তাঁকে দেখলেই আদর করতে ইচ্ছে করে! ছোট্ট সিংহাসনের উপর বসে থাকেন, হাতে নাড়ুটি নিয়ে, মায়াময় মুখখানা আর আদর কেড়ে নেওয়া চাহনি নিয়ে…তাঁকে দেখে তো দেবতা মনে হয় না! একবারও মনে হয় না, বড় হয়ে ইনিই পরে কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের প্রাক্কালে অর্জুনকে মনুষ্য জীবনের সারাৎসার বোঝাবেন! ইনিই হস্তিনাপুরের রাজসভায় পাঞ্চালীর লাজরক্ষা করবেন। দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন করার জন্যই ইনি এসেছেন দ্বাপরে, কৃষ্ণরূপে। নাড়ু হাতে বসে তিনি যখন মিটিমিটি হেসে ভক্তের দিকে তাকান, তখন তাঁকে বাড়ির আদরের খোকাটির মতোই আদরে-আদরে ভরিয়ে দিতে ইচ্ছে করে। এই বালগোপালের আবির্ভাব দিবসই হল জন্মাষ্টমী (significance of janmashtami)
দেশ-বিদেশের কৃষ্ণভক্তরা এই দিনটিতে ধুমধাম করে পালন করে নন্দলালা, বালগোপালের জন্ম, যিনি বিষ্ণুর নবম অবতার। এই জন্মাষ্টমীর দিনটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইতিহাস থেকে শুরু করে লোকাচার, আরও নানা গল্প-কাহিনি। ভারতে বিভিন্ন রাজ্যে এই দিনটি পালিত নানা ভাবে, নানা ধরনের উৎসবের মধ্যে দিয়ে। অবশ্য জন্মাষ্টমীর সেলিব্রেশন ঠিক জন্মষ্টমীর দিনটি থেকে শুরু হয় তা ভাবলে ভুল হবে। আসলে শ্রাবণ মাসের একাদশী থেকেই শুরু হয় কৃষ্ণলীলার নানা উৎসব। ঝুলন, রাখিপূর্ণিমা দিয়ে যার শুরু জন্মাষ্টমীতে এসে তা পূর্ণতা পায় বলা যেতে পারে।
জন্মাষ্টমীর নানা গল্প
জন্মাষ্টমী বা গোকুলাষ্টমী, যে নামেই এই দিনটিকেই ডাকুন না কেন, তার গুরুত্ব একই থাকে! প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দেবতাদের মধ্যে একমাত্র শ্রীকৃষ্ণেরই জন্মদিন পালিত হয় ঘটা করে! তা হলে কি এই উৎসবই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে কৃষ্ণ আসলে ইতিহাসমান্য একটি চরিত্রবিশেষ? আমরাই নির্বিচারে তাঁকে দেবতার পর্যায়ে তুলে দিয়েছি! সে যাই হোক, ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে না হয় অন্য কোনওদিন দেখা যাবে! আমরা বরং নজর দিই জন্মাষ্টমীর নানা গল্পে! (significance of janmashtami)
যা কথিত আছে
পরিত্রাণায় সাধুনাম, বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম, ধর্মসংস্থাপনার্থায়, সম্ভবামি যুগে, যুগে…
একথা গীতায় নিজমুখে বলেছেন শ্রীকৃষ্ণ, বিষ্ণুর নবম অবতার। দ্বাপরে কৃষ্ণ অবতারে ধরাধামে এসেছিলেন শ্রী বিষ্ণু, হিন্দু শাস্ত্র মতে, চান্দ্র শ্রাবণ মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে, মথুরার রাজা কংসের কারাগারে, দেবকী-বসুদেবের অষ্টম সন্তান হয়ে। উদ্দেশ্য সেই একটাই, দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন!
পুরাণে যা বলে
সত্যি কথা বলতে গেলে, পুরাণে কিছুই বলে না! কৃষ্ণের জন্মবৃত্তান্তের জন্য আমদের নজর ফেরাতে হবে সেই মহাভারতের উপর। যেখানে বলা হয়েছে, শ্রাবণ মাসের দ্বিতীয় পক্ষ অর্থাৎ কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমীতে রোহিণী নক্ষত্রে চন্দ্র যখন বৃষভের ঘরে প্রবেশ করেন, সেই বুধবার, বিশ্ববসু বছরে মধ্যরাতে কৃষ্ণ জন্ম নেন মথুরায়। অত্যাচারী কংসকে বধ করার জন্যই জন্ম নিয়েছিলেন তিনি। জন্মের পর শিশুটিকে মেরে ফেলা হতে পারে এই আশঙ্কায় তাকে বৃন্দাবনে বসুদেবের মিত্রবর নন্দরাজের বাড়িতে রেখে আসা হয়েছিল। যাওয়ার পথে কীভাবে কারাগারের বদ্ধ দরজা খুলে গেল, প্রহরীরা কীভাবে ঘুমিয়ে পড়ল, দুর্দান্ত যমুনা পার হয়ে কীভাবে সেই শিশুকে নিয়ে বৃন্দাবনে পৌঁছেছিলেন বসুদেব, সেই গল্প বহুচর্চিত। (significance of janmashtami)
কী করে পালন করবেন জন্মাষ্টমী
কী করে আবার, বালগোপালের জন্মদিন পালন করে! যাঁদের বাড়িতে গোপাল প্রতিষ্ঠিত দেবতা, তাঁদের প্রত্যেকের বাড়িতে তো নিজস্ব নিয়ম মেনে পুজো হবেই। আপনিও যদি এবার থেকে এই দিনটি সেলিব্রেট করতে চান, তা হলে তার উপায় বাতলে দেওয়া হল এখানে! তবে একটা কথা পরিষ্কার করে দেওয়া ভাল। জন্মাষ্টমী মূলত একটি পারিবারিক উৎসব, বিশেষত বাঙালিদের জন্য। তাই সেলিব্রেশন যা হবে, বাড়িতেই হবে!
POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!
বাড়িতে থেকেই অনায়াসে নতুন নতুন বিষয় শিখে ফেলুন। শেখার জন্য জয়েন করুন #POPxoLive, যেখানে আপনি সরাসরি আমাদের অনেক ট্যালেন্ডেট হোস্টের থেকে নতুন নতুন বিষয় চট করে শিখে ফেলতে পারবেন। POPxo App আজই ডাউনলোড করুন আর জীবনকে আরও একটু পপ আপ করে ফেলুন!