প্রত্যেকটা কম্যুনিটির একটা নিজস্বতা থাকে, বাঙালিদেরও (Bengalis) আছে। এমনিতেই আমরা বাঙালিরা একটু বেশিই ইমোশনাল, আর কিছু কিছু ব্যাপারে তো আমাদের সেন্টিমেন্টে (sentimental) আঘাত না করাই ভালো। আপনি বাঙালি হলে তো জানেনই যে আমরা ঠিক কোন কোন ব্যাপারগুলোতে চরম ইমোশনাল, কিন্তু আপনি যদি বাঙালি না হন কিংবা কলকাতার বাইরে থাকেন, তাহলে আপনার জেনে রাখা ভালো যে কি কি বিষয়ে বাঙালিদেরকে একেবারেই চটাতে নেই –
এই ১৫টা বিষয়ে বাঙালিরা খুবই সেন্টিমেন্টাল এবং ইমোশনাল –
১। ভাত-ঘুম
বাঙালিদের (বেশিরভাগেরই) প্রিয় খাদ্য মাছ-ভাত আর এই কথাটা শুধু দেশে না, বিদেশের লোকজনও জানে। কিন্তু এটা কি জানেন যে দুপুরে যেই ভাতটা পেতে পড়ে, একটু ঘুম পেয়ে যায় সব বাঙালিরই? যারা বাড়িতে থাকেন তাঁরা এই ‘ভাত-ঘুম’টা বেশ উপভোগ করতে পারেন, কিন্তু আমার মতো যারা অফিসে থাকেন… থাক!
২। কচুরি-আলুর তরকারি
কলকাতার প্রতিটি অলিতে-গলিতে কম করে দুটো কচুরির দোকান তো আপনি পাবেনই। কাজেই বুঝতেই পারছেন যে আমরা বাঙালিরা কচুরি খেতে ঠিক কতটা ভালোবাসি! আর কচুরির সাথে যে আলুর তরকারিটা দেয়, সে স্বাদের তুলনা বোধয় আর কোনও কিছুর সাথেই চলে না।
৩। ফুলকো লুচি আর আলুর দম
রবিবারের সকালে যদি জলখাবারে ফুলকো লুচি আর আলুর দম না হল, তাহলে বাঙালির জীবনটাই বৃথা L
৪। ইস্ট বেঙ্গল-মোহনবাগান
এটা কিন্তু বড্ড বেশি সেন্টিমেন্টের জায়গা। ইস্ট বেঙ্গল আর মোহনবাগানের খেলা যেদিন থাকে সেদিন সব কাজ বাদ দিয়ে খেলা দেখাটা মাস্ট!
৫। আড্ডা
ওহ! আপনি কলকাতায় এলে কফি হাউস থেকে আরম্ভ করে পাড়ার মোড়ের চায়ের দোকান – সব জায়গায় দেখতে পাবেন একটা জটলা আর বেশ উঁচু গলায় সবাই কথা বলছে। ঘাবড়াবেন না। ওখানে সান্ধ্যকালীন আড্ডা চলছে।
৬। বড়দিনে পার্কস্ট্রিট
বড়দিনে পার্কস্ট্রিট দেখবার মতো হয়। কি দারুণ করে সাজানো হয়! আলো ঝলমলে নানা ডেকোরেশন! তবে একটু আগে যাবেন দেখার জন্য, তা না হলে কিন্তু মানুষের মাথা ছাড়া আর বিশেষ কিছুই দেখতে পাবেন কিনা সন্দেহ আছে।
৭। অষ্টমীতে লাল পাড় সাদা শাড়িতে অঞ্জলি
বাঙালি মেয়েরা সারা বছর যাই পোশাক পরুক না কেন, অষ্টমীতে লাল পাড় সাদা শাড়ি পরে যদি অঞ্জলি না দেয়, তাহলে কিন্তু… না না সেটা হতেই পারে না।
৮। ধুনুচি নাচ
দুর্গা পুজো নিয়ে বাঙালিরা খুবই এক্সাইটেড থাকি, তবে তার চেয়েও বেশি আনন্দ হয় ধুনুচি নাচে। সত্যিই এটা একটা দেখবার মতো ব্যাপার কিন্তু। ঢাকের বাদ্যি, ধুনোর গন্ধ, সামনে মায়ের প্রতিমা আর ধুনুচি নাচ – এই না হলে দুর্গা পুজো!
৯। ‘ফাউ’ ফুচকা
এমন বাঙালি খুঁজে পাবেন না, যে ফুচকা খাবার পরে ফুচকাওয়ালাকে ‘একটা ফাউ দাও’ বলে ফাউ একটা শুকনো ফুচকা খায়নি। আরে, এটা আমাদের জন্মগত অধিকার!
১০। কষা মাংস-বাসন্তী পোলাও
খাদ্যরসিক বাঙালি যতই মাছের ভক্ত হোক না কেন, বাসন্তী পোলাও আর কষা মাংস (অবশ্যই সেটা পাঁঠার মাংস হতে হবে) – এই পদটির প্রতিও কিন্তু সমান দুর্বল।
১১। পাশবালিশ
বাঙালিরা পাশবালিশের প্রতি এতটাই সেন্টিমেন্টাল যে তা নিয়ে গানও লেখা হয়ে গেছে। আরে সত্যি! বিশ্বাস হচ্ছে না, শুনে নিন তাহলে –
১২। দিঘা-পুরী-দার্জিলিং
বাঙালিরা কিন্তু ঘুরতে যেতে খুব ভালোবাসে। বলতে পারেন, মাইনের সিংহভাগ বেড়ানোর পেছনেই খরচ হয়ে যায়। তবে পৃথিবীর যেখানেই বেড়াতে যাক না কেন, বাঙালিরা দিঘা, পুরী আর দার্জিলিং-এ বারবার ঘুরতে যাবেই।
১৩। বোরোলিন
এটা অন্য লেভেলের ইমোশন। বেশি কিছু বলার দরকার নেই, ‘সুরভিত অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম বোরোলিন’ বললেই যথেষ্ট! কি জিঙ্গেলটা গুনগুন করে গাইছেন তো?
১৪। রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর
রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর যে বাঙালির জীবনের কতটা জুড়ে রয়েছেন, সেটা একমাত্র বাঙালিরাই বুঝতে পারেন। এটা একটা শ্রদ্ধার জায়গা, ভালোবাসার জায়গা।
১৫। (কে সি) পাল, দাস ও নাগ
রোদ-বৃষ্টিতে কে সি পালের ছাতা, মিষ্টিমুখের জন্য কে সি দাসের রসগোল্লা আর অঙ্ক শিখতে কে সি নাগের বই – বাঙালির সেন্টিমেন্ট, বুঝলেন?
ভিডিও সৌজন্যেঃ YouTube
ছবি সৌজন্যেঃ Big Basket, Amazon,
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!