পাহাড়ের প্রতি বিশেষ করে পাহাড় (mountain) শৃঙ্গ (peak) জয় করার প্রতি বাঙালির আকর্ষণ চিরন্তন। প্রতি বছর কত মানুষের মৃত্যু হয় এই পাহাড় জয় করতে গিয়ে, কত পর্বতারোহী পঙ্গু হয়ে যান, স্বপ্ন সফল না হলে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে যান অনেকেই। তবু বৃথা আশা মরিতে মরিতেও মরে না। এই পাহাড়ের আকর্ষণেই আজ চিরনিদ্রায় আমাদের ঘরের মেয়ে ছন্দা গায়েন। আজ ছন্দা নেই তো কী হয়েছে? তিনি যে বহু মানুষের কাছে বিশেষ করে মেয়েদের কাছে এক বিরাট অনুপ্রেরণা তার প্রমাণ পাওয়া গেল আজ। বাঙালি মেয়ের পর্বত অভিযানের ইতিহাসে যুক্ত হল আর একটি পালক। প্রথম বাঙালি মহিলা হিসেবে ইউরোপের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এলবুর্জ জয় করলেন হাওড়ার (howrah) ২২ বছরের স্বরূপা মণ্ডল (Swarupa Mondal) ।
এই সেই মাউন্ট এলবুর্জ। গত কাল অর্থাৎ বুধবার দিন এই পাহাড়ের চুড়োয় ভোরবেলা পা রাখেন স্বরূপা মণ্ডল ও তাঁর মাউন্টেনিয়ারিং গাইড দেবব্রত মুখোপাধ্যায়।
মাউন্ট এলবুর্জ জয় করা ছিল স্বরূপার অন্যতম স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন সফল করার উদ্দেশ্য নিয়েই তিনি গাইড দেবব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুন মাসে এই অভিযানে বেরিয়ে পড়েন। প্রথমে ঠিক ছিল পয়লা জুলাই অর্থাৎ সোমবার মধ্যরাত থেকে অভিযান শুরু করা হবে। কিন্তু আবহাওয়া হঠাৎ করে খারাপ হতে শুরু করে। তখন সবাই সিদ্ধান্ত নেয় ভোরবেলা চারটের সময় তাঁরা শৃঙ্গের দিকে যাত্রা শুরু করবেন।
মাউন্ট এলবুর্জের উচ্চতা ৫,৬৪২ মিটার। প্রচুর প্রতিকূলতা পার করে অবশেষে স্বপ্ন সফল হল স্বরূপা ও তাঁর দলের বাকি অভিযাত্রীদের। পর্বতের শিখরে ভারতের পতাকা স্থাপন করেন স্বরূপা। তিনি জানিয়েছেন কনকনে ঠান্ডা হাওয়া আর এরকম অদ্ভুত পরিবেশে এমন কেউ ছিল না যে তাঁর এই ছবিটা তুলে দিতে পারে। ছবি তুলতে গেলেই হাতের গ্লাভস খুলতে হবে আর সেটা কেউই চাইছিল না।
শুধু নিজের দেশের পতাকা নয়, আইএমএফ অর্থাৎ ইন্ডিয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ফাউন্ডেশন এবং বজবজের পথযাত্রা বলে একটি হিমালয়ান অ্যাডভেঞ্চার সংস্থারও ফ্ল্যাগ পাহাড়ের চূড়ায় গেঁথে দেন। স্বরূপা জানিয়েছেন এটি তাঁর কাছে একটি অত্যন্ত গর্বের মুহূর্ত ছিল। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে স্বরূপার গাইড দেবব্রত মুখোপাধ্যায়ও একজন বিখ্যাত পর্বতারোহী। তিনি একজন এভারেস্ট বিজয়ী।
স্বরূপা হাওড়ার ডোমজুড়ের মেয়ে। সেখানেই একটি ছোট্ট গ্রাম বেগরিতে তাঁর জন্ম। গ্রাম ছোট হলে কী হবে। স্বরূপার চোখে ছিল অভ্রভেদী পাহাড় চূড়া ছুঁয়ে দেখার স্বপ্ন। দার্জিলিংয়ের মাউন্টেনিয়ারিং স্কুল থেকে তিনি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে মাত্র ২২ বছর বয়সে তিনি যে শুধু ইউরোপের সবচেয়ে উঁচু শৃঙ্গ জয় করে এসেছেন তা নয়। তিনি কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরে অর্থাৎ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগে কাজ করেন। পর্বতারোহীরা বিপদে পড়লে কীভাবে তাঁদের খুঁজে বের করে সুরক্ষিত স্থানে নিয়ে আসতে হয় সেই প্রশিক্ষণও তিনি নিয়েছেন উত্তরকাশীর নেহরু মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউট থেকে। সবচেয়ে মজার কথা হল এত বাধা সত্ত্বেও পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছে নিজের প্রিয় ক্লাব মোহনবাগানকে তিনি ভোলেননি।ইউরোপের মাউন্ট এলবুর্জের চূড়ায় জ্বলজ্বল করছে কলকাতার সবুজ-মেরুন গর্বমাখা ফ্ল্যাগ।
এই অসম সাহসী মেয়েকে আমাদের অসংখ্য অভিনন্দন।
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!
Read More From লাইফস্টাইল
এই ৬টি ঠোঁটের অধিকারিণীরা এইসব গুণের মানুষ হন
SRIJA GUPTA
চুল ভাল রাখতে শ্যাম্পুর বদলে এগুলি ব্যবহার করুন
SRIJA GUPTA