বিবাহ

জয় হল ভালবাসার, এই রাজ্যে প্রথমবার সাত পাকে বাঁধা পড়ছেন রূপান্তরিত ট্রান্সজেন্ডার জুটি

Doyel Banerjee  |  Aug 5, 2019
জয় হল ভালবাসার, এই রাজ্যে প্রথমবার সাত পাকে বাঁধা পড়ছেন রূপান্তরিত ট্রান্সজেন্ডার জুটি

যাঁরা অন্যরকম ভালবাসার হিরের গয়না নিয়ে জন্মান, তাঁদের ভালবাসার জন্ম হয় না, মৃত্যু হয় না। তাঁরা কোমরে আঁচল বেঁধে সব সংশয়ের নদী পার করে চলে যান। এরকমই দু’জন মানুষ হলেন দীপন চক্রবর্তী আর তিস্তা দাস। তিস্তা একসময় ছিলেন সুশান্ত। আর দীপন কোনও এক সময় ছিলেন দীপান্বিতা। মনে হয় সে যেন এক অন্য জন্ম। সে এক অন্য জীবনের কথা। যারা রূপান্তরকামী বা ট্রান্সজেন্ডার (transgender) মানুষদের নিয়ে মশকরা করেন বা যাঁরা ভাবেন এই তো দিব্যি ছিল, আবার খামোখা সুস্থ শরীরকে ব্যস্ত করার কী দরকার ছিল। তাঁদের বলি শুনুন। একটা অন্য শরীরে একটা অন্য মন নিয়ে দিনের পর দিন বেঁচে থাকা যে কি প্রাণান্তকর কষ্ট সেটা আপনার বা আমার পক্ষে বোঝা হয়তো সম্ভব নয়। রাজ্যে এই প্রথমবার সামাজিক অনুষ্ঠান করে বিয়ে (married) করছে দীপন আর তিস্তা।  

একসময় সুশান্ত থেকে এখনকার খরস্রোতা তিস্তা হয়ে ওঠাও সহজ ছিল না। বছরপনেরো আগে তিস্তার লিঙ্গান্তরের অস্ত্রোপচার শেষ হয়। আস্তে-আস্তে, একটু-একটু করে পায়ের তলার মাটি খুঁজে পাচ্ছিলেন তিনি। কাজ করছিলেন সমাজকর্মী হিসেবে। এখনও লিঙ্গ পরিবর্তন সংক্রান্ত নানা সমস্যায় জর্জরিত মানুষদের জন্য একটি সংস্থা চালান তিস্তা। কবিতা লেখেন এই মেয়ে। চালান একটি বুটিকও। কিন্তু অতীত মুছে ফেলা কি আর এত সহজ। সব আসে সব যায়। কবির জীবনে ভালবাসা অধরাই থেকে যায়। এটাই বোধ হয় ভাগ্য, এই একাকীত্বই বোধ হয় ভবিষ্যৎ এটাই নিশ্চিতভাবে ভেবে নিয়েছিলেন তিস্তা।

Facebook

আর অসমের ছোট্ট শহর লামডিংয়ে বেড়ে উঠছিলেন দীপান্বিতা। নারী শরীর, অথচ সম্পূর্ণ সত্ত্বা পুরুষের। এভাবে দিনের পর দিন আর সহ্য হচ্ছিল না। দীপান্বিতা হয়ে উঠলেন দীপন। আগরপাড়ায় তিস্তা যে সংস্থা চালান সেখানেই দু’জনের আলাপ হল। এটাই বোধ হয় ভবিতব্য ছিল দু’জনের। তবে দু’জনেই এর আগে প্রেমে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই সাহস করে মনের কথা কেউ আর বলে উঠতে পারছিল না। শেষে এক বান্ধবীর মধ্যস্থতায় ‘ভালবাসি’ কথাটা বলেই ফেললেন দীপন। সহজে হ্যাঁ বলতে পারছিলেন না তিস্তা। গলার কাছে কী যেন একটা কষ্ট। আবার যদি ভেঙে যায় সম্পর্ক! দোলের দিন সাহস করে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েই ফেললেন দীপন।

facebook

তিস্তার মা চাইছিলেন চার হাত এক হোক। সায় দিলেন তিস্তাও। তবে দীপনের বাবা-মা দূরত্ব বজায় রেখেছেন। কিন্তু দীপন যেখানে ভাড়া থাকেন, সেই ফ্ল্যাটের মালিক ও তাঁর স্ত্রী পালন করছেন বরকর্তা ও কর্ত্রীর দায়িত্ব। শ্রাবণ মাস তিস্তার প্রিয়। এই মাসেই এক হবে চার হাত। শ্রাবণের ধারার মতোই ভালবাসা ঝরে পড়ুক ওদের জীবনে। কারণ ওরা বিশ্বাস করে, “ভালবাসা আসলে লিঙ্গ নয়, দুটি মনের ব্যাপার।”

POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!

আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!

Read More From বিবাহ