লাইফস্টাইল

পরিবেশ রক্ষা করতে ‘রুফটপ গার্ডেন অটো’ চালান কলকাতার এই মানুষটি

Debapriya Bhattacharyya  |  Apr 2, 2019
পরিবেশ রক্ষা করতে ‘রুফটপ গার্ডেন অটো’ চালান কলকাতার এই মানুষটি

কল্লোলিনী কলকাতা (Kolkata) – প্রতিদিন এখানে কিছু না কিছু নতুন ঘটে যা কলকাতাকে অন্য সব শহরের থেকে আলাদা করে রাখে। একদা সবুজে ঢাকা কলকাতা আজ অত্যধিক আধুনিকতা এবং শহুরে চাপে পড়ে প্রায় গাছহীন। রাস্তা চওড়া হবে সেজন্য গাছ কাটো, জলা জমি, খেলার মাঠ, বড় বাগান সব হঠিয়ে এখন শুধুই আকাশছোঁয়া আবাসন আর বড় বড় শপিং মল। কিন্তু গাছ না থাকলে মানুষ বাঁচবে কি করে বলুন তো? সবাই তো শুধু বলেই খালাস যে ‘গাছ লাগান, প্রান বাঁচান’, কিন্তু কাজের কাজ কি আদৌ হচ্ছে ঠিক যতটা হওয়া প্রয়োজন? সেজন্যই বোধ হয় সাধারণ মানুষের মধ্যে থেকে কেউ কেউ নিজের মতো করে কলকাতার সবুজকে এখনও বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। আর সেই কাজেই নিজের সাধ্যমতো যোগদান করেছেন কলকাতারই একজন অটোচালক বিজয় পাল। নিজের অটোর ছাদে তিনি করেছেন ঘাসের বাগান এবং লাগিয়েছেন কিছু ফুলের চারাও।

বিজয় বাবুর আটোর ছাদের ঘাসের গালিচার ঠিক নিচেই লেখা আছে “গাছ বাঁচান, প্রান বাঁচান।” যেভাবে না ভেবেচিন্তে দুমদাম করে দেদার গাছ কাটা হচ্ছে, তাতে তিনি খুবই অসন্তুষ্ট এবং দুঃখিত। তিনি বলেন, “এটা আমার নিজের গাড়ি নয়, আমি সেই ’৮৯ সাল থেকে গাড়ি চালাচ্ছি। এটা মালিকের গাড়ি।” যাত্রীদেরকে একটা বার্তা দেওয়া খুব প্রয়োজন মনে হয়েছিল, আর সেজন্যই কলকাতার সবুজ বাঁচানোর জন্য এবং পরিবেশ রক্ষা করার জন্য যতটুকু সামর্থ্য তার মধ্যেই এই অটোচালক চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।

“তিন চার বছর ধরে চেষ্টা করছিলাম যে এরকম কিছু একটা করবো। অনেক খুঁজছিলাম যে কে এগুলো লাগায়, একে তাকে ধরে জিজ্ঞেস করেছি যে অটোতে কেউ ঘাস আর গাছ লাগায় কিনা, কিন্তু কেউই সেভাবে বলতে পারেনি। তখন এক ভ্যানয়ালাকে পেলাম যারা গাছ বিক্রি করে, তার সাথে কথা বললাম।” একজন গাছ বিক্রেতার সাহায্য নিয়ে অটোতে তিনি ঘাস লাগালেন, সাথে লাগালেন ফুলের কিছু চারাও। “এই ঘাসটা লাগানোর পর থেকে পাবলিক খুব খুশি হচ্ছে, আর আমিও খুব আনন্দ পাচ্ছি।”

বিজয় পালের অটোর ‘রুফ টপ গার্ডেন’ যে শুধুমাত্র অটোর শোভাবর্ধন করছে তা কিন্তু না, একই সাথে মানুষের কাছে পরিবেশ রক্ষার বার্তা যেমন পৌঁছচ্ছেন তিনি, তেমনি কিন্তু অপরদিকে এই অটোচালকের ‘সাধারণ’ অটো ‘প্রাকৃতিকভাবেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত’ অটোতে পরিণত হয়েছে। যেহেতু ছাদে ঘাসের গালিচা তাই প্রখর গ্রীষ্মেও চড়া রোদেও অটোর ভেতরে বেশ ‘ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা কুল কুল’-ই লাগে। এতে বিজয়বাবু তো খুশিই, সাথে খুশি যাত্রীরাও।

তবে আপনারা যতটা সহজ ভাবছেন, এই চলমান রুফ টপ গার্ডেন মেইন্টেন করা কিন্তু অতটাও সহজ না। “যথেষ্ট যত্নে রাখতে হয়, এই বিকেল ৫টা ৬টা বাজলেই গাছে জল দি। তারপর রেস্ট!”

কলকাতার এই অটোচালকের (auto driver) মতো চলুন না আমি আর আপনিও নিজের মতো করে যতটা সম্ভব আমাদের প্রানের শহর কলকাতা আর পরিবেশ (envioronment) – দুটোকেই রক্ষা করার চেষ্টা করি।

ছবি সৌজন্যেঃ Hotstar এবং The Quint

POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!

 

Read More From লাইফস্টাইল