Mythology

ছিল রক্ষা বন্ধনী, হয়ে গেল ভাই-বোনের উৎসব – জেনে নিন রাখী পূর্ণিমার পৌরাণিক গাথা

Debapriya Bhattacharyya  |  Aug 3, 2021
ছিল রক্ষা বন্ধনী, হয়ে গেল ভাই-বোনের উৎসব – জেনে নিন রাখী পূর্ণিমার পৌরাণিক গাথা

রাখী বন্ধন বলুন বা রক্ষা বন্ধন  – শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমায় পালিত হয় এই পবিত্র উৎসবটি। যদিও ভাই-বোনের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার জন্য এই উৎসবের প্রচলন হয়েছিল (mythological and historical significance of raksha bandhan) বলে শোনা যায়, তবে এই অনুষ্ঠানটি শুধুমাত্র ভাই-বোনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি; ছড়িয়ে পড়েছে জাতিধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষের মধ্যে। পুরাকালে বলা হত, ভাই বা দাদা তার বোন ও দিদিকে রক্ষা করে আর সে’কারনেই পালিত হত এই উৎসব। বোনেরা ভাইদের ডান হাতের কবজিতে বেঁধে দিত জরির ডোরি, আর ভাইয়েরা অঙ্গীকারবদ্ধ হত সারা জীবন বোনকে সব বিপদ থেকে রক্ষা করবে। হয়ত সেজন্যই এই উৎসবের আরেক নাম রক্ষা বন্ধন। তবে, রাখী বন্ধন বা রক্ষা বন্ধন নিয়ে নানা লোককথা প্রচলিত রয়েছে। আজ সেসব নিয়েই আলোচনা করব

কৃষ্ণ-দ্রৌপদী-সুভদ্রা কাহিনি

ছবি সৌজন্য – ইউটিউব

মহাভারতে উল্লেখ রয়েছে রক্ষা বন্ধন উৎসবের (mythological and historical significance of raksha bandhan)। মজার এক কাহিনিও রয়েছে এই উৎসবকে ঘিরে।সুভদ্রা ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের ছোট বোন; তবুও তিনি দ্রৌপদীকে বেশি স্নেহ করতেন বলে শ্রীকৃষ্ণের উপরে সুভদ্রার বেশ রাগ ছিল। এ’কথা একদিন সুভদ্রা তাঁকে জানালে শ্রীকৃষ্ণ উত্তর দেন যে দ্রৌপদীকে কেন তিনি বেশি স্নেহ করেন তা সময় মত সুভদ্রা জানতে পারবেন। একদিন শ্রীকৃষ্ণের হাত কেটে রক্তপাত হতে শুরু করলে সুভদ্রা রক্ত বন্ধ করার জন্য পট্টি খুঁজতে থাকেন। সেসময়ে দ্রৌপদীও সেখানেই ছিলেন। তিনি কোনও কিছু পরোয়া না করে নিজের রেশম বস্ত্রখন্ড দিয়েই শ্রীকৃষ্ণের হাতে পট্টি করেন এবং তাতে রক্তপাত বন্ধ হয়। সে’সময়ে শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে কথা দিয়েছিলেন কোনও সময়ে প্রয়োজনে তিনিও দ্রৌপদীকে তাঁর এই বস্ত্রের প্রতিদান দেবেন। কৌরব সভায় এক সময়ে শ্রীকৃষ্ণই দ্রৌপদীকে চরম অপমানের হাত থেকে রক্ষা করেন। সেখান থেকেই নাকি রাখী বন্ধনের সূচনা।

ইন্দ্র-বলি-শচি কথা

অনেক পুরাণ বিশেষজ্ঞের মতে, ভবিষ্যৎপুরাণে উল্লেখিত রাখী বন্ধনের ঘটনাই নাকি রাখী বন্ধন উৎসবের উৎস। যদিও এই ঘটনায় ভাই-বোনের কোনও ব্যাপার নেই। দৈত্যরাজ বলির উপদ্রব তখন চরমসীমায়। এদিকে দেবরাজ ইন্দ্রের অবস্থা তো সঙ্গিন। অবশেষে দেব গুরু বৃহস্পতির পরামর্শে শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে দেবরাজ ইন্দ্র বলির সঙ্গে যুদ্ধে নামেন। ইন্দ্রপত্নী শচি এই ঘটনায় অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং যুদ্ধ শুরুর আগেই ভগবান বিষ্ণুর সহায়তা প্রার্থনা করেন। বিষ্ণু শচিকে ইন্দ্রের হাতে বেঁধে দেওয়ার জন্য দেন মন্ত্রপূত রক্ষাবন্ধনী। ইন্দ্র সেই যুদ্ধে বলিকে পরাজিত করেন। এই বন্ধনী বিপদ থেকে রক্ষা করে (mythological and historical significance of raksha bandhan) বলেই হয়ত এই উৎসবের নাম হয়েছে রক্ষা বন্ধন উৎসব।  

রক্ষা বন্ধন হল রাখী বন্ধন উৎসব

ছবি সৌজন্য – ইনস্টাগ্রাম

বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন এবং রাখী বন্ধন উৎসব – এই দুটো ঘটনা একে অন্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ১৯০৫ সালের ১৬ই অক্টোবর, লর্ড কার্জনের তত্ত্বাবধানে লাঘু হয় বঙ্গভঙ্গ আইন। বাংলা বিভক্ত হয় দুই ভাগে – পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ। ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা পৌঁছয় চুরম পর্যায়ে। বঙ্গভঙ্গ রদ করার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ডাক দেন হিন্দু-মুসলিম সহ বাকি সব ধর্মের মানুষকে। একে অন্যের হাতে রাখী পরিয়ে (mythological and historical significance of raksha bandhan) সূচনা করেন সম্প্রীতির।  

POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!      

বাড়িতে থেকেই অনায়াসে নতুন নতুন বিষয় শিখে ফেলুন। শেখার জন্য জয়েন করুন #POPxoLive, যেখানে আপনি সরাসরি আমাদের অনেক ট্যালেন্ডেট হোস্টের থেকে নতুন নতুন বিষয় চট করে শিখে ফেলতে পারবেন। POPxo App আজই ডাউনলোড করুন আর জীবনকে আরও একটু পপ আপ করে ফেলুন!

Read More From Mythology