ফ্যাশন

Budget-এর মধ্যেই Fashion Makeover- দরকার শুধু একটু Creativity

Debapriya Bhattacharyya  |  Dec 26, 2018
Budget-এর মধ্যেই Fashion Makeover- দরকার শুধু একটু Creativity

সেদিন ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে চোখ পড়লো ঠাম্মার পুরোনো ট্রাঙ্কটায়. কি আছে ভেতরে কৌতূহল হতেই খুলে দেখি কি সুন্দর একটা বেনারসি শাড়ি (saree)! বুঝলাম যে ওটা নিশ্চই ঠাম্মার বিয়ের বেনারসি! কি সুন্দর দেখতে. আমার খুব পরতে ইচ্ছে করছিলো কিন্তু আমি ওই ভারী বেনারসি পরতে স্বচ্ছন্দ নোই, আর তখনি মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল, পুরোনো শাড়ি (old saree) দিয়ে ফ্যাশন (fashion) মেকওভার (makeover) করার. আপনিও কিন্তু পুরোনো শাড়ি (old saree) দিয়ে অনেক নতুন নতুন স্টাইলের (style) ড্রেস (dress) বানিয়ে নিতে পারেন; দরকার একটু সৃজনশীলতা (creativity) আর একটু বুদ্ধি খরচ করার, তাহলেই বাজেটের মধ্যেই ফ্যাশন মেকওভার (makeover) করতে পারেন. কি ভাবে?

সেটা জানতে হলে নিচে দেওয়া আইডিয়া (ideas) গুলো পড়ে কাজে লাগাতে হবে যে!

১. পুরোনো শাড়িকে দিন নতুন রূপ

পুরোনো শাড়ি (old saree) থেকে কিন্তু খুব সহজেই নতুন শাড়ি তৈরী করা যায়, এবং তাও সামান্য খরচে (budget) ! যদি আপনার পুরোনো শাড়ি (old saree) আঁচলের দিকে বা পাড়ের দিকে একটু খারাপ হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে বাড়িতেই সেই জায়গাটাতে সুন্দর পাড় (border) বসিয়ে কিংবা স্টোন বসিয়ে সেলাই করে নিতে পারেন. নিজে না পারলে দর্জির (tailor) কাছে নিয়ে গিয়ে করিয়ে নিন. খুব একটা খরচ (budget) হবে না. ইচ্ছে করলে পাড়ের (border) বদলে পমপম বা টাসেল লাগাতে পারেন.

২. পুরোনো শাড়ি থেকে সালোয়ার কামিজ বানিয়ে নিন

বাজেটের (budget) মধ্যে ফ্যাশন (fashion) মেকওভার (makeover) করতে চাইলে কিন্তু আপনি পুরোনো শাড়ি (old saree) দিয়ে দারুণভাবে সালোয়ার কামিজ বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে!. শাড়িতে (saree) যদি কোনো পাড় থাকে আর তা যদি নষ্ট না হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে তো আপনার কাজ আরো সহজ! আপনি শাড়ির পাড় (border) দিয়ে সালোয়ারের বর্ডার কিংবা কামিজের হাতের বা গলার বর্ডার তৈরী করতে পারেন. একটা শাড়ি (saree) দিয়েই সালোয়ার, কামিজ আর ওড়না হয়ে যাবে!

৩. কুর্তি বানিয়ে নিন

অনেক সময় পুরোনো শাড়ির (old saree) সবটা খারাপ হয় না, কিছুটা জায়গা ফেসে যায় বা ছিড়ে যায়, তা বলে কি আর সেটা অন্য কোনো ভাবে ব্যবহার করা যায় না? নিশ্চই যায়! আপনি কম খরচে (budget) একটা দারুন কুর্তি বানিয়ে নিতে পারেন পুরোনো শাড়ি (old saree) দিয়ে. আপনার পছন্দ মতো কোনো ডিজাইন (design) দিয়ে নিজেই অথবা দর্জিকে (tailor) দিয়ে তৈরী করে নিন কুর্তি. যেহেতু শাড়ি কেটে এই কুর্তি তৈরী হচ্ছে, তাই দেখতেও বেশ অন্য রকম হবে! মানানসই পালাজো কিংবা ধুতি-সালোয়ার দিয়ে পরুন!

৪. পুরোনো শাড়ি দিয়ে নতুন কাফতান

কাফতান ড্রেস (dress) কিন্তু আবার ফ্যাশনে (fashion) ইন. নতুন কাফতান ড্রেস (dress) না কিনে আপনি পুরোনো শাড়ি (old saree) দিয়েই তৈরী করে নিতে পারেন কাফতান ড্রেস. শাড়ির ফ্যাব্রিক (fabric) শিফন কিংবা জর্জেট হলে খুব সুন্দর কাফতান তৈরী করা যাবে. কি, পেলো তো আপনার ফ্যাশন স্টেটমেন্ট একটা নতুন মাত্রা? তাও আপনার বাজেটের (budget) মধ্যেই!

৫. লেহেঙ্গা

আপনার কাছে যদি এমন কোনো শাড়ি (saree) থাকে যেটা দেখতে খুব সুন্দর আর ইউনিক কিন্তু আপনি শাড়ি পরতে খুব একটা স্বচ্ছন্দ বোধ করেন না, তাহলে সেই শাড়িটা দিয়ে খুব সহজেই একটা ফ্যাশন (fashion) মেকওভার (makeover) করে নিন, লেহেঙ্গা বানিয়ে! এমনিতে বাজারে আপনি যদি একটু ভালো কোয়ালিটির লেহেঙ্গা কিনতে যান, তাহলে বেশ টাকা খরচ হবে; সেখানেই আপনি যদি শাড়ি দিয়ে লেহেঙ্গা তৈরী করান তাহলে খরচ বেশি হবে না (budget) আবার শাড়িটাও ব্যবহার হলো – একেই বলে এক ঢিলে দুই পাখি 😉

৬. ম্যাক্সি ড্রেস

ম্যাক্সি ড্রেস পরতে খুব আরাম. শুধু গরমে না, যে কোনো ঋতুতেই আপনি ম্যাক্সি ড্রেস পরতে পারেন. পুরোনো শাড়ি দিয়ে তৈরী করিয়ে নিন ম্যাক্সি ড্রেস. সুতির শাড়ি নিলে ভালো হয় কারন তাতে ফল (fall) খুব ভালো আসে. আপনি শাড়ির আঁচলটা দিয়ে ম্যাক্সি ড্রেসের ওপরের অংশটা তৈরী করতে পারেন. অথবা নিজের সৃজনশীলতাকে (creativity) কাজে লাগিয়ে নিজের পছন্দমতো যে কোনো রকমের ডিজাইন (design) তৈরী করতে পারেন.

৭. স্কার্ট বানিয়ে নিন

ফিউশন স্কার্ট খুব ভালো লাগে দেখতে. পুরোনো শাড়ি (old saree) কেটে যদি স্কার্ট বানাতে চান তাহলে চেষ্টা করুন প্রিন্টেড শাড়ি দিয়ে তৈরী করানোর. প্রিন্টেড স্কার্ট আজকাল খুব চলছে. ক্রপ টপ (crop top)  কিংবা আপনার পছন্দ মতো যে কোনো টপের সাথে আপনার শাড়ি কাটা স্কার্ট কিন্তু দারুন লাগবে দেখতে! আর এতে বেশি খরচও নেই (budget). 

৮. শারারা

শারারা পরতেও ভালো লাগে আবার পরলে দেখতেও ভালো লাগে কারন শারারার লুকটাই একদম অন্যরকম. পুরোনো শিফন বা জর্জেটের শাড়ী (old saree) থাকলে তা দিয়ে এখনই একটা শারারা তৈরী করে ফেলুন. আপনি যদি সেলাই করতে পারেন তাহলে নিজেই তৈরী করতে পারেন, আর সেলাই না জানলেও কুচ পরোয়া নাহি, দর্জি (tailor) তো আছে! আপনার শাড়িতে (saree) যদি এম্ব্রয়েডারি, জরি, স্টোন কিংবা চুমকি বসানো থাকে, তাহলে তো কথাই নেই! পুরোনো শাড়ি দিয়ে তৈরী নতুন শারারা পরে আপনাকে দারুন দেখতে লাগবে, আর কেউ জানতে পারবে না যে এটা আপনার বাজেটের (budget) মধ্যেই হয়ে গেছে 😉

৯. লেহেঙ্গার ওড়না

নেটের শাড়ি (saree) যদি থাকে আপনার কাছে, সেটা দিয়ে আপনি লেহেঙ্গার ওড়না খুব সহজেই বানিয়ে নিতে পারেন. শাড়িতে পাড় (border) বসানো থাকলে বেশি মেহনত করতে হবে না, না বসানো থাকলে শাড়ির রঙের সাথে কনট্রাস্ট করে পাড় (border) কিনে আসুন বাজার থেকে আর শাড়িটাকে ওড়নার মাপে কেটে পাড় (border) বসিয়ে নিন. এই ওড়নাটা কিন্তু অন্যান্য ওড়নার থেকে বেশ বড়োই হবে.

১০. আনারকলি বানান পুরোনো শাড়ি দিয়ে

এক রঙের শাড়ি আছে? আর তাতে পাড় বসানো? বাহ্! আনারকলি বানিয়ে নিন. আনারকলি বানানোর অনেক কাপড় লাগে যেহেতু আনারকলিতে অনেক কুচি হয় আর ফল (fall) বেশি হয়, আর সেই কাপড়টা আপনি আপনার পুরোনো শাড়ি (old saree) থেকে খুব সহজেই পেয়ে যাবেন.

১১. ওয়ান-পিস্ গাউন

ওয়ান-পিস্ গাউন সবাই পরতে ভালোবাসে আর এখন এটা ফ্যাশন (fashion) ট্রেন্ডেও ইন. একরঙা গাউন হোক কিংবা প্রিন্টেড অথবা প্যাচওয়ার্ক করা – যেরকমই হোক না কেন আপনি কিন্তু আপনার পুরোনো শাড়ি (old saree) দিয়ে দিব্যি একটা ওয়ান-পিস্ গাউন তৈরী করে নিতে পারেন এবং সেটাও কম খরচে (budget).

১২. কুর্তি আর পালাজো

আপনার কাছে যদি এমন কোনো শাড়ি (saree) থাকে যার ফ্যাব্রিকটা (fabric) বেশ ভারী, তাহলে সেটা দিয়ে আপনি পালাজো প্যান্ট আর কুর্তি তৈরী করতে পারেন. একটা শাড়িতে যতটা কাপড় থাকে তা দিয়ে খুব সহজেই পালাজো আর কুর্তি তৈরী করা যায়. আপনার মনের মতো ডিজাইন (design) দিয়ে খুব কম খরচেই (budget) করে ফেলুন এই সেট. কুর্তিতে চাইলে হাতা দিতে পারেন আবার হাটকাটাও করতে পারেন, যেটা আপনার পছন্দ. তবে খেয়াল রাখবেন লাইনিং দিতে ভুলবেন না যেন, বিশেষ করে পালাজো প্যান্টে, তা না হলে কুঁচকে থাকতে পারে.

১৩. কেপ-জ্যাকেট

পুরোনো হালকা শাড়ি থাকলে আপনি সেটা দিয়ে সুন্দর একটা কেপ-জ্যাকেট তৈরী করিয়ে নিতে পারেন. চাইলে চুড়িদারের ওপরে পড়ার জন্য জ্যাকেট কিংবা জিনসের সাথে পড়ার টপের ওপরের শ্রাগও তৈরী করিয়ে নিতে পারেন.

১৪. শার্ট বানিয়ে নিন

আপনি হয়তো শাড়ি (saree) পরতে পছন্দ করেন না কিংবা পরতে পারেন না, কিন্তু হয়তো কেউ শাড়ি দিয়েছে উপহারে আর আপনি না সেটা ফেলতে পারছেন না পরতে পারছেন – এই সমস্যার সমাধান আমি বলে দিচ্ছি. শাড়ি কেটে শার্ট বানিয়ে নিন. দেখতেও অন্যরকম লাগবে আর সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন. শুধু তাই নয়, আপনার ফ্যাশন (fashion) স্টেটমেন্ট একটা মেকওভারও (makeover) পেয়ে যাবে আর তাও আপনার বাজেটের (budget) মধ্যেই!

১৫. বাচ্চার সাথে ম্যাচিং ড্রেস

যদি আপনার ছোট বাচ্চা থাকে এবং আপনারা মা-মেয়ে এক রকমের ড্রেস পরতে চান তাহলে পুরোনো শাড়ি কেটে দুজনের জন্য এক রকমের ড্রেস (dress) বানিয়ে নিন. দেখতেও কিউট লাগবে আর কম খরচে দু’জনের দু’টো ড্রেস হয়ে যাবে 😉

১৬. ক্রপ টপ

আপনার কাছে কি এরকম কোনো শাড়ি আছে যেটা নষ্ট হয়ে গেছে কিংবা ছিঁড়ে গেছে কিন্তু তার আঁচলটা ভালো আছে? তাহলে সেটা দিয়ে ক্রপ টপ (crop top) বানিয়ে ফেলুন. ফ্যাশন ট্রেন্ডে এখন ক্রপ টপ (crop top) ইন. আপনি বন্ধুদের সাথে মুভি দেখতে গেলে কিংবা কলেজ ফেস্টে এই ক্রপ (crop top) টপ পরে একবার যান, সবাই জিজ্ঞেস করবে কোত্থেকে কিনেছেন. কিন্তু শুধু আমি আর আপনি তো আসল ব্যাপারটা জানি, তাই না?

১৭. ডিজাইনার প্যান্টস

যদি কোনো পুরোনো বেনারসি কিংবা বালুচরি বা ব্রোকেডের শাড়ি থাকে যেটা পড়া হয়না, সেটা দিয়ে বেল-বটস বানিয়ে ফেলুন. পুরোনো দিনের ফ্যাশন (fashion) হলেও বেল-বটস কিন্তু এখনো চলছে. প্লেন শার্ট কিংবা টপের সাথে খুব ভালো লাগবে.

শুধু জামাকাপড় না, বাড়ি সাজানোর কয়েকটা আইডিয়াও দিচ্ছি

১. ওয়াল আর্ট

অনেক গুলো শাড়ি যদি এক সাথে খারাপ হয়ে যায় আর সেগুলো ফেলে দিতে ইচ্ছে না করে কিন্তু রাখারও জায়গা নেই এরকম অবস্থা হলে শাড়ির ফ্যাব্রিক (fabric) গুলোকে ছোট ছোট টুকরো করে কাটুন. এক একটা এক এক আকার এবং মাপের হলেও সমস্যা নেই. এবারে একটা বোর্ডে ভালো করে আঠা আর পিন দিয়ে টুকরোগুলোকে লাগান. ব্যাস কম খরচে তৈরী হয়ে গেল ওয়াল আর্ট! বসার ঘরে কিংবা বারান্দায় টাঙাতে পারেন আপনার সৃজনশীলতার (creativity) নিদর্শন.

২. পর্দা

না না আমি জানি পর্দার ফ্যাব্রিক (fabric) আর শাড়ির ফ্যাব্রিক আলাদা. আমি পর্দার বদলে শাড়ি (saree) ব্যবহার করতে বলছি না. কিন্তু পর্দা গুলোকে যদি একটা মেকওভার (makeover) দেওয়া যায় আর সেটাও বাজেটের (budget) মধ্যে, তাহলে তো মন্দ হয় না তাই না? শুধু একটু বুদ্ধি খরচ করতে হবে আর নিজের সৃজনশীল (creativity) প্রতিভাতে একটু শান দিতে হবে. শাড়ির পাড় দিয়ে পর্দায় বর্ডার দিতে পারেন কিংবা ঝালরের মতো ডিজাইন করতে পারেন. বাকি আপনার যা পছন্দ আর কল্পনাশক্তিকে (imagination) কাজে লাগিয়ে নিজের পছন্দে ডিজাইন করুন.

বোনাস টিপস – পুরোনো শাড়ি কিভাবে যত্নে রাখবেন

এই যে এতগুলো আইডিয়া শেয়ার করলাম আপনাদের সাথে, তা বলে তো আর যেখানেই পুরোনো শাড়ি (old saree) দেখবেন, কেটেকুটে নতুন ড্রেস (dress) বা ঘর সাজানোর জিনিস বানিয়ে নেবেন তা নয়! পুরোনো শাড়িগুলো শুধু শাড়ি (saree) নয়, অনেক মিষ্টি স্মৃতি জড়িয়ে থাকে তার সাথে. তাই অনেক সময়ে আমরা অনেক পুরোনো পুরো শাড়ি যত্ন করে তুলে রাখি. কিন্তু যেহেতু ফ্যাব্রিকটা (fabric) পুরোনো এবং বহুবার ব্যবহৃত, তাই অনেক সময়েই দেখা যায় যে শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে কেটে গেছে বা ফ্যাব্রিকটা নষ্ট হয়ে গেছে. তাই কয়েকটা টিপস দিচ্ছি কিভাবে এই স্মৃতিমাখানো পুরোনো শাড়িগুলির যত্ন নেবেন –

POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!

এগুলোও আপনি পড়তে পারেন

হানিমুনের জন্য কীভাবে তৈরি হবেন

Read More From ফ্যাশন