শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি! একবার ভাল করে ভেবেই দেখুন না, যে তেলে আপনি রান্না করছেন, সেটিও কিন্তু আপনার খাবারের অন্য সব উপকরণের মতোই আপনার শরীরে প্রবেশ করছে। তা হলে বিশেষ কিছু খাবার যদি ওজন কমাতে (weight loss) সাহায্য করতে পারে, তা হলে বিশেষ কিছু তেলও সেই কাজে সঙ্গত করতে পারে। আসলে যে-কোনও তেলে স্যাচুরেটেড এবং আনস্যাচুরেটেড, দু ধরনের ফ্যাট থাকে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট আমাদের শরীরের জন্য খারাপ হলেও, আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট কিন্তু শরীরের উপকারই করে থাকে। এই ধরনের ফ্য়াট কোলেস্টেরল লেভেলের ওঠাপড়াকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, ফলে শরীর ভাল থাকে। আর শরীরের সব যন্ত্রপাতি যদি নিজেদের সাজ ঠিকঠাক করে, তা হলে নিয়মিত এক্সারসাইজ এবং পরিমিত আহারের ফলে ওজনও আপনার বশে থাকতে বাধ্য হবে! তাই জেনে নিন, কোন ১০টি রান্নার তেল (cooking oil) ব্যবহার করলে আপনি এই সুবিধেগুলি পেতে পারেন।
১, অলিভ অয়েল
এই তেলটি ওজন কমাতে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সবচেয়ে বেশি কাজ আসে। তাই শেফ থেকে শুরু করে চিকিৎসকেরা, সকলেই আজকাল রান্নায় অলিভ অয়েল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এই তেলে নানা ধরনের হেলদি ফ্যাট আছে যা নানা কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা ও ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে! এই তেলটি মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটে সমৃদ্ধ, যা কোলেস্টেরলের মাত্রাকেও বেঁধে রাখে! এমনকী, অলিভ অয়েলের একস্ট্রা ভার্জিন ভ্যারাইটি আজকাল ব্রেস্ট ক্যান্সারের রোগীদেরও খেতে বলা হচ্ছে এই কারণে। আর আপনি যে শুধু রান্নার সময় অলিভ অয়েলের ব্যবহার করতে পারেন, তা-ই নয়। এই তেল নানা ধরনের স্যালাড ড্রেসিং, সস তৈরিতেও ব্যবহার করা যেতে পারে। আর আপনার ডায়েটে যত বেশি স্যালাড, গ্রিলড শাকসবজি বা মাছ-মাংস জায়গা করে নেবে এই অলিভ অয়েল ড্রেসিং সমেত, তত তাড়াতাড়ি ওজন দাঁড়ির কাঁটা আপনার পক্ষে কথা বলা শুরু করবে!
২. নারকেল তেল
এই তেলটি দক্ষিণ ভারতীয়রা রান্নায় ব্যবহার করে কী আর সাধে! একমাত্র এই তেলে উপস্থিত স্যাচুরেটেড ফ্যাট আপনার কোনও ক্ষতি করে না! উল্টে এই ফ্যাটের মি়ডিয়াম চেন ট্রাইগ্লিসারিড ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে সেরা ফল পেতে গেলে আপনাকে একস্ট্রা ভার্জিন নারকেল তেলই রান্নায় ব্যবহার করতে হবে। এর অন্যতম সুবিধে এই তেলের যে উৎকট গন্ধ আছে, তা থাকে না। আর না হয় দক্ষিণ ভারতীয় ইডলি-সাম্বার খাওয়ার সময়ই এই তেলে রাঁধলেন! খাবারগুলিও ওজন কমাবে, আবার তেলও! জোড়া ফায়দা, কী বলেন!
৩. রাইস ব্রান অয়েল
লাগাতার বিভিন্ন ব্যান্ডের বিজ্ঞাপনের গুণে এই তেলটির পুষ্টিকর ফায়দা সম্বন্ধে আর নতুন করে কিছু বলার নেই। এই ধরনের তেলে উপস্থিত ওরাইজোনল ভাল কোলেস্টেরল বাড়ায়, খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং এর ভিটামিন ই চুল, ত্বক, শরীর, সবকিছুকেই বাড়তি পুষ্টি যোগায়। এই কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই এই তেল ওজন কমাতেও সাহায্য করে। আর সবচেয়ে বড় সুবিধে হল, এই তেল টেস্টলেস, ফলে রান্নায় কোনও আলাদা কটু স্বাদ কিংবা গন্ধও টের পাবেন না আপনি!
৪. তিল তেল
মধ্য প্রাচ্যে এই তেলটিই রান্নার মূল মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। প্রাচীন ভারতেও এই তেলের ব্যবহার যথেষ্টই জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু তার পরে ক্রমশ কোনও অজানা কারণে এই উপকারী তেলটি জনপ্রিয়তা হারিয়ে শুধুমাত্র ঠাকুরঘরের প্রদীপ জ্বালানোর কাজেই সীমাবদ্ধ রয়ে গিয়েছে! অথচ তিলের তেলের অনেক গুণ! এই তেলে আছে নানা ধরনের পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, যা শরীরে লেপটিন নামক একটি অ্যাসিডের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। এই লেপটিন অ্যাসিড খিদে কমাতে সাহায্য করে। আর খিদে কম পেলে, খাবেনও কম, ওজন বাড়ার আশঙ্কাও কমে যাবে! তিল তেল BMI কমায়, ব্লাড প্রেশার ও কোলেস্টেরলের মাত্রাকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই ঠাকুরর প্রদীপ জ্বালানোর পাশাপাশি এই তেলটি রান্নাতেও কাজে লাগান নিয়মিত!
৫. ওয়ালনাট অয়েল
এই তেলটি ভারতীয় রান্নাঘরে ধীরে-ধীরে জায়গা করে নিতে শুরু করেছে। নানা রকমের পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ এই তেলটি ক্যালরি বার্ন করে ওজন কমাতে মুখ্য ভূমিকা নিতে পারে! রক্তচাপ এবং স্ট্রেস লেভেলও নিয়ন্ত্রণে রাখে এই তেলটি। তবে হাই টেম্পারেচার কুকিংয়ের জন্য এই তেলটি উপযুক্ত নয়। তাই রান্নায় অতটা ব্যবহার করা না গেলেও, এই তেল স্যালাড ড্রেসিং, কোনও বেকড ডিশের ড্রেসিংয়ে কাজে লাগাতেই পারেন। এই ধরনের খাবারও (food) ওজন কমানোর পক্ষে ভাল, আবার তেলটিও সেই কাজে সঙ্গী হবে!
POPxo এখন ৬টা ভাষায়! ইংরেজি, হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মারাঠি আর বাংলাতেও!
আপনি যদি রংচঙে, মিষ্টি জিনিস কিনতে পছন্দ করেন, তা হলে POPxo Shop-এর কালেকশনে ঢুঁ মারুন। এখানে পাবেন মজার-মজার সব কফি মগ, মোবাইল কভার, কুশন, ল্যাপটপ স্লিভ ও আরও অনেক কিছু!