সম্প্রতি টোকিও অলিম্পিক্স (tokyo olympics)-এ ভারতের হয়ে রুপোর পদক জিতেছেন মীরাবাই চানু। দেশে সর্বত্রই তাঁর প্রশংসা হচ্ছে। তাঁর এই জয়কে কুর্নিশ জানাচ্ছেন সবাই। কিন্তু আপনি কি জানেন, পদক জয়ের আগের দিন থেকেই কতটা কঠিন পরিস্থিতিতে ছিলেন মীরাবাই চানু (mirabai chanu)। ? তাঁর এই পদক জয় ভারতকে গর্বের শিখরে পৌঁছে দিয়েছে, দেশে ফেরার পর সেই কঠিন সময়ের স্মৃতিচারণ করেছেন মীরাবাই চানু (mirabai chanu)।
‘ঋতুস্রাবের যন্ত্রণা শুরু হয়’
সোমবার ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ল্যান্ড করেছে তাঁর বিমান। বিমানবন্দরের কর্মী এবং অন্য়ান্য যাত্রী তাঁকে দেখে হাত নাড়ছেন। সেই সময়ই চানু মনে করছেন, খেতাব জয়ের আগের রাতের কথা। যখন তাঁর ঋতুস্রাবের যন্ত্রণা শুরু হয়। সেই সময় তাঁর প্রস্তুতিকে এক প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছিল সেই পরিস্থিতি। তাঁদের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা সম্পূর্ণ বদলে ফেলতে হয়। শুরু করতে হয়, ‘প্ল্যান বি’। দেশে ফিরে চানু এবং তাঁর প্রশিক্ষক বিজয় শর্মা সাংবাদিক বৈঠকে সেই সব কথাই জানালেন। দীর্ঘ মাস প্রস্তুতি নেওয়ার পর যখন সবকিছুই ওলটপালট হয়ে যায়। যন্ত্রণাময় ও নিদ্রাহীন রাত পার করেন তাঁরা। তাঁদের প্ল্যান বি-এর পথে হাঁটতে হয়।
বিজয় শর্মা জানান, শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত প্রতিযোগিতার আগের দিন সব কিছুই ঠিক ছিল। চানু সঠিকভাবে প্র্য়াক্টিস করছিলেন। কিন্তু সেই দিন রাত থেকেই চানুর (mirabai chanu) ঋতুস্রাবের যন্ত্রণা শুরু হয়। সেই দলের কেউ তা আশা করেননি। খুবই চিন্তিত হয়ে পড়েন প্রত্যেকে। সেদিনের জন্য তাঁদের ওয়েটলিফটিং পদ্ধতিই বদসে ফেলতে হয়। চানুও অবাক হয়ে যান। দুশ্চিন্তা শুরু করেন এবং তাঁর প্রশিক্ষককে সেই বিষয়ে জানান। তিনি ভাবেন, পদক জয়ের আগের দিনই কেন এরকম শুরু হল? তাঁর মনে সন্দেহ শুরু হয়। কারণ, তাঁর শরীরে বেশ কিছু পরিবর্তন হয়। পরে তিনি সেই বিষয় ভাবা বন্ধ করেন। চানু বলেন, “ক্রীড়াবিদ হিসেবে আমাদের অনেকরকম সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। আমরা জানি সেগুলিকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।”
ঋতুস্রাবের যন্ত্রণা মহিলা ক্রীড়াবিদের (mirabai chanu) কাছে নতুন নয়
ঋতুস্রাবের যন্ত্রণা মহিলা ক্রীড়াবিদদের কাছে নতুন কিছু নয়। তাঁদের ইন্টেন্স ট্রেনিং সেশন, দুশ্চিন্তা ও শারীরিক পরিশ্রমের কারণে তাঁদের ঋতুচক্রে বেশ কিছু পরিবর্তন হয়। এই ঘটনা মীরাবাই চানুর সঙ্গে আগেও হয়েছে। ২০১৮ সালে গোল্ড কোস্ট কমনওয়েল্থ গেমসে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই ব্যথাকে পিছনে রেখেই পদক জয় করেছিলেন চানু।
দেশের বিভিন্ন স্থানে এখনও ঋতুস্রাব নিয়ে ভ্রান্ত ধারণায় বিশ্বাস করেন মানুষ। দেশের বেশ কয়েকটি মন্দিরে সেই সময় মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়াও ঋতুস্রাবের ওই সময়টুকু তাঁদের অশূচি বলে দাগিয়ে দেওয়ার রীতিও রয়েছে পিতৃতান্ত্রিক সমাজে। কিন্তু মীরাবাই চানুর এই খেতাব জয় একটি দৃষ্টান্ত। ঋতুস্রাবের যন্ত্রণা সহ্য করেও দেশের জন্য প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। টোকিও অলিম্পিক্সে ওয়েটলিফ্টিং করে রুপো জিতেছেন। এখন সারা দেশে তাঁর জয়জয়কার। এই সময়ও কি তাঁকে অশূচি বলে দাগিয়ে দেওয়া হবে? নাকি তাঁর এই খেতাব গ্রহণ করবে না পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা? প্রশ্ন অনেক, কিন্তু উত্তর একটাই। একটাই নাম, মীরাবাই চানু!
POPxo এখন চারটে ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, মারাঠি আর বাংলাতেও!
বাড়িতে থেকেই অনায়াসে নতুন নতুন বিষয় শিখে ফেলুন। শেখার জন্য জয়েন করুন #POPxoLive, যেখানে আপনি সরাসরি আমাদের অনেক ট্যালেন্ডেট হোস্টের থেকে নতুন নতুন বিষয় চট করে শিখে ফেলতে পারবেন। POPxo App আজই ডাউনলোড করুন আর জীবনকে আরও একটু পপ আপ করে ফেলুন!