লাইফস্টাইল

#POPxoWomenWantMore : নিজের শর্তে বাঁচতে ভালবাসেন এই মহিলা পরিচালক

Debapriya Bhattacharyya  |  Mar 7, 2019
#POPxoWomenWantMore : নিজের শর্তে বাঁচতে ভালবাসেন এই মহিলা পরিচালক

ছোটবেলাতে  তিনি যেখানে যেখানে থাকতেন, সেখানে টেলিভিশন তো দূরের কথা, বিদ্যুতের কোন ব্যবস্থাই ছিলনা, বাড়ি থেকে কড়া নিষেধ ছিল সিনেমা দেখার এমনকি গান শোনারও; তবুও নিজের আত্মবিশ্বাস আর প্যাশানের জোরে আজ তিনি একজন সফল ফিল্ম মেকার। হ্যাঁ, কথা বলছি রেহানা পারভীন জেনির সম্পর্কে।

আগামীকাল আন্তর্জাতিক নারী দিবস (womens day)। এই বিশেষ দিনটাকে ঘিরে বিশ্বের আপামর নারীকে জানানো হয় সম্মান, কিন্তু তার আগে আর পরে? সমীক্ষা বলছে, এখনও কিন্তু সেই অর্থে নারী স্বাধীনতা নেই। মেয়েদেরকে এখনও অবধি সমাজের নানা ঘেরাটোপের মধ্যে থেকেই নিজেদের অস্তিত্ব প্রমানের জন্য প্রতিদিন লড়াই চালিয়ে যেতে হয়। কেউ সফল হন, কেউ আবার হারিয়ে যান। সেই সফল মানুষগুলির মধ্যে একজন হলেন রেহানা, যিনি অবশ্য জেনি নামেই বেশি পরিচিত। ছোটবেলা কেটেছে মুর্শিদাবাদের গ্রামে। জেনির কথায়, “এখনও কিন্তু আমাদের গ্রামে শহরের হাওয়া লাগেনি, অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে।”

তাহলে সেই “পিছিয়ে থাকা জায়গা” থেকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্মমেকার হবার জার্নিটা শুরু হল কীভাবে?

শুধু পিছিয়ে থাকা জায়গা না, যেহেতু আমি গ্রামের একটি কনজারভেটিভ মুসলিম পরিবার থেকে এসেছি, কাজেই বুঝতেই পারছ যে আমার জার্নিটা খুব একটা সহজ ছিল না। ছোটবেলা থেকেই ভাবতাম যে এমন কিছু একটা করতে হবে যাতে আমি না থাকলেও আমার নামটা থেকে যায়। কিন্তু জানতাম না যে কি করা উচিত। স্কুল শেষ হবার পরে আমরা পুরো পরিবার বহরমপুরে চলে আসি আর সেখানেই প্রথম জানতে পারি যে সিনেমা নিয়েও পড়াশোনা করা যায়। বাড়িতে জানানোর পর আমাকে বলা হয় যে অন্য কোন কলেজে অন্য কোন বিষয় নিয়ে যদি পড়ার সুযোগ পাই তাহলে কিন্তু আর ফিল্ম স্টাডিজ নিয়ে পড়তে পারবে না। সেখানে আমি একটু মিথ্যে বলেছিলাম বাড়িতে যে অন্য কোন কলেজে আমার সুযোগ হয়নি। এবং তারপরেই আরম্ভ হয় ফিল্মের জার্নি। এরপর কলেজ শেষ করে আসি কোলকাতাতে। সেখানে প্রথমে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিল্ম স্টাডিজে পোস্ট গ্রাজুয়েশনে ডিপ্লোমা করি এবং পরে রূপকলা কেন্দ্র থেকে ফিল্ম ডিরেকশনে স্পেশ্যালাইজেশন করি।

এ তো গেল আপনার পড়াশোনার কথা, কিন্তু সিনেমা তৈরি কীভাবে আরম্ভ হল?

এটা একটা ইন্টেরেস্টিং গল্প। আমি রূপকলা থেকে পাশ করে বেরনোর পর একজন চলচ্চিত্র পরিচালকের (নাম বলব না) সাথে তার সহকারী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাই। কিন্তু ওই সিনেমার প্রযোজক এবং পরিচালকের মধ্যে মতবিভেদ হওয়ায় তিনি সিনেমাটি পরিচালনা করতে না করে দেন। তখন প্রযোজক আমাকে এবং আমার সহ-পরিচালক দীপায়নকে (আমারই বন্ধু) জিজ্ঞাসা করেন যে আমরা ছবিটি পরিচালনা করতে রাজি কিনা। উত্তরটা অবশ্যই হ্যাঁ ছিল। প্রথম দিকে একটু টেনশন ছিল বটে, কিন্তু অনেক খেটে তৈরি হয় আমার প্রথম ফিচার ফিল্ম ‘তিন পাত্তি’।

‘তিন পাত্তি’-র পর আর কি কি কাজ করলেন?

এখন তো ‘আমার শহর’ আর ‘জিঙ্গেল বেল’ নামে দুটো ছবির পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে। আর যেহেতু আমি এখন অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর জন্য ওয়েব সিরিজ তৈরি করছি, তাই মুম্বাইতেই পাকাপাকিভাবে থাকতে হচ্ছে। এছাড়া আরও কয়েকটা প্রোজেক্টের কথা চলছে, ফাইনালাইজ হয়ে গেলে অবশ্যই সবাই জানতে পারবেন।

এখনও পর্যন্ত মহিলা পরিচালকের সংখ্যা পুরুষ পরিচালকের সংখ্যা থেকে অনেকটাই কম। এর পিছনে কারণটা কী বলে আপনার মনে হয়?

শুধু যদি সংখ্যার বিচার করেন তাহলে কি করে হবে! ভেবে দেখুন, অনেক পুরুষ পরিচালক কিন্তু সফল নন, কিন্তু একজন অসফল মহিলা পরিচালক দেখান দেখি আমাকে! (এই কথাটা জেনি একটু রেগেই বললেন)

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কিছু মেসেজ দেবেন?

আমি তো প্রথমে গ্রামে ছিলাম, তারপরে মফঃস্বলে আর তারও অনেক পরে শহরে। কিন্তু এই যে আমার জার্নি, তাতে একটা জিনিস বুঝেছি, নিজের ওপর বিশ্বাস, কাজের প্রতি ভালোবাসা আর জীবনের লক্ষ্য যদি স্থির থাকে, তাহলে কিন্তু তোমার এগিয়ে যাওয়া কেউই আটকাতে পারে না। তুমি কোথা থেকে এসেছ বা তুমি ছেলে না মেয়ে (woman) সেগুলো খুব একটা ম্যাটার করে না।

POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!

Read More From লাইফস্টাইল