকার পাওয়া যায়?
আলবাত উপকার মিলবে! দিনে তিনবার এক চামচ করে মধু খেলে শরীরে এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বাড়বে যে অল্প দিনেই রোগের প্রকোপ কমে যাবে। আর যদি এক চামচ মধুতে অল্প করে দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে খাওয়া যায়, তাহলে তো কোনও কথাই নেই!
৩| শুনেছি সর্দি-কাশির সময় বেশি করে জল খাওয়া উচিত?
একদম ঠিক শুনেছেন। আসলে এই সময় বেশি পরিমাণে জল খেলে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুগুলি শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ফলে অল্প দিনেই শরীর সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা বাড়ে।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
এসে গেল #POPxoEverydayBeauty – POPxo-র স্কিন, বাথ, বডি এবং হেয়ার প্রোডাক্টস নিয়ে, যা ব্যবহার করা ১০০% সহজ, ব্যবহার করতে মজাও লাগবে আবার উপকারও পাবেন! এই নতুন লঞ্চ সেলিব্রেট করতে প্রি অর্ডারের উপর এখন পাবেন ২৫% ছাড়ও। সুতরাং দেরি না করে শিগগিরই ক্লিক করুন POPxo.com/beautyshop-এ এবার আপনার রোজকার বিউটি রুটিন POP আপ করুন এক ধাক্কায়…