কাঠের গোল চাকতির মধ্যে রঙবেরঙের সুতো দিয়ে মাকড়সার জালের মতো বোনা। মাঝে রয়েছে ছোট্ট একটা ছিদ্র। আর নীচের দিকে ঝুলছে নানা রঙের পালক। এমন শোপিস চোখে পড়েছে নাকি আপনাদের? এরই নাম ‘ড্রিম ক্যাচার’। এমন আজব নাম কেন তাই ভাবছেন? উত্তর আমেরিকায় জন্ম নেওয়া এই শোপিসটি শোওয়ার ঘরে রাখলে নাকি ঘুমনোর সময় খারাপ স্বপ্ন (Dream) আসে না। কারণ দুঃস্বপ্নকে নিজের জালে বেঁধে ফেলে ড্রিম ক্যাচার। শুধুমাত্র ভাল স্বপ্নই এর মাঝে থাকা ছিদ্র দিয়ে ফুরুৎ করে গলে আপনার কাছ পৌঁছানোর সুযোগ পায়। এটা ‘ড্রিম’-এর সঙ্গে ধরাধরি খেলে, তাই এর নাম ‘ড্রিম ক্যাচার’। তবে এখানেই শেষ নয়, নানা গল্প গাঁথা অনুসারে বাড়িতে এই শোপিসটি রাখলে নাকি শুধু দুঃস্বপ্ন দূরে পালায় না, সঙ্গে আরও অনেক উপকার মেলে। কী-কী উপকার মিলবে তাই ভাবছেন? জেনে নিন আমাদের কাছ থেকে।
প্রথম ড্রিম ক্যাচার তৈরি করল কে?
উত্তর আমেরিকার ইতিহাসের দিকে নজর ফেরালে জানা যায় Ojibway নামে এক জনগোষ্ঠী প্রথম ড্রিম ক্যাচার তৈরি করেন। তাঁরাই এই ধারণার জন্ম দেয় যে, এই বিশেষ জিনিসটি যদি ঘুমনোর সময় পাশে রাখা যায়, তা হলে খারাপ স্বপ্ন দূরে থাকে, এমনকী, ভূতপ্রেতও ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। আধুনিক ইতিহাসে ড্রিম ক্যাচার প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১৯২৯ সালে। Francis Densmore নামে এক ব্যক্তি প্রথম এই নিয়ে লেখালেখি শুরু করেন। সেই থেকেই এই শোপিসটিকে নিয়ে মানুষের আগ্রহ ক্রমে বেড়েই চলেছে।
ড্রিম ক্যাচারের নানা উপকারিতা
১. খারাপ শক্তির প্রভাব কমে
বাড়িতে এই শোপিসটি রাখলে গৃহস্থের চার দেওয়ালের মধ্যে শুভ শক্তির মাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে খারাপ শক্তি ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। ফলে হঠাৎ করে কোনও দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অশান্তি বা মনোমালিন্য মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কাও আর থাকে না। খারাপ সময়ও কেটে যায়।
২. ‘গুড লাক’ রোজের সঙ্গী হয়ে ওঠে
আমাদের সফলতা বা ব্যর্থতার পিছনে ‘লাক’ যে একটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর, সেটা তো আর অস্বীকার করার জায়গা নেই। তাই বাড়িতে ড্রিম ক্যাচার না রাখলেই নয়! কারণ অনেকেই এমনটা বিশ্বাস করেন যে শোয়ার ঘরে এই শোপসিটি রাখলে দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়ে। সঙ্গী হয় সৌভাগ্য। ফলে কোনও কাজে অসফল হওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না।
৩. খারাপ শক্তির হাত থেকে বাচ্চাদের বাঁচায়
Ojibway জনগোষ্ঠীর সদস্যরা এমনটা বিশ্বাস করতেন যে, বাচ্চারা যেখানে ঘুমচ্ছে, সেখানে ড্রিম ক্যাচার ঝোলালে খারাপ শক্তির প্রভাবে বাচ্চাদের কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না। এমনকী, অশুভ আত্মারাও কোনও ক্ষতি করে উঠতে পারে না। তবে এই ধারণার মধ্যে কতটা সত্যতা রয়েছে, তা জানা নেই। কিন্তু বাস্তুশাস্ত্রও মেনে নিয়েছে যে আমাদের আশেপাশে যেমন শুভ শক্তি রয়েছে, তেমনই রয়েছে অশুভ শক্তিও। তাই একবার ড্রিম ক্যাচার ঝুলিয়েই দেখুন না উপকার পান কিনা। যদি কোনও সুফল না মেলে, তা হলে না হয় খুলে রেখে দেবেন। শো-পিস হিসেবেও তো এগুলো মন্দ নয়!
৪. বাস্তু দোষ কেটে যায়
বাড়িতে ড্রিম ক্যাচার থাকলে নাকি অশুভ শক্তির প্রভাব কমতে শুরু করে, সঙ্গে কোনও ধরনের বাস্তু দোষ থাকলে তা-ও কেটে যায়। ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি অশান্তি এবং কলহ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কাও আর থাকে না। তবে এই যুক্তির স্বপক্ষে কোনও প্রামাণ্য যুক্তি কিন্তু পাওয়া যায়নি। সবটাই মানুষের বিশ্বাস। তাই সবশেষে একটা কথাই বলতে চাই, ‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহু দূর!’
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!